উপন্যাস : অচল পয়সার জবানবন্দি (৪)
৪.
গ্যারাজ থেকে বের হয়ে কিছুদূর যেতেই দেখা হয়ে গেলো পুরোনো শত্রু যুথীর সঙ্গে। এই মেয়েটি প্রিয়দর্শিনীর ক্লাসমেট ছিলো। ছিলো প্রতিবেশিও। আমাদের বন্ধুমহলে ওর যাতায়াত ছিলো। কিন্তু কোনো এক অমোঘ অজানা কারণে সে প্রিয়দর্শিনীকে সহ্য করতে পারতো না। সবসময় ওকে নিয়ে ক্লাসে টিপ্পনী কাটতো। এমনকি মাঝে মাঝে আমার সামনেও। বন্ধু মানুষ বলে ব্যপারটা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাতাম না আমরা। কিন্তু যুথী আমাদের নির্বিরোধী আচরণের সুযোগটা নিচ্ছিলো ভালোমতোই। একদিন বেশ বিরক্ত হয়েই মেয়েটিকে ধমকে দিলাম। বন্ধুচক্রে এহেন বিষাক্ত লোকজন থাকলে আসলে পুরো চক্রটাই গুবলেট হয়ে যায়।
আমাদের বন্ধুচক্রে সেদিনের পর থেকে মেলামেশা কমিয়ে দিয়ে, সে ক্লাসে প্রিয়দর্শিনীকে যন্ত্রণা করায় মনোযোগ বাড়িয়ে দিলো। প্রিয়দর্শিনীদের বাসায় আমাদের সম্পর্কটি নিয়ে প্রথম ‘কানকথা’ লাগিয়েছিলো ঐ মেয়েটিই। আমরা তখন বাসায় এ বিষয়ে কথা বলতে প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু যুথীর জন্য সমস্যাটা পোহাতে হয়েছিলো।
ওদের বিভাগে ছেলে ছিলো চারজন। আর মেয়ে ছিলো ২১ জন। আমার তিতিরপাখিটি ছিলো যাদের মধ্যে একজন। মানুষের সঙ্গে লাগতে যাই না, এ বদনাম আমাদের দু’জনেরই ছিলো। মেয়েটি লাই পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠে গেল। প্রিয়দর্শিনীকে যখন খুশি, যা খুশি শুনিয়ে দেয়। প্রিয়দর্শিনী প্রতিবাদ করলে একটা ঝগড়া লেগে যায়। এসব নিয়ে ডিপার্টমেন্টে প্রত্যেকদিন একবার করে গ্যাঞ্জাম লাগে। ডিপার্টমেন্টের কয়েকটা টিচারকেও দেখলাম মেয়েলোকটি তার দলে ভিড়িয়ে নিয়েছে। তারা পর্যন্ত প্রিয়দর্শিনীকে দেখলেই, ‘কি? দেখি তো কোথায় কোথায় যান? কি কি করেন?’ -এ ধরনের কথা বলে চোখ আর গা টেপাটেপি করতো।
প্রিয়দর্শিনী ছিলো কম কথার মানুষ। সে যতদূর পর্যন্ত পারতো সহ্য করতো। তারপরে প্রতিবাদ জানিয়ে চলে আসতো। এরপরে যুথী এবং ওর বন্ধুরা আরো কূটচাল খাটাতো। সেগুলো পরে গিয়ে আমরা টের পেতাম। ফলশ্রুতিতে নির্দিষ্ট কিছু টিচারের প্রেজেন্টেশন, অ্যাসাইনমেন্টে আশাতীত খারাপ নম্বর পেয়ে পেয়ে অভ্যস্ত হতে শুরু করলাম। কিন্তু বিষয়টা শেষ পর্যন্ত অসহ্য হয়ে দাঁড়ালো। যুথী প্রিয়দর্শিনীদের বাড়িতে সুযোগ পেলেই আমাদেরকে নিয়ে বাজে কথা ছড়াতো।
