চিয়ার্স ফর তাতাপু!
গত দুদিন আমার মন খুব ভালো। কারন ব্যক্তিগত। জানতে চাহিয়া লজ্জা দিবেন না। কিছু খবর আবার আশাপ্রদ না। তাও বলতে চাচ্ছি না। তবে দুদিন ধরে মন ভালো। এর বাইরেও ছয় বছর পর এক বন্ধুর সাথে আলাপ করে ভালো লাগছে। অনেক কথাই ছিল বলার, আগের মত সব বলতে ইচ্ছে করে না। কিছুই ইচ্ছে করে না। কিছু ব্লগ লেখার প্ল্যান ছিল তাও লেখা হলো না সময়ের আর ইচ্ছার অভাবে। তবে লিখবো। ব্লগে কেউ আসুক না আসুক, ব্লগেই লিখতে আমার শান্তি। আর বছর ঘুরে আজকেও আসলো দিন। আজ তানবীরা আপুর জন্মদিন। তানবীরা আপুকে নিয়ে লিখতে আমার ভালো লাগে। নতুন করে লেখার নেই কিছু, সেই পুরাতন কথা গুলো আবার বলা। কোথায় পড়েছিলাম, দুনিয়ার সব গল্প বলা হয়েছে, খালি প্রেজেন্টেশন আর রিকনস্ট্রাকশনের খেলা। আমার কথা গুলো সেরকমই। ঘুরে ফিরে বলে যাওয়া বারবার।
আমার এক বন্ধু আমার কাছে চিঠি চেয়েছিল। তাকে নাকি কেউ লিখে না। আমি লিখেছিলাম সে তাতেই খুশী। অথচ সে জানে না ব্লগে লিখে লিখে আমার হাত পেকে গেছে। চাইলেই লিখতে পারি। চিঠির যুগ সব সময় মোহময় ছিল। সেই যুগে জন্ম নিলেও পুরোটা পাই নি, পুরোটা পেলে আমাদের জীবনটা হতো আরেক রকম। তানবীরা আপুকে আমার চিঠির মত মনে হয়। প্রত্যাশিত চিঠির মতোই স্নিগ্ধ এক মানুষ তিনি। মনে হয় চিঠির যুগে থাকলে উনাকে আমি চিঠি লিখতাম। এক গাদা নিজের কথা পরের কথা লিখে পাঠাতাম। উনি দারুণ ভাবে জবাব দিতেন। তানবীরা আপু আসলে সেরকম মানুষই। উনি বিরক্ত হন না, আমি কিছু বললে বা লিংক দিলে ২ দিন পরে হলেও উনি এসে জানাবে, কি প্রতিক্রিয়া। জানতে চাইবে আমার কথা। এরকম স্নেহশীল মানুষদের নিয়েই ঘেরা আমার ব্লগ জীবন। তানবীরা আপার আরেক ভালো ব্যাপার হলো আপনি যাই বলেন উনি ভেবে চিন্তে উত্তর দিবেন, আমার আপনার হঠকারী যুক্তির কথাও তিনি গুরুত্বের সাথে শুনতে চাইবেন। এরকম মানুষ আর কয়জন পাওয়া যায়? আর সব চেয়ে বড় কথা ইন্সপায়ারিং। যাই বলি অনুপ্রেরণা দেন। আমি মানুষ সুবিধের না, তাই এত অনুপ্রেরণাতেও খুব ভালো কিছু হয় না। সমস্ত কিছুতেই তাড়াহুড়া। ভাবি একদিন তানবীরা আপুর মতো। ধীর স্থির হয়ে গোছানো ভাবে কিছু শেষ করবো।
তানবীরা আপু দেশে আসে না অনেকদিন। দেখি না মেঘকে। শোনা হয় না দুলাভাইয়ের গান। একদিন আমাদের সবার ব্যস্ততা ফুরাবে, সেদিন হয়তো এসবের মিলবে অবসর। তার আগে আমরা তো সবাই ছুটছি। সবাই ব্যস্ত। ব্লগটাও অলস পড়ে থাকে আমাদের ব্যস্ততায়। এখন নাকি দুনিয়াতে কন্টেন্ট রাইটিংয়ের খুব চল। তাহলে ব্লগে লিখে না কেন মানুষ। নাকি ব্লগে মানুষকে আটকানোর আর উপায় নেই। আদিম কালের এক ব্লগারের কথা হচ্ছিলো তিনি জানালেন কমিউনিটি ব্লগের দিন শেষ। আমি