আশরাফুল আলম'এর ব্লগ
মাই ড্রিমজ ১
স্বপ্ন জিনিসটা ধ্রুবক না। সময়ের সাথে সাথে স্বপ্নও পাল্টায়। স্বপ্ন, এমন কি দুঃস্বপ্নও আমার কাছে উপভোগ্য। স্বপ্ন বাস্তব হলো কি না, এই হিসাব মেলানোর চেয়ে স্বপ্ন দেখাতেই, উপভোগ করাতেই আমার বেশি আনন্দ।
আমার একটা স্বপ্ন আছে, খুব ছোট্ট একটা সবুজ টিনের ঘরের স্বপ্ন। সেই ঘরের সামনে থাকবে একচিলতে উঠোন। উঠোনের সীমানা ঘিরে থাকবে ঘন দেবদারু গাছ। সীমানার মাঝখানটায় থাকবে মাঝারি একটা বাঁশের গেট। গেটের সামনে, বাড়ি ঢোকার লাল খোয়ার চিকন পথ ছেড়ে, টলমল করবে ছোট্ট একটা ডোবা। এই ডোবায় খুব আদরের সাথে কিছু লাল শাপলা রাখা হবে। এই ডোবার সামনেই থাকবে একটা শাদা রঙ করা কাঠের বেঞ্চ। এই বেঞ্চে হেলান দিয়ে কোন কেশবতী ইচ্ছা করলে মাটিতে চুল ছড়াতে পারবে।
ওপরে সবুজ টিন আর নীচে বাঁধানো মেঝের মাটির ঘরটায় তেমন কিছু থাকবে না। একটা তোষক। সবুজ মশারি। নীল বিছানার চাঁদর। ফিরোজা বালিশ। একটা বড়ো ফ্লাস্ক। দুটো খয়েরি মগ। মেঝেয় ছড়ানো ছিটানো থাকবে বই খাতা আর কলম।
চলবে...
গল্পের ফড়িঙ
কোথায় পাই বল এতটুকু মাঠ- পুষ্পল বাতাস যেখানে শর্তহীন
আর পেলব ফড়িঙেরা
মুখের ফাঁক দিয়ে গল্প ওড়ায়...
আমার মাতামহী জানে-
আজে আমি পকেটে গল্পের অভাব নিয়ে ঘুরি!
সহজ কান্নার জন্য আমার একটি নিরাপদ বালিশ দরকার।
তোমার কাছে আমি জমি চাইনি
কেননা সহস্র ধার্মিক লাঙ্গলের ফলা তোমাকে চষে চষে রক্তের বানিজ্য করে যাচ্ছে...
তোমার ক্ষতের 'পরে এই চাওয়া বড় অশোভন হবে।
এই ঘূর্ণিত দিনে আমি এক বেসামাল ঘুড়ি!
কোথায় খুঁজে পাই এতটুকু মাঠ- নিরাপদ বালিশ-গল্প ফড়িঙ?
ভূমিহীনের বালিশ বিলাস সাজে না,
হে আমার নারী,
অন্তত গল্পের ফড়িঙ হয়ে জানালায় আসো।
প্রেম-ভালোবাসার গল্প
জানুয়ারীর এক ঠান্ডা বিকেলের কথা । আমি বসে ছিলাম শহরের নির্জন অংশের ছোট্ট একটা কফিশপে । এক হাতে ছিল এক মগ এক্সপ্রেসো কফি, আরেক হাতে একটা রগরগে চাররঙের ম্যাগাজিন । শীতটা সে বছর একটু বেশিই পড়েছিল, পশমের মোটা পুলওভার, ধোয়া ওঠা এক্সপ্রেসো কফি আর ম্যাগাজিনের পাতার উত্তেজক বিদেশী নায়িকাদের সাংঘাতিক নাভি-পেট বুক কিছুই ওম দিচ্ছিল না । জানুয়ারীর হিম রক্তের ভেতরঢুকে পড়ে পুরো শরীর জুড়ে একধরণের শিরশিরানো অনুভূতি জাগাচ্ছিল ।
এরকম এক শীতের বিকেলে তার সাথে প্রথম পরিচয় । সেও এসেছিল কফি খেতে । বসেছিল আমার ঠিক সামনের টেবিলে । আশ্চর্যের ব্যাপার এত কাছে থাকা এবং যথেষ্ট সুন্দরী হওয়া সত্ত্বেও তারদিকে আমার চোখ পড়েনি ।
সে যখন ধীর পায়ে আমার টেবিলে এসে বলেছিল, " আপনি খুব চমত্কার অভিনয় করেন ।" তখনই আমি মেয়েটার দিকে তাকালাম । তার মাথাভর্তি ছিল আলুথালু বাদামি রঙের চুল, খাড়া নাক,গভীর গভীর দুটো চোখ, পাতলা ঠোঁট, গায়ে চকোলেট রঙা একটামেয়েদের জ্যাকেট আর গলায় প্যাচানো কাশফুলের মতো শাদা একটা উলের ওড়না ।
ঘুম সংক্রান্ত আকুলতা
ঘুম পাড়ানো মাসিপিসির চিতার ছাই
বাতাসে উড়ে ঝুড়ে ভস্ম হয়ে গেছে কবে!
