আবারো টিভি দেখা আবারো ঈদ!
গত তিন দিন ধরে ঢাকায় আসছি।কিন্তু দিনগুলো যে এত ব্যাস্ততায় গেলো টেরই পেলাম না।যাই হোক এসেই পোষ্টটা দেয়া উচিত ছিলো কিন্তু সময় পাই নাই।তাই টপিকটা বাসি হয়ে গেলো।কাহিনী সেই আগের মতই।ভাবছিলাম এবার ঈদে বাড়ীতে যাবো না।চিটাগাং যাবো।কিন্তু আম্মুর ঝাড়ি খেয়ে সব প্ল্যান গেলো জাহান্নামে।যেতে হবেই বাড়ীতে।টিকেট নিয়ে ঝামেলা হয় নাই।মামাই কাটছে।ভয় ছিলো যমুনা/এগারোসিন্ধুর ১০-১২ টা বগী আগুনে পোড়ার পরে সত্যিই ট্রেন আসবে কিনা?আসলেও কবে?দেখলাম তিন ঘন্টা লেটে ট্রেন হাজির।মনে ঈদের খুশি।কিন্তু ট্রেনে উঠে দেখি আমাদের যে সীট তা থেকে শুরু করে৩০ টা সিট নাই।আগেই বলছিলাম নিকোলাস কেইজের মতো মামা আছে আমার।তাই টিটি কে এনে কথা বারতা কিছু শুনানো হলো।সাথেই সাথেই ট্রেনের যে পাউয়ার সিষ্টেম আছে সেখানে জায়গা হলো ঠিক মতো।কিন্তু জেনারেটরের আওয়াজে টেকা দায়।কিন্তু আস্তে আস্তে ট্রেন চলার সাথে সাথে আওয়াজো সহ্য হয়ে গেলো।মাঝরাতে বাড়িতে আসলাম।শুরু হলো আমার গৃহবন্দী জীবন।তা নিজের ইচ্ছাতেই।জামালপুরে আমার কিছুই ভাল্লাগেনা।নিজেকে অদ্ভুত আগন্তুক মনে হয়।লোকজন গুলো কেমন জানি?জানি না কেনো?এই নিয়ে আরেক দিন বলবো।আজ এই বিষয় বাদ।পত্রিকা আসে না বাসায়।তাই ধার করা স্যামসাং করবি আর ২১ ইঞ্চি টেলিভিশনি আমার দিন যাপনের সাথী।আর আব্বু আম্মু মাঝে মধ্যে এসে গল্প করতেছে এই তো।তবে এবার আর গত বারের মতো আর টানা টিভি দেখতে পারি নাই।কারন বাপ মারে দেখানোর জন্য ১১ টার পরে এমবিএ এডমিশন গাইড নিয়ে পড়তে হইছে।তাতে তারা খুশি।কিন্তু সকাল থেকে শুরু করে রাত ১১ টা পর্যন্ত টিভি চলছেই।আর পিডিবি দয়ায় একবারো কারেন্ট যাই নাই।
এবার টিভিতে কি দেখলাম তা নিয়ে বলি।প্রায় সব চ্যানেলেই ইদ উপলক্ষে কিছু ৭ পর্ব ৬ পর্বের নাটক ছিলো।এর ভেতর বাংলাভিশনের ব্যাবসা সফল নাটক আরমান ভাই দ্যা জেন্টেলম্যান।নাটকটা তে জাহিদ হাসানের কাতুকুতু দিয়ে ঢাকাইয়া ভাষায় হাসানোর চেষ্টা সফলই বলতে হবে।কিন্তু নাটক হয় ৬ মিনিট এড হয় ১৪ মিনিট।কি জঘন্য!সেই বিরতিতে এনটিভির পর্বের নাটক রোড টু সাকসেস।আলভি আহমেদ ভালো লিখছে চেষ্টাও করছে ভালো বানানোর কিন্তু রিয়াজ,কুসুম শিকদার,আরেফীন হাসান ইমাম এদের অভিনয় মোটেও যুতের হয় নাই।আর কুসুম শিকদার ডায়লগ বলার সুরত দেখলে মনে হয় মুখ বরাবর জন সিনার মতো লাথি মারি।সালাউদ্দীন লাভলুর দুইটা ধারাবাহিক মনে হয় দেখাইছে দুই চ্যানেলে।তাতে লাভলু মার্কা ফ্লেভার ছিলো।লারনেড ম্যান আর একটা কি জানি কি পলিটিকস নামটা খেয়াল নাই।লাভলুর এখন একটা বাতিক হইছে এখন নাটকে খালি মেসেজ দিতে চায়।এই সব মেসেজ দেখলে আমার খালি হুমায়ুন আহমেদের একটা ডায়লগ মনে পড়ে যে "আমরা সব জায়গাতেই খালি মেসেজ দিতে চাই কিন্তু নিজেরা কোথাও মেসেজ নেই না।আর সব জায়গা শিক্ষা জিনিসটা চলে না"।তবে জাহিদ হাসানের অভিনয় ভালো হইছে।দিনে দিনে মনে হয় উনি নিজেকে ছাপিয়ে যাবার চেষ্টায় আছেন।
