Don't Cry For Me Argentina!
শিরোনাম দেখে কেউ অবাক হবেন না। আমার জন্য আর্জেন্টিনা তো দূরে থাক নিজ দেশ কিংবা শহরেই কান্নাকাটির লোক নগন্য। এইটা অতি বিখ্যাত এক ব্রডওয়ে মিউজিক্যালের গান। ১৯৭৬ সালে 'ইভিটা' নামের এই মিউজিক্যালটা মুলত নির্মাণ হয়েছিল আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জুয়ান পেরন এর সেকেন্ড ওয়াইফ বিখ্যাত রাজনীতিবিদ ইভা পেরনের জীবনের উপর। ইভা পেরনের প্রেম- ভালোবাসা, রাজনীতি- সমাজসেবা, আকস্মিক ডেথ সর্বোপরি তাঁর জীবনের ট্রাজেডী উপর ভর করে এই মিউজিক্যালটা বানানো । ব্যাপক ভাবে পুরস্কৃত ও বানিজ্যিক ভাবে হিট এই প্রোডাকশন। ম্যাডোনার একটা সিনেমাও আছে একই মিউজিক্যালের উপর ৯৬ সালে। এই গানটাও অসম্ভব জনপ্রিয়। প্রায় দুই ডজন নানান সময়ের বিখ্যাত শিল্পী এই গানটা কাভার করেছে। আমি এই গানটা প্রথম শুনি ইউটিউবে কারেন কার্পেন্টার্সের কন্ঠে। তবে আমার সব চেয়ে ভালো লাগে জোয়ান বায়েজেরটা। এই গানটা শুনলে এক ধরনের বিষাদে আচ্ছন্ন হতে হয়।
https://www.youtube.com/watch?v=yrbmzvoYgk0
আর্জেন্টিনা নামটা শুনলেই আমার শুধু ফুটবলের কথা মনে আসে। শৈশবে কিছু বুঝে উঠার আগেই ভাইয়ার বরাতে আমি যে দলের ফ্যান ছিলাম দীর্ঘদিন। এখন অবশ্য সেরকম ফ্যান না। এখন ফুটবল খেলাই আমার ভালো লাগে না। বিশ্বকাপের খবর রাখতে হয় বলেই রাখি, দেখতে হয় বলেই দেখি। নয়তো আমার প্রিয় খেলা ক্রিকেট। গত চার দিন সময় পেলেই ইংল্যান্ড- শ্রীলংকার টেস্ট ম্যাচ দেখেছি। কাল নিজ দেশের খেলা দেখলাম। খুব দোয়া করছিলাম বৃষ্টির কারনে ম্যাচ পরিত্যাক্ত হোক। কিন্তু শেষমেষ খেলা হয়েই গেল। এই ডিএল ক্যালকুলেটর জিনিসটার উপর আমার মেজাজ খারাপ থাকে। কি উদ্ভট সব হিসাব কষে এই জিনিস। যা বলছিলাম- আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসা কিছুটা ব্যর্থ প্রেমের পেছনে অহেতুক ঘোরাঘুরির মত। সেই কোন কালে ভাইয়ার মুখে শুনেছিলাম রেফারীর ষড়যন্ত্রে আর্জেন্টিনার ফাইনালে হার। তারপর থেকে বছরের পর বছর আশাবাদ আর ব্যর্থতার ইতিহাস। ৯৪ সালে আমি তখন ছয় সাত বছরের শিশু তখন বড়দের মুখে শুনলাম ম্যারাডোনা ড্রাগ নিয়েছে, এইটা নাকি ফিফার ষড়যন্ত্র। তখন আমি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব কিছুটা বুঝি। বাংলা সিনেমায় দেখি নায়ক জাফর ইকবাল চুরি করে না, কিন্তু ভিলেনের চক্রান্তে সে চোর হিসেবে সাজা পায়। আমার কাছে তখন মনে হলো এইটাই তাহলে ম্যারাডোনার সাথে করা হয়েছে। তারপর বড় হচ্ছি প্রতিবারই ব্যর্থতার গল্প। ৯৮ তে কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০০২ তে প্রথম রাউন্ড, ০৬ ও ১০ য়ে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়। এই করে করেই চলছে। ২০১০ সালে ৪-০ তে জার্মানীর কাছে হারের পর থেকে আমি এই দলকে নিয়ে আর ভাবি না। অন্যদের মতো ওউনও করি না। জাহান্নামে যাক সব! এবারের বিশ্বকাপেও তাই এই দলের ফ্যান না, কোনো দলেরই ফ্যান না। নানান মানুষ নানান মতামত দেয় শুনে যাই।
