মুক্তগদ্যঃ- বৃষ্টি ও চিঠি বিষয়ক
*
আমি এখন আর কারো কাছে থেকে চিঠি পাই না। সেই অর্থে কারো চিঠির জন্য যে উদগ্র প্রতীক্ষা, সেরকম কেউ আসলে কোনদিনই ছিলোনা। পাতাবাহারের সবুজে ছড়ানো ছিটোনো বিবিধ রঙের মত আনন্দ নিয়ে আসা বর্নিল চিঠি বন্ধ হ'য়ে গিয়েছে এক যুগ আগেই। তবু, বৃষ্টি যখনই নামে; হোক সে মাঝ দুপুরে, হোক ভোর সকালে কিংবা নিওন সন্ধ্যায় নাহয় নিশুতি রাতে। আমার খালি মনে হয় একজন পোস্টম্যান, তার বুড়োটে সাইকেলে চেপে ভিজতে ভিজতে আমার জন্য একটা চিঠি বয়ে আনছে। সারাটা বৃষ্টিক্ষণ আমি অপেক্ষায় থাকি কলবেল বেজে ওঠার...
**
রোদ ঝলমল দুপুরের একটা উদাসী মাদকতা আছে। তার সাথে যদি যোগ দেয় মফস্বলের একাকী রাস্তা আর রাস্তায় এলোমেলো ছড়ানো ছায়ারা... সেই দুপুরের উদাসী মাদকতায় আমি মরতে পারি।
এমনই এক দুপুরে, সাইকেলে টুনটুন ঘণ্টি বাজিয়ে খাকি জামার পোস্টম্যান একটা চিঠি এনেছিলো আমার জন্য।
***
রাত জাগা আমার হয়ে ওঠেনি তেমন। আঙ্গুল গোনা যে কয়টা রাত জেগেছি, মনের পর্দা সরিয়ে আসল নিজেকে খুঁজে বেড়াতেই কেটে গিয়েছে। চিঠির লাইনে লাইনে বসিয়ে দিয়েছি আমার আমিকে। আসলে রাতের আঁধার সবকিছু ঢেকে দিয়ে নিজেকে সমর্পন করে নিজের কাছেই। ভোরের আলোয় সেই চিঠি গুলোকে বড় বেশি নগ্ন লাগে। আমার আর চিঠি পোস্ট করা হয়ে ওঠে না। উঠোনে ছড়ানো শিউলি ফুলের মত, চিঠির টুকরো গুলো ঠাঁই নেয় জানালা আর দেয়ালের সীমান্তে।
****
আমার আর চিঠি লেখা হয়না। পোস্ট অফিসের পেট-মোটা লাল পোস্টবক্স গুলো বুড়ো হ'তে হ'তে একসময় তাদের পায়ের কাছে থাকা মাটিকে বন্ধুত্বের আলিঙ্গনে জড়ায়। আমার চিঠি পোস্ট করা হয়না।
*****
দূরে কোথাও কেউ হয়তো আমার মতই অপেক্ষা করে থাকে চিঠির...
যতোই ট্যাগ দেন না কেন, এই লেখার ধরন বলা সম্ভব নয়!
পড়লাম, পড়ার পর কবিতা পড়ার আনন্দ হলো। অথচ এটা একটা গল্পও হতে পারে! কিংবা হয়তো মিউজিক! প্রতিটি পঙক্তিতে এক অশ্রুতপূর্ব সুর! বাইরে বৃষ্টির একটানা কান্নার সুর, ভেতরে, কী বোর্ডের সামনে সবাই একা একা, তার ভেতরে এই লেখা! মুগ্ধতা প্রকাশ করার ভাষাটিও খুঁজে পাচ্ছি না!
এমন একটা লেখা পড়লে মন ভালো হয়ে যায়! অনেক ধন্যবাদ বৃত্ত...
কামাল ভাই, এত প্রশংসার উত্তর আমি কিভাবে দিবো???
অনেক অনেক ধন্যবাদ...
লগ-আউট করে ফেলেছিলাম। কিন্তু অফলাইনে আপনার লেখাটা পড়ে কমেন্ট না দিয়ে ঘুমাতে যেতে পারলাম না।
যখন লেখাটা পড়ছিলাম, আমার মনে হচ্ছিলো আমার সামনে বৃষ্টি পড়ছে। পোষ্টম্যান আমার সামনে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। পেট-মোটা লাল পোস্টবক্স গুলো আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছিলো যেন আমার সামনে সব ঘটনা গুলো ঘটছে।
অসাধারন, অসাধারন!
রাত জাগা আমার হয়ে ওঠেনি তেমন। আঙ্গুল গোনা যে কয়টা রাত জেগেছি, মনের পর্দা সরিয়ে আসল নিজেকে খুঁজে বেড়াতেই কেটে গিয়েছে। চিঠির লাইনে লাইনে বসিয়ে দিয়েছি আমার আমিকে। আসলে রাতের আঁধার সবকিছু ঢেকে দিয়ে নিজেকে সমর্পন করে নিজের কাছেই। ভোরের আলোয় সেই চিঠি গুলোকে বড় বেশি নগ্ন লাগে। আমার আর চিঠি পোস্ট করা হয়ে ওঠে না। উঠোনে ছড়ানো শিউলি ফুলের মত, চিঠির টুকরো গুলো ঠাঁই নেয় জানালা আর দেয়ালের সীমান্তে।
অদ্ভুত অনুভূতি !! এত সুন্দর প্রকাশ ভঙ্গি যে কি বলব !
অনেক ধন্যবাদ লীনাপা-২...
নেশা জাগানো লেখা। কতবার যে পড়লাম শুধু এই লেখাটায় মন্তব্য দেয়ার জন্য আবার লগ-ইন করলাম। কী বলব! কিছু বলার নেই। ঈর্ষাবোধ হচ্ছে। ভালোলাগার ঈর্ষাবোধ
এভাবে বললে জবাব কি দিতে হয় তা জানিনা। তাই অনেক ধন্যবাদ জানাই...
কামালভাই'র মন্তব্যের সাথে একমত... আলাদা করে ট্যাগিং করা যাবে না এটাকে... একেকটা অংশ একেক আবেশ জোগায়...
ভালো লাগছে লেখাটা...
ওরে জেবীনের মাথার উপর দিয়া যায় নাই রে...
রাতেই অফলাইনে লেখাটা পড়েছি। মুগ্ধ । মুগ্ধ । মুগ্ধ।
অনলাইনে আসেন নাই কেনু? কেনু? কেনু?? কেনু???
ঘোর লাগানো লেখা।
অসাধারণ।
ঘোর লাগাতে পেরেছি তাহলে??? ধৈন্যা ধৈন্যা...
ভালো লেগেছে লেখাটা।
===================================
অফটপিকঃ বৃষ্টি নিয়া একটা ই-বুক বানানো হোক।
আপ্নে লেখা এক সাথে করেন

