পদ্মারপারে পিকনিক২০১৩
পিকনিকের জন্যে সব্বারই মন আকুপাকু করছিলো। কতদিন একে ওকে দেখি না, নতুন নতুন লোকজন চিনি না, জোট বেধেঁ গল্প করা, বিশেষ কাউরে পচাঁনি দেয়া, কিবা কুটচালি করি্ না, আহ! কত্তোদিন। বছরব্যাপি প্রচুর ঘ্যানঘ্যান চলার পরও, ন’মন ঘি রেডি থাকার পরও রাধার নাচ কেউ দেখতে পায় না আই মিন পিকিনিকের ব্যবস্থা হয় না! আসলে এমন তো হতেই পারে না যে, যেখানে আমি নাই আর আমায় ছাড়া মজা করবে বাকি সব্বাই! এই জন্যেই কেউ পিকনিক করে নাই গেলো দু’বছর! হে জনগন, তোমাদের এইসব ভাঙ্গা জংপড়া হৃদয়ের ভালুবাসার পাকে পড়ে হাবুডুবু খাওয়ার ব্যাপারটা বড়ই গবেষনার বিষয়, আপাতত সেই কাজে আপাতত না যাই।
ঘটনার ঘনঘটা ঘোট পাকছে মেসবাহভাইয়ের ফুটা দেখতে যাওয়া দিন(বদ চিন্তার লুকেরা চক্ষু পাকাইও না!), মেসবাহভাই অপারেশনজনিত কষ্টে কাতরায় আর আমরা তার শুভাকাংখি’রা(!!) উনার মাথার কাছে বইসা চা-বিস্কুট সহকারে জমায়ে আড্ডা দিতে দিতে ঠিক করলাম এইবার পিকনিক না করলে দেশ ও জাতির উদ্ধার সম্ভব না। যেই মত সেই কাজ হইলে তো দুনিয়া সিধা হইতো গোলকধাঁধাঁর মতোন না, কিন্তুক উই লাভ জিলাপী, উই লাইক ক্যাচাল! তাই নানান ক্যারিকেচার, নানান রংঢং ওলা ঘটনার পর হয়ে গেলো এবি’র দারুন একটা পিকনিক!
নীতিনির্ধারকরা পইপই করে বলে দিয়েছিল যে, “সকাল ৮টায়তেই বাস ছাড়বে” – যদিও এই কথা কেউ বিশ্বাস করে নাই তাও দেখি পোলাপান টাইম মতোন জায়গায় হাজির হয়েছিল। ডিমান্ড আছে কিন্তুক সাপ্লাই নাই হালে যাত্রী আছে বাসই আসে নাই! এই ফাকেঁ রাস্তার চা-পিঠা’ওলার ব্যবসার উন্নতি সাধনে মশগুল হয়ে গেছে মানবদরদীরা। কিছুক্ষনেই পিকনিকের কলিজা (বয়ান মনে আনা শুরু কইরেন না কেউ!!) রন চকচকা এক নীলরঙ্গা বাস(ওরে চকচক করিলেই সোনা হয় না, আর নীল যে বেদনার রঙ তা কেম্নে ভুলে গেলে!!) নিয়ে হাজির হতেই সব দেখি সিট ধরার লাইনে দাড়ায়ে গেছে!বাসে উঠার জন্যে মেয়েদের চিপাচাপার লাইনের মাঝে দেখি মেসবাহভাইও দাঁড়ানো! আপ্নের এই হাল কেন জিজ্ঞেস করতেই সুন্দর করে বলে, “দু’টা সিট ধরি!” ভাগ্যিস এইবার পিকনিকে ভাবী এসেছিলেন বাচ্চাদের নিয়ে, দাদা’ভাইয়ের চিল্লাপাল্লা/বকা কম খাইছি আমরা। বাসে ভালো সিট ধরতে পারবে বলে ঈমরান’পরিবার চলে এসেছে, যে কিনা ইচ্চে করলেই পুরানঢাকার বাড়ির কাছ থেকেই বাসে উঠতে পারতো। লোকাল বাস স্টাইলে যাত্রী উঠানো ছাড়াও বাসের কন্ডাক্টর সাঈদ্ভাই দি গাড়ি’ওলা স্পেশাল ট্রিট(!!) দিয়াও বাসের সাথে লোকজন নিয়েছেন। কতদিন পর একেএকে চেনামুখ-অচেনামুখ দেখছি, এরেওরে খুজঁছি। ফারজানা’র বদৌলতে সব্বার