আহমদ ছফা জন্মের ৭০ বছর পেরিয়ে!
আহমদ ছফা আমার এতো পছন্দের লেখক তাও উনাকে নিয়ে লেখার দুঃসাহস কখনো করি না। কারন যাদের মানুষ দেবতা তুল্য ভক্তি করে তাদের নিয়ে আসলে লেখা যায় না। আর আমি আসলে অন্য যেকোনো লেখক নিয়ে ঢালাও মন্তব্য করতে যেমন গায়ে বাধে না। কিন্তু পছন্দের লোক নিয়ে কেউ মন্তব্য করলে শুনি, নিজের আর কিছু বলা হয় না। কারন আমার পছন্দ সবার পছন্দ হতে হবে এরকম ফান্ডামেন্টালিস্ট চিন্তা আমার কখনোই ছিলো না। যখন সবাই মাসুদ রানা পড়ে সেই আমল থেকেই আমি হুমায়ুন আহমেদের লেখা বড়দের জন্য নানান উপন্যাস সমানে গিলছি। চিটাগাংয়ে শিবির আর ছাগুর বাম্পার ফলন। সেই বন্ধুরা তখন শাওন হুমায়ুন আহমেদ বিয়ে নিয়ে আদি রসাত্মক ফাজলামী করতো। আমি চুপচাপ শুনতাম। কি বলবো? আমি তার লেখার সাবলীলতা আর কাহিনী বলার শক্তিতে মুগ্ধ। ব্যাক্তি জীবনে তিনি কি করে বেড়ালো আর সেই নিয়ে কে কি বললো তা মানুষজন ভাবুক আমার কি। এইতো কিছুদিন আগেও বাঙ্গালী মুসলিম মধ্যবিত্তের কাছে রবীন্দ্রনাথ ছিলো দুরের আর কাজী নজরুল ইসলাম ছিলো অন্তরের কবি। তাতে কি রবীন্দ্রনাথ শেষ হয়ে গেলো। রবীন্দ্রনাথ ফিরে আসছে বারবার উনার প্রাসংগিকতায়। তাই কে মহান এইসব চিন্তা আমি আর করি না। সবাই যার যার জায়গায় অসাধারণ। আমার কাছে আহমদ ছফা তেমন অসাধারণ। উনার ব্যাক্তিজীবন, লেখালেখি, জীবন জীবিকা, লিবিয়া-ইরান কানেকশন, জার্মান ফান্ডিং, মুলধারার সাথে বিরোধ, শিল্প চেতনা, নানান সময়ে নিজের অবস্থান ব্যাখা, নিজের প্রশ্ন করা শক্তি, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের ভাষ্য মতে তার পায়াভারী স্বভাব, মোরশেদ শফিউল হাসানের মতে নিজের ক্ষমতার ব্যাপারে অযথা চুড়ান্ত আত্মবিশ্বাস কিংবা শামসুর রাহমানের মতে এনার্কিস্ট সব দিক থেকেই উনাকে আমার ভালো লাগে। উনার সমন্ধে যতো পড়ি, মানুষের মুখে উনার কথা শুনি, কিংবা উনার বলে যাওয়া কথাগুলা যখন মিলে যায় বারবার তার চেয়ে আনন্দ তখন আর কিছুতে পাই না! আমার এই পোস্ট মোটেও আহমদ ছফাকে নিয়ে না। কারন আহমদ ছফার প্রচুর বিশ্লেষক, সোল এজেন্ট, সাগরেদকুল আছে তারাই লিখবে। আর আমি লিখতাম যদি আমি সলিমুল্লাহ খান হতাম। আর ছফাকে নিয়ে যতো বই আছে অনেক কুলীন লেখককে নিয়েই সেরকম বই আলোচনা কিছুই হয় না। আর সলিমুল্লাহ খান যেভাবে আহমদ ছফাকে চিত্রায়িত করে সেরকম চিত্র আর কেউ আঁকতে পারে না। এমন কি ছফার ভাতিজা নুরুল আনোয়ারও না। তবে নুরুল আনোয়ারের ছফামৃত বইটাও অসাধারণ। ব্যাক্তি আহমদ ছফাকে চেনার জন্য খুব সুখ পাঠ্য বই। সলিমুল্লাহ খান যখন সাবলীল প্রমিত ভাষায় মাথা ঝাকিয়ে আহমদ ছফার কোনো কিছু নিয়ে লিখেন আর বলেন। তখন মনে হয় ছফার কতো কপাল এরকম একটা শিষ্য রেখে যেতে পারছে। যদি টাকা থাকতো আমি সলিমুল্লাহ খান কে বলতাম স্যার আপনি বাসায় আসেন আমি আপনার কথা শুনবো খালি। তবে খান সাহেবের কথা শুনতে দূরে কোথাও যেতে হয় না। তিনি সর্বদাই এক পাল তরুন নিয়ে ঘুরাফেরা করেন। আমি কখনোই সেই তরুনদের দলে ভীড়তে চাই নাই। সুযোগ থাকা সত্তেও তাদের পাঠচক্রে হাজির হই নি। কারন আমি আমার বন্ধুর কথাতেই আস্থা রাখি। ছয় বছর আগেই যে বলেছিলো যে ভালো প্রতিভাবান মানুষরা অনেকটা পাহাড়ের মতো, কাছে গেলেই বোঝা যায় পাহাড়ে কতো গর্ত কতো খাদ। তাই যাদের অসাধারণ ভাবি তারা থাকুক তাদের মতো। আমি তাদের লেখা পড়ে আর টুকটাক বক্তব্য শুনেই মুগ্ধ হই। তবে সলিমুল্লাহ খানের ফ্যান ফলোয়ার কম না। কাল যখন উনি বক্তব্য দিচ্ছেন তখন অনেকের চোখে মুখে খান সাহেবের বক্তব্য শুনার তুমুল আনন্দ। তার মাইকের কাছে গিয়ে মোবাইল রেকর্ডার অন করে দেয়া। জিনিসটা ভালোই লাগলো। পছন্দের লোকের গান যদি থাকতে পারে তবে ভালো বক্তার লেকচারও রেকর্ড করা উচিত ভালো মতোই। সলিমুল্লাহ খানদের দুইটা প্রতিস্টান আছে। এক এশীয় শিল্প সাহিত্য কেন্দ্র আর আহমদ ছফা রাষ্ট্রসভা। আহমদ ছফা রাষ্ট্রসভা খুব দারুন একটা সংগঠন। এই দেশে তো সংগঠনের অভাব নাই প্রয়াত লেখকদের নামে। কিন্তু আহমদ ছফা রাষ্ট্রসভা প্রতিটা বছর উনার প্রয়াণদিবসে একটা অনুস্টান আয়োজন করে। সেখানে শুধু ছফার স্তুতি হয় না প্রতি বছর নতুন নতুন নানা বিষয়ে লেকচার উপস্থাপন হয়। এবং লেকচারের বিষয়গুলো খুব অসাধারণ তথ্যপুর্ন ও সময়োপযোগী। আমি ২০০৭ থেকে রাষ্ট্রসভার অনুষ্ঠানগুলোতে যাওয়া হয়। এবং তাদের সব প্রকাশনাই কেনা। পড়ে মানুষকে বিলি বন্টন করে দেই! ছফা নিয়ে লেখার জন্য তার কীর্তি মূল্যায়নে এই পোস্ট না। কাল কী হলো কি দেখলাম শুনলাম তাই নিয়েই লেখার প্রয়াস। কোনোদিন যদি সলিমুল্লাহ খানের মতো হই সেইদিন মন ভরে আহমদ ছফা কে নিয়ে লিখবো!