সেবার এরকম একটা ঘটনা ঘটানোর পর আমরা দুইজন ঠিক করলাম মেয়েটিকে 'টাইট' দিতে হবে। সেজন্য ও ডিপার্টমেন্টে যেসব যন্ত্রণাগুলো করতো সেগুলো বন্ধের ব্যবস্থা নিলাম। পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দেয়া, আমাদের সঙ্গে লাগতে এলে এরচেয়ে বেশি ঝামেলা পোহাতে হতে পারে। প্রো-ভিসিকে দিয়ে একদিন যুথী এবং তার মদদদাতা এক শিক্ষককে প্রো-ভিসির অফিসে ডাকালাম। সোজা আঙ্গুল ঘি না উঠলে, আঙ্গুল বাঁকা করতে হয়। মানুষের সঙ্গে লাগতে না গেলেও প্রয়োজনে আঙ্গুল বাঁকা করে কার্যসিদ্ধির উপায় আমাদের জানা ছিলো।
সেদিন প্রো-ভিসির বৈঠকখানায় খুব করে ওই টিচারের সঙ্গে বেয়াদপি করলাম। তবে যুথীর কার্যকলাপ এবং সেগুলোকে তার মদদ দেয়া সংক্রান্ত আমার অভিযোগগুলো খুব যৌক্তিক ছিলো বলে মহিলা বেয়াদপির প্রতিবাদে একটিও পূর্ণ বাক্য উচ্চারণের সাহস পেলেন না। প্রো-ভিসির পাশে বসে অধোবদনে সবকিছু হজম করতে বাধ্য হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যারা দেবতাতুল্য মানুষ বলে ভক্তি শ্রদ্ধা করেন, তাদের বিশ্বাসে চিড় ধরানোর কোনো উদ্দেশ্য আমার নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যে সবসময় দেবতাতুল্য হন না, তা আমি হলফ করে বলতে পারি। এদের যা কিছু অনৈতিক কার্যকলাপ আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে গণমাধ্যম বা আর কোনো মাধ্যমের কল্যাণে, তা মোট অপরাধের ২০ ভাগের এক ভাগও নয়। আবার সব শিক্ষকই সমপরিমাণ কলুষিত এমনও না। এ কথাটি টীকা হিসেবে জুড়ে না দিলেও অন্যায় হবে।
আসলে সেদিনের প্রো-ভিসি-উক্ত অধ্যাপক ও যুথী-আমাদের দু’জনের আলোচনাটা ছিলো এক অর্থে পেশাদার আলোচনাও। যৌক্তিক অভিযোগগুলো যে সবসময়ই শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষে কাছে তুলে ধরার সুযোগ পায়, তা নয়। সেখানে অভিযোগ তুলে ধরে একজন পূর্ণ অধ্যাপক পরিপূর্ণরূপে ধুয়ে ফেলা তো অনেক দূরের ব্যপার।
তবে সেদিনের সেই ধোলাইয়ে ভোজবাজির মতো কাজ হয়েছিলো। যে গেঁরো খোলা যাচ্ছিলো না তিন বছরে, এরপরে সে গেঁরো হুট করে খুলে গেলো এক ভেল্কিতে। উক্ত শিক্ষক যুথীকে শাসিয়ে দিয়েছিলেন, এরপরে প্রিয়দর্শিনীকে কোনোরকম ঘাটালে তার ফার্স্ট ক্লাসের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। যুথী ডিপার্টমেন্ট, মহল্লা সর্বত্র চুপ করে গিয়েছিলো।
এর বিনিময়ে অবশ্য সেই চেয়ারম্যান যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বি থাকা স্বত্তেও নিজের মেয়াদ শেষ করে আরো তিন বছর ওই বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিলেন। পৃথিবীর বিভিন্ন কাজের পেছনে খারাপ-ভালো অনেক কিছুই জড়িয়ে থাকে। আমরা সেগুলোকে সবসময় আলাদা করতে পারি না। যেসব কাজের সঙ্গে নিজেরা জড়িয়ে থাকি, সেগুলোকেই কেবলমাত্র নিজস্ব অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে ফেলে পরীক্ষা করে দেখতে পারি।
সেবারের যে ঘটনার জন্য যুথীকে এই টাইটটুকু দেয়া হয় সেটার ব্যপারে বলি। প্রিয়দর্শিনীর বাসায় আমার সম্পর্কে উল্টা-পাল্টা নানান তথ্য সরবরাহ করার ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝামাঝি পর্যায় থেকেই আমাদের যুগল জীবন বেশ বড় একটা ঝঞ্ঝার সম্মুখীন হয়ে পড়েছিলো। সে সময় মেয়েটিকে তার বাসা থেকে আমার সঙ্গে মেলামেশা না করার ব্যপারে ভীষণ চাপও দেয়া হচ্ছিলো। বাবা-মা’র গণ্ডি পেরিয়ে সেসব চাপপ্রয়োগ কর্মসূচিতে অংশ নিতে অবধারিতভাবে এগিয়ে এসেছিলেন ওদের পরিবারের কিছু মুরুব্বী স্থানীয় মহিলা আত্মীয়রাও। ‘চাল নেই, চুলো নেই; গুণ্ডাদের মতো চলন, বখাটেদের মতো চেহারা- এই ছেলেকে কেন তুমি ভালবাসবে?’ কিংবা ‘তোমার নিজের সামাজিক স্ট্যাটাসের কথা ভুলে যেও না, কেননা সেটা ভুলে গেলে তোমাকে পরিবার থেকে কোনোরকম সুবিধাই দেয়া হবে না’ ইত্যাদি অনেক যুক্তিই তারা তুলে ধরেছিলেন ওর সামনে।
সারাদিন ওর কানের কাছে কেউ না কেউ এসব বাক্যরাজি আউড়ে যেতো। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সে কিছুদিন এমনকি হলে এসে থাকতেও বাধ্য হয়েছিলো। তাতে হিতে হয়ে গিয়েছিলো বিপরীত। একদিন সারাদিন ওর মোবাইল বন্ধ থাকায়, ওর বাসার লোকজন মনে করলো- ও হয়তো আমার সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে। এ অনুমান কাটাকাটি-পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রিয়দর্শিনীর এক নিকটাত্মীয় ফোন করেছিলেন প্রতিবেশি যুথীর কাছেই।
আর যায় কই! যুথীর তো সেদিন ঈদের আনন্দ। সে নাকি খোঁজ-খবর নিয়ে জেনেছে আমরা দু’জন অনেক আগেই বিয়ে করে ফেলেছি। হলের থাকার নাম করে সে নাকি আমার সঙ্গে একসাথে থাকে। আমরা দু’জন নাকি রাত-বিরাতে শাহবাগে আড্ডা পেটাই। যা তা করে দিন কাটাই। সভ্যতা-ভব্যতা ভুলে বুনো জীবন কাটাই। এরকম এন্তার মিথ্যে সে সেদিন সরবরাহ করেছিলো প্রিয়দর্শিনীর ওই নিকটাত্মীয়ের কাছে।
এসব শুনে তো আমার তিতিরপাখিটির বাসায় মড়াকান্না শুরু হয়ে গেল। সেদিন রাতে প্রিয়দর্শিনী ফোন অন করার পর বাসা থেকে এত প্রচুর তিরস্কারের সম্মুখীন হয়েছিলো যে, সেও একবার আমার সঙ্গে সম্পর্কটি ছেঁটে ফেলার ব্যপারে ভাবতে বাধ্য হয়েছিলো। পরে আমি সব শুনে, ওকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে হল ছেড়ে বাসায় ফিরে যেতে রাজি করিয়েছিলাম। বলেছিলাম, এভাবে বাইরে থাকলে আসলে এসব সংকট বাড়বেই। তারচে’ বাসায় সবার সঙ্গে থাকলে এবং মাথা ঠান্ডা রাখলে বিপদ উপশমের সম্ভাবনা বেশি।
