ইউজার লগইন

নতুন শহরে ঢোকার রাতটা অদ্ভুত ছিল

ধরো তোমাকে যদি সাতটা গোলাপ ফুল দিই, তুমি কি করবে? অবাক চোখে তাকিয়ে থাকবে নিশ্চই, তাই না? আধপাগলা লোকটা ক্ষেপলো কিনা ভেবে হয়তো চিন্তাও করবে খানিকটা। জানি তো আমার ভাল থাকা, খারাপ থাকা সবই এখনও তোমাকে চিন্তিত করে। তারপরও কেন যে নিজেকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করো সবসময় সেটাই বুঝি না। কি দরকার বলো তো? তারচেয়ে চলো না দুই জনে চলে যাই অনেক দুরে কোথাও। যেখানে খুঁজে পাবে না চেনাজানা কেউ আমাদের। সবাই, আশপাশের সব্বাই যেখানে দুরের মানুষ, সেখানে গিয়ে চলো দেখি, কাছাকাছি থাকা যায় কিনা।

আচ্ছা, ছেলেবেলায় যেসব খেলনা আমার প্রিয় ছিল, সেগুলোর কথা কি সব মনে করা সম্ভব? আমার একটা কালো রংয়ের ফর্মুলা ওয়ান রেসিং কার ছিল। ব্যাটারি দিয়ে চলতো। একটা শব্দ উৎপন্নকারী রিমোট কন্ট্রোল ছিল ওটার। একদম অন্যরকম। কে কে দেখেছেন রিমোটটা? ওই রেসিং কারটা একসময় খুব জনপ্রিয় খেলনা ছিল। আর কোন খেলনার কথা মনে পড়ে না তেমন একটা। অঞ্জন দত্তর গানের মতো, হয়তো কোন অন্য অলিগলি ঘুরে, অন্য কোন কাউকে টানছে সে অদ্ভুত সুরে।

ইদানীং পুরো পৃথিবীটাকেই কেন যেন বেদনায় জর্জর মনে হয়! পথেঘাটে সকলের মুখে প্রকট হয়ে ফুটে থাকতে দেখি চিন্তার রেখা। আশির দশকের কথা জানি না, তখন আমি একদমই ছোট কিন্তু নব্বুইয়ের দশক, বিশেষ করে নব্বুইয়ের শেষের দিকের দুই-তিন বছর আর তারপরেরর চার-পাঁচ বছর, এই টাইমফ্রেমটা আমার কাছে মনে হয় অনেক সহজ ছিল জীবন। এই সময়টার ভেতর আমার এসএসসি-এইচএসসি পাশ করা, ইউনিভার্সিটিগুলোতে ঘুরে ঘুরে ভর্তি পরীক্ষা দেয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ইত্যাদি ঘটতে ঘটতেই একটা সময় আমি অন্যরকম হয়ে যাই। ধীরে ধীরে প্রবেশ করি কাজের জীবনের ভেতরে। এর আগ পর্যন্ত জীবন ছিল পাখির নীড়ের ভেতরটার মতো নিশ্চিন্ত। তারপর থেকে শুরু ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ পথচলা। জীবনটা সবসময় নতুন নতুন উপহারের মোড়কে সংকট হাজির করেছে, তাতেই জীবনটাকে ভালবেসে অস্থির হয়েছি। একে নিয়ে কি যে করি কোনমতেই বুঝি না।

সেই গভীর ভালবাসা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এ প্রবাহ যেন নদীর খরস্রোতা ধারার মতো। আমার নদীটা তার চলার পথে মানুষ, মানুষ থেকে প্রাণী, প্রাণী থেকে উচ্চাভিলাষ, উচ্চাভিলাষ থেকে নির্বুদ্ধিতা সবকিছুরই প্রেমে পড়েছে। সবাইকে সাথে নিয়ে চলতে চেয়েছে, লড়াই করেছে। শুধু একটা কথাই ভুলে গিয়েছিল যে সে একটা নদী। সে যদি ভালবেসে কাউকে কাছে টেনে নেয়, তাহলে তার আর বেঁচে থাকা হয় না।

এটা কি শুধুই আমার অবস্থা? আমার ধারণা আরও অনেকের অবস্থা একই। জীবনটা চলছে তার আপন গতিতে। প্রায়শই আমি এটার সঙ্গে লড়াই করি। কোন লাভ হয় না। সাতটি গোলাপ কখনো খুঁজে পাওয়া যায় না।

---

লেখা: মীর রাকীব-উন-নবী
এসেন, ১৩ অক্টোবর, ২০২২ ইং

শাপলা's picture


বহু বহু বছর পর আবার মীর? আহা! আহা!

মীর's picture


ধন্যবাদ শাপলা আপু। Smile
আসলেই বছরগুলো কত তাড়াতাড়ি যে পেরিয়ে যায়!

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

মীর's picture

নিজের সম্পর্কে

স্বাগতম। আমার নাম মীর রাকীব-উন-নবী। জীবিকার তাগিদে পরবাসী। মাঝে মাঝে টুকটাক গল্প-কবিতা-আত্মজীবনী ইত্যাদি লিখি। সেসব প্রধানত এই ব্লগেই প্রকাশ করে থাকি। এই ব্লগে আমার সব লেখার কপিরাইট আমার নিজেরই। অনুগ্রহ করে সূ্ত্র উল্লেখ না করে লেখাগুলো কেউ ব্যবহার করবেন না। যেকোন যোগাযোগের জন্য ই-মেইল করুন: bd.mir13@gmail.com.
ধন্যবাদ। হ্যাপি রিডিং!