তাকে ভালবাসতে আমারও কোন দিবস লাগে না (উৎসর্গ মানুষ/মানু)
মেলা বছর আমরা দুই ভাইও এক সাথে ছিলাম। আমার জন্মের দশ বছর পর যখন আমার তিন নম্বর ভাই আকিফের জন্ম হইলো, তখনই হয়তো আমি আর আসিফের যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হইল এবং সেই মিলমিশের পক্তি "আরিফ আসিফ দুই ভাই, মিলে মিশে গান গাই" আর উচ্চারিত হইলো না। ছোট্ট ভাইটার প্রায় বছর দুয়েক পর আমার এক বোনের জন্ম হইলো।
প্রকৃতির কোন এক রহস্যজনক কারণে ছোট্টকাল হইতে নারীজাতির প্রতি আমার এক অজানা (বা হয়তো জানা) ক্ষোভ ছিল। বোনের দুনিয়াতে আগমন সেই ক্ষোভে যেন তেলে আগুন বেগুন হয়ে জ্বলে উঠলো, আমি সারাদিন একা একা নিভৃতে চোক্ষের জল ফেললাম আর ফরিয়াদ করলাম "আল্লাহ তুমি আমারে আরও ১০০টা ভাই দাও কিন্তু আমি কোনও বোন চাই না! (???) খোদা সেই অবুঝ কিশোরের কথায় কি মনে করলো জানি না, তবে জন্মের পরের দিন বিকাল বেলা আমার বোনটি নিউমোনিয়ায় মারা গেল। সেই রাতেই আমি তাকে কবর দিয়ে আসলাম বাড়ীর পাশের কবর স্থানে।
এর পর অনেকটা দিন কেটে গেল। আম্মা মাঝে মধ্যেই বোনটির কথা মনে করে চোখের জল ফেলতেন। আর আমি চরম অপরাধবোধ নিয়ে বোবা হয়ে থাকতাম।
-----------------------------
বিয়ের এক বছর পর আমার ঘর আলো করে আমার মেয়ের জন্ম হলো। তার জন্মের আগে আমি আমার প্রবাসের চাকরী হারানোর ভয় তুচ্ছ করে দেশে ছুটে গেলাম। তার জন্মের পর তার নানা'র বাড়ী আর দাদার বাড়ীর লোকজনের মধ্যে হাসির রোল পড়ে গেল মেয়ের বাবাকে নিয়ে। তাদের কথা আমি নাকি আমার মেয়েকে নিয়ে অতিরিক্ত আহ্বলাদীপনা করছি। মেয়ের মা, মেয়ের দাদী (আমার মা) কে উঠতে বসতে শুধু সতর্কের উপর সর্তক করছি... "আহা, ওকে ওভাবে কেন নিচ্ছ, নিশ্চই ও হয়তো ব্যাথা পাচ্ছে, আনইজি ফিল করছে", আচ্ছা ওর বোধ হয় ঠান্ডা লাগছে!, আহা ও এভাবে কাঁদছে কেন?!!! নিশ্চই ওর কোন সমস্যা হচ্ছে, আম্মা ওভাবে না, ওকে এভাবে কোলে নাও, এভাবে ও কমফোর্ট ফিল করে (!!!)। আমার এমন হাজারটা কথার জ্বালায় আমার বাড়ী আর আমার শশুর বাড়ীর লোকজন অতিষ্ঠ। আমার একবন্ধুতো বলেই বসলো “"দোস্ত বিয়া আমরাও করছি, বাচ্চা আমাদেরও হইছে, কিন্তু তুমারটা তো দেখি রেকর্ড!!!"
তারা কি এটা কোনদিনও জানবে যে, আমার মেয়ে আমাকে সেই অপরাধ বোধ থেকে মুক্তি দিয়েছে। আমার মেয়েকে কোলে নিয়ে আমার মা’র হাস্সোজ্জল মুখটার দিকে তাকিয়ে আমি মনে মনে বলি … মা, আমাকে ক্ষমা কোরো, এই নাও তোমার মেয়ে আমি তোমাকে ফেরত দিলাম।
-------------------------
এ ভালবাসা নারী দিবসে জেগে উঠার মতো সস্তা আবেগ নয়। এ ভালবাসাতো প্রতিদিনকার, প্রতিটা ক্ষণের।
তাকে ভালবাসতে আমারও কোন দিবস লাগে না।
---------------------
মানু, তোমাকে ধন্যবাদ, তোমার কারনে এই না বলা কথাগুলো আজ বলে ফেললাম।
মানুর পোষ্ট দ্রষ্টব্যঃ http://www.amrabondhu.com/maanush/659
-----------------
লেখাটায় গুরুচন্ডালীকা দোষ আছে, আলস্যের কারনে সংশোধণ করিলাম না।
-------------
থ্যাংকু...