সে সাধারণত আমার পরামর্শগুলো মানতো না। দু’জন একই ক্লাসে পড়ার দরুণ সে সবসময়ই নিজেকে আমার চেয়ে বেশি পরিপক্ব মনে করতো। এর মূলে ছিলো কোনো এক কুসংস্কারের বইএ নাকি লেখা আছে, ‘মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে তাড়াতাড়ি পরিপক্বতা অর্জন করে।’ কিন্তু সেদিনের পরামর্শটি সে মেনেছিলো। ব্যাগ-ব্যাগেজ গুছিয়ে নিয়ে বাসায় ফিরে গিয়ে সে সবাইকে আশ্বস্ত করেছিলো- কোনো অঘটন ঘটে নি। এবং যুথী মেয়েটি আসলে এরকম ঝামেলা আরো নানাভাবে আমাদের সঙ্গে করে। এটাকে বেশি আমলে নেয়া যাবে না। তাহলে নিজেদের পরিবারেই অশান্তি দেখা দেবে।
প্রিয়দর্শিনীর বাবা-মা হাফ ছেড়ে বাঁচলেও এই ঘটনা নিয়ে দীর্ঘদিন কচলেছেন নিকটাত্মীয়রা। সবকিছু সামলাতে এবং আবার আগের মতো করে আনতে আমাদের দু’জনকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিলো। তবে শেষ পর্যন্ত বাসায়, ভার্সিটিতে, ক্লাসে সবর্ত্রই সবকিছু সামলে উঠেছিলাম আমরা। যুথীকে কিভাবে সোজা করেছিলাম, তাতো আগেই বলেছি। ওকে কখনো ক্ষমা করবো না বলে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম একসময়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তেও বেশিদিন অটল থাকি নি। বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করার পর চাকরী-বাকরী শুরু হলে যখন এসব বিষয়কে ছোটখাটো হিসেবে ভাবতে শিখলাম, তখন আমাদের সব শত্রুকেই একদিন গণক্ষমা করে দিয়েছিলাম।
গ্যারাজ থেকে বেরিয়ে ডাকসু’র দিকে যাচ্ছিলাম আমি। ডাকসু’র দরজাটি বন্ধ ছিলো। কেন বন্ধ ছিলো জানি না। এটা সাধারণত খোলা থাকে। এবং ভেতরে বসে থাকেন একজন সদাহাস্যময় মানুষ গোপাল দাস। হয়তো তিনি সেদিন কোনো একটি কাজে গিয়ে থাকবেন। এবং তার দুই সাগরেদ অমল ও সুজনও কোথায় গিয়ে ডুব মেরে থাকবে।
ঘটনাটা ছিলো কিছুটা এমন- যুথী ও আরো একটি ছেলে বন্ধ দরজার সিঁড়িতে বসে গল্পে মশগুল হয়ে ছিলো। ক্যম্পাসে খুব বেশি লোকজন ছিলো না। সেই সুযোগে সেদিন ওদেরকে কিছু ইঁচড়ে পাকা প্রথম বর্ষীয় ছোকড়া উত্যক্ত করেছিলো। সঙ্গী ছেলেটা বাঁধা দেয়ায় বেচারা মারধোরের শিকার হয়েছিলো। আমি যখন যুথীকে দেখলাম, তখন ওর চুলের খোপা খুলে গিয়ে খোপার ফুল ল্যাকপ্যাক করে ঝুলছিলো পিঠের ওপর। বুঝতে পারলাম, উত্যক্ত করার প্রতিবাদে যুথীর সঙ্গের ছেলেটি দুবৃত্ত প্রথম বর্ষীয়দের দিকে তেড়ে গেলে, তাকে চড়-চপেটা খেয়ে ফিরে আসতে হয়। সে সময় রগচটা মেয়েটি হয়তো ছেলেগুলোকে কিছু বলে থাকবে। আর তখন ছেলেগুলোও হয়তো যুথীর ওপর চড়াও হয়ে থাকবে। তারপর এখন সবগুলো মিলে ওদেরকে ঘিরে ধরে রেখেছে।
