বন্ধু 'প্রিয়'র জন্মদিনে!
মন মেজাজ অত্যন্ত খারাপ। এত খারাপ কেন হচ্ছে কারন বুঝতে পারছি না। এমন তো না যে জানতাম না রায়টা কিংবা এমন হবে তাও খুব বেশী আশার বাইরে ছিল না। এমন তো হবারই কথা ছিল। তাও বিশ্বাস হচ্ছে না সাইয়িদীর রায়। কাল এক আওয়ামীলীগ নেতাই আমাকে বললো 'মামু আপনাগো আশা পূরণ হইবে না, ফাঁসী হবে না। গোলাম আজমের মতোই রায় আসবে'। আমি বলছি দেখা যাক কি হয়। বলা তো যায় না। তবে জামাতের অগ্রীম কোনো হরতাল নেই, আন্দোলন নেই- বলেই মনে হয়েছে জামাতের সাথে সরকারের কোনো মিঊচ্যুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং চলছে। সেই সমঝোতাতেই এই রাষ্ট্রীয় স্পন্সরে স্পেশাল ডায়েটে মাওলানা সাবরে জেলে রাখার আয়োজন। জ্ঞানী শিবিরের নেতারা বলতো মাওলানা সাব নির্দোষ, তাই প্রমান হয়ে গেল। এই মন মেজাজের খারাপের দিনে এক আইনজীবি এসে আমাকে বলতেছে, ঠিকই আছে, সাইয়িদী সাহেবকে যে রায় দেয়া হলো তাও অন্যায় এরকম আলেম মানুষকে শাস্তি দেওয়া ঠিক হয় নাই। মনটা চাইছিলো, হালারে বাইন্ধা রাখি, চাইলে পারতামও। ইচ্ছে করলো না। আজকাল রাগ গোপন রাখি। অযথা রাগ দেখিয়ে শত্রু বানিয়ে লাভ কি?
সাইয়িদীর রায় না হলেও, হলো একটা কিছু। মনটা খুব খারাপ নিজের অক্ষমতায়। গত তিন দিন ধরে পরিচিত দুই অল্প বয়সী ছেলে গায়েব। তাঁদের পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। একজনের বয়স ১০, আরেকজনের তেরো। একজন আমার খুব কাছের। আমাদের সামনেই বড় হয়েছে। অনীক। হুমায়ূন ড্রাইভারের ছেলে। পাশের বস্তি টাইপ ঘরে থাকে। মাঝির নাতী। তাকে কে বা কারা গাড়ীতে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। কোনো হদীস পাওয়া যাচ্ছে না। তার মা বাবা যথেষ্ঠ খোজ খবর করছেন, থানা পুলিশ হাসপাতাল পথ ঘাটে সব জায়গায় খুঁজে মরছে। নাই, খালি ক্লু হিসেবে থেকে গেছে তাকে একজন গাড়ীতে উঠিয়েছে নবোদয় হাউজিংয়ের কোন বাড়ী চিনিয়ে নিয়ে যেতে। তারপর আর নেই। হয়তো পাওয়া যাবে কারন পুলিশ র্যাব এদের খুব পরিচিত। এলাকাতেও তাঁদের সবাই চিনে, তাই অনীককে নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। আমিও প্রচুর খোজ লাগালাম, যাদের চিনি জানি, আশাকরি পাবো। কিন্তু বয়াতী সালামের ছেলে ক্লু লেস গায়েব। তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। সেই ছেলের নাম আলাউদ্দিন, সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে। পুলক ছেলেটাকে খুব আদর করে। কত দামী দামী আইসক্রিম খাওয়ায়। কই যে আছে, তার বাবা পাগল প্রায়। খালি বলে বেড়াচ্ছে, 'আমার পাগলাটারে কেউ দেখছেন?' তার বাবা হলো আরেক ফাউল। চালাইতো সিএঞ্জি, কিসের গান শিখলো, গাড়ী চালানো বাদ দিয়ে গান নিয়েই পড়ে থাকে আর শেইখ হোয়াইট সিগারেট টানে। তাঁদের থানা পুলিশ পরিচিতও নাই, মুখে মুখে আর কত? তারা অপেক্ষায় আছে মিরাকেলের। এইসব হারানোর ভেতর আমার মনে পড়ে, প্রথম আলোর একটা খবর। জাপানের একটা শহর কয়লা খনি ছিলো আগে, কয়লা খনি শেষ, বৃদ্ধরা ছাড়া ওই শহরে আর কেউ থাকে না। একজন একজন করে মারা যায়, শহর ফাকা হয়। শিশু নেই কোনো। স্কুল কলেজ মাত্র ১ টা। আমাদের এই শহরে এত মানুষ, কত লোক হারায় তার খবর কে রাখে? আমাদের এখানে মানুষ হারানো কোনো নতুন ব্যাপার না। আর স্বপ্ন তো প্রতিনিয়তই হারাচ্ছে। তবুও যে যার মতো আছে, আত্মকেন্দ্রিকতা বেঁচে থাকা টুকু নিয়েই।
