যে জলে আগুন জ্বলে
আমার পা জোড়া যেন শীতল হয়ে গেল। কি দারূন অনুভূতি।পায়ের কাছে তীব্র কলকল শব্দ করে জমে যাচ্ছে পাহাড়ি ঠাণ্ডা জল। জলের শরীরে আয়না। আমার দৃষ্টি জলের গভীরে। ঢেউয়ের ভাঁজে ভাঁজে পাথরের দোল খাওয়া দেখি। বড় বড় চোখের বুড়ো পাথর গুলোর গায়ে রোদ জলের ছায়া আর ছোট ছোট নুড়িগুলোর অবুঝ ভাসাভাসি।
মহানন্দার ওপারে আকাশ মাটি ছুঁয়ে সোনা রোদে হাসছে।
আমি ভেসে যাবার ভয়ে উঠে আসি।
রোদে তেতে থাকা, গরম মাটিতে পা পুড়ে যায়, আমি বাস্তবে ফিরে আসি। চোখ বুজলেই মহানন্দার জলে আমার চোখ ভরে যায়। সেদিন তোমার কি ভয়, পারে বসে চিৎকার
- "আর যেওনা। আর যেওনা। ভেসে যাবে যে..."
তুমি সাঁতার জানতে না। পানিকে তোমার তাই ভীষন ভয়। তাই নামোনি আমার সঙ্গে।
আমার ভীষন মন খারাপ হচ্ছিল, তোমার সাথে জলে নামতে পারিনি বলে কিন্তু মহানন্দা দেখে সব ভেসে গেল। নদী আমাকে ভীষন টানে। কি ভীষন আকূল করে টেনে নিয়ে যায়--অদ্ভূত তাইনা!
আমি পারে উঠে এসে, খরখরে রোদে- তোমায় বল্লাম, "একটা কবিতা শোনাবে? আমার পায়ে তখন জড়িয়ে আছে, নরম বালি।
তুমি আমার নগ্ন পায়ের পাতায় আঙ্গুল ছুঁয়ে বল্লে-
- যে কোন একটা ফুলের নাম বল
- দুঃখ ।
- যে কোন একটা নদীর নাম বল
- বেদনা ।
- যে কোন একটা গাছের নাম বল
- দীর্ঘশ্বাস ।
- যে কোন একটা নক্ষত্রের নাম বল
- অশ্রু ।
- এবার আমি তোমার ভবিষ্যত বলে দিতে পারি ।
- বলো ।
- খুব সুখী হবে জীবনে ।
আমি জোর করে তোমাকে থামিয়ে দেই, এসব কি? এত দুঃখের কবিতা পড়ছ কেন?
তুমি হাসলে---- লাজুক গলায়, বল্লে না এমনি। প্রকৃতির খুব সুন্দর কিছু দেখলে--- এই সুন্দর তোমাকে দেখলে, মাঝে মাঝে আমার কেমন মন খারাপ হয়ে যায়।
মনে হয়, যদি তোমাকে হারিয়ে ফেলি...। মনে হয়, এই অসাধারণ জীবনটা যদি না থাকে!!
বলি, আমরা তখন খুব সাধারণ হয়ে যাব। এক জীবনে অসাধারণ হতে হবে, এমন তো কোন কথা নেই- তাই না!
দেখে নিও, খুব সাধারন অভ্যাসে, প্রতিদিনের ছোট ছোট সাধারণ কাজে আমরা নিজেদের খুঁজে নেব।
বরাবর তুমি কম কথা বলতে। যা হয়, আমি বলি, তুমি শোন।
আমি বলি, কবিতা আসলে তোমার সাথে ঠিক যায় না। তুমি বরং অন্য কিছু বলো।
তুমি বল্লে, যদি কিছু না বলি, তুমি মাইন্ড করবে?
আমি হাসলাম।
তুমি আমার হাত ধরে চুপ করে রইলে।
বিকেলের রোদ মরে মরে মেঘের গায়ে মিলিয়ে গেল।সূর্যটা তার লাল চোখ নিয়ে একটু একটু করে মহানন্দায় ঝাঁপ দিচ্ছিল...ঠিক তখন তুমি আমাকে বল্লে, তোমাকে আমি একটা জিনিষ দেব। নেবে?