পরিচয় ঝালাই করে নিছি, নাহ কারুর কাছে গিয়ে পরিচিত হওয়া নয়, ও একেকজনের সম্পর্কে বলে, “আরে! চিনতে পেরেছি! উনি না এইজন!” স্বভাবসিদ্ধভাবেই যেইটা উলটাপালটা ভুলে ভরাই ছিল! কিছুক্ষন ওর কাছে বসে থাকার পর জয়িতা’র হাল ছিলো প্রায় “খোদা রশি ফালাও, আমি বায়া উডি যাই”! হাতে হাতে বাসের এমাথা থেকে ও মাথা নাস্তা বিতরন, গ্লাসে গ্লাসে করে পানি খাওয়ানোর কাজ দারুন করে করছে শামীম। হ্যা, সবাই জানি খাবার আর শামীম একে অন্যের সম্পূরক কিন্তু এইবার ওকে আমরা দেখেছি ভিন্নরুপে, নিজে খাওয়া থেকে দূরে দূরেই ছিলো। নাস্তা শেষ না হতেই মৃন্ময় গ্রুপ লাঠিসোটা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লেন সবার উপর, থুক্কু নানান বাদ্যবাজনা সহকারে গান শুরু করলেন, এট্টু পর বেশক’জন মেয়ে যোগ দেয়াতে ডুয়েটও শুরু। এদের মাঝে সামিয়া ছাড়া কাউরে চিনি নাই। নিজেদের নিয়েই মশগুল ছিলাম বেশি বলে পরিচয় তেমন হয়নি।এই যে মৃন্ময়গ্রুপের কথা বলছি এর মাঝে মৃন্ময় কোন জন তাই জানি না।
কত কথা বলি, কাজের কথার খোজঁই নাই। গিয়েছিলাম পিকনিকে মুন্সীগঞ্জে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু’র জন্মস্থানে। উনার ঘরভিটা’কে ঘিরে একটা পিকনিক স্পট তৈরী করা, বেশ খোলামেলা একটা জায়গা, দু’পাড় বাধাঁনো পুকুরঘাট, ছোট ছোট ব্রিজ, দোলনা বড়বড় গাছের গোড়া বাধিয়ে আড্ডার জায়গা, বিশ্রামের ঘর – সব মিলিয়ে পিকনিকের উপযুক্ত স্থান!
যে যার মতোন দল বেধেঁ ঘুরছে, এইবার বেশক’জন নতুন বিবাহিত জুটি এসেছে পিকনিকে, নিয়মসিদ্ধভাবে তারা নিজনিজ বিপদসীমা’র বাইরে বের হতে পারেন নাই, টেকনিক্যাল এবং নন-পলিটিক্যাল কারনেই! গৌতম দা স্যার’এর বৌ’দিকে নিয়ে দোলনার পারফরমেন্সে সেই সব জুটি ব্যাপক হিংসিত আগেভাগে দোলনার দখল পায় নাই বলে!
- ভাই দোলনা খালি করবেন? - না, অন্য দিকে যান!
- বুঝছি, দোলনা ছাড়বো না!
- আহ, শান্তি!
তাতে কি পরে উনারাও হাটেমাঠে, তুলসীবেদী’র ঘাটে নানান পোজ দিয়েই গেছেন। বাদ যায় নাই দাদা’ভাইও! সামিয়া ওর পুচকাপার্টি নিয়ে কই কই যে ঘুরে বেড়াইছে পাত্তা পেয়েছি কমই! লাল’ভাই, শান্ত, শামীম এরা চা’ওলা/চিপস’ওলাদের কাছটায় গুরুগম্ভীর ভাব দিয়া আসন গাড়ছিলেন। আমরা কয়’টা ভাদাইম্যা হালে ঘুরে ঘুরে পাশের কলেজটা দেখলাম আশপাশে খুজছিলাম সরিষাক্ষেত যদি পাই, আমরা খুজেঁ না পেলেও বিকেলে শুভ জানালো যে উল্টাপাশেই ছিলো ক্ষেত,ওরা ছবি তুলছে। রনি,মেসবাহভাই, রাব্বি এরা কাজে এমনভাবেই লেগে ছিলো যে লাগছে কাজ করতেই নিয়ে আসছি ওদেরকে!
কাজের পোলারা!
রঙেই পরিচয়!