রূপকথারা চলে গেছে বাজারের সুদূর ওপার ।
চশমার কাচ ভেঙ্গে যাওয়ায়
খুঁজে পাচ্ছিনা তন্দ্রার গোলাপী বড়িগুলো ।
কপাটের ফুটো দিয়ে বেশরা নারীর মতো
ভোর এসে উকিঝুঁকি দিচ্ছে-হারি আপ!
বুকের পাহাড় থেকে বৃক্ষের গান বের কর
কূপের মুখ থেকে শিগগীর পাথরসরাও ।
হে নরম ডাকিনি, আমাকে যাদু কর !
অনিবার্য বিপ্লবের আগে
আমার একটু ঘুম দরকার ।
শিকারের প্রতিজ্ঞা
অনুরাগে আঠালো হবার আগেই দীর্ঘ বাদলের রাত,
শেয়ালের হুমকিতে হঠাত্ ফ্যাকাশে হয়ে যায় ।
বুকের সিন্দুকে যারা সবুজ পিপাসা পুষেছিলাম
করতলে কৃষ্ণচূড়া চেপে রেখে তারা শুধু উদাস উদাস হই !
অথবা উত্কোচের জন্য : মাকে বলি, লাল মোরগটা কই ?
কান্নার মতো কম্পিত ইশারায় তিনি সুদূরের অরণ্য দেখান ।
আমরা যারা মণিবন্ধে নারীদের আদর জড়িয়েছিলাম-
তারা একদিন ঝাপসা অরণ্যে শেয়াল শিকারে যাব ।
স্পন্সর [আমার অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যতের প্রেমিকাদের প্রতি]
লিখে দিলাম পশ্চিমের সান্ধ্য আকাশ
গায়ে মেখে কৃষ্ণচূড়া হস ।
মুছে দিলাম বেবোধ শাস্ত্রীয় হুমকিসমগ্র
বিবসনা হয়ে বৃষ্টি লুটিস ।
লাল শানকিতে তিন ফোঁটা স্বপ্ন দিলাম
প্রাকঘুমে নিয়মিত চোখে ছোঁয়াস ।
একপুকুর ঝিলমিলে সরপুঁটি দিলাম
আসন্ন মন্দায় নির্বিঘ্নে ফিশগ্রীল খাস ।
বিনিময়ে ওড়না দুলিয়ে শুধু
স্পন্সর করিস কিছু শর্তহীন মহুয়া সুবাস:
আমার কবিতারা শরীর দেখাবে...
সেই কথাটা পুরোপুরি বলা যায় না
সেই কথাটা পুরোপুরি বলা যায়না ।
তারচে বরং পুড়তে বল,
চোখের কিছু ঝিলিক দিয়ে ধরিয়ে দাও
দেহমনে দাহ্য হয়ে কৃষ্ণচূড়ার ফুল হয়ে যাই।
দুধকলার বাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া বীণের ভীতি
ফণা ধরতে শেখার আগেই গুড়িয়েদিলাম
যেমন তেমন কালসাপ আমি?
ভিষণ নীলে রাঙিয়ে দিব সেই কথাটা,
কিন্তু তখন বিষ উড়ে যায়!
আমার কুয়োর জলে মেঘ হয়,
ধানের বুকে দুধ হয়,
রাজার ছেলেই রাজা হয়।
শুধু বলা হয় না ।
সেই কথাটা পুরোপুরি বলা যায়না ।
আমার সন্তানেরা
যখন আমি ভরপেট হাঁসের ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে
ঝরে পড়ি অবহেলিত খুদ কুঁড়োর মত
ঝলমলে কলম আমার
ভরন্ত প্রসব বেদনা নিয়ে তখন
গচ্ছিত ভ্রূণ ঢেলে দেয় পরিণত শব্দের প্যাঁচে ।
একেকটা বাঁকানো শব্দ; সুবর্ণলতার চেহারায়
কলমের জরায়ু থেকে বের হয় আশ্রয়ের পরিচিত ঘ্রাণে ।
কলম জগতের শ্রেষ্ঠ প্রসূতি !