ঠিক ঐ জায়গাটি দিয়ে ঐ সময় আমি পার না হয়ে অন্য কেউ পার হলেও যা করতো, আমি তাই করলাম। প্রথম বর্ষীয়গুলোকে ধমকে নিবৃত্ত করলাম। অল্পবয়েসী ছেলে-ছোকড়ারা মধুর কেন্টিন, কলাভবন বা ডাকসু’ এলাকায় আসা-যাওয়া শুরু করলে আমার চেহারাটি তাদের দেখতেই হতো। কারণ ক্যম্পাসে অনিয়মিত যাতায়াতটা আমি নিয়মিতই করতাম। এরই সুবাদে সেদিন ওদেরকে ধমকে যুথীদের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়ার কাজটুকু করা গেলো।
ছেলেগুলো সটকে পড়ার পর আমরা তিনজন মুখোমুখি হয়ে গেলাম। এই ছেলেটি আমাকে চেনে না। আমিও ওকে চিনি না। কখনো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভেতরে দেখি নি। হয়তো যুথীর ক্যম্পাসের বাইরের কোনো বন্ধু হবে। তার ধন্যবাদের জবাবে আমি ছোট্ট করে তাকে স্বাগতম দিলাম। এরপর পূর্বপরিচিত মেয়েটির দিকে একবার পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালাম। সে তখন তার পায়ের নখের দিকে গভীর মনোযোগ সহকারে তাকিয়েছিলো। আমি সেদিকে খেয়াল করে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুটি আবিস্কারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম এবং সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম, মেয়েটির আসলে তখন নিজেকে আমার পরিচিত দাবি করার কোনো সাহস অবশিষ্ট নেই। কিন্তু কেন? আমি আর আমার প্রিয় তিতিরপাখি তো অনেক আগেই তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আশ্চর্য!
ওদেরকে চা খাওয়াতে চাইলাম। আস্তে আস্তে যুথী স্বাভাবিক হলো। ওর সঙ্গে অনেকদিন পর কিছু সাধারণ সৌজন্য বিনিময় করলাম। তারপর দু'জন চলে গেলো নিজেদের গন্তব্যের দিকে।
(চলবে)
---
আগের পর্বটা মিস করসি। ঐটা আগে পড়ে আসি
হইসে পড়া?
জনাব, প্রথমত: আপনি একটি পর্ব ৩/৪ দিন পর পর দিচ্ছেন
দ্বিতীয়ত: ক্রমে লক্ষ্য করছি- উপন্যাসের চরিত্রগুলো চারদিকে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করছে
তৃতীয়ত: আমি ঠিক ধারাবাহিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। ছন্দটা ঠিক মিলাতে পারছিনা... এটা হতেই পারে। পাঠক হিসাবে আমি তেমন সুবিধার না...
জনাব, প্রথমত বলবো এই ৩/৪ দিনের মধ্যে আমি আরো দুইখানা লেখা দিয়েছি। একখানা লেখা সংরক্ষণ করেছি। এখন প্রচুর লেখা যদি হাতের মধ্যে কিলবিলায় (আমার লেখা তো আবর্জনা সমতুল্যই, সুতরাং 'কিলবিলায়' শব্দের প্রয়োগ যথার্থ হয়েছে বলেই মনে হয়) তো আমি কি করবো বলেন?