হুমম
হুমম....?
এইরম দিবস বিষয়ে আমার একটা যুক্তি আছে। যেহেতু এই পুরুষ শাসিত সমাজে আমরা অধিকাংশ সময়েই নারীর অবস্থান নিয়া ভুইলা যাই তাই নিজেগো মনে করাইয়া দেওনের জন্য একটা কইরা দিবস রাখছি নারী সমাজ, মাতৃভক্তি ব্লা ব্লা ব্লা'এর জন্য।
পুরুষের জন্য যেই কারণে কোন দিবস নাই...
রুদ্র মোঃ শহীদুল্লাহ'র লেখা একটা গান আছে,
করিতে না পারি দরাদরি,
সহিতে না পারি দরাদরি,
সমাজের শেকলে আটকা পরেছে পা
সোহাগে নাম রেখেছো নারী...
ব্যাপারটা অনেকটা তওবা পড়ার মতন; সারা বছরের অবহেলা - অনাচার একদিনে ধুইয়া ফেইলা বিবেকবান মানুষরা একটু বিবেকের জ্বালা থিকাও মুক্তি পায়
ঠিক ধরছেন পুরুষ যা ইচ্ছা তা করতে পারে এই সমাজে...সমস্যা হইলো নারীরাও ক্যারীড হইয়া যায় তাগো হামকি ধমকিতে...
পুরুষ শাসিত এ কথাটা দিন দিন তার অর্থ হারাইতেছে। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। যে দেশে আজকাল প্রায় "নারী নির্যাতন মামলায় ফাসায়া দিমু" শোনা যায়। যে দ্যাশে বিয়ের পর চাকরী করা যাবে না এই কথার পর বিয়ের সম্বন্ধ্যই ভেঙে যায় আজকাল। যে দেশে গার্মেন্সে চাকরীর কারনে বাসার কাজের মেয়ে পাওয়া যায় না। যে দেশে নারী ঘরে বসে থাকবে, এ কথার আর কোন ভিত্তি পাওয়া যায় না... সে দেশকে, সমাজকে পুরুষ শাসিত বললে আমার অন্তত কেমন জানি শোনায়।
পুরুষ শাসিত শব্দটা হইলো পুরুষতান্ত্রিকতা শাসিত'এর ক্ষুদ্র রূপ। এই সমাজে এখনো পুরুষের রুচীবোধ দিয়াই বেশিরভাগ মূল্যবোধ তৈরী হয়। পুরুষের লেইগা নারীরা রাইতে বাইর হইতে নিরাপদ থাকে না...তার সমাধান হইলো নারীর যথাসম্ভব আড়ালে থাকা। পুরুষের কুনজর সামলাইতে নারী পর্দা করে। আবার পুরুষের মনোরঞ্জনের লেইগা তার শর্টস্কার্ট কিম্বা লো-কাট পরা।
পুরুষ যখন স্ট্যান্ডার্ড তৈরী করে তখন নারী প্রধানমন্ত্রী হইলেও কিছু যায় আসে না। সে নিজেও পুরুষের ঠিক কইরা দেয়া নিয়ম মাফিক ঘোমটা দ্যায়...গার্মেন্টসে চাকরী করতেও নারীরে লাগে, ঘরের কাম করতেও নারী পছন্দ...পুরুষ করবো সব শক্তি প্রয়োগের জব...এই যে লাইন টানা এইটা পুরুষেরাই করছে নারীরা না...হয়তো সারফেইসে কিছু পাল্টায় কিন্তু শেকড়ে একই থাকে পুরুষ শাসিত এই সমাজ...
কি জানি হইতে পারে...
তয় আমার মনে হয়..পুরুষের কুনজর সামলাইতে পুরুষই (স্বামী/পিতা/ভাই) নারীকে পর্দা করায়। আবার পুরুষকে মনোরঞ্জনের লেইগা তার শর্টস্কার্ট কিম্বা লো-কাট পরা।
অথবা, এটাও হতে পারে নারী তার নিজেকে সুন্দর করার জন্য সাজে, ঠিক যেমন পুরুষেও চুল আচঁড়ায় বা কোট টাই সুট বুট পরে। আমার কখনও নিজেরে ফিটিং ফাটিং করার সময় মনে হয় নাই এই মাঞ্জা মারা দেইখা কোন নারী আমার দিকে সেক্সী দৃষ্টিতে তাকাইবো বা এভাবেও বলা যায় কুনো মেয়ে এই মনে কইরা হয়তো কখনও সাজে না যে কোনো পুরুষ তারে দেইখা শিস বাজাইবো বা কুনজরে দেখব।
পুরুষের জন্য যেই কারণে কোন দিবস নাই...