জানালাম, কমিউনিটি সেন্টার বাদে সব কমিউনিটির দিন শেষ। এখন যার যার বিপদ তার তার। যার যার সিন্ডিকেট মেনে চলার নামই এখন জীবন। তবুও আমি নিয়মিত ব্লগ দেখি, পড়ি, না লেখার অনুশোচনায় ভুগি। আবার লিখবো প্রতিদিন। তখন হয়তো লেখার জন্য ব্লগ থাকবে না। আমার ব্লগ পড়ার পাঠক অনেক হলেও মন্তব্যকারী একজনই, তিনি তানবীরা আপু। প্রায় প্রতিটা আমার পোষ্টে উনি যেভাবে কমেন্ট করেন, ভালোবাসা জানান, শিক্ত হই বারবার। আমিও পোষ্ট দিয়ে বসে থাকি, আর কেউ যেমন তেমন তানবীরা আপু তো কিছু বলবেই। তাই ভরসা, তাই পোষ্ট দেয়ার অনুপ্রেরনা। প্রশংসা আমি কম পাই নি কিন্তু এরকম নিরবিচ্ছিন্ন আমার লেখা নিয়ে মন্তব্য আর কেউ করেন নি।
দারুণ সব লেখা এখন লিখেন তানবীরা আপু। বিভিন্ন দশকের জীবন নিয়ে তিনি লিখে শেষ করেছেন মনোমুগ্ধকর এক সিরিজ। একটু খুঁজলেই পড়তে পারবেন। সেদিন কি মনে করে শেলফ থেকে একদিন অহনার অভিবাসন বইটা খুললাম। উৎসর্গে আমার মতো অভাজনের নাম দেখে মনটা ভালো হয় বারবার। আপনি কাউকে ভালোবাসতেই পারেন, পছন্দ করতেই পারেন কিন্তু কেউ যদি আপনাকে তার চেয়েও বেশী স্নেহ করে, ভালোবাসে সেটাই আসল ব্যাপার। তানবীরা আ্পু সেরকম মানুষ তিনি আমাদেরকে ভালোবাসেন। এই ভালোবাসা আপনি খালি চোখে দেখবেন, সামান্য মিশলেই বুঝবেন কত মায়া মানুষটার। মায়াময় মানুষদের আমার পছন্দ। কারন মায়াময় মানুষ কিছু করুক না করুক, ভুলে যায় না কখনো। উনার সব কথা লেখা যে বেদবাক্যের মতো বিশ্বাস করি, একমত হই এমন না, তবে আমি উনাকে বুঝি, উনিও আমাদের বুঝেন। অনলাইনে বেশীর ভাগ সমস্যার শুরু ভুল বোঝা নিয়ে। এক মালায়লাম সিনেমায় নায়কের ডায়লগের কথা মনে পড়লো। প্রেমে প্রত্যাখাত হয়ে নায়ক ডায়লগ দেয় নায়িকাকে, 'রাহুলকে বিয়ে করছো, রাহুল নামটাও হিন্দি সিনেমার নায়কদের মতো , চাইলেই আমি রাহুল হতে পারি, কিন্তু আমি বালান কে নায়ার, আমি জেনুইন। আমার কারো মতোই হতে চাই না।' সিনেমাতো সিনেমাই কিন্তু তানবীরা আপু আমার কাছে সেরকম একজন জেনুইন মানুষ।
তানবীরা আপার জন্মদিনে শুভেচ্ছা। অনেকদিন খাওয়ান না। আশা করি দেশে এসে আড্ডা হবে খাওয়া হবে কথা হবে। ২০১৩ সালের মতো জন্মদিনের তারিখ না জেনে, হুট করে বাসায় ঢূকে জানবো আজ আপনার জন্মদিন। আর আপনি সাদর সম্ভাষনে আমাদের সাথে আড্ডা দিবে্ খাওয়াবেন। মজার মজার কথা হবে। হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বো। এরকম দিন হয়তো আসবে আবার আমাদের জীবনে।
তাতাপুকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা...
ভাল কাটুক
আনন্দময়তায় কাটুক
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার দারুন প্রকাশ।
মন্তব্য করুন