দাও-
দুহাত পাত।
তুমি আমার হাতের ভেতর কিছু নুড়ি দিলে। বল্লে, আমি তো গুছিয়ে কিছু বলতে পারিনা। এই নুড়িগুলো, আমার অনুভূতিগুলো তোমার কাছে জমা রাখলাম।
আমি বল্লাম, তোমার অনুভূতি গুলো কেমন? তুমি বল্লে বুঝে নিও।
এ জীবনে আর কিছুই বোঝা হল না আমার। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই অভ্যাসে অনভ্যাসে আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেল অনেক গুলো বছর।
পাল্টে গেল অভ্যাস, জীবনের চালচিত্র, ভালোবাসাবাসি।
তুমিও দুরে কোথাও। খুব সাদাসিধে, ঘোর সংসারী। আমিও।
ঠিক অসাধারণ ভালোবাসাটা আর জমলো না। সেই দারুন ভালোবাসারা ভেসে গেল মহানন্দার জলে।
আর সাধারণ আটপৌঢ়ে ভালোবাসা হয়ে গেল, নিত্যদিনের অভ্যাস। বাজারের চাল চিনি নুনের দামের মত রোজ রোজ তার ওঠানামা। জীবন হয়ে গেল মজে যাওয়া নদীর মত। অগভীর তার জল। তার ঘোলা জলে, বুকের গভীরটা ঠিক দেখা যায়না।
কিছুদিন হল, বাড়ি বদলেছি। নতুন বাড়ির এন্টেরিয়রটা আমার নিজের হাতে করা। ঘর সাজাতে সাজাতে, পুরোনো একটা ফার্ণিচারের ড্রয়ার ধরে টান দিতেই, একটা লাল কাপড়ের পুটলি বেরিয়ে এল।
খুলে দেখি কত গুলো নুড়ি, একটা রঙ্গীন কাগজ দিয়ে মোড়া। কাপড়টা টুপুরের হাতে দিলাম। মনের ভেতর কোন বোধের জন্ম নিল না। শুধু মনে হল- এত দিন ধরে এই জঞ্জাল জমিয়ে রাখার কোন মানে হ্য় না। টুপুরকে খেলতে দিয়ে দিলাম। টুপুর সেটা পেয়ে মহা খুশী।
সাথে সাথে নিজের সম্পত্তি ভেবে ব্যাগে চালান দিয়ে দিল।
এরপর প্রায় দেখতাম, নুড়িগুলো নিয়ে ও খেলছে। একদিন আমাকে বললো মামনি, ওখানে ১০ টা ছোট্ট ছোট্ট সুন্দর কতগুলো সাদা পাথর আছে, আর কালো একটা। কেন মামনি?
আমি এটা ওটা কাজের ফাঁকে বল্লাম- তুই কি আবার গুনেছিস নাকি? বলে সরে যাই।
আমার কিছু মনে পড়ে না। আমি রান্না করি, ঘর গোছাই, বাজার করি, বাজারের লিস্টিতে একটা জিনিসও বাদ পড়ে না। অসুখ হলে নিয়ম করে অষুধ খাই। প্রতিদিনের কোন কাজে আমার ভুল হয় না।
কেবল নুড়ি গুলো দেখে ঠিক মনে করতে পারিনা, ও গুলো কোথা থেকে এল।
জানার, আমার কোন আগ্রহ হয়না।
একদিন হঠাত, সেদিন আমি ব্যস্ত ছিলাম। বাড়িতে সন্ধ্যায় বেশ কিছু অতিথি আসবেন। হাজারটা কাজ নিয়ে আমার ছোটাছুটি। চুলায় রান্না।
হঠাত ই টুপুর হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসে। মামনি তোমার জন্য একটা প্রেজেন্ট আছে।
কি বাবা?