তথ্যে কিঞ্চিৎ ভুল আছে মনে হয়। আর্ন্তজাতিক পুরুষ হইল নভেম্বর ১৯
তথ্যসূত্র: http://en.wikipedia.org/wiki/International_Men%27s_Day
হু ম ম
হুমম too
লেখাটা ভালো লাগলো। আপনার বোনের কথা শুনে খারাপ লাগলো। মেয়ে নিয়ে আমার নিজেরও আপনের মতো অবস্থা।
আমরা বাপ বইলা কথা
কি কন নজরুল ভাই।
আমার আবজাব লেখা একজনের হলেও ভাল লাগছে। অনেক ধন্যবাদ বকলম ভাই। আপনার মেয়ের জন্য শুভকামনা রইল।
মানু, তোমার লেখা ভালা পাই, তুমি তারে আবজাব কও আর যাই কও।
ভাল থাইকো।
মনটাই খারাপ হয়ে গেল ভাইয়া শুরুটা পরে।
পিচ্চিমনি ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, এই কামনা সবসময়।
দোয়া কইরেন মুক্ত ভাই। মাইয়াডা আমার জানের জান।
মন্তব্য'এর জায়গা ফাকা আছে। দয়া করে আবার প্রদান করুন---ভাই মডুগণ এ কেমন যন্ত্রণা? মন্তব্য লিখে প্রকাশ করতে দিলেই হাওয়া হয়ে যায়। সরি নতুন মানুষকে একটু রাস্তা দেখান।
বকলম ভাই, অনেক কথা লিখছিলাম। এখন সংক্ষেপে কই। আমারও আপনার মতোই অবস্থা, একজোড়া মেয়ে নিয়ে। এমনকি বউও ইদানিং আড়ালে আবডালে হাসাহাসি করে আমার মেয়ে নিয়ে পাগলামী দেখলে। যার ইচ্ছা হাসুক, আমার মেয়েরা আমার মা, আমার জানের জান , পরাণের পরাণ।
সোনামণিগো লাইগা অনেক অনেক আদর ও দোয়া।
-------------
অট: অটো ড্রাফট না থাকায় যে কত লেখা হারাইছি কি কমু, মানুন ভাই। এখন একটু পর পর Ctrl+A আর Ctrl+C চাইপা কাম চালাই।
আমি এখনো মেয়ে বাবু দেখতে পারি না। কারণটা নারীজাতির প্রতি অবমাননা টাইপ না। মেয়ে বাবুগুলা কেন জানি আমার কোলে উঠে না
নারী জাতি লুল চিনে
ভাঙা রে আমি আর কি কমু। মানুই তো দেখি কইয়া দিল।

এ ভালবাসাতো প্রতিদিনকার, প্রতিটা ক্ষণের।
এটাই
মেয়ে না থাকলে বাবা হওয়ার মজাই বোঝা যায় না।
কেমন যেন একটা অনুভূতি হলো লেখাটা পড়ে
বোনের কথা পড়ে কষ্ট পেলাম, ভাতিজির কথায় কষ্ট দূর হয়ে গেলো অনেকটাই...
লেখাটা অনেক ভালো লাগছে বকলমভাই
ছাইপাশ যাই লিখি, নুশেরা'পা তার সুনাম কইরা আমারে আসমানে তুইলা দেন।
এই বার আসামানে উঠানের দেরী দেইখা রীতিমত টেনশানে পইড়া গেছিলাম নুশেরা'পা।
আর কুনো কথার দরাকার নাইকা ..........
""তাকে ভালবাসতে আমারও কোন দিবস লাগে না ""
লেখাটাও দারুন............. না পড়লে বোধ হয় আফসুস থেকেই যেতো।
থ্যাংকিউ রুবেল ভাই। বিড়াট কমপ্লিমেন্টস্ আমার জন্য।
এ ভালবাসা নারী দিবসে জেগে উঠার মতো সস্তা আবেগ নয়। এ ভালবাসাতো প্রতিদিনকার, প্রতিটা ক্ষণের।
তাকে ভালবাসতে আমারও কোন দিবস লাগে না
ছুঁয়ে যাওয়া লিখা
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ তানবীরা ভাই।
ভাই না আপু হইবেক। সরি
ও আচ্ছা তাইলে এই ব্যাপার......আমি ভাবছিলাম কি না কি
লেখাটা পড়ে ভালো লাগছে.....
ভালো লাগছে জেনে আমারও ভালো লাগছে। ভাল থাকবেন।
হঠাত করে আপনার লেখাটা পড়লাম।ভালো লাগলো।
ভাতিজির একটা ছবি দেন দেখি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আশরাফ ভাই। দেখি সময় করে একদিন দিব মেয়ের ছবি। ভাল থাকবেন।
মন্তব্য করুন