ক্লাস শেষে ছবির হাটে চা খাচ্ছিলাম এমন সময় রাষ্ট্রসভার পোস্টার তা চোখে পড়ে। সার্টিফিকেটে আহমদ ছফার জন্ম সাল আমি জানি ৪২। কিন্তু নানান জায়গায় দেখি তেতাল্লিশ। তেত্তালিশ ধরে হিসেব করলে আসে সত্তর বছর। তবে উনি নাকি বলতেন উনার জন্মদিন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র রেডিও জাপানে ভাষন দিছে। আহমদ ছফা গত হয়েছেন এক যুগ আগে। বেচে থাকলে কি হতো, সমসাময়িক নানান জিনিসকে কিভাবে ব্যাখা করতেন তা জানতে খুব ইচ্ছা করে। অন্তত তার লিখিত নতুন আরো গোটা দুই উপন্যাস তো পড়া যেতো। যা হয় নি তা হয়নি। ভেবে লাভ কি আটান্ন বছরের জীবনেই উনি যা করে গেছেন তা অনেকে ৮৮ বছর বেঁচেও করতে পারে না। তবে রাষ্ট্রসভার সব সময় তার প্রয়ান দিবসেই অনুস্টান আয়োজন করে এবার তাহলে কি জন্মদিনেও অনুস্টান হবে। পোস্টারটা দেখে ঈদের খুশী লাগলো। কতোদিন পর আবার এরকম অনুস্টান ভাবতেই আনন্দ। শেষবার যখন গেছিলাম তখন মনে হয় পোস্টও একটা লিখছিলাম। কতো কিছু নিয়ে যে পোস্ট দিছি ব্লগে এখন নিজেরই মনে পড়ে না। দুদিন ধরে মুষলধারে বর্ষা। আমাদের পিসিকালচার হাউজিংয়ে বর্ষাকালে খুবই গেঞ্জাম। পানি উঠে সেরকম না কিন্তু প্যাচে প্যাচে কাদায় রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়ের চেয়েও শোচনীয়। তবে ঢাকার অন্য জায়গায় মতো হাটু সমান পানি নিয়ে হাটতে হয় না। তবে নানকের বহুমাত্রিক চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় খাবি খেতে হয়। মন্ত্রী নানক এই জায়গায় ব্যাপক কাজ করেছে। কাজ তো সবাই করে কিন্তু পাবলিক যখন বলে নানকের মতো কাজ গত দুই যুগে তখন সেটা আসলেই বলার মতো। এমন কোনো রাস্তা ঘাট ড্রেনেজে নাই যা নানক ঠিক করে নাই। মাঠের সংস্কার, পানির লাইনে কাজ, রাস্তা সংস্কার, ইলিগ্যাল স্থাপনা উচ্ছেদ সব কিছুতেই উনি ইউনিক। এতো কাজ করেও যদি নানক আগামীবার না পার হয় তাহলে বুঝে নিবেন মার্কার কাছে সব হেরে যায়। তবে আমার সমস্যা হলো ভালোও ভালো লাগে না। এই যে এতো উন্নয়ন তার জন্য ভোগান্তিও কম পোহাই নাই। প্রতিটা ভোগান্তি আরো স্পস্ট হয় বর্ষাকালে। উন্নয়নের ইট বালু সিমেন্ট পড়ে থাকা, রাস্তা খুড়াখুড়ি, প্যাচপ্যাচে কাদায় অতি বিরক্ত লাগে। মনে হয় এই সময় এতো তৎপরতা কেনো উন্নয়নের? যাই হোক আমি ইদানিং এই বর্ষার কারনে হাটি না। যেখানেই যাই রিক্সায় যাই। কাদা পার হয়ে মেজাজ খারাপের মানে নাই। কাল সকালেও বের হলাম রিক্সায় বেশী ভাড়া দিয়ে, নাস্তা করলাম হোটেলে। সেই আগের মতো নেহারী আর রুটি খাওয়ার টাকা নাই। তাই বাইশ টাকার ভেতরেই ডাল ভাজি আর দুইটা রুটি খেয়েই নাস্তার কাজ কমপ্লিট। বাধ্যতা মুলক ভাবে হোটেলের মনির ভাইকে ৫ টাকা টিপস স্বরুপ দেই। তারপর কাদা পার হতেই হয় চায়ের দোকানে যাবার জন্য। এতো কাছে যে রিক্সার ব্যাবস্থা নাই। জানতাম নান্নুর দোকান বন্ধ থাকবে। এই স্যাতস্যাতে দিনে বারেক সাহেবের হিন্দী চুল মার্কা চা খাওয়াই আমার