এই সময়ে রান্নারমাঝে দেখা গেলো পাতিলের কমতি পড়ছে, নাজ দলবল নিয়ে দৌড় দিলো ওর নানাশ্বশুরে বাড়ি! ভাগ্যি একদম কাছেই ছিলো উনাদের বাড়ি, বাইরে থেকেই দেখছিলাম সুন্দর উঠান ঘরদোর,দারুন ঘাট (এই এলাকার বেশিরভাগ বাড়িতে দেখলাম পুকুরঘাটটা বেশ সুন্দর করে বানানো আর অনেক ঘর টিনের দোতালা)। এতোটা সময় বেশকয়জনকে দেখতে না পেয়ে জানতে পারলাম, সাইদ্ভাই দি গাড়ি’ওলা এলিটগ্রুপকে(!) নিয়ে চলে গেছেন পদ্মারপারে আর তার ধারেকাছে এক রাজবাড়িতে!
এত্তোকাছে পদ্মা না দেখে যাবার মানেই হয় না আর সাইদ্ভাইর গাড়ির ফুটানি কমাইতে বেশক’জন রাজন,শান্ত, শামীম এদের মতোন সুস্থির চিন্তাবিদদের শলাপরামর্শ নিয়ে মোটামুটি সবাইকে তাল দিয়ে রন/মেসবাহভাই’রে ম্যানেজ করে গোটা বাস নিয়ে রওনা দিলাম, যদিও তালতুলকের অপবাদ দেয়া হইছে কেবল মুরাদ,জয়িতা আর আমারে, ব্যাপার না যুগে যুগে বিখ্যাতরাই বদনাম হয়! (হুর! মুন্নি বদনাম হুয়ি গান শুনা বাদ দেন)। পিকনিকের এলাকা রেকি করে যাওয়া এলিটরা তো আমাদের পিকনিক স্পটে এনে “চইরা খা” হালে ছেড়ে দিয়ে গেছে, আর আমরা তো আমরাই বাসের ড্রাইভারও পদ্মারপারের রাস্তা চিনে না! ২০মিনিট-এর পথ আধঘন্টা চলার পরও ভাগ্যকুল মিষ্টির বাজার দেখি, তারিকভাই’র কল্যানে দারুন মজার বাখরখানি খাই, (ভদ্রতা করে একটাই নিসি আরো নেয়ার শখ থাকলেও!) পোলাপান’রা বালাশুর বৌ বাজার আসায় নানান কথা শুরু করে, ফারজানা-মুরাদ-জয়িতা গং ব্যাপক চিন্তাযুক্ত গবেষনামূলক বড়দের আলোচনা শুরু করছে আর আলাভোলা রাজনটা তাতে নাক/কান/চোখ মনোযোগের সাথে দিয়া জ্ঞানার্জন করছে! কত্তো কি করছি তো করছিই কিন্তু পদ্মারপার আর দেখি না! টুটুল্ভাই(এলিটগ্রুপের মেম্বর)আর পথের মানুষজন থেকে জানলাম পথ হারায়ে অন্যদিকে চলে এসেছে বাস,আবার ব্যাক করবো কিনা ভাবার টাইমে দূরে দেখা গেলো পদ্মারপারের অন্য একটা দিক যেখানে এলিট’রা যায় নাই! আমরা কি কম নাকি, এই জোসে সব দৌড় দিয়া নেমে গেছে, কি দারুন একটা বীচের মতোই, কড়া রৌদ্দুরের কারনে গরমে সবার হাসফাস হাল। নদীর কাছ ঘেষে ধানের বীজতলা করছে লোকজন, আরো কত পদের সব্জির ক্ষেত।
কত রকমের পেশার লোক দেখলাম এই পদ্মারপারে, কেউ ঘোড়ার গাড়ি করে ইট টানছে,কেউ মাটি কুপাচ্ছেন, কেউ মাছ না যেন কি পাতিলে করে বয়ে নিয়ে চলছেন। জালসমেত জেলেদের আনাগোনা তো আছেই আশেপাশে। আগের পিকনিকে আমরা পদ্মারলেকে নৌকা বাইলাম সবাই মিলে, আর খোদ পদ্মাতে এসে নৌকা চড়বো না এমন তো হয় না। পানি একদমই অল্প, আমি উঠলে নৌকা আবার কাইত না হয়ে যায়, এই ঠান্ডারকালে পোলাপান না ভিজে যায়, এই ভয়টা কাটিয়েই ৭/৮জন মিলে নৌকা নিয়ে বের হইছি। কড়া রোদ মাথার উপর,স্বচ্ছ পরিষ্কার আরাম লাগা ঠান্ডা পানি, এত্তো দারুন সময় কাটলো পা ভিজিয়ে বসে থাকায়।
