বিষণ্ণ বাউন্ডুলে ওরফে বর্ণকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা
ফেসবুকে দেখেছিলাম নোটিফিকেশন গতকাল। ভেবেছিলাম কেউ না কেউ পোষ্ট দিবে। যখন দেখলাম কেউ দিলো না, দেয়ার সম্ভাবনাও আপাতত দেখছি নাই তাই আমি লিখতে বসলাম। ব্লগ লিখতে আমার আর ভালো লাগে না। নিজের হাতের লেখার অবস্থাও যে দশার, এই ব্লগে লেখা দেয়ার অবস্থাও তাই। বছর তিনেক আগে আমার এক মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব ছিল, নামকরা ব্লগার। সামুর লোকেরা নাম বলার সাথে সাথেই চিনবেন। সে ঢাকা ভার্সিটি নিয়ে এত অহংকার ছিল, কোন এক কারনে আমার হাতের লেখা দেখে বলেছিলো, 'শান্ত দা আপনার হাতের লেখার অবস্থা এই কেন? অবশ্য প্রাইভেট থেকে যারা আন্ডারগ্রেড করে তাদের লেখা এরকমই কেন জানি হয়'। আমার হলো মেজাজ খারাপ, বললাম 'এত প্রাইভেট প্রাইভেট করো তোমার ছোট ভাইতো পড়ে প্রাইভেটেই। ভর্তি করতা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে, বুঝতাম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তোমাদের ভালোবাসার নমুনা'। হাতের লেখাও নিয়েও যে এত ব্যাখ্যা বিশ্লেষন হয় তা আমার জানা ছিল না। আমার আম্মু আব্বু ভাই ভাবীর সবার হাতের লেখাই খুবই সুন্দর। আমার লেখা খারাপ, এখন আমি কি করতে পারি। হাতের লেখার জন্য তো আর জানখানা দিতে পারি না। কথা আরেক দিকে নিলাম যে বান্ধবীর কথা বলছিলাম। শুনলাম তার ডিভোর্স হয়েছে, ফেসবুক একাউন্ট ডিএক্টিভেট রাখা। তার আরেক একাউন্টে আমার লিস্টে আছে, যেখানে সে আসেই না। দেখলাম কদিন আগে তার জন্মদিন চলে গেছে। মেয়েটার জন্য আজ মন খারাপ হলো। কি আবেগ দিয়ে ভালোবাসতো, খালি সেই বিদেশে থাকা ছেলের গল্প। সেই ছেলেকেও আমি চিনি। নামকরা ব্লগার। আমি শুনে যেতাম শুধু কি বলবো। বিবাহের পরেও আমার সাথে মেয়েটার যোগাযোগ ছিল। তখন গল্প শুনতাম ছেলের সন্দেহের নানান কথা। শাহবাগের সময়তেই শেষ দেখা সাক্ষাৎ, তারপর আর জানি না। লোকের মুখে খবর পাই সে গ্যাঞ্জামে আছে। গতমাসে শুনলাম ডিভোর্স। জানি না সত্য মিথ্যা। আমার আর বজরঙ্গী ভাইজান হবার কোনো খায়েশ নাই। যখন বন্ধু ছিল তখন আমি ওর সাথে সাথে দোড়ঝাপে ছিলাম, তখন ভাবতাম স্বার্থ ছাড়াই লোকজনের পাশে থাকা উচিত। সেই কারনেই মনটা খারাপ হলো জন্মদিনের ডেট দেখে। জানি না জন্মদিনে সে তার প্রিয় বিক্রমপুরের সাদা মিষ্টি কিংবা হোটেলের বট ভাজি, খেয়েছে কিনা।
