নিস্ফলা শ্রেষ্ঠ সময় অংশ দশ!
শরীরটা ভালো না মোটেও। ঠাণ্ডা জ্বরে সকাল থেকেই পুরো শরীর জুড়ে অসহ্য ব্যাথা। পাচটায় ঘুম থেকে উঠে নামায পড়লাম, দেখি ব্যাথায় নড়াচরায় দায়। কিভাবে হাটতে যাবো? সবাই তো আমার অপেক্ষায়। তাই গেলাম না আর আজকে। ফোনটা সাইলেন্ট করে শুয়ে থাকলাম কিন্তু ঘুম আর আসে না। এসপাশ ওপাশ করি ব্যাথায় হা পিত্যেষ করে কিছুতেই চোখ বন্ধ হয় না। বিবিসি বাংলা টিউন করলাম দেখি সেখানে শেখ হাসিনার ইন্টারভিউ। বিবিসির প্রত্যেকটা ইন্টারভিউই যুক্তিসংগত ও পরিশলীত প্রশ্নের জন্য বিখ্যাত। কয়দিন আগে গান গল্পো নামের এক প্রোগাম শুনছিলাম বিবিসি বাংলায়। কি দারুন উপস্থাপনা আর সাবলীল প্রশ্ন গুলান শুনেই কান জুড়িয়ে যায়। শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের এত বর্নাঢ্য জীবনকে মাত্র ১০ মিনিটে কি প্রেজেন্টেশন। বাংলাদেশের টিভি মিডিয়া গুলা বিবিসির বাংলার এই সিমপ্লীসিটি শিখলো না। তারা শিখলো হাউকাউ। ৩০ মিনিট এক গন্ডা অতিথি নিয়ে হাউকাউ করবে, কারোর কথা কেউ শুনবে না, একজন উপস্থাপক রাজ্যের যতো প্রশ্ন আছে সব একাই করবে উত্তর না শুনে, এই করেই চলতেছে। শেখ হাসিনার ইন্টারভিউটা একদিক থেকে সস্তির কারন তিনি বললেন ব্লাসফ্লেমী কোনো আইন করবেন না, নারী নীতি ও আধুনিক সমাজ সভ্যতা বিরোধী কোনো আইন বা নীতিমালা গ্রহন করবে না, যুদ্ধাপরাধের বিচারে কোনো গরিমসি চলবে না, যার যা গনতান্ত্রিক অধিকার তাকে তা পালন করতে দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে, আর্মি এতো সহজে পাওয়ার টেকওভার করবে না যদি যথেষ্ট উসকানী না দেয়া হয়। এই সব শুনে ভালো লাগলো। তবে উনার সেকুলারের ডেফিনেশন দেয়া, নিজেকে ধর্মের ব্যাপারে কনসেনশাচ ধার্মিক প্রমান করনো, ধর্মানুভুতিকে এতো এতো ইম্পোরটেন্স দেয়া দেখে হাসি পাইলাম। যে অতিকথনে উনি আক্রান্ত তার মারফত জানলাম খালেদা জিয়াই মন্দির ভাঙ্গা ও গনহত্যার সাথে জড়িত। যাক শান্তি পাওয়া গেলো ম্যাডাম আবারো কথার জগতে ফিরে আসলেন। এই সব কথা ছাড়া দেশের রাজনীতি তো জমে না। তবে ফেসবুকে এখন আমি প্রচুর বিএনপি আওয়ামীগের সমর্থক শেখ হাসিনা মডেলের অতিকথন রোগে আক্রান্ত মানুষদের ভীড়। যারা নানান কিছু জাস্টিফাইয়ে ব্যাস্ত। এবং তাদের আবার একটা অনুগত লাইক দেয়া শ্রেনী আছে। একটু আগে দেখলাম এক ছেলে একুশে টিভির জারনালিস্ট যিনি বেদম প্রহারের শিকার হেফাজতিদের তাকে শিক্ষা দিতেছে যশিমন যদাচারের। হোয়াট দ্যা ফাক। ভাগ্য ভালো উনি সাধারন জামাকাপড়ের সাথে হেলমেট পড়ে ছিলো। নয়তো বলতো ওড়না গলায় দিছে মাথায় দেয় নাই নাস্তিক সাংবাদিক। আবার আরেক গ্রুপরে দেখলাম মুক্তবুদ্ধির লোকেরা কেনো ব্লক করে তা নিয়ে হাহাকার। মুক্তবুদ্ধির হই আর যুক্ত বুদ্ধির হই আমরা তো সবাই মানুষ। ফেসবুকে ছাগলামী করবে, উদ্ভট কত কি শেয়ার করবে আর তাগোরে ব্লক করলেই খারাপ। ফেসবুকে আমার নিজের একাউন্ট আমার নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপার এখানে একজন ব্লক করছে বলে তার এক বন্ধুকে বলা যে আমারে ওমুক ব্লক মারছে। শাহবাগের লোক জনেরা সব এমনি মুক্ত মতের বিরোধী হু হু হু (কান্নার সাউন্ড)।
