সিয়োন ফ্রী ব্যাপিষ্ট চার্চ
লেখতে ইচ্ছা করে অনেক কিছু কিন্তু জিপির নেট যে জাহান্নাম তাতে আগ্রহ পাই না।আর টিভি দেখে পড়াশুনা করে চায়ের দোকানে দেদারসে সময় চলে যায় আর বাকি সময় যায় ফেসবুকে।এই বুইড়া বয়সে যে এমন ফেসবুকের ভিমরতি পাবে তা আগে ভাবি নাই।আগে ব্লগে বসলেই নিজেরে দেশের সব চেয়ে সচেতন নাগরিক মনে হতো!তখন কেউ ফেসবুকের আলাপ করলেই বলতাম ভাই আমাদের আজাইরা সময় নাই যে ফেসবুকে বসবো!এখন কালের বিবর্তনে ফেসবুক ছাড়া জীবনটারে চা-হীন জীবন মনে হয়।যাই হোক তাই কাজ কাম না থাকলে ফেসবুকেই বসে বসে সামাজিক যোগাযোগ মেইন্টেন করি!
এখন আসল প্রসঙ্গে আসি।এই চার্চটা আমার সাবেক বাসার পাশেই যে বাসায় আমার ঢাকার প্রথম সাড়ে তিন বছর কাটছে।তখন মনে আছে ২০০৮ সালের শুরুর দিকে ঢুকছিলাম চার্চে প্রথম।তাও আবার আমার জিহাদী বন্ধুর খপ্পরে পড়ে।সে আবার জাকির নায়েকের কম্পারেটিভ রিলিজিয়ন আলোচনা দেইখা জিহাদী বাহাসের আশায় আমারে সাথে নিয়ে গেছিলো সেখানে।কিন্তু বেচারা ফাদার একটু গোবেচারা টাইপের লোক মনে হইলো তাই তারে আর কোন কস্ট না দিয়ে আমরা দুই বন্ধু ঘুরে ফিরে বিদায় নিলাম।এরপর আর কখনো যাওয়া হয় নাই।যেতে ইচ্ছাও করে নাই।খালি জানতাম এখানে একটা চার্চ আছে।এভাবেই কেটে গেলো অনেক দিন।
তারপর এলাকার বস্তির পোলাপানরে দেখতাম ব্যাগ নিয়ে কোথায় যেনো যায়?ভাবতাম স্কুলে টিস্কুলে যায় হয়তো কোন এনজিওর!কিন্তু একদিন একজনরে জিগেষ করে ব্যাপক টাসকি খাইলাম।যে তারা সবাই গীর্জায় পড়ে।ব্যাপারটা নিয়া আমার বন্ধু চায়ের দোকানের প্রতিদিনের সাথী পুলককে বললাম।পুলক বললো চলেন শান্ত ভাই একদিন ঘুরে আসি।পোলাপানরে কেমনি পড়ায় দেখে আসি!খূব কাছে যখন তখন এখনি যাই চলেন।দেখলাম তাদের খ্রিষ্ট ধর্মালম্বী টিচার পড়াচ্ছে এক সাথে অনেক ছাত্রকে।বেশির ভাগ ছাত্রই রিকশাঅয়ালা, ভ্যানে চটপটি বেচে,ড্রাইভার,ফেরীঅয়ালার ছেলে।মানে একেবারেই নিম্নবিত্ত।এরা সবাই আমাকে পুলককে চেনে হাড়ে হাড়ে কারন চায়ের দোকানে অসংখ্যবার এরা আমাকে আর পুলককে দেখছে।দেখলাম প্রতিষ্টানের প্রধান আমাদের খুব ভালো পায়।কারন আমরা এলাকারই ছেলে।এরপর থেকে আমি আর পুলক সময় পেলেই যাই সেই চার্চে।ক্লাস নিতে বলে সবাই।কিন্তু আমরা সেই অর্থে ক্লাস নেই না।পোলাপানের কথা শুনি তাদের সাথে কথা বলি কে কি দিয়া খাইছে? কার সাথে কার ঝগড়া?কে কারে ঘাড়াবে ছুটির পরে?এই সব কথাই জিগেস করি।এরপর গল্প বলতে বলি তাদের মুখে সিনেমার গান শুনি।আবার কেউ কেউ গানের তালে নাচে সেইটাও মনোযোগ দিয়ে দেখি।আর আমরা নিজেরাও অনেক উপদেশ দেই অনেক ভালো কথা শুনাই।কেনো বাবা মার কথা শুনতে হবে,কেনো তারা এই স্কুলে এই সব নিয়া লেকচার দেই।সাথে সাথে ভালো ব্যাবহার কেন করতে হবে?কেনো কথায় কথায় গালি দেয়া যাবে না?কেনো জীবনে সত্য কথা বলা জরুরী?কেনো দেশকে ভালোভাসবো?কেনো মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো?এই সব নিয়া বলি তাদের মতো করেই আর কী।এই সব অনেকেই করে তাই আমি আর পুলক ও সেই কাজ করি।কিন্তু লোকজন মনে করে আমরা অনেক মহান।যে এই কাজ করি।পুলাপান আমাদেরকে খুব ভালো পায়।তাদের বকলম বাপ মায়েরা আমাদের কাছে উপদেশ চায় তখন নিজেরে দারুন লাগে।আমি জানি এদের কেউই ম্যাট্রিক পাশ করবে না।সামনেই এদের নানা জায়গায় ঢুকায় দিবে কাজ শিখার জন্য।কেউ ড্রাইভার হবে,কেউ গ্যারেজে কাজ করবে,কেউ বা লন্ড্রিতে বা রিকশা চালাবে।তারপরো তাদের এই ছোট্ট পড়াশুনার জীবনে আমার আর পূলকের কথা বলবে যে উনারা এই সব বলতো সবসময়।তখন শান্তি পাবো আমরাই।চোখে পানি আসবে এই ভেবে যে জীবনে কিছু তো করছিলাম।তাই সময় পেলেই আমি আর পূলক চলে যাই এই গীর্জায়!