দেখি, সেই লাল কাপড়ের পুটলিটা খুলে- টুপুর আমাকে হাতে গুনে দেয়, ১০ টা সাদা পাথর আর একটা কালো। একটাও হারায়নি ছেলেটা।
আমার মাথাটা ব্যথা করে ওঠে।
আজ জানুয়ারির ১০ তারিখ। আমার জন্মদিন।
আমি দৌঁড়ে যাই, আমার অনেক দামী ফ্যাশনেবল বুক সেল্ফটা তন্য তন্য করে খুঁজি... না কোথাও নেই। কত শীত বসন্ত কেটেছে এতগুলো বছরে। ফিকে হয়ে গেছে জীবনের কত স্মৃতি!
তবুও কি যেন যেন ঘূণ পোকার মত, মগজে কামড়ায়। ফিকে ফিকে হয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলোর মধ্যে থেকে একটা শ্যমলা চেহারার বড় বড় চোখের মায়াময় মুখ পরিস্কার ভেসে ওঠে।
যাকে ভাসিয়ে দিয়েছিলাম, একদিন মহানন্দার কালো জলে।
টুপুর হঠাত দৌঁড়ে আসে আবার। মামনি এটা কি? আমি দেখি, সেই লাল পুটুলিতে একটা পুরোনো রঙ্গীন কাগজ। টুপুর এটাও রেখেছে!!!!!!
আমি ভুত দেখার মত একবার টুপুরকে দেখি, একবার কাগজটা।
আমার চোখে তখন মহানন্দা.
সেই নদীতে একটা মুখ-----
দোল খেতে খেতে বলে যায়----
ছেলেটা বাকী কবিতাটা শেষ করে
--------------
শ্বেত পাথরে পা ।
সোনার পালঙ্কে গা ।
এগুতে সাতমহল
পিছোতে সাতমহল ।
ঝর্ণার জলে স্নান
ফোয়ারার জলে কুলকুচি ।
তুমি বলবে, সাজবো ।
বাগানে মালিণীরা গাঁথবে মালা
ঘরে দাসিরা বাটবে চন্দন ।
তুমি বলবে, ঘুমবো ।
অমনি গাছে গাছে পাখোয়াজ তানপুরা,
অমনি জোৎস্নার ভিতরে এক লক্ষ নর্তকী ।
সুখের নাগর দোলায় এইভাবে অনেকদিন ।
তারপর
বুকের ডান পাঁজরে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে
রক্তের রাঙ্গা মাটির পথে সুড়ঙ্গ কেটে কেটে
একটা সাপ
পায়ে বালুচরীর নকশা
নদীর বুকে ঝুঁকে-পড়া লাল গোধূলি তার চোখ
বিয়েবাড়ির ব্যাকুল নহবত তার হাসি,
দাঁতে মুক্তোর দানার মত বিষ,
পাকে পাকে জড়িয়ে ধরবে তোমাকে
যেন বটের শিকড়
মাটিকে ভেদ করে যার আলিঙ্গন ।
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত হাসির রং হলুদ
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত গয়নায় শ্যাওলা
ধীরে ধীরে তোমার মখমল বিছানা
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে সাদা ।
- সেই সাপটা বুঝি তুমি ?
- না ।
- তবে ?
- স্মৃতি ।
বাসর ঘরে ঢুকার সময় যাকে ফেলে এসেছিলে
পোড়া ধুপের পাশে ।
আমার রান্না ঘর থেকে ধুপের গন্ধ নয়, খাবার পোড়ার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে।
আমি ধোঁয়া ধুলোয় চোখে জমে থাকা মহানন্দার জল সরাতে সরাতে রান্না ঘরে ছুটি।
অসাধারণ লেখা আপু। ভালো পাইলাম।
আসলে কি সত্যি কোন আগুন জ্বলে? আমি তো জানি জলে অগ্নিসংযোগ করলে শুধু পানি গরম হয়।
ধন্যবাদ বাচ্চু। এমন করে বল্লে সত্যি লজ্জা পাই।
আমি যদ্দুর জানি, আগুনে জল দিলা তা নিভে যায়----

না, মানুষ ঘুমায় থাকলে পাতিলায় পানি ভরে অগ্নিসংযোগ করতে হয়।
খবর্দার বাচ্চু, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পাতিলে পানি ভরে অগ্নিসংযোগ করো না যেন। উহা বিপদ্দজনক।

কাজের চাপে একটু দম ফেলার জন্য এবি-তে ঢুকলাম। ভালো লাগলো। একসময় কবিতা দুইটা বেশ প্রিয় ছিল, ক্যাসেটে আবৃত্তি শুনতাম। মনে পড়ে গেল...