ফেসবুকে ফারজানা স্ট্যাটাস দিয়ে নৌকায় উঠছে যে “নৌকা চালাই পদ্মারপারে” এখন জেহাদী জোসে মাঝিরে যতই বলে বইঠা দেন, মাঝি আর বিশ্বাস করে না ওরে, জোরাজুরিতে এক বাশের লগি হাতে ধরায়ে দিছে, যা দিয়া ও পানিতে না বাইলেও আমার মাথা একটা বাড়ি দিতে পারছে! আমাদের সাথে নৌকায় না উঠলেও মেয়েকে নিয়ে কনক নেমে গেছে হাটু পানিতে! সে কি মজা মেয়ের! আসেই না আর পানি থেকে, শেষে পদ্মারপানিতে গোসল করেই আয়েশা উঠে আসছে।
একগ্রুপ তো আছি নদীর পাড়েই অন্যরা ঘুরে বেড়ালো দারুন করে। সামিয়া’রা পদ্মারপারে সাইকেল পেয়ে খানিকক্ষন চালায়ে বাজারের দিকে চলে গেলো চা খেতে, লাল’ভাই, শান্ত, গৌতম’দা উ্নারাও আরেক দিকে ঘুরতে গেলেন। ধীরেসুস্থে ফিরছি, এর মাঝে মেসবাহভাই ফোন দিয়া স্বভাবসিদ্ধ ঝাড়ি, “বাস নিয়া বান্দ্রামিতে বার হইছিস ৩ বেয়াদপ, ড্রাইভার বেশি টাকা চাইলে তোদের খবর আছে কিন্তু! জলদি ফেরত আয়!” দাদা’ভাইর বকা থেকে বাচাঁর উপায় হইলো উনি কিছু বলার আগেই কোন ইস্যু নিয়া উনার সাথে উলটা ফাপর নেয়া টেনশনে ফেলে দেয়া, সেই মতে পিকনিক স্পটে ঢুকে মেসবাহভাই’রে পাওয়া মাত্রই মুরাদ খুব ভাব নিয়া ঝাড়ি স্টাইলে বলে, “কি ভাই এত্তোক্ষনেও খাবারের কোন হদিস নাই! পাব্লিক তো খিদায় মরতেছে, করলেন কি এতোক্ষন!” বকা না দিয়া ভাইয়ে নিজের দায়িত্বের টেনশনে চলে গেলেন। জানি আবার হাতের কাছে পাইলেই ঝারি দিবে তাই আগ বাড়ায়ে কাজে হাত লাগাইতে গেলাম। মুরাদ সমানে খাবারের তার নুন-সেন্স(থ্যাঙ্কু শান্ত শব্দটা জানানোর জন্যে) কাজে লাগাতে লাগছে! দেখা গেলো সালাদ কাটার মানুষ বেশি ছুরি কম!আমরা তো আছিই, সাথে অনেকে নিজেদের বর-বৌ’কে দাড় করায়ে দিলেন এই কাজে! তো কেউ পরামর্শক, কেউ নুন-সেন্স দেখায়, কেউ চান্স খুজেঁ শসা-গাজরে ভাগ বসানি যায় কিনা। আর ব্রিজের উপ্রে থেকে আরেক দল মজা দেখে বসে বসে! এমন বিশাল নুইসেন্স অডিয়েন্সের মাঝেও আমরা সফলভাবে সালাদ কাটাকুটা সম্পন্ন করলাম। খিদায় জান যায় যায় হাল তাও খাবারের দেখা নাই! এই আকালের কালেও পোলাপানের মন ফিরাইতে মৃন্ময়গ্রুপের গান শুরু! জয়িতা খেপে শেষ,কেম্নে এরা এই সময়ে এমনসব গান ধরে! আরে,খিদা’র কালে বন্ধুয়া তুই কোন শালারে!!
কয়েকযুগ পরে খাবার লাইন ধরতে বলা হইলো ভুখা-নাঙ্গা থুক্কু বেশভুসাধারী ভুখাদের এইবার আপ্নেরা “লাইনে আসেন।”
ভুখাবেশধারীদের প্রতিনিধি!
খাবার দেখে আমাদের সব্বার হাল এমনই!
