ইউজার লগইন

দ্রোহ ও দহন ১৯০৪১৪

http://www.amrabondhu.com/meghkanya/7265
সিলেট যাবার জন্যে রূপা সিঙ্গাপুরে পাওয়া ট্রেনিংটা ও একরকমের এভয়েড ই করেছে। বাসের টিকেট ফেরত, হোটেল বুকিং ক্যান্সেল সব মিলিয়ে মেজাজটা চটাং হবার জন্যে যথেষ্ট। মাথা ব্যথায় অস্থির হতে হতে কোনরকমে রূপা একটা রিকশায় চড়ে বসে। বাসায় গিয়ে ঢুকতে পারলে হয়, সটান শুয়ে পড়বে। আজকে বাসায় মানুষজনও কম। মা বাবা গ্রামের বাড়ী, ভাই ভাবী আছে হয়তো। শরীর এত খারাপ লাগার কোন যুতসই কারণ খুঁজে পাচ্ছে না রূপা মোটেই।
এই গতানুগতিক গল্প লিখে আমি কি করব? রূপার গল্পটা তেমন জমছে না, এজন্যই তিনবছর হলেও লেখা হয় না। মেয়েদের সেই স্ট্রাগলের প্যানপ্যানে কাহিনী।
-রূপা তুই বাসায় আসার পরে কি হলো?
ফোনের সাউন্ডটা লাউড স্পীকারের মতো, মোবাইলের ভলিউম একটু কমিয়ে রূপাকে জিজ্ঞেস করলাম।
-আরে দোস্‌ আমি কি তখন জানি ঘটনা কোথায় প্যাঁচ খেয়েছে! আমি ঘরে ঢুকে কোনভাবে কাপড় চেঞ্জ করে আম্মুর রুমে শুয়ে পড়লাম কিছু না খেয়েই।
তারপর?
বিকেলে অনেক কষ্টে উঠলাম। বললাম আমি কিছু খাবো না এখনই ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে যাব। সবাই ভাবলো বরাবরের মতো আমর মাইগ্রেন পেইন উঠেছে। সেজন্য এ অবস্থা। আমি নিজেও তাই ভেবে গেলাম ঘুমাতে।
-সেই ঘুম কখন ভা্ঙ্গলো?
-ভোররাত চারটায়। সেইসাথে লুজমোশন। কোনভাবে ভোর চারটা থেকে সাতটা পার করলাম বাসার কাউকে ঘুম থেকে উঠালাম না।
-তোর জামাই
-আমার জামাই আগের মতোই বউ নামক ডিউটিতে দিচ্ছে কামাই।
হুম। আচ্ছা রাখি।

ফোন রাখতে রাখতে পরের কথা মনে পড়লো আমার। রূপার ভাবী ডায়রিযার এ অবস্থা দেখে রূপার ভাইকে দিয়ে ডাক্তার এনে স্যালাইন পুশ করে দিলো। ডাক্তার অনেকবার জিজ্ঞেস করলো রূপা প্র্যাগন্যান্ট কি না। রূপা সে আশা অমূলক ভেবে নিশ্চিন্তে স্যালাইন দিতে বললো ডাক্তারকে।
আঠারো উনিশ বিশ একুশ রূপা অফিসে গেল না। এর মাঝে রূপা মিরাকেল হলেও হতে পারে ভেবে প্র্যাগন্যান্সি টেস্ট করলো। পজিটিভ।
ল্যাব টেস্ট পজিটিভ।
রূপার পুরো পরিবার আনন্দে আত্মহারা।
এখন আমি বুঝতে পারছি আসলে রূপার গল্পটা এখান থেকেই শুরু।
রাজা রূপাকে খবর শুনেই এক অদ্ভূত হিসাব জানার প্রক্রিয়া শুরু করলো-
-তুমি ট্রেনিং নিতে গেলে কবে?
১৫ তারিখ গতমাসের।
-সোহেলর অফিসে গেলে কবে?
ঐদিনই।
-এই তো হিসেব মিলে যাচ্ছে।
কিসের হিসাব?
-না আমার ক্রেডিট কার্ডের।
রূপা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই প্রশ্ন শুনতে শুনতে একসময় জিজ্ঞেস করে ফেলে কি জানতে চাও সরাসরি বলো না। এক কথা আর কতবার জিজ্ঞেস করবে?
-ফ্যাটাসটা কি আমার?
রূপা কোন কথা না বলে ব্যাগ গুছাতে থাকে, বমির পরিমাণ এত বেশী যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ফরজ।
রূপবতী বউকে অকাজের রাজার সন্দেহ। রূপার কথা ভেবে আমার তেমন কোন দুঃখবোধ হয় না। ওর নিজের জীবনের এসব জটিলতার জন্যে ও নিজেই দায়ী। আমরা হাজারবার মানা করেছি নিজের সাথে যায় না এমন মানুষের সাথে জোট না বাঁধতে, রূপা কি এক ব্যালেন্সের ইকুয়েশন করতে গিয়ে পুরো সম্পর্কটাই একটা কোশ্চেন মার্ক এর উপর দাঁড় করিয়ে রেখেছে।
অহেতুক জটিলতা আমার চরম অপছন্দ, তাই রূপার জন্যে বাস্তবিকই আমার মনে কোন কষ্টবোধ দানা বাঁধে না, তারচাইতে বরং একে আমার একটা ইন্টারেস্টিং কেস স্টাডি মনে হতে থাকে। যেটার ডালাপালাগুলো বেশ হৃষ্টপুষ্ট।

পোস্টটি ১৩ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


চলুক। জমতেছে। সাথেই আছি।

তানবীরা's picture


চলুক। জমতেছে। সাথেই আছি।

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

মেঘকন্যা's picture

নিজের সম্পর্কে

ব্লগিং করছি 2005/2006 থেকে। এখানে এসে দেখলাম কেউ আগে থেকেই আমার "মেঘ" নিকটা নিয়ে নিয়েছে, যা আমি এত বছর ব্যবহার করছি।
ভালোবাসা লেখালেখি।নিয়মিত লিখতে চাই। জীবনের কোন একসময় শুধুই লেখক হিসেবে স্বীকৃত দাবী করব Smile এই আশায় বেঁচে থাকি...