পোড়া রোগীর মিছিল
পোড়া রোগীর মিছিল
ডেস্ক রিপোর্ট
টাইম নিউজ
undefined
ঢাকা: পোড়া রোগীদের চিকিত্সাার একমাত্র জায়গা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট৷ শুধু রাজধানী নয়, দেশের আর কোথাও পোড়া রোগীদের চিকিত্সাের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতাল বা ইউনিট নেই৷
দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় অগ্নিদগ্ধ রোগীর সংখ্যাও অনেক বেড়ে গেছে৷ রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো যানবাহনে আগুন দেয়া হচ্ছে৷ অগ্নিদগ্ধ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ৷ কিন্তু এই পোড়া রোগীদের চিকিত্সা দিতে গিয়ে চরম হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষায়িত এই ইউনিটটি৷ সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিরোধী দলের ডাকা অবরোধের মধ্যে রাজধানীর শাহবাগে বাসে পেট্রোল বোমা হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা৷ এতে ১৯ জন দগ্ধ হন৷ এর মধ্যে মারা গেছেন দুই জন৷
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শঙ্কর পাল জানন, বার্ন ইউনিটে বর্তমানে রোগীর ধারণ ক্ষমতা ১৫০ জনের মতো৷ কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে ভর্তি ছিল ৩৫৫ জন৷ বিছানা ছাড়াও ফ্লোরে বা বারান্দায় রোগীদের চিকিত্সাা দেয়া হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘পোড়া রোগীদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের কোনো সুযোগ নেই৷ কারণ বাংলাদেশের অন্য কোথাও পোড়া রোগীদের চিকিত্সানর বিশেষায়িত কোনো হাসপাতাল নেই৷
বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও এই চিকিত্সাতর কোনো ব্যবস্থা নেই৷ তাই যত কষ্টই হোক রোগীদের ফেরত দেয়া হয় না৷ তাদের হাসপাতালে রেখেই চিকিত্সাপ করতে হচ্ছে৷''
ডা. পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, ‘‘রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পোড়া রোগীর সংখ্যা এখন অনেক বেড়ে গেছে৷ আগে যেখানে বর্হিবিভাগসহ বিভিন্নভাবে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১১০ জন রোগীকে চিকিত্সাহ দেয়া হতো, এখন সেখানে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা দেড়শ' পার হয়ে যাচ্ছে৷''
রাজনৈতিক সহিংসতায় আসা রোগী আর সাধারণ দুর্ঘটনায় আসা রোগীদের ভাগ করে একটা হিসাব কিছুদিন থেকে বার্ন ইউনিট কর্তৃপক্ষ রাখতে শুরু করেছে৷ গত এক মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার ১০৭ জন রোগীকে চিকিত্সার দিয়েছে ঢাকা মেডিকেলের এই ইউনিট৷ এর মধ্যে এখনো ২৯ জন ভর্তি আছেন৷
যাদের ৯ জনের অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন৷ হাসপাতালে ভর্তি থাকা অন্য রোগীদের সবাই সাধারণ দুর্ঘটনার শিকার৷ তবে চিকিত্সাা না নিয়ে কাউকে ফেরত যেতে হয় না৷
নিজের হাতে প্রতিষ্ঠা করা ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, খুবই ছোট পরিসরে এই ইউনিটটি কাজ শুরু করেছিল৷ কিন্তু পোড়া রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এর শয্যা একশ' থেকে বাড়িয়ে ১৫০ করা হয়েছে৷ এখন আরো বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন তিনি৷
ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ওষুধপত্রে কোনো সংকট নেই বলে দাবি করেন তিনি৷ শিক্ষানবিশ চিকিত্সাকসহ বর্তমানে ৬২ জন চিকিত্সেক এখানে দায়িত্ব পালন করেন৷ ঢাকা মেডিকেলের পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বার্ন ইউনিট খোলার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটা এখন সময়ের দাবি৷ সবাই মিলে কিছু কিছু রোগীর চিকিত্সাে দিলে কোনো রোগীকেই আর বিনা চিকিত্সাবয় মারা যেতে হবে না৷''
গত ২৬ অক্টোবর থেকে শনিবার পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার ৮ জন বার্ন ইউনিটে চিকিত্সাইধীন অবস্থায় মারা গেছেন৷ এখন যে ২৯ জন ভর্তি আছেন তার মধ্যে একটি ঘটনারই ১৬ জন৷ এর মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন ডা. পার্থ শঙ্কর পাল৷ সূত্র: ডিডব্লিউ
ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের পরিচালক সামন্ত লাল সেন,
চিকিৎসক ও মেডিকেল ছাত্র সমাজ
Community · 1,425 Likes
Options for this story
একটি স্বাক্ষরের অভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটটি রোগীদের পূর্ণাঙ্গ সেবা দিতে পারছে না। প্রায় দুই বছর ধরে ইউনিট প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরসংক্রান্ত সুপারিশ আটকা পড়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।
সূত্রগুলো বলছে, বার্ন ইউনিট প্রকল্পকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল ২০১১ সালের মার্চে। সুপারিশ করেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকির ও মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মুহম্মদ হুমায়ুন কবির।