নিয়তি। নিয়তির বিধান মেনে চা খাই। ডেইলী স্টার পড়ে শেষ করে ফালাই। ডেইলী স্টার আমার ভালো লাগে না, আমার ভালো লাগে নিউএইজ। কিন্তু নিউএইজ পড়লে নিজেরে কেনো জানি রাজাকারের সহযাত্রী মনে হয়। নিউএইজের লেখায় অবশ্য সেরকম ধারনা পাওয়া যাবে না। কিন্তু মালিকানার দিক থেকে তারা নয়াদিগন্ত মনস্ক। তবে সামনে নিউএইজ পড়বো। কারন নিউএইজের লেখার ভেতরে এক ধরনের চেতনা সংশ্লিস্ট ব্যাপার আছে যা স্টারে নাই। তবে স্টার সুখপাঠ্য, বুঝতে তেমন বেগ পেতে হয় না। আর নানান উচ্চবিত্তের জীবন যাপনময় সংবাদে ঠাসা। পড়লাম লোকজন আসলো ওতো কথা বলি না আগের মতো। অন্যের কথা চুপচাপ শুনি আর উইকিপিডিয়ায় নানান কিছু নিয়ে সার্চ দিতে থাকি। নামাযের সময় হয়। নিয়ত করে আসছি আজ নামায পড়বো না। এই জীবনে আমি কোনোদিন ভাবি নাই যে স্বেচ্ছায় জুম্মার নামায মিস দিবো। কিন্তু এখন মাঝে মধ্যেই ইচ্ছে করে দেই। মামা আসলো দোকানে আর এলান দিলো বুয়া আসে নাই। মামা ভাগিনা রিক্সা নিয়ে চলে গেলাম আল মাহবুবে। আমি চিকেন ঝাল ফ্রাই আর মামা রুই মাছ দিয়ে ভাত খেলাম। বিল দেখে অবাক প্রায় তিনশো। ভাগ্যিস মামা খাওয়ালো নয়তো এতো টাকা আমার পকেটেই নাই। ভিজতে ভিজতে বাসায় আসলাম। বাসায় এসে মনে হলো একেবারেই বের হয়ে গেলে ভালো হতো। কি আর করা ল্যাপটপে বসলাম। পিসি এখনো ঠিক হয় নি। নতুন পিসির ব্যাবস্থা হচ্ছে। আমার ভাইয়া কতো অসাধারণ চাহিবা মাত্রই পিসির ইন্তেজামের আদেশ দিলো। জয় ভাইয়ার জয়! বের হলাম মুষুল ধারে বর্ষাতেই। ভিজতে রিক্সা পেলাম নিউমার্কেট ষাট টাকা। রিক্সাওয়ালা উদ্যমী তবে নতুন তাই এখনো রিক্সা চালানোর যুতসই টেকনিক শিখে নাই। পর্দা দেয়া তাও ভিজছি। সমস্যা নাই পকেটে পলিথিন তাতে মোবাইল মানিব্যাগ। শরীরের পরোয়া আমি করি না কখনোই। নিউ মার্কেট নামলাম। দেখি অজস্র মেয়ে মহিলা আন্টি সমাজ ভিজছে। এই বর্ষাতেও তাদের শপিংয়ের খোরাক মিটে না। রাস্তার পাশের দোকান গুলাতেই ভীড় কম না। রাস্তা পার হয়ে আবারো রিক্সা নিলাম চিরচেনা বিজনেস ফ্যাকাল্টী বরাবর। রিক্সাওয়ালা টিএসসি বাদে ভার্সিটির আর কিছুই চেনে না। খুব শার্প রিক্সা চালায় ছেলেটা। নিমিষেই চলে আসলাম। দেরী করলাম তাও দেখি অনুস্টান শুরু হয় নাই। তবে রাষ্ট্রসভা মোটামুটি সময়মতোই শুরু করে। তবে বর্ষার কারনে হয়তো তাদের এই দেরী। আমি রাষ্ট্রসভার এরকম কোনো প্রোগ্রামের আশাতেই ছিলাম যেনো তাদের সর্বজন ম্যাগাজিন সব সংখ্যা একেবারেই কেনা যায়। তবে সব পেলাম নাই ১৫ টার ভেতরে ১২ টা কিনে ফেললাম সিরিয়াল মতো। দামও তাই দশটাকা কম। ১১০ টাকায় এতো অসাধারণ ১২ টা ম্যাগাজিন কিনেই সুখ। অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলো। সভাপতি মনসুর মুসা ছাড়াই শুরু উনার আসতে নাকি লেট হবে। বিধান রিবেরুর প্রবন্ধটা অসাধারণ। শিরোনাম রাজনীতিতে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতা। মুল প্রবন্ধটা পড়লে মনে হবে কোনো বড় একাডেমিশিয়ানের