ক্লিনিকের শুভ্র বিছানার মতো উষ্ণ কাগজে শুয়ে
আমার সন্তানেরা পিটপিট করে চায় ।
ফসলের বিস্ময়ে কেটে যায় নিষ্ফলা তান ।
আমি পিতৃত্বের চুমু এঁকে দিয়ে
কাঁচা অক্ষরের কানে কানে উচ্চারণ করি-
ভাঙ্গনের কঠিন আযান !
ক্যান আসো ফিরে (খুলনার আঞ্চলিক ভাষায় লিখিত কবিতা)
হাত ধইরে মারো যদি টান
টাল খায় কলজের ঘর ।
ধুয়ে যায় মান আর অভিমান
কামনায় প্যাঁচ খায় কণ্ঠের স্বর ।
সুন্দরী ! কও দেহি শুনি,
তুমি যদি প্রেমই নিতি চাও;
চোখ দিয়ে যদি কিছু কই
লাল হয়ে ক্যান ফিরে যাও ?
ছুইটে চলে গাঙ্গের পানি,
এই দ্যাহো জুয়ার অই দ্যাহো ভাঁটা ।
তুমিও গাঙ্গের মত সই
আসার আগেই ধর হাঁটা ।
ভালবাসা না-ই যদি থাহে
তালি কও, ক্যান আসো ফিরে
আমারে মুছতি দেইহে চোখ,
ভীরু চোখি চুপচাপ ধীরে !
এক টিকিটে দুই ছবি
(প্রথম ছবি : একটি নামহীন কবিতা)
আমার যখন কলম খোলে না
বুকের ভেতর ঝিকিরমিকির নদীর রেখায়
বেলীফুলের বাতাস লাগেনা,
রাত তলানো কান্না জোটে না
টান হারিয়ে ঢিলে তালের একতারা এই
দেহের তারে ছন্দ মেলে না ।
নিকোটিনের আঁধার গুড়িয়ে
কাজল রেখায় অবহেলার সুরমা মেখে
নামতামুখর নূপুর বাজিয়ে
আসতে সাধি প্রসাদ সাজিয়ে
হয়তো তবে ভেতর থেকে ডুকরে ওঠা
পঙক্তি দেবে ঊষর ভিজিয়ে।
(২য় ছবি : একটি আবেদন)
অধম আশরাফুল আলম খুলনা থেকে স্বপ্নতরী নামের একটি ক্ষুদ্র মাসিক শিশুতোষ পত্রিকা সম্পাদনা করে ।
আগামী পাঁচ তারিখের ভেতর আপনাদের কাছ থেকে যে কোন ধরনের শিশুসাহিত্য কামনা করছি ।
লেখা মেইল করার ঠিকানা : shapnotori@gmail.com
আনটাইটেল্ড রোমান্স
উত্সর্গ : শ্রদ্ধেয় তানবীরা আপুকে, আমার সব কবিতা যার মাথার উপর দিয়ে যায়।
শরমবতী বৌ এর মতো আড়াল নিলে কুসুম রঙের দিন
চক্ষু পোড়ায় জলের মতো নিবিড় সজল তোমার ঠোঁটের ঋন ।
কমলা পিঠের শ্যামলা তিল আর সর্বনেশে তোমার ছলাত্ বুক
চাঁদের মতো জোছনা দিয়ে ভাসিয়ে দেয় মনের জমিন টুক ।
তোমার কাছে বারুদ কাঠি, শুকনো হৃদয় রাস্তা ঘাটে খুব
আমার দারুন আদর মাখা বুক , তবু দিলে গভীর জলে ডুব।
আমার আছে নীল কলমে তরল হয়ে ধুসর রঙা দুখ
হিসেবপটু চতুর মেয়ে, সুখ খুঁজেছ, থাকুক তোমার সুখ।
হুদাই হাবিজাবি
আপনাদের দোয়ায় আমি এখন পুরোপুরি নিশাচর। গত তিন রাত হোল ঘুমাই না । খাদ্যাভ্যাসেও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেছে। ইদানিং মায়ের হাতের ঘী-কাঞ্চন শাকের অমৃত খেতে পুরোপুরি দুব্বা ঘাসের মত লাগছে। গত পরশু রাগ করে রুই ভুনার বাটিতেও মৃদু একটা লাথি বসিয়েছি।