কভারসহ বাকি দায়িত্ব নজরুল ভাইয়ের
রাসেলের প্রস্তাবে ১ ভোট।
টুটুলের প্রস্তাবে ২ ভোট।
এতো দেখি ঝাঁড়ের বাশঁ ঘাড়ে টাইনা আনলাম।
মডু ভাইরে কন একটা ঘোষনা দিতে।সবাই লেখা জমা দিক।
আমি সব লেখা একসাথে করে নজরুল ভাইরে মেইল করে দিমু নে।

এখন টের পাইবেন ঝাড়ের বাঁশ ঘাড়ে টেনে আনার মজা
এত ভাল লাগলো কেন লেখাটা বুঝলাম না। তিন বার পড়লাম। নেশার মত লাগছে।
আকিদা আপু, অনেক অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য। অনেক ভালো লাগছে আপনাদের ভালো লাগাতে পেরে...
আবারও পড়লাম এটা বোঝার জন্য যে, গভীর রাতের অনুভূতি আর দিনদুপুরের অনুভূতি একইরকম হয় কী না! অনেকসময় তো রাতের ঘোরে পড়েও মুগ্ধতাবোধ বেড়ে যায়! না, তেমন কিছু নয়! লেখাটা আসলেই অসাধারণ। এই মুগ্ধতা সবসময়ই থাকবে।
---------------
কিন্তু এমন একটা পোস্ট দিয়ে বৃত্ত পালালো কোথায়? ওকে ধরে আনার ব্যবস্থা করা হোক!
পালাই নাই কামাল ভাই। আসলে সারাদিন নেটহীন থাকিতো তাই...
আপনার আবার পড়বার আগ্রহ জাগাতে পেরেছি তাতেই আনন্দিত...
আগে বৃত্তকে কেমন যেন একটু দূরের দূরের মনে হতো। কিন্তু আড্ডা দিয়ে সেই বোধটা আর নেই। একই ভাবে লেখাগুলোও মনে হতো অনেক দূরের, আমার আয়ত্বের বাইরে। কিন্তু এখন তাও মনে হয় না। এ ধরণের লেখা কত নিকটে নিয়ে আসে, টের পেলাম।
আপনিও যদি এইভাবে বলেন...
বৃত্তও যে বিনয় মজুমদারের এত ভক্ত, জানা ছিলো না!
প্রিয়তে রাখলাম বৃত্ত। আপনি এধরনের অসাধারণ কিছু লিখতে পারেন আমার জানা ছিল না।
লজ্জা পাইলাম এমনে বলায়...
''সেই দুপুরের উদাসী মাদকতায় আমি মরতে পারি।''
...লেখাটা পইড়া চরম মজা নিলাম...
এদ্দিনে তোমার জিপি ঠিক হইছে

আসলেই, রাতটা খুবই খারাপ, দৃঢ়ভাবে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে সারাটা ক্ষন চলতে পারলেও রাতটা যেন সব ফাসঁ করে দেয়, কোন আগলই মানে না! এই জন্যেই রাত জাগা উচিত না, ঘুমেই থাকে পৃথিবী!
আসলেই রাত খুবই পাজী একটা সময়...
এই লেখাটা আবার পড়লাম। এবারও একইরকমভাবে ভালো লাগলো। বৃত্ত নতুন লেখা কই?
হ বৃত্ত ভাই, লেখাটা দ্বিতীয়বার পড়ে আমারো ভালো লাগলো। কিন্তু আপ্নের নতুন লেখা কৈ?
মিসিং ইউ ম্যান
কই হারিয়ে গেলেন???
অসাধারণ লেখা
আগের দুইজনের সাথে একমত - নতুন লেখা কই?
ইদানীং সময় কম পাচ্ছি

আমার মাঝে-মাঝেই ব্যাপক তৃষ্ণা জাগে মনের মধ্যে, একটা হলুদ খামের জন্য। মনে হয়,
"যদি আজ বিকেলের ডাকে তার কোনো চিঠি পাই..."
বাফড়া'র শেয়ার করনে পড়লাম ঘোর আনা লেখাটা আবার।
আশ্চর্যের বিষয় দেখো সময়কালটাও ঠিক বছরখানেক পর!
জেবীন আপুর কমেন্ট দেখতে এসে আরো একটা অসাধারণ লেখা পড়া হল। আজকের রাতটা রক্স!
* * * * * পাঁচ তারা!
প্রিয়তে নিয়ে নিলাম।
মন্তব্য করুন