ধারাবাহিক রম্য নাটিকা 'অর্কাযকর গণতন্ত্রঃ পশুদের বিচার'
পড়ুন, ভাবুন--এ দেশের বিচার ব্যবস্থা ছোটদের ধারাবাহিক রম্য নাটিকা 'অর্কাযকর গণতন্ত্রঃ পশুদের বিচার' এর মত কিনা। নাটকের আবেদন দিন দিন বাড়ছে। এ দেশে এখনো অপরাধ ধরা পড়ে না, পড়লেও বিচার হয় না।
স্টপ্, স্টপ্, স্টপ্
সবাই কর চুপ,
আমি হচ্ছি হাতি
সবার দেহের চাইতে বড়
তাইতো বিচার পতি।
সবার বিচার করব আমি
হোক না কেহ আমার নাতি।
বটবৃক্ষ হার মেনে বলে
সে নাকি আমার ছাতি ।
তাহলে নির্বোধ পশুগণ
নিশ্চয় বুঝতে পেরেছ
আমি কত বড় হাতি!
প্রথমে আমি গরুকে বলছি,
গরু, তোমার কি অভিরুচি
হুজুর, আপনি নিজেই জানেন
আমি কত উপকারী
করি নাকো কারো ধারধারী ।
অথচ বাঘ কেন আমাকে খায়
আমি যে বড় অসহায়!
বাঘ বলে, হুজুর, আমি খেতে চাই হরিণ
বান্দর বড় মলিন
আগে থেকেই বলে দেয়,
বাঘ আসছে হরিণ ভাই
বাঘ আসছে হরিণ ভাই।
হরিণ বলে, হুজুরগো
এই বাঘকে আমার সবচেয়ে বড় ভয়,
ওর জ্বালা নাহি সয় ।
ছাগল, ভেড়া, ঘোরা বলে, হুজুর
ও শুধু আমাদের সবাইকে খায়।
হাতি বলে, না, না, না-
এটাতো বেশী ভাল নয়
কিহে পেটুক বাঘ,
মাথা নিচু করে আছ কেন ভাই!
বুকে ঠ্যাং দিয়ে বল-
এতগুলো কথার মধ্যে
একটুও মিথ্যা নাই।
বাঘ বলে, জেঁ হুজুর
ওরা যা বলেছে তাই ।
কেন? কেন? কেন?
তুমি ওদের খাও কেন?
বাঘ বলে, নইলে আমার
বাঁচার উপায় যে নাই।
হাতি বলে, তাই?
নিজের খাবার নিজে খাবে
অন্যকে কেন কাঁদাবে!
তুমি পানি খাবে, ঘাস খাবে
ট্যাংরা খাবে, ইঁচা খাবে, বিছা খাবে
তারপর ঘুম যাবে।
হঠাৎ করে চিৎকার করে
বলে পাতিহাঁস,
পানিতে যদি যায় বাঘ মামা
আমরা থাকব কই
মাছতো আমার সই
কেমন বিচার করলেন আপনি
আমরা যাই কই?
হঠাৎ করে শৃগাল বলে
হুক্কা হুয়া হুয়া হুজুর,
নালিশ করব গুজুর-গুজুর,
কুকুর আমার জন্ম শক্র
ওর বিচার আমি চাই।
যখন তখন দেখলে আমায়
করবে ঘেউ ঘেউ
রাজার বাড়ী করব চুরি
মুরগী আর হাঁস
কুকুর মিয়া রাজার কাছে
কইরা দেয় সব ফাঁস।
মুরগী বলে, হাতি দাদা
শিয়াল আমাকে খাওয়ার জন্য
চোরের মত করে ভান
সামনে পাইলে ঠ্যাং ধরে
ফস্ কইরা দেয় টান
এই শিয়ালের জন্য পারি না যাইতে
বাড়ীর বাইরে পাটক্ষেতে
শিয়াল সিকদার বড় পাজী
শয়তানের মত থাকে ওত্ পেত্।
হাঁস বলে, হাতি দাদা
আপনি হলেন গিয়া জ্ঞানদাতা
এই বাঘডাসা আর শিয়াল মিয়ার
বড়ই খারাপ মুখ
পানি থেকে ডাঙ্গায় উঠে বিশ্রাম কর
সেখানেও ওদের জন্য নাই সুখ।
ঘোড়া বলে, জাঁহাপনা
বানর নাকি ফলগাছের
বয়ে এনেছে দুখ,
সে নাকি ফলবৃক্ষ কূলের
ক্ষতি করছে যুগযুগ।
সেনাপতি বানর বলে
শান্তির পূজারী জাঁহাপনা
আমি বলছি কি,
শিয়াল আর বাঘডাসার
নাই কোন সাজ
কবর থেকে খায় শুধু
মরা পঁচা লাশ
আমার বাণী না শুনেন যদি
ওদের গন্ধে আপনার
হইব খুব বড় রকমের সর্দি
তাই আজকের মত ছাড়েন আপনি
শ্রদ্ধেয় বিচারের গদি।
(প্রচন্ড হৈ চৈ । বিচার চাই-
বিচার চাই-বিচার চাই-
সেনাপতির বিচার চাই)
স্টপ্, স্টপ্, স্টপ্
সবাই কর চুপ্
(প্রস্থান)
(চলবে)





চলুক।
বাহ্! চলুক তারপর।
মন্তব্য করুন