কি এক বিচিত্র কারণে গলার পাইপ লাইন মারাত্মক খসখসে হয়ে গেছে। সেখানে গ্রিজ লাগাতে পারলে যারপর নাই আমোদিত হতাম ।
কিছুদিন আগে চশমা পালটিয়েছি। খুব ভালো হতো যদি নতুন চশমাটাকে পেষণ দাঁত দিয়ে উত্তমরূপে পিষতে পারতাম । গেলাস আর ফেরেমের ভেতরকার স্ক্রুগুলো অকারণে ঢিলা হয়ে যাচ্ছে । এই কয়দিনে মোট পাঁচ বার সারভিসিং এ নিয়ে যেতে হয়েছে । হারামজাদা চশমার দোকানদার এখন আমাকে মোটামুটি ভোঁদাই পাবলিক হিসেবে ট্রিট করছে।
নাকের দুই কিনারা কুৎসিত ভাবে চৌচির হয়ে আছে, ময়শ্চারাইজিং ক্রিম সংক্রান্ত সকল প্রচেষ্টা মাঠে মারা যাচ্ছে।
কবিতায় দয়িতাকে প্রথম আক্রমন ( সরাসরি )
কবিতায় দয়িতাকে প্রথম আক্রমন ( সরাসরি )
ঝাঁ ঝাঁ রোদ্দুরকে আমি বলি - কান্না দিয়ে ভিজাবো বিশ্বচরাচর ।
সে বিজলীর মতো চমকায় ।
নরম সান্ত্বনায়
টসটসে করমচা আঁচল খুলে ডাকে;
টি টি টরর টরর - মোরগের তরে
লাল মুরগির তাজা প্রেম
একান্তই আমার বিনোদনের ! -
মানবীর চেয়ে সে বেশি বেহিশেবি।
অবশেষে রক্তসন্ধ্যেয়
কতবেল গাছে চুয়ে পড়া আকাশকে বলি;
বলে দিও
বিকেলের খেলা দেখি না ;
নোনার দেশে বসে বাতাস ভরে ডাকি -
অন্তরা ! মাই হানি ! অর্গল খোলো !
একটি প্রেমের কবিতা এবং সামান্য হাবিজাবি
কবিতা লিখি। নিজের ইচ্ছেমতো । মাঝে মাঝে মানুষদের শুনাই । কেউ বলে ভালো । কেউ বলে ডিকশনারি ফুটা কইরা কবিতা লিকশে রে। যারা বড় কবি এইরকম মন্তব্যে তাদের কিছু আসে যায় না । আমি ক্ষুদ্র কবি । আমার ব্যাপক আসে যায় । মনে হয় এ যাবত লেখা সবকটা কবিতা পুড়িয়ে ফেলি ।
আমাদের অতি পরিচিত আর অতি আপন এক বুড়ো আছে না ? চিনতছেন না ? আরে ওই যে মুখ ভরতি জঙ্গল যে লোকটার ! আমি যখন ভয়ানক কাব্য হতাশায় ভুগি, তখন সে মনের ভেতরে এসে বিড়বিড় করতে থাকে -
কত লিখেছি কতদিন,
মনে মনে বলেছি - খুব ভালো ।
আজ পরম শত্রুর নামে
পারতেম যদি সেগুলো চালাতে
চ্যুত
প্রথম সঙ্গমের পুলকে
আমরা বিদিক,
বিয়ে ফিলিপের।
লাদেন শহীদ!
শ্রদ্ধাশ্রুতে সিক্ত
আমাদের চোখ,
অন্তর, এমনকি অন্তর্বাস।
.
আমাদের আবর্তচ্যুত
আমরা দুজন শুধু
পরস্পরে-
মিশে আছি,
ভিজে আছি,
মেতে আছি।
৫০ ওয়ার্ড না হলে নাকি পোস্ট হবে না, তাই আরো একটা পিচ্চি কবিতা পোস্টিলাম।
মধুর পিছে ঘুরে আমার
ফুরিয়ে গ্যাছে দিন।
সব পতঙ্গ পায় কী মধু?
পেলাম নিকোটিন।
হরি! হরি! তাও নাকি ৫০ ওয়ার্ড হয়নি! সুতরাং, আরো একবার আরো একটি কবিতা প্রচেষ্টা
এই প্রণয়রসিক অন্ধকারে
তোমার সবগুলো জলাধার
খুলে দাও।
ঈশ্বর মারার আগেই
স্নানে পানে
একটি বার শুধু
প্রাণ ভরে মরতে চাই।