এবার আসি ১ পর্বের নাটক নিয়ে।১ পর্বের নাটক লিখতে গেলে তিনটা পোষ্ট দিতে হবে।তাই ছোট করেই বলি।বিশ্বাস করেন বন্ধুগন খালি বৈশাখী আর মাছরাঙ্গা বাদে আমি সব চ্যানেলের বেশীর ভাগ নাটকই দেখছি।কারন খালি রিমোট টেপার উপর ছিলাম।হানিফ সংকেত যথারীতি তার ধারার নাটক বানাইছে ভালোই হইছে বলা যায়।সেই দিনই হইছে একটা জঘন্য নাটক এনটিভিতে।নাটকের নাম সেকেন্ডহ্যান্ড।নাটকে জাহিদ হাসান একজন চাকুরে যে সবসময় সেকেন্ডহ্যান্ড জিনিস কেনে।এরপর সে কিছু খামে আসা ছবি দেখে ধারনা করে তার বউটাও সেকেন্ডহ্যান্ড।এরপর নাটক শেষে আমরা জানতে পারি তার বউ সারিকা ফাস্টহ্যান্ড।এই রকম জঘন্য কুরুচি নাটক কেমনি বানায় মানুষ।এই নাটকটার কথা আমার অনেকদিন মনে থাকবে এই কারনেই যে নাটক গল্প কতটা অশ্লীল হতে পারে।ফারুকীর ছোট ভাই নাটকটা ভালো হইছে।কিন্তু অতি অভিনয় খারাপ জিনিস এইটা মনে রাখলে সেও ভালো করবে।নাটকটার ডিটেইলিং,ক্যামেরার কাজ নাখাল পাড়ার বিভিন্ন চিপা গলির সিন খুব দারুন ছিলো।তবে এতে ফারুকীর অবদান নিশ্চই কম না।হুমায়েন আহমেদ নাই কিন্তু তার এ্যাসিটেন্ট খারাপ বানায় নাই।কিন্তু চ্যানেল আই এতো এড কেম্নি দেখায় তাতেই অবাক হই।এনটিভির জুতা নিয়ে একটা নাটক ছিলো সেটাও মোটামুটি হইছে।বাংলা ভিশনেও দেখার মতো কিছু নাটক ছিলো।যেগুলারে গড় পড়তা বলা যায়।এটিএনের নাটক গুলা কেমন যেনো লাগছে তেমন দেখতে ভালো না গল্প ভালো না।তবে দাদামশাই নামে সালাউদ্দীন লাভলুর নাটকটা হাসাইতে পারছে।এছাড়া সব নাটক টেলিফিল্ম ই ছিলো সজল অপুর্ব সারিকা নওশীন মিলন ময়।একটা জিনিস দেখছি যেগুলা নাটকে এরা ছিলো একটাও ভালো গল্প না ভালো ডিরেকশনো নাই।শখের অভিনয় দেখলে আমার খালি তারে থাবড়ানোর শখ জাগে।কেনো জানি না!চ্যানেল আইয়ের নরমাল নাটক গুলাকে বলা যায় নিম্নমানের এক গোডাউন।যেমন একটা নাটকের নাম বলি খুনসুটিকে দিলাম ছুটি।নায়িকা দিতির বানানো।তিনটা গান,মোনালিসা হাসি আর অপুরবের ছ্যাবলামো।গল্পটাও সেই রাজ্জাকের আমলের সিনেমার গল্পের মতো মেকিং তো যাচ্ছে তাই।এই সব লোকজন কেমনি দেখে?অনেক ভালো অভিনেতা যেমন আজাদ আবুলকালাম কিভাবে এইসব নাটকগুলাতে অভিনয় করে বুঝি না!নাটকের ভিতরে দেখি খালি আরেফিন রুমী রিদয় খান মার্কা গানের ছড়াছড়ি।তার সাথে কিছু নাচ।যার কিছু কিছু আবার দেখার অযোগ্য।নাটকে যেখানে তরুন সমাজকে হাইলাইট করা হইছে সেই সব তরুন দের সাথে জনগনের কোন যাতায়াত আছে কিনা আমার জানা নাই!