ধন্যবাদ রশীদা।
আপনাকেও অনেক শুভকামনা রইল।
কী বিষন্ন মিস্টি লেখা!
ধন্যবাদ রায়হান ভাই। আপনাদের এত সুন্দর মন্তব্য লেখার অণুপ্রেরণা জোগায়।
ভালো থাকবেন। অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
কি চমৎকার লিখলেন আপু!দারুণ।
ধন্যবাদ জয়ি... তুমি আমার চেয়ে অনেক ভালো লিখ।
কইছে আপনেরে! আপনি বেশী জানেন!
আমার স্বাস্থ্য দেখলে ডরাইবা.....স্বাস্থ্য অনুযায়ী আমি অনেক বেশী জানি.।
রায়হান ভাইয়ের মতো বলি কি মিষ্টি বিষন্ন লেখা।
নন্দিনীর সাথে এই কপোকথন আমারও থুব প্রিয় নানা কারণে।
ধন্যবাদ বস।
আপনাদের মত কারো প্রশংসা পেলে, আমার তো রিতীমত পাঙ্খা গজায় যায়।
মনে হয়, ডানা মেলে উড়াল দেই।
অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।
বাহ! সুন্দর!
ধন্যবাদ নীড়।
আপনাকেও শুভেচ্ছা। ভালো থাকুন সবসময়।
ভাল লাগলো।কেন ভাল লাগলো বুঝলাম না।মনে হয় মহানন্দার কথা লিখা আছে তাই।
চালিয়ে যান আপু।
ধন্যবাদ রাসেল ভাই
আপনার কেমন আওয়াজ নাই----
বিষয়টা কি, যাই হোক---
আপনারে সহ, সবাইরে আগাম ঈদ মোবারক!!!
অসাধারণ লাগলো শাপলা, অসাধারণ!
নুশেরার অসাধারণ মানে আমার জন্য একটা সার্টিফিকেট...
আমি কি নিজেকে সার্টিফায়েড গল্পলেখক ঘোষনা করতে পারি?!!!!!!!!

কখনও বলা হয়নি, আজ বলি, তোমার কিছু লেখা পড়লে মনে হয় ওগুলো আমার লেখার কথা ছিলো, লিখতে পারিনি
এই অনুভূতিটা যেন আরো অনেক অনেকবার পাই বন্ধু
অট- ঈদ প্রস্তুতির কদ্দূর?
ভালো থেকো
ধন্যবাদ বন্ধু। তোমার এই মন্তব্যের উত্তরে কি বলতে হয়, আমার জানা নেই।
শধু এটুকু বলি আমি খুব সাধারণ। অনেক অসাধারণের ভিড়ে আমাকে হারিয়ে ফেল না।
ঈদের বিশেষ কোন প্রস্তুতি নেই। ঐ দিন কাজ আছে। পরিবারের ইচ্ছা ছুটি নেই। আমারও ইচ্ছা তাই। পারব কিনা- উপরওয়ালা জানেন।
তোমাকেও আগাম ঈদ মোবারক।
কি দারুন একের পর এক তাল মিলিয়ে কথোপকথন ... মনখারাপ করাটা ছাপিয়েও সেই মায়ামাখা স্মৃতিগুলোর টানটাই সুন্দর করে এসেছে লেখাটায়... চাইলেও যায় কি ভোলা সেই সব, থাকনা ঘিরে নিত্যকার হাজারো কাজের চাপ, মনের কোনেই হোক থেকে যায় ওইসবের ছাপ... হোক না আবছা... তাও থাকে
এই দারুণ বলেন তো আপনি--------------
আপনার মন্তব্য, আমার লেখার চেয়েও অনেক সুন্দর।
অসাধারণ লাগে...সবসময়ই।
আপনার সব লেখাই অসাধারণ হতে হবে, সাধারণ হলে চলবে না কিন্তু
এইরকম কঠিন একটা দায়িত্ব আমারে দিতে পারলা বাচ্চু!!!
