সংগ্রামের ঐতিহ্যয়ের ১৭ই সেপ্টেম্বর, মহান শিক্ষা দিবস।
১৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৬২ সাল, পাকিস্তানি শাসন, শোষণ, শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লরাই করতে গিয়ে শহীদ হন মোস্তফা, ওয়াজিউল্লা, বাবুলসহ নাম না জানা অনেকেই। তাই আমরা তাদের স্মরণে পালন করি "শিক্ষা দিবস"
১৯৫৯ সালের ২৬ আগস্ট এস এম শরীফের নেতৃত্বে যে শিক্ষা পরিকল্পনার রিপোর্ট তৈরী করেছিলো তাতে বলাছিলো যে "সস্তায় শিক্ষা করা যায় বলিয়া তাহাদের যে ভুল ধারনা রহিয়াছে তাহা শিঘ্রই ত্যাগ করিতে হইবে" মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও ছাত্র বেতন বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত হয়, শিক্ষার এই বেসরকারিকরন, বানিজ্যিকিকরনের রিপোর্ট ছাত্ররা প্রত্যাখ্যান করে ১৭ই সেপ্টেম্বর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ হরতাল পালন করে। সকাল ১০ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে নবাবপুরের দিকে যেতে চাইলে অবস্থানকারী পুলিশ হাইকোর্টের সামনে বাধা দেয়, মিছিলকারীরা সংঘাতে না গিয়ে আব্দুল গনি রোডে অগ্রসর হয়, তখন পুলিশ মিছিলের পিছন থেকে লাঠি চার্জ, কাদানি গ্যাস ও গুলি বর্ষন করা হয়। সেখানে থেকে সরকারি হিসাবে বলা হয়েছে ৫৯ জন গ্রেফতার, ৭৩ জন আহত ও ১ জন নিহত, বাস্তবে এই তথ্য মিথ্যা। ছাত্র জনতার এই আন্দলনের আপে সরকার ঐ রিপোর্ট স্থগিত করতে বাধ্য হয়।
এই আন্দোলন যদিও ছাত্র অধিকার সম্পর্কিত কিন্তু যারা আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলো তাদের মধ্যে শুধু বাবুল ছিল ছাত্র, আর অন্যরা ছিল শ্রমিক। এখানে এক অন্যরকম ভালোবাসার চিত্র পাওয়া যায়, ছাত্রদের অধিকারের জন্য শ্রমিকরা মাঠে। আজকের বাংলাদেশে এই স্বপ্ন দেখা সম্ভব নয়। আজ কিছু ছাত্রদের দেখলে মানুষ ভয় পায়, কিছু ছাত্রদের চাদা দিয়ে চলতে হয়। এমন এক পরিস্থিতে এসে বাংলাদেশে শুধু বাম ছাত্রসংগঠন গুলো সেই ১৭ই সেপ্টেমম্বরের চেতনা ধারন করে শিক্ষা দিবস পালন করছে।
দুঃখের বিসয় হলেও সত্য স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র জানেনা আমাদের শিক্ষা দিবস কবে? জানেনা স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের পার্থক্য। এই দায় কে নেবে? কার দায়িত্ব এসব ইতিহাস জানানোর? যারা বার বার ক্ষমতায় এসেছিলো তারাই এর দায় বহন করতে হবে।
আমাদেরকে বৃটিশরা শাসন করেছে তাদের কে তারিয়ে দিয়েছি। আমাদেরকে পাকিস্তানিরা শাসন শোষণ করেছে তাদেকে তারিয়ে দিয়েছি। আজ বৃটিশ নাই, নাই পাকিস্তানিরা , কিন্তু শোষণ আছে। তাই আমাদের ক্ষুদিরাম, বাঘাযতিন, বগতশিং, রুমি, আযাদ, দীপালি, বাবুলের জীবন থেকে আজ শিক্ষা নিতে হবে। তাদের সাহস আমাদের পথ দেখিয়ে দেয় কিভাবে শোষণ মুক্ত সমাজ গড়তে হয়।
হুম
মহান শিক্ষাদিবস। ইতিহাস সব সময়ই চমকপ্রদ। স্বপ্ন দেখুন স্বপ্ন দেখান তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হন।
মন্তব্য করুন