হ্যাপি বার্থডে, প্রিয় আমরা বন্ধু!
শুভ জন্মদিন আমরা বন্ধু। এখন সেই ব্লগের পাতার পর পাতা যখন আমার প্রিয় ব্লগারদের লেখা দেখি না, নিজেও লিখি না তেমন, ভারী অবাক লাগে। নিজের কাছে অচেনা লাগে সব কিছু। অথচ আমরা বন্ধু ব্লগ মানেই একটা সময় প্রথম পাতায় আমার লেখাই থাকতো চারটা পাঁচটা। প্রতি পাতায় পাতায় আমার লেখা। এরপর এখন আমি শুধুই পড়তে যাই। হারিয়ে যাওয়া রাসেল ভাইয়ের পুরোনো লেখা পড়তে যাই, মীর কি লিখলো একটু ঢু মারি, আহসান হাবীবের এত কবিতা কই থেকে আসে তা ভাবি, তানবীরা আপুর কোনো পোষ্টের কথা মনে পড়লে দেখি, জেবীন আপু, জ্যোতি আপু, বিমা ভাইয়ের পোষ্ট ও কমেন্ট দেখি, প্রিয় ও বিষন্ন বাউন্ডুলের কথা মনে করি, গৌতম দার আক্ষেপ দেখি, শুভ ভাইয়ের কবিতায় চোখ রাখি, কামাল ভাইয়ের পুরোনো লেখা পড়ি। আমরা বন্ধুর কাছে আমার অনেক ঋণ। এখনো যে ব্লগটা যে বেচে আছে, এটাও এক ধরনের স্বার্থকতা। আমরা বন্ধু আমাকে দিয়েছে অবারিত স্বাধীনতা, মন যা চায় লিখো। সেখানের সবাই যে ভূয়সী প্রশংসা করতো তাতে আরো অবাক হতাম। লেখা যে আমি খারাপ লিখি না এই বিশ্বাস আমাকে দিয়েছে আমরা বন্ধু। রাতের পর রাত মশার কামড় খেয়ে ব্লগ লেখা, তারপর কারেন্ট চলে যেয়ে লেখা মুছে যাওয়া, মোবাইলে লেখা, ট্রেনে বসে বসে লেখা, বাড়ীতে অন্ধকারে লেখা, কত ভাবে যে ব্লগ লিখলাম। সামহ্যোয়ারইনে আমার লেখা কম কমেন্ট করতাম বেশি। কিন্তু আমরা বন্ধুতে আমি লিখেছি, লেখার বন্ধু পেয়েছি, অসাধারণ সব লোকদের সাথে মিশেছি। লেখা কিভাবে ভালো খারাপ হয় তা নিয়ে দিনের পর দিন আড্ডা মেরেছি। আমরা বন্ধুতে লোকজন ছিল খুবই কম। কিন্তু সবাই এত আপন, এত যুথবদ্ধতা, মনে হতো আমরা আমরাই তো। ব্লগ লেখে পোষ্ট করার শান্তি এই ফেসবুকের যুগে লোকজনের কাছে এবসার্ড মনে হবে। আমাদের কাছে ব্লগ লিখলে মনে হতো করার মতো কিছু করেছি। আমরা বন্ধুর সব থেকে মজা ছিল পিকনিকে। আমি দুটোতে গিয়েছিলাম। কি যে তেল ছিল তখন আমাদের। এই যে আমি ভাসাভাসা স্মৃতিশক্তি নিয়েই লিখতে পারি, এত পড়াশোনা আর জানাশোনা সব কিছুর শুরু আমরা বন্ধুর। রাসেল ভাই তো নাই থাকলে বলতো, শান্ত একটা রেয়ার ব্লগিং মাল।
নিজের পুরোনো ব্লগ গুলো দুই মাসে অন্তত একবার দেখি। কি তখন চলতো মনে, কি লেইম ভাবতাম, কেমন ছিল সময় তা নিয়ে ক্লিয়ার হতে সাহায্য করে। কত রকমের পোষ্ট যে আমি লিখেছি। সিনেমা রিভিউ, বই রিভিউ, দিন যাপন, ডায়রী, মুক্তমত, সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ, বন্ধুদের নিয়ে আমার পোষ্টের শেষ নাই। আমার অনেক লেখাই এখন পড়লে জীভ কামড়াই, কি সব লিখতাম। কিন্তু সেসব লেখাই আমার সাহস। যে কাউকে নিয়েই আমি সমালোচনা করতে পারতাম আমি, সরকার বা ধর্ম সবকিছু নিয়েই ছিল একটা ক্রিটিক মন। আমার মনে আছে আমি একবার মোস্তফা কামাল রাজের সিনেমা নিয়ে লিখেছিলাম পচায়া। হলে বসে দেখতাম বলে তখন এসব ওউন করতাম। লোকজন যে ক্ষেপছিলো কিছু, এক লোক আমাকে ইনবক্স করেছিল ভাই তোরে পিটামু। আমি জবাব দিয়েছিলাম স্বাগতম। বাসার ঠিকানা দিয়ে ছিলাম। সেই লোক আর আসে নি। এখন হলে এসব কখনোই করতাম না। লোকজন ব্লগ ছাড়লে ব্লগ দেখতে পারে না। আমি উল্টো। এখনো আমরা বন্ধু আমার সার্কেল। আমরা বন্ধু না থাকলে কিছু অসাধারণ মানুষের সাথে এত সম্পর্ক কিভাবে হতো। এখনকার ছেলেমেয়েদের প্রচুর নেটওয়ার্ক, আমি দেখেছিলাম, কাজ আর আড্ডা বাদে আমার বন্ধু বলতে ব্লগের লোকজনরাই। জয়তু আমরা বন্ধু। একদিন আবার নিশ্চয় আমাদের সময় মিলবে, ব্লগ লেখালেখিও হবে।
শুভ জন্মদিন(যোগ ৬ দিন) টু আস অল!
একবারও পিকনিকে যাওয়া হইলো না, আফসোস!
সব পেলে নষ্ট জীবন। আমিও এক পিকনিকে যাইনি।
মন্তব্য করুন