ইউজার লগইন

বয়ে নিয়া চলা যাপিত জীবন!

ব্লগ এখন আর আমাকে টানে না।আর আগের মতো পড়ার ধৈর্য পাই না ব্লগের কোন পোষ্ট।ফেসবুকেই এখন বেকুবের মতো বসে থাকি।সেইখানেই যা পড়ার চিরকুট, সংযোগ তা দেখে নেই।তাই ব্লগের দুনিয়া আমাকে আর মুগ্ধ করে না,সকাল হলেই দেখতে বসি আগের মতো যে ব্লগে কি পোস্ট আসলো!এখনকার দিন গুলো কাটাই অন্যরকমের।সকাল হলেই নেটে বাংলা পত্রিকা পড়ি।ফেসবুকে লোকজনের ভাবনা জানি।চ্যাটে কারো সাথে বাতচিত করি।এরপর এমবিএ ভর্তি বিষয়ক বইপত্রের পাতা উল্টাই।এরপর নাস্তা করে চায়ের দোকান তাও আবার আমার বাসা থেকে ১৫ মিনিটের হাটা পথ।চায়ের দোকানে বন্ধু বান্ধব আছে কিছু যাদের সাথে পরিচয় ঐখানেই।সেইখানে নানা চাপা চুপা পিটায়া চারটার দিকে রুমে ফিরি।সেইখানে দেখি মামা আমার জন্য না খেয়ে বসে আছে।বেচারা মামা!জানলোও না তার ভাগিনা কত আকামের লুক:(

কি আর করা ভাত টাত খেয়ে আবার ফেসবুকেই কিছুক্ষন ঝিমাই।সন্ধ্যায় আবার চায়ের দোকান আবার ১৫ মিনিটের হাটা।প্রতি দিনই কোনও না কোন রিয়েল লাইফ বন্ধু আমার খোজে আসে তার সাথে গপ্পসপ্প করি।পকেটে টাকা থাকলে ক্যাম্পের বাজারে যাইয়া চাপ টাপ খেয়ে আসি।না থাকলে আলমের হোটেল আমার একটা বাকীর খাতা আছে সেইখানে পুরি-চপ খাই আর কি!এইভাবে হয় রাত দশটা তখন ফিরি বাসায়।টিভিতে চ্যানেল চেঞ্জ করি আর রাতের খাবার খাই।টিভিতে কি আর দেখার চুপচাপ মিরাক্কেল দেখি আর হাসি খেক খেক করে।এরপর টক শো মক শো দেখে পিসিতে বসি।গান বাজনা নামাই।এই মাসে তিন জিবি লাগাইছি জিপির ভালৈ চলতেছে।কিন্তু ভ্যাট সহ ৮০৫ টাকার বাশ!কি আর করা এইভাবেই চলছে দিন!

১৯ মাস আগে আমার জীবন যাপন ছিলো আরেক ধরনের।বাবা মা ছিলো আরাম আয়েশে কাটতো দিন।নিয়মিত ভার্সিটি যেতাম না বাসাতেই থাকতাম।আর ব্রডব্যন্ডে নেট চালায়া দিন পার করতাম।ড্রয়িং রুমে বিশাল টিভি মনে চাইলে যা খুশি দেখা যেতো।আম্মু ছিলো সব সময় খেয়াল রাখতো।নিজের পছন্দ খাবার খেতাম ও পেতাম ইচ্ছা মতো।চায়ের দোকানেও যেতাম তবে সেটা বাসার একগেয়ামী কাটাতে।বন্ধু বান্ধব আসতো আড্ডা মাড্ডা দিয়ে ভালো দিন পার হতো।গত ১৯ মাসে আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি আগে কি সুখে ছিলাম।এখন যতই থাকুক স্বাধীনতা তা আর ভালো লাগে না মোটেও!

এই গত ১৯ মাসে আমি ঠিক মতো সকালের নাস্তা খাবার অভ্যাসটা হারিয়েছি।নানা কাজে ও ক্লাসের জন্য দৌড়াও তাই খাবার দাবারের কোন স্টেশন নাই।বুয়ার জঘন্য প্রকৃতির রান্না গোগ্রাসে খাই।এখন খাবার দাবারে আর আগের মত পছন্দ বা স্বাদ খুজি না যা পাই তাই খাই।নানা কিছিমের লোকের সাথে মিশতে হইছে।যাদের ভেতরে মাদকাসক্ত ও বাটপারটাইপের ছেলেই বেশি।তবে ভাগ্য ভালো সবসময় আলাদা ভাবেই থাকছি তাই নিজের ১ টা নতুন মোবাইল ছাড়া আর কিছুই হারাই নাই।এখনকার বাসাটা অনেক ভালো।চারতলার ছাদে জানালাটা বিশাল।আকাশ দেখা যায় মোটামুটি বড় ছাদে বড় একটা রুম আমাদের।থাকি আমি আর আমার আপন মামা।মামা বড়ই ভালো মানুষ।বাশি বাজায় দারুন।শুনে মুগ্ধ হই।মামার কারনেই বৈষয়িক কোনও টেনশন আমার নাই।মাসের শুরুতে টাকা দিয়ে দেই মামা আমাকে চালিয়ে নেয়।এই নিয়া তিন বারের মতো বাসা চেঞ্জ করতে হইছে।যখনই মনে হইছে পরিবেশ সুবিধার না তখনি বাসা ছাড়ছি।আর এই সব যাবতীয় গ্যাঞ্জাম নিকোলাস কেজের মতো মোকাবেলা করছে আমার মামা!আমি কিছুই করি না খালি সঙ্গ দেয়া ছাড়া।বুয়া আসে না মাঝে সাঝেই তখন রান্না করে মামা।মামার রান্না বুয়ার চেয়ে হাজারগুনে ভালো।১৯ মাস জীবনে একটাই বড় প্রাপ্তি যে নিজের আপন মামা কে নতুন করে আবিস্কার করা।নয়তো মামা আমার বড় ভাইয়া্র বয়সী তাই একটু দূরত্ব রেখেই চলতাম।আর বাহিরকে ভালো লাগা।আমার এখন বাহিরে থাকতেই ভালো লাগা।জামালপুর, চট্টগ্রাম,সিলেট খুলনা রাজশাহী ঘুরে বেড়ানোতেও অনেক মজা পাইছি।আর পাইছি নানান কিছিমের দাওয়াত।যেইখানেই গেছি খালি- পেটে ডাউনলোড করছি।এই ভাবেই চলে গেলো ১৯টা মাস।আম্মুর জন্য মাঝে মধ্যেই মন খারাপ হয় ভীষন।তখন হালকা পাতলা চোখের পানি পড়ে।দিন চলে যায় এই ভাবেই।সময়ও কেটে যায় ঘড়ির কাটায় লাফিয়ে লাফিয়ে।

