শীতকালীন অবকাশ
মিশন সাকসেস ফুল। গুরু দত্তের অভিনীত ও পরিচালিত সব সিনেমা দেখা শেষ। বাজি ধরে বলতে পারি-- এই শতাব্দীতে উনার মতো পরিচালক আর হিন্দি সিনেমায় আসবেন না। ১০ অক্টোবর ১৯৬৪ সালে দেদারছে ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে মারা গিয়েছিলেন। তাঁর আগেও নাকি তিনবার ট্রাই করেছিলেন সুইসাইডের। তাঁর বন্ধু আবরার আলভির সাথে প্রচুর আলাপ করতেন আত্মহত্যা নিয়ে। piyaasa ও kaagaz ke phool বানিয়েও তিনি নিজেকে নিয়ে দম্ভ করতেন না মোটেও। বলতেন-"Life mein, yaar, kya hai? Do hi toh cheezen hai – kamyaabi aur failure. There is nothing in between. তাঁর সাথে প্রেম ছিল বলে চালু আছে নায়িকা ওয়াহিদা রেহমান এক ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, 'প্রতিটা সিনেমার শুটিং চলাকালীন এক সাথে চার সিনেমার আইডিয়া তাঁর মাথায় খেলতো, নতুন আরেক সিনেমা যখন শুরু হতো কাজ তখন অন্য আরো চার সিনেমার গল্প মাথায় আসতো। এবং কি কি করবেন সব ডিটেইলসে বলতেন কিন্তু দেখা গেল সব ভুলে অন্য আরেক সিনেমা শুরু করছেন'। আগে আমার ধারনা ছিল সব চেয়ে ভালো বানিজ্যিক হিন্দি সিনেমা কোনটা? উত্তর আসতো রাঙ দে বাসন্তী কিংবা জানে ভি দো ইয়ারো অথবা থ্রি ইডিয়টস। এখন আমি শিউর যে সেরা হিন্দি সিনেমা হিসেবে 'piyaasa' চেয়ে যোগ্য কিছু নাই।
এনটিভিতেও আজ একটা দারুন নাটক দেখলাম। আলী যাকের অভিনীত, গোলাম সোহরাব দোদুলের বানানো ২০০৮ সালের, নাম পান্ডুলিপি। ২০০৮-০৭ সালেও টিভিতে দেখার মত কিছু ছিল। কাল টিভিই দেখি নাই, পাইপে আটকে মরা ছেলেকে নিয়ে ভালোই ব্যবসা করলো টিভি চ্যানেল গুলা। পাঁচ মিনিট ছেড়ে ছিলাম টিভি দেখি লোকজন ফোন দিয়ে বলে, শান্তভাই কি আশ্চর্য কান্ড টিভিটা খুলেন। আমিও খুললাম, আর দেখে মনে হলো লাথি মেরে এইসব সাংবাদিক আর তাঁদের চীফ এডিটরদের মীরাক্কেলের ভাষায় 'টোনা' ছিড়তে পারলে শান্তি পাওয়া যেত। 'মেঘ মল্লার' সিনেমাটা অবশেষে দেখলাম। এক কথায় ইউনিক এক্সপিরিয়েন্স। এরকম মুভি বাংলাদেশে আগে হয় নাই। শতভাগ আমাদের সিনেমা। অনুদানের ছবি, বাজেটে ঘাটতি ছিল হয়তো, নয়তো এর চেয়ে ফাইনেষ্ট প্রোডাকশন আমি আজ অবধি দেখি নাই। ইলিয়াসের 'রেইনকোট' গল্পটা এমনিতেই আমার খুব প্রিয়। এই ছবি গল্পের কথা ভুলিয়ে দেয়, মনে হবে নতুন কিছু দেখছি। শহীদুজ্জামান সেলিমের যা অভিনয় তা সবসময়ই অসাধারণ। দুঃখ শুধু একটাই সিনেমাটা তেমন চললো না। শ্যামলী হলে এক সপ্তাহ রেখে ছিল তখন দেখতে পারে নাই। এক বন্ধু গাড়ীতে করে নিয়ে গেল, আর নিজের টাকায় আমাকে সিনেমা দেখালো। এরকম বন্ধুই তো চাই।