যদিও বলা হয়েছিল যে বাচ্চাদের মায়েরা আগে নিবে খাবার, বাচ্চাদের বাবা/চাচা।ফুপু/খালারা প্রতিবাদ করলেও কেউ লাইনের আগে যাইনি। কনা’পু সবাইকে বেড়ে খাওয়াইছেন! খাবারের ম্যেনু আগের মতোই মটরপোলাও,রোস্ট, গরু আর খাসি’র মাংশ, এবার কেবল জর্দা আর মিষ্টি যোগ হয়েছে! মজার জর্দার পর ওই বিশাল সাইজের মিষ্টি সাবাড় যোগ্য নয়,অনেকেই নষ্ট করছে দেখলাম। পিকনিকে প্রতিবারই আমরা বেশি করে খাবার করি যাতে আশেপাশের মানুষদের দেয়া যায়। এইবার তো সেই খাবারের পরিমান অনেক বেশি হইছে, দেয়া গেছে অনেককে বেশি করে। সব গুছিয়ে হাল্কাঝাপসা আড্ডা দিয়ে রওনা দিতে দিতে প্রায় সাড়ে ৫টা বেজে গেলো। সাঈদ্ভাই দা গাড়ি’ওলা চলে গেছেন আগেই। কিছুদূর গিয়ে আমাদের বাস থেমে গেল,কিছু পরে জানা গেল গিয়ারবক্সের ঝামেলার কথা! রন এরমাঝেই চলে গেছে মেকানিক আনার জন্যে, একে তো বন্ধেরদিন আবার ইস্তেমার সময় গাড়ি সারাইয়ের লোক খুজেঁ পাওয়াই হলো দুষ্কর। প্রায় দু’ঘন্টা রাস্তায় বসে থেকে অস্থিরই হয়ে গিয়েছিলাম! এর মাঝে চা খাইতে যাবো কিনা বলার আগেই মেসবাহভাইয়ের বিখ্যাত ডায়ালগ “নোটি নোটি”। এর মাঝেই সেই পুরানো কথা উঠলো, এবি'র ছেলেরা বিয়ে করলে যৌতুক নিবে বর বাস আর মেয়েদের বিয়ে দেবে চা'ওলা/বাস মেকানিকদের সাথে যাতে সহজেই আমরা ঘুরাফেরা করতে পারি নির্বিঘ্নে!! মুরাদ গান শুরু করলো, কিন্তু আমাদের সুবিখ্যাত গানগুলা যেটাই শুরু করে দেখা যায় লিরিক্স ভুলে গেছে! এমন কি সালমা’র সেই “বাসররাতের বাত্তি” গানটাও দু’লাইনের পর ভুলে গেছে! কারুরই মনে নাই!! খুজেঁ খুজেঁ দেখা গেলো গৌতম’দার বৌ জানে, কিন্তু এইসব বেদ্দপি লিরিক্স উনি জোরে জোরে বলতে চাইলেন না, কিন্তু আস্তে আস্তে যেটুকুই বললেন তাই শুনেই গৌতম’দার অজ্ঞান হবার জোগাড়!সবাই টেনশনে আছে কিন্তু চিল্লাপাল্লা করে নাই কেউই, এমনকি বাচ্চারাও চুপ করে শান্ত হয়ে ছিলো।কয়েক জায়গায় খুজেঁও মেকানিক না পেয়ে নতুন করে বাসই নিয়ে এলো রন, ও ফেরার পরই জানলাম, এর মাঝে সিএঞ্জি উলটে এক্সিডেন্ট করে সাধের এইচটিসি ফোনই হারিয়ে ফেলেছিল! আল্লাহর অশেষ রহমতে বড়ো কোন দূর্ঘটনাও হয়নি আর ওর ফোনও ফেরত পেয়ে গেছে!...মোটামুটি রাত দশটার মাঝেই সবাই ঠিকঠাক মতো ঘরে পৌছে গেছি।
