নিজের সুরতহাল নিজের পঠনের তলে
মনোযোগহীনতা আমার সব ব্যর্থতার পেছনে ঘাপটি মেরে থাকে। কোন কাজেই আমি পূর্ণ মনঃসংযোগ করতে পারি না সেই পনেরো বছর বয়স থেকে। গত একমাসের উপর বাসায় আছি। নিজেকে খুব কাছ থেকে অবলোকন করার এমন দীর্ঘ সুযোগ কর্মজীবনে প্রবেশের পর থেকে আর পাইনি। প্রতি দশ মিনিট ও নয়, বরঞ্চ প্রতি মিনিটে আমার চিন্তার বিষয় পরিবর্তিত হচ্ছে। ধীরে ধীরে মানুষের প্রতি আস্থা কমেছে।একমাত্র ভালোবাসার মানুষ ছাড়া আর কারও কাছে নিজেকে উন্মুক্ত করি না, আবেগের প্রবাহ অনেকটাই স্তিমিত।সংযুক্তদের প্রতি প্রত্যাশার কোটা শূন্য; ফলাফল - মানসিকভাবে দুঃখভারাক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কম। সময়, বয়স, পেশা, ক্ষমতার উপযুক্ত ব্যবহার, সামাজিক অবস্থান, পরিচয়, অর্থ মানুষকে কিভাবে পরিবর্তন করতে পারে তা নিজেকে দিয়ে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি।
আবেগের উঠানামা কম হওয়াতে আমার সৃজনশীলতা বা সৃষ্টিশীলতাও হ্রাস পাচ্ছে সমানুপাতিক হারে। সুরের জন্যে আগের মতো হাহাকার আমার মাঝে এখন অনুপস্থিত। হিসাব করি যা আগে স্বভাববিরুদ্ধ ছিল, নির্বিকারত্ব অনেক বিষয়েই প্রাধান্য পায়। সামগ্রিক এই পরিবর্তনে আমি খুশি বা মনঃক্ষুণ্ন কোনটাই না। নির্মোহ ভঙ্গীতে নিজেকে পর্যবেখ্ষণই এসব ক্ষেত্রে শ্রেয়তর মনে হয়।
মিশর, তিউনসিয়া,বাহরাইন, ইরান, লিবিয়া - এসব দেশে সাধারণ মানুষের গণতন্ত্র চেয়ে যে আন্দোলন, তার প্রতি বিশ্ববাসী এবং পম্চিমা দেশ ও তাদের মিত্রদের অব্যাহত সমর্থন যে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্র তৈরীর পক্ব ষড়যন্ত্র তা নিমেষেই বুঝে যাই। প্রাকৃতিক সম্পদের দখল প্রাপ্তিই দিনশেষে আসল কথা। তেল, হায় তেল!সবাই ইহুদী ব্যবসায়ীদের তল্পিবাহক ছাড়া আর কি! দেশে দেশে নারী শাসক বা সাদা চামড়ার জায়গায় কালো চামড়া এলেই কি বিশ্বব্যাপী শান্তি/ পরিবর্তন সূচিত হবে! - এইসব জটিল হিসাব আমার মতো মূর্খ মানুষও এখন শুধু বয়সের কারণে খুব সহজেই বুঝে যায়।
এটুকু বুঝি মানবিকতা ভুলিনি, ভালোবাসি নিঃশর্তভাবেই তবে আগের মতো পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই নয়। শুধু পরীক্ষিত সুহৃদের পাশেই আমি আমার সর্ব অবয়ব নিয়ে এখন আবির্ভূত হবার ইচ্ছা পোষণ করি। আমি আর সার্বজনীন নেই।
সময়, সময় এবং সময় অনেক কিছুই বদলে দেয়। মানসিক বয়স বেড়ে গেলে যা হয় তোমারও তাই হচ্ছে।
এই অলস সময়টায় এমন আরো ভাবনার ঝুড়ি উপুড় করে আমাদের ভাবনার জগতটাকে রঙিন করো, শুভকামনা, নিরন্তর।
ভাবি মানসিক বয়স বেড়েছে। তারপর এমন এমন কান্ড করি যে বুঝি সবক্ষেত্রে বাড়েনি
ধন্যবাদ আঁর দেশী বইন...