এই চার্চটা কোথায়? মোহাম্মদপুরে নাকী? দেখি নাই। তুমি, তোমার বন্ধু দুজনরেই শুভেচ্ছা আর ধন্যবাদ দিলাম। ওদের জীবনে তোমাদের এই অবদান ওরা মনে রাখবে। কমলাপুরে বৌদ্ধমন্দিরের ভেতর একটা প্রতিষ্ঠানে (একটা কারিগরী শিক্ষাকেন্দ্রে) আমাদের অফিসের মাধ্যমে ফাইন্যান্স করছিলাম, পয়সা ফেরত না দিয়ে তারা পলাইছে
ছাত্রগুলোর জন্য মায়া হতো, অনেক আশা নিয়ে তারা এখানে ফ্রিতে কিছু একটা কারিগরী শিক্ষা লাভ করার জন্য এসেছিল; সেই উদ্যোক্তা (যে লোন নিয়েছিল) এদেরকে দেখিয়ে নানা জায়গা থেকে ডোনেশন নিয়েছিল। যাহোক।
তোমার ফেসবুক প্রেমটা ব্লগে খানিকটা দিও, এত ভাল লেখ কিন্তু স্ট্যাটাস লিখেই প্রতিভার অপচয় করতেছ।
চেষ্টা করতেছি কমানোর দেখা যাক কমাতে পারি কিনা ফেসবুক প্রেম।তবে ব্লগে নিয়মিত লেখার শেষ চেষ্টাটাও এবার করবোই!
একটা খুব ছোটো আকারের ভালো কাজে বুকের ভিত্রে যেই প্রশান্তি আসে তা অনেক কাজেই নাই...
পোলাপাইন কে কারে কেন ঘাড়াইতে চায়, সেইটা জানতে ইচ্ছা করতেসে। আপনের লেখাগুলা আসলেই দারুণ হয়!
ধুর! এত তাড়াতাড়ি শেষ কইরা দিলেন কেন?!
নেটে ডিষ্টার্ব দিতে ছিলো তাই লেখা হারানোর ভয়ে এখানেই শেষ করছি।আরও কিছু কথা মনে ছিলো কিন্তু লিখি নাই!
এই লেখাটা পড়ে শান্তর মতো জীবনটা যদি আমার হতো তাই মনে হচ্ছে।
আহ ! দারুণ
চালিয়ে যান। বেস্ট অফ লাক।
বাপ্পীর জন্মদিন নিয়ে একটা লেখা পড়ছিলাম সেদিন, ওখানে ওর ছোট্ট ছোট্ট কাজগুলো করার কথা শুনে খুব ভাল্লাগছিলো, এখন পড়লাম তোমারটা। এই যে ছোট্ট তোমরা কি সুন্দর করে আপাত ক্ষুদ্র দেখতে লাগ্লেও যে কাজগুলা করছো,সেটা অনেক কাজের কিন্তু। হ্যা, লোকদেখানি না, কিবা কারো বাহবাও পাবা না, কিন্তু নিজের কাছে যেই মজাটা পাইবা সেটা অনেক অনেক বড়।
বাপ্পীরে বলছিলাম, এমনি করেই বড়ো হও ভাইয়া। তোমারেও তাই বলি.।।
বাপ্পি মেলা কাজ করে খুব নিষ্টাবান ছেলে তার কাজের একটা প্রাতিষ্টানিকতা আছে।আমার কিছুই না যখন যেটা মন চায় করা উচিত সেটাই করি।সুতরাং বাপ্পীর তুলনায় আমি কিছুই না!
আমিও হঠাৎ হঠাৎ চার্চে যাই , আমার ল্যাব থেকে এক মিনিটের পথ। অবশ্য ক্যাথলিক চার্চ না । কেন যাই , সেটা বলতে গেলে বেশ বড় গল্প হবে । আইলসামি করে তাই লিখলাম না
কথা সত্য।
আমি কখনও চার্চে যাইনি।
জেবীনের মত আমিও বলি, ভালো কাজ করো, অনেক বড় হও।
আমিও এ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চাই
মন্তব্য করুন