বাবার সার্টিফিকেট
বিজয় দিবসের আনন্দ কিংবা ভাললাগা একজন সাধারণ মানুষের যতটুকু থাকে তার চেয়ে অনেক বেশি থাকে একজন কিশোর মুক্তিযোদ্ধার।যে মুক্তিযোদ্ধার বয়স ছিল ১৯৭১ সালে মাত্র ১২ বছর।এই লেখাট শুধু আবেগের বশে লিখা।বলে কয়ে বাবার প্রতি ভালবাসাটা শুধু লোকদেখানোই।তবু লিখি..... হাজার হোক তিনি আমার বাবা।জন্মদাতা বাবা।একজন দরিদ্র বাবা।যিনি ১০ টাকা, ১৫ টাকা, ২০ টাকার হোমিও ঔষধ বিক্রি করেন।
বাস্তব জীবনে দেখি অনেকেই গর্ব করে বলে আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা। আমার দাদা মুক্তিযোদ্ধা। কিছুটা খারাপ লাগে।একদিন বাবাকে জিজ্ঞাস করলাম " বাবা তোমার সার্টিফিকেট নাই কেন?" উত্তরে বাবা শুধু হাসেন।মাঝে মাঝে বলেন, কি করবা সার্টিফিকেট দিয়ে? উত্তরে বলি - আমরা বড় হইতেছি না??আমাদের লেখা পড়া, চাকুরী সব কিছুতেই অন্যদের থেকে বেশি সুবিধা পাব।তুমি কি আমাকে প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়াতে পারবা??কোন বিপদ হলে তুমি ১০ হাজার টাকা এখন বাহির করে দিতে পারবা?? বাবা শুধুই হাসেন।আমি অবাক হয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে থাকি।কি নিষ্পাপ হাসি!
হ্যাঁ, আমি সেই বাবার ছেলে যে বাবা সার্টিফিকেট আনতে গিয়ে দেখে যে চেনাপরিচিত এক রাজাকার সার্টিফিকেট তুলতে যায় এবং তাকে দেয়াও হয়।যে বাবা সার্টিফিকেট নিয়ে তখনি ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে।সেই বাবা,যে বাবা তার ছেলেকে সরকারি মেডিকেলে ভর্তি করার ৫০০০ টাকাও ধার করে এনেছিল।যে বাবা তার মেডিকেল পড়ুয়া ছেলেকে মাসে ২৪৫০টাকার বেশি দিতে পারে নি।কখনো তার ছেলের মেডিকেলে যায় নি।
থাক না, এই সার্টিফিকেট আমার কাছে একটা সাদা কাগজের মতই মূল্যহীন।
(সবার কাছে ক্ষমা চাই।এটা আমার দ্বিতীয় লিখা। ভুল হলে মাফ করবেন)
মন্তব্য করুন