আনন্দ-বেদনার টকঝাল-মিষ্টি ঘটনা নিয়েই তো জীবনের নানান রঙের রংধনু সাজে, তেমনি পিকনিকের বাস ধরার উত্তেজনায় অনেকের নির্ঘুমরাত কাটানো, চলিত পথের নানান মজার খুনশুটি,ঘুরেফিরে নতুন জায়গা দেখা, সবার সাথে খাবার খাওয়া, ফেরার পথের উত্তেজনা – সব মিলিয়েই সুন্দর একটা দিন কাটলো এবি’র ২০১৩’র পিকনিকে। সবাইকে নিয়েই আমাদের আনন্দের আয়োজন, এত্তো আনন্দের মাঝেও মনে পড়ছিলো বাসে কথার ফুলঝুরিতে মুক্ত’কে মনে পড়লো, কে যেন হাত দিয়ে ডেকে কি বলছিলো, ইমরান মনে করিয়ে দিলো বাপ্পির গতবারে বলা বিখ্যাত ডায়ালগ “অই মিয়া শইল্যে হাত দেন ক্যান!”, দুষ্টুমিভরা কথার তালে মিস করছিলাম মাসুম্ভাইকে, মে্সবাহভাই ঝাড়ি দেবার সময় মনে পড়ছিলো রায়হানভাইকে কেবল উনিই পালটা ঝাড়ি দিতে পারেন,গুলিস্তান থেকে রাতে বাড়ি ফেরার সময় কনা’পা যেমন করে বলছিলেন “মেয়েরা একা যাইস না, আমি বাড়ি পৌছে দেবো” আরো অন্য সবাইকে দায়িত্বের সাথে এটা ওটা করতে বলছিলেন, খুব মনে পড়ছিলো লীনা’পুকে! কেন জানি অনেক অভিমান হচ্ছিল কেন সবাই এলো না! একটাই দিন তো কেন সবাইকে একসাথে পেলাম না!
দারুন পুষ্ট মোবাইল দিয়েই কমেন্ট মেরে দিলাম
মোবাইলে তুমি গোটা পোষ্টই লিখে ফেলো, এতো এট্টুসখানি কমেন্ট!!.
তোমার মোবাইলের কল্যানেই না আমরা গরমাগরম পিকনিক আপডেট পেলাম!!
এই ধরনের পোষ্ট পড়ার পর .... পিকনিকের আমেজ পুরা টের পাওয়া যায়
দারুন হইছে আফা।
আরে, আপ্নের যে পুরাই নয়াজামাই ইমেজ দেখাচ্ছিল লিখতে ভুলে গেলাম তো!!
এলিট পেইন্টে চাকরী দেবার মাজেজা কি ?
এইবার কি জয়িতা গাড়ির গিয়ার বক্সের উপর বইছিলো নাকি ?
যেইহারে লাপাত্তা হয়ে গেলেন, গরু খোজা খুজেঁ না পেয়েই তো এই পদন্নোতি দিলাম! এই গরু খোজার কথায় স্মরন আসিলো, ইমরান'কে ওর মেয়ে বলছেঃ"বাবা তুমি কি গরু হইছো, এম্নে গরুর মতোন হাপাও কেন আমাকে কোলে নিয়া!!"
উড়ুক্কু পোস্ট হইসে।
আইলেন না কেন পিকনিকে?
মীর যে কোত্থাও আসবেনা এইটা এখনো রন বুঝো নাই!
অামি যেহেতু যাই নাই, তাই পিকনিকে মনে হয় বেশী লোক হয় নাই,আংগুল ফল টক । ছবিগুলো সুন্দর আরো ছবি দেন। খাবারের সময়ের ছবি।
এক্কেবারে ঠিক বলছেন, আপ্নে আসেন নাই তাই লোক কম পড়ছে - ফলাফল বাস উপচায়ে বাড়তি গাড়ি করেও গেছেন!
খাবারের ছবি তুলতে মজা লাগে না!!
পুরা আমেজওয়ালা পোস্ট দিসো...
কাকের ফটুকটা তোমার তোলা! আর তোমারটা লাল'ভাইয়ের!
একটা কথা বলতে আসলাম.....চাকার উপর আমি বসি নাই। তবে একবার জেবীন বসা থেকে দাঁড়ালো আর বাস একটা ঝাঁকি দিয়ে থেমে গেলো সেইটা জানি।
আর আফা, বিমা-জয়িতা-ফারজানা গং এ আপনি কই ছিলেন?
ও তাইলে এই কেস !!! জেবিনের জন্যই গাড়ী নষ্ট এবার !!!
একবার না ২/৩ বারই দাড়াইলেই বাস ঝাকি মারে!! শেষেরটায় ডরাইছিলাম
না, মানে আমি তো পর্যবেক্ষক! আর স্বীকার কি না গেছি যে গং এ নাই? নাইলে তোমাদের কথা জানলাম কেম্নে! তবে আলোচনা অনেক গুরুগম্ভীর ছিলো!!