যার জন্য পোষ্ট লিখতে বসা, সেই বিষণ্ণ বাউন্ডুলের আজ জন্মদিন। আমার এখন লেখার অনেক অনেক কিছু থাকে। লেখি না। অনেক তো লিখলাম আর কত? সেই চর্বিত চর্বণ লিখে চলা। বিষণ্ণ বাউন্ডুলে এই ব্লগের খুবই চেনাজানা মানুষ। আগে ভাবতাম ছেলেটা আমার বয়সী হবে, কিংবা বেশী। কিন্তু জানলাম, দেখা হলো, কথা হলো, জানলাম ছেলেটা আমার চেয়ে ছোট। খুবই ভদ্র শান্ত শিষ্ট ছেলে। যার সাথে গানের পছন্দ মিলে যায়, সিনেমার পছন্দ মিলে যায়। তার লেখাও ভালো লাগে খুব, যদিও এখন কমই লেখে। কবিতা আমি ভালো বুঝি না। তবুও বিষণ্ণর কবিতায় আমি তার অনুভুতির প্রকাশ পাই। আগে আড্ডাও জমতো ভালো। তবে এখন জমে না কারন সে আমাকে বলে ফার্মগেইট আসতে, আমি আবার মোহাম্মদপুরের বাইরে যাই না। তাই দেখাই হয় না। তবে অন্তরের টান সর্বদা বিরাজমান। আমার বন্ধু পুলকের মতোই সে ফ্যামিলী বয়। আমার মতো নিজ বাসায় অতিথী জীবনযাপন করে না, আমার মতো মোহাম্মদপুরে থাকা জীবন তার না, ঘুরতে ভালোবাসে, মাঠে গিয়ে ক্রিকেট নিয়মিত দেখে। ফেসবুকে দেখলাম এখন সে সিলেটে। রবিবারে ফিরছিলাম এয়ারপোর্ট থেকে, ক্যাবে করে,ফার্মগেইটের পাশ দিয়ে যাবার সময় মনে হলো, বর্ণের সাথে অনেকদিন দেখা হয় না। ভালো থাকুক ভাইটা আমার, আনন্দের জীবন উপভোগ করুক। অনেক বড় হোক জীবনে। আমরা বন্ধু না থাকলে বর্ণের সাথে আমার পরিচয়ই হতো না হয়তো। তাই ফ্রেন্ডশীপ দিবসের মাসে আমরা বন্ধুকেও শুভেচ্ছা।
সময় কাটছে আমার বই নিয়ে। হাতে জমে থাকা বই শেষ করছি। বই কিনলাম নতুন কয়েকটা। এইমাসে আরো কিনবো। আমার এখন প্রিয় পড়ার বিষয় দেশভাগ। যা পাওয়া যায় হাতের কাছে কিনছি। এত ইন্টারেস্টিং সব ফ্যাক্ট আছে দেশভাগে পড়ে আশ্চর্য বোধ করি। আমাদেরকে যেভাবে বলা হয়, গুনী লোকেরা যা বলে সব ঢাহা মিথ্যা। সিনেমা দেখছি নানান টাইপের তবে হিন্দি সিনেমা দেখা বাদ দিছি। এই বছরে সমিতাভ ছাড়া আর একটা সিনেমাও দেখি নাই। মালায়লাম সিনেমা দেখি, কোরিয়ান জাপানি সিনেমাও ভালো রিভিউ পড়লে দেখার চেষ্টা করি। টিভি দেখা একদম বাদ দিয়েছি, বাড়ীতেও খুব কম দেখা হলো। ফেসবুকে থাকি, লোকজনের ত্যানা প্যাচানো দেখি, নিয়োগের খবর নাই, লোকজন বলে অন্য জব খুজো, তুমি তো মেধাবী, ব্যাংকে ট্রাই করো হয়ে যাবে, তোর মতো প্রতিভাবান লোকের চাকরী হয় না আবার। আমি হাসি সবার কথা শুনে, নিজের মেধার দৌড় আমার জানা আছে। আমি চেয়ে চেয়ে দেখি সারাদিন।
শুভ জন্মদিন দুইজনকেই। বর্ণের বর্ণিল দিন কাটুক। আশা করি নাম না জানা ব্লগারের জীবন আবার সহজ হয়ে আসবে, বিক্রমপুরের মিষ্টি আগের মতই ভালো লাগবে।
এত্তগুলা থ্াঙকুস, সুপ্রিয় শান্ত ভাই। ^_^
শুভ জন্মদিন ভাইয়া বাই দা রাস্তা জন্মদিনে কি কি বাউন্ডেলেপানা করলেন জানাবেন কিন্তু
থ্যাঙ্কুস!
একটা কলম, একটা টিশার্ট, কিছু চমৎকার উইশ। দুইটা 'ডেডিকেটেড টু মি' ব্লগ পোষ্ট, একখানা জরজিয়াস কফি কাপ সেট। দিনের শেষে হুটহাট কেক্কুক আর সন্ধ্যা রাতের সারপ্রাইজ ফ্রি চা। আর আরো কিছু পেন্ডিং গিফটো প্রাপ্তির সম্ভাবনা!
নট ব্যাড, নট ব্যাড; নট ব্যাড এট অল!
এই ছিল আমার দিন।
সামুর বিখ্যাত কিন্তু এই রকম অহংকারী কোন ব্লগারকে চিনতাম বলেতো মনে পড়তেছে না। সবাইতো ছিল সেইরাম ফ্রেন্ডলী।
বর্ণকে স্পাই-য়িত জন্মদিনের শুভেচ্ছা
মন্তব্য করুন