তোমার দিলে কি দয়া বলে কিছু নাই।
একবার সামুতে সব মুইছা দিছিলেন লেখা...মাইন্ড খাইছিলাম। এখন আর দিলে দয়া নাই
'হৃদি ভেসে গেলো অলোকনন্দা জলে'....ভেসে যাবার মতোই লেখা। শিরোনামটা আমার খুব প্রিয় রে বইন! আরো আসুক এরাম মায়াবতী লেখা। ভালো থাকা হোক নিরন্তর
"হৃদি ভেসে গেল অলোকানন্দা জলে"--অসাধারণ। কোথায় যেন শুনেছিলাম।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
ওটা জয় গোস্বামীর কবিতা গো বইন।
(শাপলা শাপলা, করেনা ঘাপলা
এইখান মহাখুবি বাতিঘরের কিন্তুক
)
মায়াবতী কন্যা একটুশ চপলা
শাপলা শাপলা
................................................................................।
আপনার জন্য কবিতাখান দিয়ে গেলাম গো বইন
" হৃদি ভেসে যায় অলকানন্দা জলে
অতল, তোমার সাক্ষাৎ পেয়ে চিনতে পারিনি বলে
হৃদি ভেসে গেল অলকনন্দা জলে
করো আনন্দ আয়োজন করে পড়ো
লিপি চিত্রিত লিপি আঁকাবাঁকা পাহাড়ের সানুতলে
যে একা ঘুরছে, তাকে খুঁজে বার করো
করেছো, অতল; করেছিলে; পড়ে হাত থেকে লিপিখানি
ভেসে যাচ্ছিল-ভেসে তো যেতই, মনে না করিয়ে দিলে;
-'পড়ে রইল যে!' পড়েই থাকত- সে-লেখা তুলবে বলে
কবি ডুবে মরে, কবি ভেসে যায় অলকানন্দা জলে।"
মহাখুবি হাতিঘররে সেলাম
থুক্কু বাতিকঘর কোবতে পড়ে বড়ই টাস্কি খেলাম
------- ধন্যবাদ বাতিঘর ভাই।
আমারে নিয়া এত সোন্দর কোবতে লেখার জন্য।
আর সত্যি সত্যি ভালো লাগলো এত কষ্ট করে জয় গোস্বামীর কবিতা টা টাইপ করে দেবার জন্য।
লেখাটা ঠিক বুঝতে পারি নাই। তবে, এইটা বলতে পারি, একটা কেমন যেন বিকর্ষণী আকর্ষণ ছিল। দূরে ঠেলতে ঠেলতে কাছে টানার মতন।
অ:ট: কবিতাটা কার লেখা? পড়া হয় নাই আগে।
তোর এই মারিফতী মন্তব্য বুঝতে পারলাম না হে বালক।
অট এটা পূর্ণেন্দু পত্রীর কথোপকথন...........থেকে নেওয়া।
তোমরা বাচ্চু এই যুগের তাই ঐ যুগেরটা শোন নাই।
হ... আর আপনেরা তো বুইড়া পাব্লিক... তাই আমাদের উত্তরাধুনিক কথাবার্তা ধর্তারেন্নাই!!!

ব্যাপারটা হইল, অনেকটা রশি দিয়ে বেঁধে রাখার মতন। লেখা পড়তে পড়তে মন খারাপ হবে, ধূর, এইটা কি? আর পড়বো না, কিন্তু, তারপরও যেহেতু বেঁধে রাখা, কাজেই চাইলেও টান এড়াতে পারবেন না, পড়ে যেতেই হবে অদ্ভুত মোহাবিষ্ট হয়ে।
তোমার বয়ান আমার কানে শুধা ঢেলে দিল বাচ্চু।
তোমরা এত সুন্দর করে বললে, তার উত্তরে কিছু বলতে না পেরে অসহায় বোধ করি।
আমি বিনীত।
ভালো থেক। অনেক অনেক শুভেচ্ছা তোমাকে।
পুরো লেখাটাইতো একটা কবিতা হয়ে গেছে।
আপা তোমার লেখার কাছে এসব কিছু নয়।
কেমন আছ তুমি? লিখছ না কেন?