যাক, দারুন পিকনিক হলো তাহলে এবার
আমি ছিলাম তো তাই!
আমরা সব্বাই কেবল এক হইলেই মজার সব নিমিষেই করে ফেলতে পারি.।.।
মিস করসি মিয়া তোমারে!
বাস ছাড়ার আগমূহুর্তে শান্ত বলছিলো কাছেই নাকি তোমার বাসা ফোন দিবে কি্না, আবার বলে না থাক, ওর পরীক্ষা!
ধুর ভাব্লাম ইফতারে মিস গেছে পিকনিকে দেখা হবে তোমার সাথে!
পোস্ট পড়ে মনে হইতাছে পিকনিকটা আসলেই দারুন হইছিল।
একজন কইল আপনেও নাকি কিঞ্চিত আহত হইছিলেন ? চাইপা গেলেন ক্যান বিষয়টা ?
সুন্দর পোস্টের জন্য পরের পিকনিকে একটা রোস্ট পাওনা রইলেন।
অ । তাঁর মানে পিকনিকে আপনার ভালো লাগে নাই, পোষ্টের কারণে ভালো মনে হইছে
তার মানে কি তাই দাঁড়ায়। দারান একটু ভাইবা লই
সর্প হইয়া দংশন কইরা ওঝা হইয়া ঝারতে আসছেন!

তবে গোপন সূত্রে খবর পাইলাম যে, আপ্নে নাকি কার থেকে ব্যাপক ঝাড়ি খাইছেন! আর কান বন্ধ কইরা দে ছুট লাগাইছেন
মনে রইলো, নেক্সট পিকনিকে আপ্নের ভাগের রোষ্ট আমার!
হ আমি তারে জিগাইলাম আহত কি সে হইছিল কিনা! সে কয় যে সে আহত হয় নাই। আমি কইলাম তাইলে পরের বার আপনার চান্স। উনি কইলেন আইসেন দেখপোনে। কে আহত হয়! আমি চিন্তা করলাম কতা না বাড়াইয়া সময় মত কামডা কইরা দেখামু
কিন্তু হায় সময় আসিল না। বাস আসিল। নতুন বাসে কে কোথায় চইলা গেল বুঝিতে পারিলাম না।
"জয়িতা খেপে শেষ,কেম্নে এরা এই সময়ে এমনসব গান ধরে! আরে,খিদা’র কালে বন্ধুয়া তুই কোন শালারে!!" হি হি হি
আমরা তো খিদা ভুলে থাকার জন্য গান ধরেছিলাম!! অনেক সুন্দর ছবি গুলো!
ভালো লাগছে কিন্তু আপনাদের স্পিরিটটা। থ্যাঙ্কস কষ্ট করছেন বলেই দারুন পিকনিক হলো!
একঝাপি সুন্দরী নিয়া কণাপার সৌজন্যে পদ্মা নদীতে জলবিহারের অংশটাই সবচেয়ে ভাল্লাগছে
ওহ, এইবারেও তোমার টাইটানিক পোজ, ফারজানার নৌকা-না্চ - মজার হয়েছে
পোস্ট পইড়া না যাওনের দুঃখ কিছুটা লাঘব হইলো।
প্রতিবার পোষ্ট পড়েই পিকনিকের আমেজ নেবেন? জয়েন করেন না কেন?
অংশগ্রহনকারী সকল বন্ধুদের সহযোগীতায় চমৎকার এবং সফল একটা পিকনিক সম্পন্য করার জন্য সব্বাইকে ধন্যবাদ। হাতে হাতে সকল কাজ আপন ভেবে করে গেছেন। কেউ কোন ভুল ধরতে যায় নি... এই না হলে বন্ধুতা? জীবনের এই ছোট পরিসরে এই সব মুহুর্ত গুলো বেচে থাকাকে অনেক বেশী যৌক্তিক এবং আনন্দময় করে তোলে।
জয়ীতা জেবীনকে পিকনিকের জিকির শুরু করার জন্য ধন্যবাদ। সাঈদকে উদ্যোগ নেয়ার জন্য ধন্যবাদ... আর মেসবাহ ভাইকে মেসবাহ ভাই হওয়ার জন্যই ধন্যবাদ
...