জেবীন আপু চলে গেলো দেশ ছেড়ে।মনটা খারাপ হলো।আর কোনো রবি নাম্বারে আমার ফোন দেয়া হবে না আপুর খোজ খবর নেয়ার জন্য।আর আপুও আমাকে ফোন দিবে না "শান্ত অমুক জায়গায় আসো"!

কি আর করা জীবন এরকমই।হাজার হাজার কষ্টকে পাথর চাপা দিয়ে সুখে থাকতে হয় বেচে থাকার আনন্দে!

পোস্টটি ৮ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

ফিরোজ শাহরিয়ার's picture


লেখাটি পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল।

আরাফাত শান্ত's picture


মন খারাপ কইরা লাভ নাইক্কা!
চিয়ার আপ...

প্রিয়'s picture


আসলেই আব্বু- আম্মু থাকলে মূল্য দেইনা। আর দূরে গেলেই হাড়ে হাড়ে টের পাই আব্বু- আম্মু কি জিনিস।

আরাফাত শান্ত's picture


তবে আব্বু আম্মু বুঝে।তাই ব্যাপক আদর যত্ন করে বাড়িতে গেলে মনে হয় যেনো আমি এলাকার চেয়ারম্যান Smile

রায়েহাত শুভ's picture


Sad Sad

আর যাই হৌক, আম্গো মত অসামাজিক টাইপের হৈয়া যাইও না...

আরাফাত শান্ত's picture


অসামাজিক হওয়ার কুনো চান্স নাই!

তানবীরা's picture


বাবা মাও দেশে, আপনেও দেশে ঘটনা কি? আগের দিনে বউদের মতো বাপের বাড়ি নাইওর যাওয়ার কান্না কীসের? বুঝলাম না Sad

আরাফাত শান্ত's picture


বাবা মা জামালপুরে
আমি থাকি ঢাকা Sad
তাই আছি কষ্টে
শুধু লাগে একা Sad(

জেবীন's picture


নিকোলাজ কেইজ মামু!! Laughing out loud

হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি আগে কি সুখে ছিলাম।এখন যতই থাকুক স্বাধীনতা তা আর ভালো লাগে না মোটেও!

সত্য! Sad

তাতা'পু@ শান্ত আগে বাবা-মার সাথে থাক্তো, এখন উনারা ঢাকা ছেড়ে চলে গেছেন, পোলা এখন স্বাধীন হালে আছে! Smile

সময় অসময় আপুটার খোজঁ নিতে মনে করেই! মনে থাকবেই সব! Sad এমবিএ'টা শুরু হোক সব লাইনে চলে আসবে ইনশাল্লাহ!

১০

আরাফাত শান্ত's picture


দোয়া কইরেন আপু
ভাল থাকেন আপনিও!

১১

মেসবাহ য়াযাদ's picture


শান্ত'র লেখাটা পড়ে মনে হলো পোলাটা ম্যাচিউড মানে লায়েক হৈছে... Wink
ব্যাপার না, চিয়ার আপ Big smile

১২

আরাফাত শান্ত's picture


থ্যাঙ্কু ভাইজান!

১৩

টুটুল's picture


সেটাই Smile

১৪

আরাফাত শান্ত's picture


ওক্কে!

১৫

চাঙ্কু's picture


নিকোলাজ কেইজ মামুর ভাইগ্না , আজকাল খালি মন-খারাপ টাইপ কথা-বার্তা কও কেন। আফসুস

১৬

আরাফাত শান্ত's picture


তুমারেও আগের মত পাওন যায় না নেটে!
ভালো থাকো চানকু বাবু Smile

১৭

লীনা দিলরুবা's picture


পোলাটা কি সুন্দর লেখে কিন্তু এত অনিয়মিত...

১৮

একজন মায়াবতী's picture


সেইটাই .............. জীবন এরকমই

১৯

নাঈম's picture


হুমমম........

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

আরাফাত শান্ত's picture

নিজের সম্পর্কে

দুই কলমের বিদ্যা লইয়া শরীরে আমার গরম নাই!