লেখা। কিন্তু অবাক হবেন এটা জেনে বিধান রিবেরু ফুলটাইম চাকরী করে এটিএননিউজে এবং তিনি মুলত সিনেমা নিয়ে লিখেন। এই উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ইতিহাসটাকে অসাধারণ ভাবে উনি বিবরন দিলেন। এবং উঠে এলো হাল আমলের হেফাজত নিয়েও কথা। তার বক্তব্য শেষে নুরুল আনোয়ার কথা বললেন। নুরুল আনোয়ার এই ফেব্রুয়ারী দিকে যে হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর হামলা হলো চিটাগাংয়ে তার দারুন বর্ননা করলেন। এলাকার মানুষের নানান মতামত কৌতুক মিশ্রিত করে বললেন। সাথে তুলে আনলেন বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পর যে হানাহানি হয়েছিলো তা নিয়ে আহমদ ছফার ভাবনা ও সরজমিন দেখতে ডক্টর আনিসুজ্জামান আর কবীর চৌধুরীদের নিয়ে উনার যে সফর তার বিবরন। অধ্যাপক আখতারুজ্জামান ইসলাম নিয়েই বললেন বেশী। ইসলাম নিয়ে বিকল্প নানান ভাবনা তুললেন আলোচনায়। ওতো ভালো লাগে নাই উনার বক্তব্য। মধ্যে জহিরুল ইসলাম কচির কথাও শুনলাম। উনার বক্তব্যে থিউরী বেশী তাই বুঝতে কস্ট। এরপরই হলো সলিমুল্লাহ খানের বক্তব্য। সলিমুল্লাহ খান একজন অসাধারণ বক্তা। উনি যে প্রবন্ধটা আগে পাঠ হলো তা নিয়ে কথা বললেন। আরো কথা বললেন ছফার বিখ্যাত বই আনুপর্বিক তসলিমা নাসরীন ও অনান্য প্রসংগ বইটা নিয়ে। উনার কথার যে স্বতস্ফুর্ততা তা মুগ্ধ করে। আর নানান আলোচনায় উঠে জনপ্রিয় অভিযোগ গুলার অসাধারণ খন্ডন করলেন। তবে উনার মুখে শুনা ছফার একটা কথা দারুন লাগলো। "যে দুনিয়ার অর্ধেক মানুষ কোনো একটা অন্যায় বিষয়কে যদি ন্যায় হিসেবে রায় দেয় তবে তা ন্যায় হয় না, অন্যায়ই থাকে। আর ছিলো মাও সেতুংয়ের বিভিন্ন কথা তার নামে চালিয়ে দেয়ার রসাত্মক বিবরন। সংগে ছফার বিভিন্ন সময়ের চিন্তার ব্যাখা। সঙ্গে ফরহাদ মজাহার নিয়েও টিটকারী এবং বিগত দিন গুলাতে তাকে রাস্ট্রসভা কি কি ভাবে সম্মানিত করেছিলো তাও নিয়ে মজা করা। সলিমুল্লাহ খানের ক্যারিস্মেটিক বক্তব্য শুনার পরে আসলে বলার কিছু থাকে না। তাও মনসুর মুসার কথাও অসাধারণ লাগলো। ক্ষমতার ভাষা ধর্মের ভাষা সব নিয়েই তার মতামত গুলা মনে রাখার মতো। অনুস্টান শেষ হয়ে গেলো দেখি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। ভালো লাগা নিয়ে বাসে উঠলাম রংধনুতে। জ্যামে আস্তে আস্তে যায় বাস লোকালের চেয়েও খারাপ। শিয়া মসজিদ নেমে বন্ধু এহতেশামকে বের করলাম। আমার খুব কেনোজানি ঝালমুরি খেতে ইচ্ছা করছিলো কড়া ঝালে। রিক্সা দিয়ে চলে গেলাম পনেরো নাম্বার দুই বন্ধু গল্প করতে করতে। কেয়ারীর নিচেই এক মামা মুড়ি বানায়। দুইজন মিলে পাল্লা দিয়ে খেলাম ৩০ টাকার মুড়ি। অস্থির ঝাল খেয়ে দেয়ে আবার রিকশায় নানান কিছু নিয়ে আলাপ করতে করতে চায়ের দোকান। সেখান থেকে বাসা। চলে গেলো অসাধারণ দিনটি দারুন ভাবে!
ছফা সাহেবের লেখা নিয়া আপনের বিস্তারিত ভাবনা ও কথকতা জানতে মন চায়।
আমিও ভাবতেছি। দেখি লেখা যায় কিনা?
