সময়ের নদীতে জীবনের ডিঙ্গি নৌকায় আমি...
কূল কূল করে বয়ে যাচ্ছে সময় নদীর স্রোতের মতো। সেই সময় নদীতে আমার ছোট্ট সাদামাটা জীবন নৌকা। সেই নৌকার দাড় উঠিয়ে আমি র্নিলিপ্ত মনে বসে থাকি। আমার নৌকোর ছেড়া পালে সুখদুঃখগুলো বসন্ত, শরৎ বা আষাঢ়ের হাওয়া হয়ে আছড়ে পড়ে। আমার ছোট্ট জীবন তরী সে হাওয়াতে কখনও দ্রুত আবার কখনওবা মৃদুমন্দ গতিতে অস্তগামী সূর্যকে নিশানা করে চলতে থাকে, ঠিক যেখানটায় নদীটা আকাশের প্রান্তে গিয়ে মিশে সেখানটায়। কখনও ভরা জোছনায় গা ডুবিয়ে চুপটি করে বসে থাকি অনন্তের অপেক্ষায়। নৌকার পাটাতনে শুয়ে রাতের আকাশ দেখি। তারাদের সাথে চোখটিপে খুনসুটি করি, তারাও মিটমিট করে তার প্রতিউত্তর দেয়। ধুমকেতু গুলো চোখের কোনবেয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়, আমার সাথে তাদের এ যেন প্রতিনিয়ত লুকোচুরির খেলা। শরতের ফুরফুরে হাওয়া ছোট্ট বেলার মায়ের আঁচল হয়ে মুখে পরশ বুলিয়ে যায়। চোখ বুজলেই মনে হয় যেন ছোট্ট সেই আমি মায়ের আচঁলে মুখ লুকিয়ে আছি, মায়ের শরীরের সেই মায়ভরা গন্ধ ঠিক ঠিক নাঁকে বাজে। আমি চোখ বন্ধ করে থাকি যতক্ষন না দুপুরের ক্ষরতাপ আমাকে জাগিয়ে না তোলে। ঘোর কেটে চোখ খুলে নদীর দুপাশে সারি সারি কাশঁফুল দেখতে থাকি। তারা যেন দুলে দুলে হাত নেড়ে আমার পাণে চেয়ে হাসে। আমিও হেসে হাত নেড়ে সাড়া দিই। সবকথা হয় মনে মনে, চোখ আর হাতের ইশারায়। হ্ঠাৎ একটা শুশুক আমার ডিঙি নৌকোর এপাশ থেকে ওপাশে লাফিয়ে পানিতে হারিয়ে যায়, আমি ঠিক বুঝতে পারি অভিমানি শুশুকের বলে যাওয়া কথা। সে যেন অভিমানে বলে যায় 'শুধু হতচ্ছাড়া কাশফুল গুলোকেই দেখলে! আর আমি যে কখন থেকে তোমার নৌকোর এপাশ ওপাশ ছুটিছুটি করছি সে খেয়াল কি তোমার আছে?! আমি গামছার পুটলি থেকে খইটা, মোয়াটা সাথে গুড়টা তার যাত্রাপথে ছুড়ে মারি, বলি 'অনেক হয়েছে তোর অভিমান এই বার মোয়াটা, খইটা মুখে দিয়ে আমাকে উদ্ধার কর, তোর চালাকি আমার বোঝা শেষ। পাজি শুশুকটা টুপ করে ভেসে উঠে মোয়াটা মুখে নিয়ে দাঁত কেলিয়ে, মুখে ভেঙচি কেটে, ফিক করে একটা হাসি দিয়ে আবার পানিতে অদৃশ্য হয়।
মাথার উপর সূর্যটা নির্লিপ্ত ভাবে আবার তেতে উঠে, ভাবটা যেন, আমার কি দোষ! আমার তাপটাই এমন, চাঁদের মতো ম্যারম্যারে আলো দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, কার গতর পুড়লো বা কার ঘাম ঝরলো আমার তা ভেবে কাজ নেই। আমি মনে মনে হাসি। সূর্যটার বুদ্ধি শুদ্ধি আসলেই নাই। ঠিক যেন এক ক্লাসে সাতবার থাকা আমাদের সেই আদুভাই। চাঁদের আলোকে যে ম্যারম্যারে বলে অবজ্ঞা করল, গাধাটা জানে না যে ওটা ওর নিজেরই আলো।
আমার রোদে পোড়া তামাটে শরীরটা সূর্যের দিকে পিঠ দিয়ে নৌকোর পাটাততে এলিয়ে পড়ে চোখ বুজে। মনে মনে ঠিক করি এবার হেমন্তের আগে আর চোখ খুলছি না। চোখ খুলেই যেন সোনা রঙের ধান কাটা দেখতে পাই।
(হেমন্তে চোখ খুললে এর পর্ব চললেও চলতে পারে)
চলতে অনুরোধ জানাই
চমৎকৃত হলাম
অদ্ভুত সুন্দর! অবশ্যই চলবে।
===================
বদ্দা,
তারা, কাশফুল, সাড়া--- এগুলোতে চন্দ্রবিন্দু পড়ে গেছে। এডিট করে দিয়েন।
অট: একেই হয়তো বলে চিটাইংগা ইনফ্লুয়েন্স।
অসর্তক ভাবে টাইপ করা। বানান ঠিক করে দিলাম।
মুগ্ধ হলাম। চমৎকার।
মুগ্ধ। চলুক।
চলুক ...
হেমন্তে চোখ খুলুক
দারুন দারুন দারুন
লাইক্কর্লাম
হেমন্তে চোখ খুলে এর পর্ব চলতেই হবে
মন্তব্য করুন