তবে আমার কাছে ফেসবুকের এই কচলাকচলি ভালো লাগে না আর। যদি লীনা আপুর মতো একেবারেই মিনিমাম লেভেলেরও কম সময় ফেসবুকে দিতাম তাহলে শান্তি পাওয়া যেতো। কারন ফেসবুকে রিয়েল লাইফ বন্ধুরা এমন সব কান্ড ঘটায় তা দেখলেই মনে চায় ব্লক মারি আনফ্রেন্ড করি। হয়তো আমারো কোনো কাজে তারাও একি সিদ্ধান্তে আসে। তবে তারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে যায় আমি যাই না কারন আমার কাছে বন্ধুত্ব অনেক দামী জিনিস। এই অস্থির সময়ে তা হারাতে ইচ্ছা করে না। তাই অনেকেই আমাকে ব্লক মারতেছে দেখতেছি আনন্দ পাইতেছি আমিও হয়তো সামনে শুরু করবো। কারন আমি তো বাপুজী গান্ধী না। যে সব সয়ে নেবার দুর্দমনীয় পাওয়ার আমার অন্তরে আছে।
তবে দেশে চলে ক্রান্তিকাল। জানিনা আগামী দিনগুলাতে কি হবে? তবে সাধারন মানুষ ওতো চিন্তায় নাই তারা আমোদে আছে। টিভি দেখছে পেপার পড়ছে, ফার্মেসী মুদি দোকান, চায়ের দোকানে চাপা পিটাচ্ছে দেখতেই সুখ। আমিও এদের বাইরে না চায়ের দোকানে আড্ডা মারছি, ক্লাসে যাচ্ছি, ঘুমাচ্ছি টাকা খরচ করে রিক্সায় ঘুরছি, শাহবাগে যেয়ে বক্তব্য শুনছি নানান মানুষের এই করেই চলে। তবে ফ্রেব্রুয়ারী মাসে যাদের দেখতাম শাহবাগে টাকা দেয় বিরিয়ানী দেয়, গাঞ্জা খাওয়ায়, নারী পুরুষের মিলন চলে আরো কতো উদ্ভট আলাপ আলোচনা তারাই দেখি এখন আত্মপ্রসাদে আছে যে দেখছেন ভাই কত লোক আনছে কি মহাসমাবেশ, কি তাজা ইমান এদের। তবে ফ্যাক্ট হলো আত্মপ্রসাদকারী এরা ইসলামের কোনো প্রাকটিসেই নাই। সারাদিন নারী নিয়ে আলাপ আর কি দুই নম্বর ধান্দা করা যায় তার ফন্দি আটা তারাই নাকি হেফাজতের সাপোর্টার। আর যারা এতো মানুষ দেখে চিন্তিত তাদের বলে আনছে বলেই আসছে। কারন সবাই জানেন হয়তো এক মাদ্রাসার পাশেই আমার চায়ের দোকান। সামান্য কয়টা লন্ড্রী বিলের টাকাও তারা মাসের পর মাস বাকী রাখে। তা নিয়ে লন্ড্রী সুজন কথা শুনাতে ছাড়ে না। আর সেই মানুষেরাই এখন দুরদুরান্তে চলে যায় কিভাবে? কারন জিম্মা সিস্টেম চালু হইছে। একেক জন মানুষের হাত ৫০-৬০ জনের জীম্মা। প্রতি জিম্মার লোকরে অনেক গুলা করে টাকা দেয়া। সে শোডাউনে নেমে গেছে যে কত মাদ্রাসার ছাত্র আনা যায়। আর যদি সংঘর্ষ হয় তবে ছুড়ি চাপাতি আর শক্ত বাশের কঠিন মজুদ। ৬ই এপ্রিলের আগের দিন রাত বারোটায় ভ্যানে করে আমাদের মাদ্রাসাতেই চার বস্তা আসছে এইসব