তবে আমার সব চাইতে মেজাজ খারাপ লাগে মানুষজনের বিকারগ্রস্থ সাপোর্ট দেখে। পতাকার প্রতিযোগীতা, আশ্চর্য সব বিদ্বেষমুলক ট্রলিং, গালিগালি আর ঘুরে ফিরে সবারই ফুটবল এক্সপার্ট হবার চেষ্টা। আমরা যদি এতই সবাই এক্সপার্ট হই তবে নিজেরা কেন খেলি না ফুটবল বা বাচ্চাদেরকে ফুটবল খেলায় উৎসাহ দেই না কেন? যে ফুটবল ট্রাডিশন আমাদের ছিল, ওয়ার্ল্ডকাপ না হোক অন্তত এশিয়ার সেরা দশটা টিমের ভেতরে আমাদের থাকার কথা, তা পারলাম কই? বড় বড় লীগ টিভিতে দেখে অনেক ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলেদের দেখি ফুটবল খেলতে। কিন্তু তাঁদের খেলা দেখলে মেজাজ খারাপ হয় আরো। সিম্পল বল রিসিভ করতে পারে না, কিন্তু মুখ দিয়ে কতো বড় বড় কথা। এরচেয়ে মোহাম্মদপুরের বিহারী পোলাপান ভালো ফুটবল খেলে। আড্ডার ছোটভাই অভিদের এক দল আছে, তাঁরা প্রচুর খেলে নানান জায়গায়। ভালোই বলতে হবে। কিন্তু সিরিয়াস ভাবে কেউই খেলে না। সব কিছুই টাইমপাসের জন্য, অনেক জায়গায় শুনি অমুকে ফার্স্ট ডিভিশনের প্লেয়ার আনছে, দেখতে যাই দেখি ক্লাস নাইন টেনে আমার বন্ধুরা যেমন ফুটবল খেলতো তাঁর চেয়ে ভালো খেলে না। এই যদি হয় ডিভিশন প্লেয়ারের মান তাহলে এমন তো হবেই! তাই আমি চাই আর্জেন্টিনা ব্রাজিল নিয়ে আজাইরা ট্রলিং বন্ধ করে, যাদের সামর্থ্য আছে তাঁদের ফুটবল খেলা। কতদিন আর অন্যের খেলা দেখে তালি বাজাবো। টিভির ফুটবল, কম্পিউটার গেইমের ফুটবল আর মাঠের ফুটবলে রাতে দিন পার্থক্য। ১৫ কোটি মানুষ যদি যেভাবে ফুটবল ভালোবাসে সেভাবে যদি কিছুটা হলেও দেশের ফুটবল নিয়ে কিছু একটা করে তবে দেশের ফুটবল বদলে যাবে।
শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। সর্দি মাথা ব্যাথায় জঘন্য অবস্থা। যতই ডায়লগ মারি এই অসুস্থ শরীর নিয়েই। চারটার সময় ঘুম থেকে উঠে খেলা দেখলাম। বালের খেলা খেলছে আর্জেন্টিনার, মেসির গোলও আমাকে উদ্দীপ্ত করে নাই। বরং বসনিয়া যেন আবার ড্র করে ফেলে, এই চিন্তাই মাথায় আসছিল। ঘুম থেকে বারোটায় উঠেই লিখে ফেললাম এই পোষ্ট মাথা ব্যাথা নিয়েই। কারন ব্লগ লেখাই আমার জন্য ভালো মেডিসিন, এক ধরনের ঘোরে আচ্ছন্ন হয়ে লিখে ফেলি নিজের কথা গুলো!
ট্রলিং করেই তো মজা ! খোঁচা দিয়া একটা স্ট্যাটাস দিয়া তোমার কাম করবা আর খোঁচা খাওয়া মানুষের আহাজারি শুনবা। তবে মাঠের ফুটবলে আমাদের অবস্থার কোন উন্নতি হওয়ার আশা করা উচিত না। শিক্ষিত পোলাপান যারা জীবনেও প্রফেশনাল খেলোয়াড় হবে না তারা ছাড়া তো আর কেউ খেলা নিয়ে কথা বলে না। প্রফেশনালরা আছে পেটের ধান্দায় !
কি খবর দোস্ত?
ভালো বলছো অবশ্য। তুমিও তো দিনে দিনে ভালো ফুটবল প্রেডিকশনিষ্ট ও লেখকে পরিনত হচ্ছো!
দেশ থেকে আসার সময় আমি অন্যদেরকে রাগানোর জন্য এ গানটি গাই
আমি হল্যানডের ডাই হারড ফ্যান এখন
এ ভালবাসা কী সে ভালবাসাগো
কাল ফেসবুকে আপনাদের খেলা দেখার ছবি দেখে ভালো লাগছে! ডাচদের উত্থান সফল হোক। হ্যাপী ফুটবল টাইম!
গানটা আসলেই বেশ মেলাংকলিক।
আফসোসের দিন আরও কতদিন, কে জানে..
গেট ওয়েল সুন..
গানটা ভালো পাই!
ব্রাজিল কাপ নিক, তোমরা আনন্দে মাতো
জলদি সুস্থ হও।
আমি এবার জার্মানী ছাড়া আর কোন খেলাই দেখিনি। অামিও এখন আর ওইরকম এসি টাইপ ফ্যান না কারো, তবে আর্জেন্টিনা ভালোবাসি।
সুস্থ হয়ে গেছি আফা!
আমি এবার নেদারল্যান্ড এর সাপোর্টার। আর্জেন্টিনার অবস্থা এবারে বেগতিক।
এইভাবে শেষমেষ পল্টি মারলা?
এইভাবে শেষমেষ পল্টি মারলা?
মন্তব্য করুন