মাছির মারার নির্বাচন!!!
গত ২১ ডিসেম্বর থেকে বাসায় একা একা বাস করছি আমার গিন্নী মেয়েকে নিয়ে তার বড়ভাইয়ের বাসায় থাকছে আমি মনেশ্বর রোডের ভাড়া বাসায় বাস করছি ইদানিং দু'জনের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না তাই পারিবারিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক দু'জন আলাদা থাকছি একা একা থাকার সুবাদে যথেষ্ট সময় পাচ্ছি কখনো একাডেমিক প্রবন্ধ পড়ে, কখনো পত্রিকা পড়ে আবার টিভি দেখে সময় পার করছি আমি অবশ্য রান্নাও করতে পারি গত ২ বছর জাপানে থাকার সুবাদে আমি রান্নাটা শিখেছি অবশ্য আমার রান্না আমি ছাড়া অন্য কেউ খেতে পারবে বলে আমার মনে হয় না যাহোক ছুটির দিনে সারাদিন রান্না বারি, বইপড়া, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, টিভি দেখেই সময় পাড় করছি
গত কাল ০৫ জানুয়ারী ২০১৪ বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের নতুন এক ইতিহাস রচিত হয়েছে প্রধান বিরোধীদলের অনুপস্থিতিতে আওয়ামীলীগ ঘরোনার গৃহপালিত কিছু দল নিয়ে একতরফার নির্বাচন আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এটা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি ও রাজনীতিক বিশ্লেষক এই নিবর্াচনকে বিভিন্ন নামে আখ্যায়িত করছেন যেমনঃ নিয়ম রক্ষার নির্বাচন, প্রহসনের নিবর্াচন, সিলেকশনের নিবর্াচন, স্নেহের নিবর্াচন ইত্যাদি ইত্যাদি যেনামেই ডাকা হোক না কেন, প্রকৃতপক্ষে এই নিবর্াচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নৈতিক কোন শক্তি থাকবে বলে সাধারণ জনগণ মনে করে না একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আমার ব্যক্তিগত অভিমতও তাই
সাধারণ নিবর্াচনের কারণে গতকাল ০৫ জানুয়ারী, ২০১৪ সরকারী ছুটি ছিল আমি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর Morning Walk এ বের হয় বিবিসি'র প্রভাতী খবর দিয়ে সকালের পদব্রজ শুরু হয় এবং প্রতু্যষা দিয়ে শেষ গতকাল মনির্ং ওয়াক শেষে ফেরার পথে ধানমন্ডির সুগন্ধা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে শশা, গাঁজর এবং টমেটো কিনলাম অফিস না থাকার কারণে জিগাতলা বাসষ্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশের্ ডালির্ং পয়েন্টে সকালের নাস্তা করলাম সচরাচর আমি বাইরে নাস্তা করি না কিন্তু বাসায় গিন্নী না থাকার কারণে মাঝে মাঝে বাইরে খেতে হয় যাহোক বাসায় ফিরে নিবর্াচনের খবরাখবর দেখার জন্য টিভির সুইচ অন করলাম
সকাল ৯:০০ টা থেকে একটানা ৩:২০ টা পর্যন্ত একটানা টিভি সেটের সামনে বসে আছি মাঝখানে দুপুরের খাবার এবং নামাজ বাদে পুরোটা সময় টিভির খবর দেখেছি কমবেশী প্রায় সকল চ্যানেলেরই খবর দেখেছি ভোটারশূণ্য ভোটকেন্দ্র ভোটারের তুলনায় কর্মকর্তার সংখ্যাই বেশী প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিং অফিসার, পুলিং এজেন্ট, পুলিশ ও আনসার ভিডিপি'র নারী ও পুরুষ সদস্যবৃন্দ কেন্দ্রের ভেতরে তারা যেন মাছি মারছে মূলতঃ ৩টি কারণে এই নিবর্াচন মাছি মারার নির্বাচনে পরিণত হয়েছে (১) ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনেই বিনাপ্রতিদ্বন্দীতা সাংসদ নির্বাচিত হয়েছ ফলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এই ধারণার জন্ম নিয়েছে যে, ভোট দিলেও আওয়ামীলীগ জিতবে না দিলেও জিতবে (২) প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নিবর্াচনে অংশগ্রহণ করে নাই (৩) নির্বাচনের পূবর্ থেকে চলমান সহিংসতা বিশেষ করে নির্বাচনের আগের দিন ও রাতে ১১১ টি ভোটকেন্দ্র জালিয়ে দেয়া
নির্বাচন যাই হোক, সরকারের উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিরোধীদলের সাথে সমঝোতা করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জামাত-শিবিরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করা সাধারণ জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে
মন্তব্য করুন