দেশীয় অস্ত্র। এই সব নিজের কানে শুনা আর নিজের চোখে দেখা ঘটনা। তবুও শান্তি যেকোনো কারনেই হোক হেফাজত শান্ত সিষ্ঠ ভাবেই তাদের শোডাউন দেখিয়ে শহর ছাড়লো। তবে সবাই যে আতংকে এখনো তেরো দফা নিয়ে আছে আমি বলি তার কোনো কারন নাই। কারন বাংলাদেশ শত সহস্র বছরেও আফগানিস্থান হবে না কিংবা পাকিস্তানের ফর্মেও ফিরবে না। গনজাগরন মঞ্চ যখনি শুনছি আক্রান্ত তখনি রিক্সা নিয়ে যে অবস্থা ছিলাম চলে গেছি শাহবাগ। দেখি অজস্র মানুষ সবার হাতে লাঠি। এরাই তো আগামী দিনের কান্ডারী বাংলাদেশের। অনেকেই তখনি রিউমার ছড়াইছে টুপি দেখলেই নাকি আক্রমন করছে। এইটা একটা মিথ্যা প্রপাগান্ডা। কারন সেদিন যে বিস্ফোরনমুখ ছেলেমেয়েরা লাঠি হাতে ছিলো তারা আক্রমন করলে উদ্যানের ভেতরের হেফাজতির কেউই আহত না হয়ে ফিরতে পারতো না। হয়তো শাহবাগের অনেকেও আহত হতো। তবে তার একটা সুবিধাও ছিলো পক্ষ চিনতে অসুবিধা হতো না যে কারা ইসলামের দোহাই দিয়ে এই দেশে থেকে দেশবিরোধী অপশক্তি! কারন সেই ভাষা আন্দোলন থেকে যত সংগ্রাম হইছে সেখানে খুব দারুন করেই তারা এই ধর্মের আবেগ নিয়ে খেলা করছে প্রতিক্রিয়াশীলরা। ৫২ তে যা ছিলো ধর্মদ্রোহী, ৬৯য়ে যা ছিলো হিন্দুদের আন্দোলন, ৭১ এ ছিলো ভারতের নমরুদ শক্তির দালাল, ২০১৩ তে তা নাস্তিক থেকে শুরু করে সব ব্লগারদের ফাসী চায়। এই ইতিহাস যারা জানে না তারা ইসলামের হেফাজত তো দূরে থাক নিজের হেফাজতই আগে করুক।
যাই খিদা লাগছে। মামা খিচুরী রান্না করছে খিচুরী খাই। অনেক দিন পর ব্লগটা পাইলাম। কি যে শান্তি চারিদিকে আহা। ব্লগকে যে এতো মিস করা সেইটা সামুর আমলের পর প্রথম টের পেলাম। ধন্যবাদ যারা আমার লেখা পড়েন। তাদের জন্যই এতো কিছু। ভালো থাকুক ব্লগটা ভালো থাকুক ব্লগার পাঠক সবাই। এই পোস্ট নিবেদন করলাম বিষন্নরে। ছেলেটা কোনো কারন ছাড়াই আমারে খুব ভালো পায়!
আহা! কতদিন পর ব্লগ! খুব মিস করছিলাম । যদিও চারপাশের সবকিছু দেখে মনে হয় সব ছেড়ে নিরিবিলি থাকার সময় এসেছে ।
থ্যাঙ্কু আপু, ভালো থাকবেন!
আমাদের প্রিয় কেউ যখন দুরে চলে যায় তখনই বোঝা যায় সে আমাদের হৃদয়ের কতটা অংশ জুড়ে ছিল বা থাকে।
এবি যে আমাদের কতজনের কতটা ভালোবাসায় বাঁচে, তাই এ কয়দিনে বুঝলাম।
মেড খান, রেস্ট নেন ভাই।
ঠিক না হয়ে দৌড়াদৌড়ি কইরেন না আর।
আর রেডিও শুনেন,
জীবনে বিনোদনের প্রয়োজন আছে।
এবিকে ফিরে পাওয়ার এই অসাধারণ পোস্টের শেষটার ভালো লাগা মনে হয় ভুলতে পারবো না অনেক অনেক দিন।
ইউ মেড মাই ডে!
লাভ ইউ, সুপ্রিয় শান্ত ভাই.. <3
হইছে আর বলতে হবে না। দোড় ঝাপ ছাড়ি নাই আছি পথেই। সুস্থ অসুস্থ নিয়ে অতো ভাবি না বেচে আছি তোমাদের ভালোবাসায় তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।
ভালো থাকো। ভালো ভালো গান শুনো মুভি দেখো!