সারা দেশে আগুনে পোড়া রোগীদের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্রটিতে প্রতিদিন ধারণক্ষমতার তিন থেকে চার গুণ রোগী বেশি ভর্তি থাকে। ইউনিটটি ১০০ শয্যায় রূপান্তরের প্রশাসনিক আদেশ হলেও বরাদ্দ বাড়েনি, ওষুধের জোগান অপ্রতুল। প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে না নেওয়ায় চিকিৎসকেরা নিয়মিত বেতন পান না, কর্মচারীদের ৩৭ জন কোনো বেতনই পান না।
বার্ন ইউনিটকে কেন রাজস্ব খাতে নেওয়া হচ্ছে না, জানতে চাইলে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মোদাচ্ছের আলী ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী কেউই প্রথম আলোর কাছে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। আ ফ ম রুহুল হক ও স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজউদ্দীন দেশের বাইরে থাকায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে জনবল নিয়োগ হয়েছিল বলে সরকার ধারণা করছে, এরা সবাই ওই সরকারের সমর্থক। সে কারণে প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া আটকে আছে।
জানতে চাইলে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জাতীয় প্রধান সমন্বয়কারী সামন্ত লাল সেন প্রথম আলোকে জানান, আগুনে পোড়া, অ্যাসিডে ঝলসানো মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট। প্রতিদিন ৫০ শয্যার এই ইউনিটে ভর্তি থাকে প্রায় তিন শ রোগী। জরুরি ও বহির্বিভাগে সেবা নেয় আরও প্রায় আড়াই শ রোগী। নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর জাতীয় সংসদে বার্ন ইউনিটের জন্য ধন্যবাদ প্রস্তাব আনা হয়েছিল।
১৯৯৮-২০০৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বার্ন ইউনিট স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয়। জনবল নিয়োগ হয় ২০০৩ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। ওই প্রকল্পে ৭৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বার্ন ইউনিটকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের বিষয়ে সুপারিশ শুরু করে বার্ন ইউনিট কর্তৃপক্ষ। সরকারের এই মেয়াদে অর্থ বিভাগ ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয় থেকে বিধিবদ্ধ আদেশ (এসআরও) জারি করা হয়, ’৯৭ সালের পরের কোনো প্রকল্প রাজস্ব খাতে নেওয়া হবে না। পরবর্তীকালে বার্ন ইউনিটকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় বিশেষ এসআরও জারি করে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে, তাতে কর্মকর্তারা বলেন, অর্থ বিভাগ কারিগরি ৫৯টি পদে নতুন করে নিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু বার্ন ইউনিটের চিকিৎসা, চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যান্য চিকিৎসা থেকে স্বতন্ত্র এবং পদ্ধতিও আলাদা। এই প্রকল্পে নিয়োজিত জনবল বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, এদের অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়। প্রস্তাবটিতে বিশেষভাবে কারিগরি পদে নিয়োজিত লোকবলকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়।
সূত্রগুলো বলছে, প্রকল্পটিতে শুরু থেকেই চতুর্থ শ্রেণীর কোনো কর্মচারী ছিল না। প্রকল্প শুরুর সময় থেকে ৩৭ জন শ্রমিক বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে ইউনিটটিতে বিনা বেতনে কাজ করছেন। মুহম্মদ জুমন নামের এক কর্মচারী জানান, চিকিৎসকেরা পকেট থেকে শ্রমিকদের টাকাপয়সা দিয়ে থাকেন।
বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসান আসকরী নাজমুল আহসান, রেসপিরেটরি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ এনামুল হক, এনেসথেসিয়া বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবদুর রহমান, বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন, বার্ন ইউনিটের অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, চক্ষু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ মাকসুদুল ইসলাম, নাক কান গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এএফ মহিউদ্দিন রক্ত পরিসঞ্চলন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. হুসনে আরা বেগম, বার্নের আইসিইউ বিভাগের অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর কবীর ও বার্ন ইউনিটের অধ্যাপক সাজ্জাদ খোন্দকার। - See more at: http://www.thedailysangbad.com/index.php?ref=MjBfMTJfMDFfMTNfMV8xM18xXzE0ODg1MA==#sthash.3ShceoPR.dpuf
- See more at: http://www.timenewsbd.com/dehaghari/2013/12/01/18029#sthash.Wb2iSp1P.dpuf





মন্তব্য করুন