" আমি তার লেখার সাবলীলতা আর কাহিনী বলার শক্তিতে মুগ্ধ। ব্যাক্তি জীবনে তিনি কি করে বেড়ালো আর সেই নিয়ে কে কি বললো তা মানুষজন ভাবুক আমার কি। এইতো কিছুদিন আগেও বাঙ্গালী মুসলিম মধ্যবিত্তের কাছে রবীন্দ্রনাথ ছিলো দুরের আর কাজী নজরুল ইসলাম ছিলো অন্তরের কবি। তাতে কি রবীন্দ্রনাথ শেষ হয়ে গেলো। রবীন্দ্রনাথ ফিরে আসছে বারবার উনার প্রাসংগিকতায়। তাই কে মহান এইসব চিন্তা আমি আর করি না। সবাই যার যার জায়গায় অসাধারণ। আমার কাছে আহমদ ছফা তেমন অসাধারণ " ।।
পুরা আমার মনের কথা বলছেন।
আর পুরা লেখাটার ব্যাপারে যেটা বলি .. একটানে যেসব লেখা পড়ে ফেলা যায় তা এমনই হয় ... "এক টানে পড়ে ফেলা" কথাটা বলাটা যত খানি সোজা, লেখাটাকে সেই অনুযায়ী উপস্থাপন করা ঠিক তত খানি দুঃসাধ্য ... অবশ্য জোর করে এই জিনিস হয়ও না, এটা আপনা আপনিই লেখকের কলামে ধরা দেয় .. সুখের বিষয় আপনার বেলাতেও তাই বলা যায় অন্তত এই লেখাটার ব্যাপারে তো অবশ্যি .. খুবই চমৎকার একটা লেখা।
লিখেন আরও।
আপনার মুখে আমার লেখা নিয়ে কথা শুনলে খুব ভালো লাগে ভাইয়া। কতো কষ্ট করে এসে আমার লেখা পড়ে যান। আগে কবিতা লিখতেন এখন তো তাও ছেড়ে দিছেন!
একটার পর একটা ছফার উপন্যাস পড়ছি
এখনো পড়া শেষ হয় নাই? আমার তো সেই কবেই সব পড়া শেষ!
একটা দিনলিপিতে কতকিছু ফুটিয়ে তোল! কিভাবে?
খুব ভাল লাগলো।
থ্যান্কস ভাইয়া। আপনি নিয়মিত এই ব্লগে আসেন লিখেন কমেন্ট করেন খুব ভালো লাগে তা!
ছফার ভক্ত হিসেবে ছফালোচনা আশা করেছিলাম। তাঁর কোন লেখাগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন, এসব চাই। আমি তাঁর কঠিন ভক্ত। যাহোক, পরে পুষিয়ে দিও।
তোমার লেখার সাবলীলতা নিয়ে অনেকবার বলেছি। আবার বলি? না, থাক। ফুলে ঢোল হয়ে যাবা।
সলিমুল্লাহ খান অসাধারণ বক্তা বটে, তবে খুব প্রসঙ্গান্তরে চলে যান। এবং, একটু বেশি বুঝেন
আমিও ভাবতেছি যে কিছু লিখবো। আপনে যে ভাবে অনুপ্রেরনা দেন তাতে মনে হয় খালি লিখে যাই। আর ছফা নিয়ে অনলাইন অফলাইনে প্রচুর লেখা আছে। তাই উনাকে নিয়ে লেখা লেখতে মন খুব একটা সায় দেয় নাই। তবে এখানে তো লেখাই যায়। কারন কেউইতো লিখে না!
আর সলিমুল্লাহ খানরে আমার ভালো লাগে তার বক্তব্যের জন্য। তার লেখা ওতো বেশী ভালো লাগে না কিন্তু সবই পড়ছি বইমেলায় এতো দামে বই কিনে কিনে! আর নিজেরে রবীন্দ্র সমালোচক দাবী করেন তো তাই শো দেখাতে হয় যে উনি কতো জানে না। তাও আমার ভালো লাগে উনারে। উনার মতো লোক খুব একটা নাই দেশে যারা এতো এতো ভাবে আর পড়ে!
ভালো লাগলো ছফা নিয়ে লেখা!
ধন্যবাদ!
মন্তব্য করুন