এবার গানের অনুষ্টান নিয়ে।বিটিভির গানের অনুষ্টান গুলার ভেতরে ভিন্নতা ছিলো।আর সব চ্যানেলে আরেফীন রুমি টাইপ শিল্পিদের দখলে।ভালো করছে বাংলা ভিশন।তাদের মিউজিক স্ট্যাশন প্রোগ্রামটা ভালো হইছে।সুমন,বাপ্পা,নকীব,রাফা এদের পরিবেশনা প্রানবন্ত।শ্রীকান্তের সাথে আড্ডা টাও ভালো।কিন্তু উপস্থাপিকার এত ঢং কেন তা জানা গেলো না।জোজোর গান শুনে আতকে উঠা ছাড়া আর পথ ছিলো না।এনটিভিতে বাপ্পা প্রিন্স মাহমুদ আর কুমার বিশ্ব্জিতের প্রোগ্রামটা ভালৈ। আমি কোনো লাইভ দেখি নাই রাতে।তবে শুনছি অর্নবের আর এলআর বি বাপ্পা এদের গুলা নাকি ভালো হইছে।দিনের বেলায় শিরোনামহীনের লাইভে আনন্দ পাইছি দেশটিভিতে।দেশটিভিতে এবার ছিলো তরুন নাট্য নির্দেশকদের নাটক।নাটক গুলো সহজবোধ্য না।কিন্তু নির্মান খারাপ ছিলো না।কিন্তু এত এডের ভীড়ে এই সব বেংগল গ্যালারী মার্কা নাটক দর্শক কিভাবে মনোযোগ সহকারে দেখবে তা আমি বুঝে পাই নাই।ম্যাগাজিনের ভেতরে আনন্দ মেলার মতো জঘন্য আর কিছু ছিলো না।তবে ছন্দে আনন্দে আর ফার্মারস গেম শো খুব ভালো হইছে। সময় টিভির ইন্টারভিও গুলা দারুন হইছে।কিন্তু সংবাদ সব চ্যানেলেই ছিলো একঘেয়ে ও বিরক্তিকর!
এই তো টিভি নিয়া অনেক কথা বললাম। আমি যা দেখছি এবারের ইদে তা জানালাম।আজ নাকি কাল টিভি দিবস!হুজুররা টিভিরে বলে শয়তানের বাক্সো,হুমায়ন আজাদ টিভিরে বলছে মুর্খ লোকজনদের খুশী হবার জায়গা,ছফা সাহেব বলছে যে টিভি হলো একটা সার্কাসের জিনিস।তবুও আমি টিভি ভালোবাসি।ভালোবাসি রিমোটকে।স্বপ্ন দেখি আমাদের টিভি হবে আমাদের সুস্থ বিনোদনের জায়গা।যা খালি মুগ্ধ করবে আমাদের বানাবে দেশপ্রেমিক।দেশী সংস্কৃতির প্রচারে রাখবে ভুমিকা!
(কিছু নাম ধাম ভুল হলে নিজ গুনে মাফ করবেন)
বিরাট ধৈর্যাত্বক ব্যাপার স্যাপার দেখি। এত নাটক এত অল্প সময়ে দেখা যায়! ঈদ তো তবে মজাতেই কাটল তোর মনে হয়।
গত পাচ বছর ধরে ঈদগুলো ভালো কাটে নাই।সেইটা নিয়ে মন খারাপ করার কিছু নাই যখন দেখি সবাই বোরিং ঈদই পার করে।তাই মনের আনন্দে টিভি দেখি ভেবে নেই এইটাই আমার আনন্দের সাথী!
যদিও খুব একটা টাইম পাইনাই টিভি দেখতে... তারপরেও যেইটুকু দেখছি তাতে রিমোট ঘুরাইলেই খালি সজলরে দেখি
মাঝে মাঝে বিটিভি দেখি... ইদানিং স্মরণীয় লোকজনদের নিয়ে অনুষ্ঠান ভাল করে... লাইক ভুপেন কে নিয়ে কাল দেখলাম দেখলাম সুফিয়া কামালকে নিয়ে
সজলকে দেখলে আমার বিরক্তিতে চোখে জল আসে!