দিন কাটছে আগের মতোই। তবে আগের চেয়ে প্রচুর পড়ছি আর আড্ডা মিনিমাম লেভেলে কমিয়ে এনেছি। এমবিএ শেষ তিন মাস হলো। মানিক, বিভুতিভুষণ, তারাশংকর সব গিলছি গোগ্রাসে, যা ক্লাস টেন ইলিভেনেই পড়া ছিল তবুও। সমরেশ বসু আগে পড়া হয় নাই, তাও যোগার করেছি। আর টিভিতে সিনেমা তো সমানে দেখি। হলিউড বলিউডের অনেক দেখা মুভিও বারবার দেখি। সবাই বলবে সময় নষ্ট। জীবনের কোনো সময়ই নষ্ট হয় না আমার মতে। একেক সময় একেক রকম করে কাটায় মানুষ। মঈন ভাই নামে আমার এক ভাই আছে। আমাকে খুব স্নেহ করে, ঢাকা ব্যাংকে বিশাল জব করে, বিয়ে করেছে সেই কবে, রাজকন্যার মত এক বাচ্চা আছে চার বছরের, আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে মিললো না ভাবীর সাথে, ডিভোর্স। তিনি এখন এক সাথে তিনটা প্রেম করে, আর তিনজনকেই বলে তোমার সাথেই সিরিয়াস। আমাকে বলে শান্ত তোর এসএসসি কত সালে? আমি বলি। উনি তা সেই মেয়েকে বলে উনার এসএসসির সন হিসেবে। কম করে হলেও উনি আমার চেয়ে ৮-৯ বছরের সিনিয়র। ভেবে দেখেন এই যে মঈন ভাই এত সময় নষ্ট করছে, তার মতো বেঁটে টাকাওয়ালা ছেলের পিছনেও তিনটা মেয়েও সময় নষ্ট করছে, আবেগে ভেসে সব দিয়ে দিচ্ছে, এগুলা কি সময় নষ্ট নয়। সবাই সময়ের অবহেলা করে, দোষ হয় শুধু ব্যর্থদের।
এই পোষ্টটা লিখলাম এন্ড্রয়েড মোবাইল দিয়ে। ব্যাপক মেহনত করতে হলো। হাত চোখ সব ব্যথা করছে। অনেক কষ্ট করে লেখা। প্রতি লাইন লিখে সেইভ করতে হয়। লেখার ইচ্ছে ছিল না মোটেও। সবাই খালি জিগেষ করে, শান্ত লেখো না কেন? তোমার লেখা কত ভালো লাগে। আমি তাঁদের বোঝাতে পারি না যে আমার পিসি ও ল্যাপটপ দুটোই নষ্ট। ঠিক করবো সামনের মাসে, তখন লেখার চেষ্টা করবো। মোবাইলের চার্জ একদম শেষ। আপাতত এখানেই শেষ করি। নয়তো পরে এই তিন ঘন্টা বেকার খাটনি যাবে।
গুড টু সি ইউ ব্যাক, ম্যান।
নেক্সট ইয়ারে পিয়াসা দেইখা ফেলামু নে, মেঘমল্লার ও দেখার ইচ্ছা আছে। সমরেস বসু কেমন লাগলো ডিটেইলস জানাইয়েন তো, আমিও পড়ি নাই।
ওয়েলকাম তোমাকেও ফেসবুকের কোলে ফিরে আসার জন্য
অনেকদিন পর লিখলেন ভাইয়া। আপনার ল্যাপটপ আর পিসি তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠুক এই কামনা করি
থ্যাঙ্কস। নিজের যত্ন নিন
মোবাইল দিয়ে এত বড় পোস্ট!
এইটা তো কিছুই না, শান্ত ভাই আগে নকিয়া সি টু দিয়াই এর ডাবল সাইজের লেখা দিত মাঝে মাঝেই!
Philomena ----- A must watch movie
কালকে দেখবো! মিশর সফর লইয়া পোষ্ট দেন।
মন্তব্য করুন