তবে বিশেষ ধন্যবাদ প্রাপ্য দুইটা ছেলে... রনি এবং রাব্বি... পিকনিকের বাস, বাবুর্চি, বাজার, রান্নায় সহযোগীতা, এবং ফিরে আসা পর্যন্ত সবগুলো কাজ ব্যাপক পরিশ্রমের... কিন্তু কি হাসি মুখেই না করে গেল ছেলে দুটো... তোমাদের আসলে ধন্যবাদ দিলেও তোমাদের কাজের ওজনের সমনা হবে না... স্যালুট দুই বস কে
সকলের অবগতির জন্য জানাই... আমাদের বাস যখন খারাপ হয়ে গিয়েছিল... তখন রনি নতুন বাস আনতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করেছিল.. ছেলেটা সেই মুহুর্তে আমাদের বিষয়টা জানতে দেয় নি
... ব্যাথাটা চেপে হাসিমুখে আমাদের ঢাকা পর্যন্ত পৌছানোর ব্যবস্থা করেছে...
... তোর জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা...
সবশেষে সফল ভাবে পিকনিক সুসম্পন্য করার জন্য মাইকে সব্বাইরে ধইন্যা
ভাষন কিন্তু দারুন হইছে!! ১০ এ ১০!

ai khane amra o picnic korte chai...doya kore picnic spot r ekta contact number manage kore diben?
আহারে, লোকজন কি মজা কইরা আইলো !
আসিলেন না কেন জনাব? এখন যে দেখান বড়ো উদাস ভাব!!
রুনা'পু, মেসবাহভাইর বৌ আপ্নের কথা তুলছিল
পিকনিকের আরো কিছু ছবি পাওয়া যাবে আমার ও জেবীনের এ্যালবাম গুলো থেকে!
দেশে লাস্ট কবে পিকনিক খেয়েছি, মনে করতে পারিনা। পিকনিক বলে যে একটা বস্তু আছে ভুলেই গিয়েছিলাম।
কি সুন্দর পোস্ট যে হয়েছে জেবীন বলে বোঝানো যাবে না।
তোমার এই পিকনিক পোস্ট চেটেপুটে খেলাম।
থাঙ্কু আপু, কি দারুন করে জানালে্ন ভালো লাগা, মজা লাগছে শুনে
ইস সি রে! ছবিগুলো দেইখা মনটা খারাপ হয়ে গেল। টুটুল ভাই, কেন যে একবার ফোন দিলেন না? তবে আগামীবার মিছ করব না।
আপ্নে জানতেন না? এদ্দিন স্টিকি পোষ্ট রইলো পিকনিক নিয়া!
আফা আপনারে মাইনাস। এমন কইরা কেও পোস্ট লিখে? পোস্ট পড়ে মনের দূঃখে বনে যেতে ইচ্ছা করে।

এই জীবনে বোধহয় আর কোনদিন কোন পিকনিক ই পাবো না
আপ্নেদের জন্যেই না লিখলাম, নাইলে এত্তো কষ্ট কইরা কেউ লেখে নাকি! দেখেন না ইদানিং এইটারে আমরা একটা মরা ব্লগ বানায়ে ফেলছি! নিজের জায়গাটারে একটা পতিতভূমি করে ফেলছি যাতে কাক-পক্ষীতেও আসে না!
উপর থেইকা ৯নং ছবিতে শুভ ভাই বিশেষ ভংগিতে বইসা কি করে? একটু আড়ালে যাইতে পারতো। তার এই অবস্থায় ছবি তুলায় তীব্র নিন্দা জানাই।
পিকনিক মজার হইছে সেদিনি বুঝছি। একদিন আমিও আসুম ইনশাল্লাহ।
ছবিতো অন্যদের টার্গেট করে তো্লা, মাঝে দিয়া শুভ এই অকান্ডকর কাজ না কলেই কি হইতো না! এই ছেলেটার বুদ্ধি কবে হবে কন তো! সাম্নেরবার আপ্নে এলে এরে বকে দিয়েন রাফি'ভাই!
আমারে নিলা না
আপ্নারে সব্বাই ৪০সেরে সেরে নিছে!

এত্তো কাজ মাইনষে করে!!
অনেক মিস করি । প্রতিবার দেশে যাই কিন্তু পিকনিক যাওয়া আর হয় না। হয় আমি যাবার আগে না হয় আসার পর হয় । শ্বশুর বাড়ির যৌতুক নেয়া লোকজন দের দেখা পাই না আর চা ওয়ালা বা মেকানিক্স এর বউ দের দেখার সুজগ হইলো না। হবে এক দিন দেখা সবার সাথেই। সেই অপেক্ষাতেই রইলাম।
মন্তব্য করুন