টুটুল ভাইয়ের সাথে একমতের উপ্রে সহমত পোষণ করছি! বিটিভি এখন বেশ কিছু ভালো অনুষ্ঠান দেখায়। এবারের ঈদে আরমান ভাই ছাড়া আর তেমন কোনো অনুষ্ঠান দেখা হয় নাই। একমাত্র বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণায় বাংলাদেশী চ্যানেল দেখা ছেড়ে দিচ্ছি।
প্রথমেই বলি, শান্তর লেখার আমি বিরাট ফ্যান। ওর লেখার ভঙিটা এত সুন্দর, পড়তে একদম বোরিং লাগে না, সাবলীল লেখা। এই এত্তবড় একটা লেখা-কিন্তু পড়তে গিয়ে মনে হলো আরেকটু লিখলনা ক্যান!
একটানা টিভি প্রোগ্রাম দেখা মহা ধৈর্যের আর সামর্থের (শারীরিক অর্থে) বিষয়। নিরলস চেষ্টায় তুমি এইটায় পাশ করছো ছোটভাই।
্লীনা'পুর সাথে একমত। আমার কাছে লাগে এই ছেলেটার লেখার মাঝে হেলাফেলা টাইপের একটা ভাব আছে, কিন্তু পড়তে গেলে লেখাটা ভাল লেগে যাবেই।
ছিঃ শান্ত, মেয়েদের এমনি করে মাইর-ধইর করতে নাই! জাহিদ হাসানের অভিনয় দারুন লাগে, তবে মাঝে মাঝে অতি অভিনয় করে যখন ভাল্লাগে না। তবে কুসুম শিকদারের অভিনয় কোনকালেই ভাল্লাগে নাই। সজলতো অলটাইম ন্যাকু, তারে ডিরেক্টররাও খুজেঁ খুজে তেমনি টাইপের রোল দেয়! .।.।
টিভি দেখায় ওস্তাদ, হয়না মোটেই ক্লান্ত! মাশাল্লাহ ধৈর্য্যশীল শান্ত!
এবার ঈদে ঢাকায় ছিলাম। কোনোবারই ঈদে টিভি দেখা হয় না। এবার টানা ৯দিনের ছুটিটা টিভি দেখে কাটাবো ঠিক করেছিলাম কিন্তু অল্প সময় পরই ক্লান্তি অনুভব করলাম। আরমান ভাইয়ের আগের ২টা নাটক প্রাইভেট চ্যানেলে দেখে মজা লেগেছে। তবে এবার মনে হলো জোর করে একটা গল্প লেখা হলো। দাদামশাই ছাড়া আর কোনো নাটকের কথা মনে করতে পারছি না। হালকা টাইপের বই পড়েই সময়টা কেটেছে।
অনলাইনে ঈদের দুইটা নাটক দেখেছি। একটার নাম ''ভোঁদাই'' লিখেছেন এটিএম সামসুজ্জামান।নাটকটা আমার কাছে এক কথায় অশ্লীল লেগেছে। আরেকটার নাম মনে করতে পারছি না।সেটাও আহামরি কিছু ছিলো না।
ঈদের ছুটিতে এবার টিভি তেমন দেখা ই হয়নি। শান্ত বিরাট ধৈর্য নিয়া দেখলা, খুবই ভালো ।তোমার লেখাটা ভাল্লাগলো।
টিভি দেখার সুযোগ নাই। মাঝে মাঝে পিসিতে দু'একটা চলে আসলে দেখি। জাহিদাসানের মনে হয় হাত বেশি চলে।
যাক্ লেখা দারুণ হৈসে!
নজরুল ভাইয়ের ' ঝগড়া বাড়ি দেখেন নাই? কি দেখলেন তাইলে!
এবার টিভি দেখা হল না
এই ছেলেটাকে আমি আবারো এ্যাওয়ার্ড দেয়ার দাবি জানাইলাম। এর বউ বিরাট লাকি হবে। এর অসীম ধৈর্য্য। এই ছেলে সব প্যানপ্যানানি সহ্য করার ক্ষমতা রাখে। তুমি এই চেষ্টা চালিয়ে যাও। আল্লাহ কখনো ধৈর্য্যধারীকে নিরাশ করেন না।
এক্কেবারে এই কথাটাই কইতে চাইসিলাম তানবীরা'পু।

আপনি বিরাট ভাগ্যবান , অনুষ্ঠান দেখতে পারছেন।
ঈদের সময় টিভি খুললেই তো দেখি - ঈদের ২য় দিন , ৩য় দিন, ৪র্থ দিন , ৫ম দিন কি কি হবে তার লিস্টি , মাগার অনুষ্ঠান তো দেখিনা ।
মন্তব্য করুন