ঠিক অসাধারণ ভালোবাসাটা আর জমলো না। সেই দারুন ভালোবাসারা ভেসে গেল মহানন্দার জলে। আর সাধারণ আটপৌঢ়ে ভালোবাসা হয়ে গেল, নিত্যদিনের অভ্যাস। বাজারের চাল চিনি নুনের দামের মত রোজ রোজ তার ওঠানামা। জীবন হয়ে গেল মজে যাওয়া নদীর মত। অগভীর তার জল। তার ঘোলা জলে, বুকের গভীরটা ঠিক দেখা যায়না।
কতো সাধারণভাবেই না অসাধারণ ভালোবাসার চিত্রের চিত্রণ !
অর্থাত আমাদের অসাধারণ ভালাবাসাগুলো ঠিক এরকমই কতো সাধারণইনা হয়ে যায় !
চমতকার লেখা ঘোর তৈরী করলো ।
কবিতাটি আমার কতো প্রিয় বলা দরকার । অন্য ব্লগে আমার একটি প্রিয় কবিতার সিরিজ আছে । সে সিরিজে এখন পর্যন্ত ৫৩টি কবিতা এসেছে । এই কবিতাটির ক্রমিক কতো জানেন ?
এক !
সবিনয়ে দু'টা প্রশ্ন :
*'বল্লাম' 'বল্লো' বানান কি কোলকাতার লেখকদের প্রভাব... ?
* শিরোনামটি যেন কোন কবিতার বই এর নাম ?
ধন্যবাদ শিপন ভাই, এত সুন্দর করে বল্লেন, আমি বিনীত বোধ করছি।
আপনাকেও বলা দরকার, আপনার প্রিয় কবিতার সিরিজটা আমার সোকেজে অতি যত্নে আছে। প্রায় ওগুলোকে দেখি।
আর আপনি যখন বলছেন, শিরোনামটা একটা কবিতার। হতে পারে, হয়তো কবিতার শিরোনামটা স্মৃতিতে ছিল- লেখার সময় উঠে এসেছে।
সচেতনভাবে নামটা চুরি করা নয়। জল আর বিরহ ভাবটা দুটো মিলিয়ে গল্পের নামকরণ।
আপনাকেই চুপি চুপি একটা সিক্রেট বলি, গল্পের মূল ভাবনাটা এসেছে, ছবি departure থেকে। ছবিটার সময় এতটাই একাত্ম হয়ে গেছিলাম যে কি বলবো!
আর "বল্লো" শব্দটা নিয়ে অত ভাবিনি। আসলে এটাও বুঝি স্মৃতিতে ছিল।
না,আসলে,আমাদের দেশে 'বল্লো' 'বল্রাম' এরকম বানান ঠিক সঠিক ধরা হয়না বোধহয় । 'বললো' 'বললাম' ই তো বলা হয়, তাই প্রশ্নটা মাথায় আসছিলো । আর চুরির ব্যাপার না মোটেই । আমাদের অবচেতন মন অনেক কিছু সংরক্ষণ করে, আবার কখনো সেগুলো বেরও করে দেয় ,'যে জলে আগুন জ্বলে' নামে ব্লগেরই কোন একজন কবির বই বেরিয়েছিলো সম্ভবত গত বই মেলাতে । কবির নামটি এখন মনে করতে পারছিনা ।
ব্লগের কোনো কবির না । "যে জ্বলে আগুন জ্বলে" বিখ্যাত কবি হেলাল হাফিজ এর কাব্যগ্রন্থের নাম ।
প্রিয়তে রেখে দিলাম।
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
বিষণ্ণ সুন্দর।
খুব সুন্দর কিছু দেখলে আসলেই মন উদাস হয়ে যায়।দুঃখবিলাস করতে মন চায়!
ভাল থাকুন।
অনেক ভাল,সবসময়।
মন্তব্য করুন