দ্বিতীয় ও তৃতীয়ত, আপনি ঠিক ধরেছেন। যাকে বলে একদম সঠিক পয়েন্টে হাত দেয়া। নিজের সম্পর্কে 'পাঠক হিসেবে সুবিধার না' কথাটা উইথ ড্র করেন ব্রাদার। লেখায় উঠে আসা চরিত্রগুলো আসলেই ছাড়া ছাড়া।
বিষয়টা হচ্ছে কি, বাসা থেকে বের হয়ে আমাদের প্রতিদিনই পরিচিত অনেক মানুষের সঙ্গে দেখা হয়। লেখকেরও হয়। কোনো কোনোদিন হয়তো গুরুত্বপূর্ণ অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। যাদের প্রত্যেকের একেকটা ঘটনা থাকে। ঘটনাগুলো লেখক জানে এবং সেগুলোর সঙ্গে তারও হয়তো সম্পৃক্ততা ছিলো নানাভাবে। সেই ঘটনাগুলোই এই লেখাটাতে তুলে ধরা হচ্ছে। সবগুলো চরিত্র এক হয়ে একটা চূড়ান্ত পরিণতির দিকে যাবে, এ ধরনের কাঠামোতে ফেলে এটা লেখা হয় নাই।
এতদিন পর কেন? কোথায় ছিলেন? কেমন আছেন?
পোস্ট পড়ে আসি এখন।
আপনে কেমন আছেন? দিনকাল কেমন যায়? খবর-টবর দেন না কেন?
আপনের মাথায় বাড়ি দিসি।
দিনকাল যায় আগের মতই। আমার মাথায় (মনে) আজকাল সবাই বাড়ি দিচ্ছে। আপনিও বাদ থাকবেন কেন?
এই উপন্যাসের পর্বগুলা আলাদাভাবে এখনও একটা ছোট গল্পের মত লাগছে।রোজ একটা করে পর্ব দেন, পড়তে থাকি, দেখি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় ঘটনা।
রোজ যদি এইটা পোস্ট করি, তাইলে অন্য যে লেখাগুলো সারাদিন লিখতে ইচ্ছে করে, সেগুলো নিয়ে কি করবো?
তাও তো কথা। আচ্ছা একদিন পর পর দেন।
আপনার তিতিরপাখির সাথে কুটুস কাটুস টা সুইট!
এই উপন্যাস যদি আপনে বই হিসাবে প্রকাশ করতে চান তাইলে কিছু বলার নাই...হয়তো পুরাটা আপনি তখন পোস্ট হিসাবে দিবেন'ই না। আর যদি আমরা বন্ধু ব্লগেই এইটারে রাখতে চান তার জন্য একটা সমাধান হইলো আমরা মডু/ডেভুগো বলতে পারি এইটার জন্য একটা কর্নার দিতে যেইখানে আপনে এক পর্ব কইরা দিতে থাকবেন। যেহেতু আপনের পুরাটাই লেখা শেষ তাই সেইটা আপনে শেষ করবেন এইটা নিশ্চিত। আর দিনের বাকীসব লেখালেখি নিজের ব্লগের প্ল্যাটফর্মেই করলেন...
আমি তো বিশাল পরিকল্পণাবিদের মতোন আইডিয়া দিতেছি...হায় হোসেন!
আসলেই হায় হোসেন!
লেখাটা কেবল এবি'র জন্যই। তবে আলাদা কর্ণার মনে হয় দরকার নাই। যেভাবে চলতেসে, সেটাইতো বেশ আরামদায়ক।
ভাস্করদা' আছেন কেমন?
ভাস্করদার আইডিয়ায় সহমত জানালাম। এবার আসি গল্প নিয়ে...
মনস্তত্ব আপনি ভালো বোঝেন তা আগেই জানতাম, এই পর্বে দেখলাম মেয়েদের মনস্তত্ব আপনি একটু ভালই বোঝেন।
নতুন পর্ব কই?
নতুন পর্ব দেন জলদি।
মন্তব্য করুন