আগে আমি প্রিয় মানুষদের জন্মদিনের পোষ্ট লিখতাম খুব। নাঈম মামা, রন্টি ভাই, লীনাপু, কামাল ভাই, জ্যোতি আপু, পারভীন আপু অনেককে নিয়েই লিখেছি। সামুতে কিংবা এই ব্লগে। এখনও মনে থাকে ঠিকই কিন্তু লেখা হয় না। সেই দিনটা বেদনার মতো বাজে, কেন লেখা হলো না। শেষ এরকম লিখেছি তানবীরা আপুর জন্মদিনে, বেশী দিন আগের কথাও না। আজ লিখতে বসছি আরেকজনকে নিয়ে। 'প্রিয়' এবির এই গুটিকয়েক মানুষের ভেতর খুবই পরিচিত নাম। আগে থেকেই তার লেখা ভালো লাগতো, পড়তাম, সেও কমেন্ট দিত পোষ্টে। এতটুকুই। লেখা খুব ভালো লাগতো এই সুত্রে আলাপ জমতো ব্লগেই। আস্তে আস্তে ব্লগের আড্ডা দেয়ার পরিধি বাড়ে, জানি তার সমন্ধে, কোনো এক ক্ষণে আমি তাকে ফেসবুকে রিকোয়েষ্ট পাঠানোর আবদার জানিয়ে, নিজেই ভুলে যাই। আমাকে যে ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠানো যায় না, ফ্রেন্ড কিংবা ফ্রেন্ডস অফ ফ্রেন্ডস ছাড়া, তা বেমালুম ভুলে যাই। অনেক দিন পর আদার মেসেজ ফোল্ডারে দিয়ে দেখি, অচেনা মানুষের প্রশ্ন রিকোয়েষ্ট পাঠানো যায় না কেন? আমি তো হতবাক। তারপর যা হয় টুকটাক আলাপ সেই সুত্রেই খাতির। অল্প আলাপেই জেনে যাই তার লেখার মতোই সে দারুন মানুষ। আমার মতো বেকুবের সাথে বন্ধুত্ব তার হয়ে যায় অচিরেই। ভীষণ ব্যস্ত মানুষ সে, আলাপ তেমন হয় না। তাও বন্ধু তো বন্ধুই। তার জন্মদিন কিছুক্ষণ পরেই, ১৮ই সেপ্টেম্বর। জন্মদিনে অসংখ্য শুভকামনা। যেমন আছে তেমনই দারুন থাকুক। আস্ত ব্যস্ত যাই থাকুক, ভালো থাকুক। এই শুভকামনাই। এবিতে কিছু মানুষ আমার অতি কাছের তাঁদের সাথে যোগাযোগ যত কমই হোক না কেন। সেই লিষ্টে সে আছে, আশাকরি থাকবে আগামীতেও। বেকার বন্ধুকে সে আগামী দিনগুলোতে উপযুক্ত খানা খাদ্য ও পানীয় খাওয়াবে। সে আশায় থাকিলাম। তার ভবিষ্যৎ আরো উজ্জল হোক, বন্ধুদের কথা মনে রাখুক। তার লেখা যেমন টাচি, সেরকম ভাবেই তার লেখায় সে ছুয়ে যাক আমাদেরকে। যদিও তার এই মরা ব্লগ ভালো লাগে না, লেখার সময় কম, তাও লিখুক। বন্ধুরা না লিখলে আমরা বন্ধুতে লিখবে কারা? জয়তু বন্ধুতা। ভালো থাকুক প্রিয়, বন্ধু আমার কিংবা আমাদের!
শুভ জন্মদিন প্রিয় প্রিয় আপু..
থ্যাঙ্ক ইউ বিবা
জন্মদিনে অসংখ্য শুভকামনা। যেমন আছে তেমনই দারুন থাকুক। আস্ত ব্যস্ত যাই থাকুক, ভালো থাকুক। এই শুভকামনা।
থ্যাঙ্ক ইউ প্রিয় তানবীরাপু
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই এরকম একটা পোস্ট দেখে মন ভাল হয়ে গেল শান্ত। অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে আমাকে মনে রাখার জন্য। জন্মদিনে এর চেয়ে ভাল গিফট আর কি হতে পারে বল?


আমার জন্মক্ষণের ঠিক আগমুহূর্তেই সাঈদী জিতে গেল। এইজন্য মেজাজটা একটু খারাপ। মনে হচ্ছে, আমিই যেন রাজাকারদের কাছে হেরে গেলাম।
আমি যে এইটারে "মরা ব্লগ" বলি এইটা এখানে বলস ক্যান?
রন ভাইয়া রাগ করবে তো।
তোমার ট্রিট পাওনা রইল।
কি যে কও! আরো কত কথা লেখার ছিল, লিখতেই পারলাম না। পোষ্টটাও তেমন যুতের হয় নাই। তবুও বন্ধুকে নিয়ে পোষ্ট দিতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত। যদিও আনন্দটা একটু মাটি হইছে বৃষ্টি বরষার দিনে, অসংখ্য ট্রিট পাওনা আছি, বকেয়া না রেখে ঠিকঠাক মতো শোধ করে দিও। অনেক অনেক ভালো থাকো, আল্লাহর উপর মেজাজ খারাপ কম করো।
অসংখ্য ট্রিট কই? একটাই না ট্রিট পাও শুধু। জন্মদিনের।
আর তো কোন ট্রিট বকেয়া নাই। 
শুভ জন্মদিন প্রিয়
থ্যাঙ্ক ইউ রন ভাইয়া।
একটু দেরী হয়ে গেল তবুও শুভ জন্মদিন "প্রিয়" আপু
থ্যাঙ্ক ইউ
মন্তব্য করুন