এমন কি হেফাজতকেও জাস্টিফাই করতে এখন ব্যাপক লোকজন মাঠে আছে!
হ এই দুর্দিনে একমাত্র শান্তি!
ভাল লাগলো আপনার সহজ সরল কথন। ভাগ্যিস হেলমেট পরে ছিলেন, নাহলে ভদ্রমহিলার মাথাটাই হয়তো আর থাকতো না। কী বীভৎস অবস্থা দেশে- তাই চিন্তা করি আর বিষণ্ণ হই।
ধন্যবাদ অনেক। নিয়মিত পড়বেন আর আসবেন ব্লগে খুশি হবো!
ফেইসবুক নিয়ে বিরক্ত হয়ে গেছি। ওটা এখন আর সামাজিক নেটওয়ার্ক নাই, রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা মেশিন হয়ে গেছে। লোকজন ওখানে অতিরিক্ত কথা বলে, আর সবাই কোন না কোন পক্ষ হয়ে কথা বলে, স্বাভাবিক জনতার কাতারের স্বাভাবিক দৃষ্টি নিয়ে কিছু দেখার কেউ অবশিষ্ট নেই বলে মনে হয় ফেইসবুকে গেলে, তখন মন খারাপ হয়, কিন্তু আসল সত্য হল যারা সাধারন মানুষ, তারা তো আর প্রানপনে ফেইসবুকে নানান প্রপাগান্ডা চালায় না, তারা চুপচাপ ব্যক্তিগত ব্যবহার করে, যারা ওয়াল ভরায়, তারা প্রপাগান্ডায় ব্যস্ত।
তাই ফেইসবুক এ আর যাচ্ছি না বেশী। দুদিনে একবার যাব, হোমফিড স্ক্রল করব না, মেসেজ অপশন বেশী ব্যবহার করব, ব্যাক্তিগত ষ্ট্যাটাস দেব যেমন সর্দি হয়েছে', ' কালকে ঘুরতে যাব সাগর পাড়ে'
ফেইসবুক প্রতিদিন অনেক প্রডাক্টিভ সময় নিয়ে নেয় অকাজে, এই সময়টায় অনেক ভাল প্রডাক্টিভ কাজ করা যায়।
আমি কিছু করি না বলেই ফেসবুকে থাকি। পলিটিক্স করলেও ভালো কথা সব্বাই এত লেইম আর সিক হইতেছে তা ভাবতেই বিরক্ত লাগে। ফেসবুক ছাড়া দিন ভালো যাক। আমিও যেনো ছাড়তে পারি দোয়া কইরেন ভালো থাকেন!
অনেকদিন পর তোমার দিনলিপি পড়লাম, খুব ভাল লাগলো।
ভালো থাকি কেমনি ভাইয়া যে দুঃসময়!
ভালো থাকেন মা মেয়েকে নিয়ে!
কারুর কথা দেখতে বিরক্তিকর লাগলেও তা আমি দেখতে বাধ্য হবো? বন্ধু ছিলো বলেই কি তার ত্যক্ত করা উপস্থিতিতে সহ্য করেই যাবো? তাহলে একাউন্টটা নিজের হলো কেন বারোয়ারি বানায়ে দেই! পাসওয়ার্ডও অন্যদের দেই!
ব্লক/ডিলিট যার যার নিজের ব্যাপার, গায়েপড়ে গিয়ে তো উপদেশ কিবা গালাগাল দিয়ে আসে নাই! তাহলে কেউ আমাকে ব্লক করলে কান্নাকাটি করার মানে কি বুঝে আসে না! . . .
ব্লগ না থাকার হাহাকার কার না ছিলো।
কথা সত্য। আমার ফেসবুক আমার মতো আমার যা ভালো লাগে তাই। তাও তো মনে করেন ছাগু বন্ধু বান্ধব কার না আছে ফেসবুকে এখন সবাইকে কি ডিলেট ব্লকে ঠান্ডা করা যায়?
ভালো থাকেন পোস্ট দেন!
জ্বর ছিল নাকি জানি নাতো!!! এখন শরীর ভালো?
জী আপু শরীর ভালোই খালি মাথা ব্যাথা করে প্রায়শই। আপ্নিও সালাদ টালাড খেয়ে আরামে দিন কাটান!
শেষ্ঠ বানানটা ঠিক করে দিও। শিরোনামের বানানটা ঠিক হওয়া চাই
থ্যাঙ্কু আপু। এগুলা বানান ভুলের কারন মূর্খতা না বেখেয়ালে কীবোর্ড চাপার ফল!
মন্তব্য করুন