মানবিকতা... ভালবাসা... এর বাইরে আর কি থাকতে পারে? এইটুকু অবশিষ্টই সঠিক নয়?
আগে মানুষ মাত্র এমন সবাইকে ভালোবেসেছি, কার মায়ের অপারেশন, কার বোনের অসুখ, কার মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না, কোন ফ্রেন্ডের হাজব্যান্ডের সাথে ঝামেলা, কার রক্ত লাগবে এসব করতে করতে আমি আর কোনকিছুর সময় পেতাম না। অফিসে কে চিঠি লিখতে পারে না, কে কম্পিউটার অপারেট করতে পারে না, কার বাচ্চা ছোট তাড়াতাড়ি বাসায় যাওয়া দরকার উজায়ে তার কাজ করে দেয়া এসব করতাম। এখন ধাক্বা খেতে খেতে সবার জন্য একইরকমভাবে আর ঝাঁপিয়ে পড়ি না। অনেক বছর পর বুঝেছি সাবর্জনীন হয়ে হয় না আসলে, আমি তো ইলেকশনে দাঁড়াব না, আমার জনপ্রিয় হবার দরকার নেই
ভাবনার কি চমৎকার প্রকাশ! মুগ্ধ হই। মানুষের আবেগ, অনুভূতি বয়সের সাথে সাথে বদলে কেন যায়!
না বদলালে যে অনেক সমস্যা জয়ী, ভদ্রতা ভালোমানুষিকে মানুষ এখন দুর্বলতা ভাবে। তাই বদলাতে হয়। শত্রুকে এখন আর ক্ষমা করি না। আমিও সমানতালে আঘাত করি এবং আমার আঘাত হয় আরো ভয়ংকর...না বদলালে সার্ভাইব করা যায় না যে!
ভদ্রতা ভালোমানুষিকে মানুষ এখন দুর্বলতা ভাবে।...সত্যি। এটা যে কি প্রবলভাবে টের পাই! তবু কেন যেন খুব বেশী বদল হয় না।
সময় অনেক কিছু বদলে দেয়, আবার সময়ই সব কিছুর জবাব দেয়।
হুমমম
সীমাবদ্ধ মুভিটার মতো প্রশ্ন করি, যা হলো সেটা ভাল না খারাপ?
মাপি না, মনে হয় সময়ের প্রয়োজনে যা হবার হচ্ছে....
ভিখারীরও মাঝে মধ্যে ডাকাত হতে ইচ্ছে করে...
আমারও করে। তোমার মত পারিনা। হয়ত পারবোওনা কোনোদিন।
সবার সব কিছু পারতে হবেই বা কেনো ?
তুমি পারছো বলে সাধুবাদ
পুরাপুরি পারার লাইগা দোয়া করেন....
তারপর পরীক্ষায় কত ভুলে হয়ে যায়!( আপনার কথা বলছি না)
লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে হতাশা দিয়ে বন্দী হয়ে আছেন। কে জানে হয়ত সময়ের সাথে সাথে সবাই এমন হয়ে যায়
হতাশা?? না সেটা আমি টের পাই না। তবে বদলে যাবার ধরনধারণ নিয়ে ভাবি আর কি!
অনেক ভালো অবস্থা মনে হচ্ছে, নিজেকে এমন সময় দেবার সৌভাগ্য কম মানুষের হয় এক লাইফ টাইমে!
বস সবই ঠিক ছিলো শুধু শরীরটা বিরাট বিতং করতেছে...যাই হোক আপনার কথা সত্য এমন অবসর আমার জীবনে আর আসেনি
মন বিক্ষিপ্ত হলে আবেগের এক ধরনের বহিঃপ্রকাশ হয়, আবার মন ঠান্ডা হয়ে আসলে চিন্তাও ঘুরে যাবে।
ভালো সময়ের একটা খারাপ দিক হলো এটা একদিন শেষ হয়ে যায়
আর খারাপ সময়ের একটা ভালো দিক হলো এটাও শেষ হয়ে যায়
খুবই সত্য কথন
মন্তব্য করুন