যে গল্পের কোন নাম থাকে না
ওয়াজ মাহফিল চলছে-
“নারী তুমি থাকবা খালি পর্দার আড়ালে
কামড়াইয়া দেবে লোকে বাইরে বেরোলে।”
দয়াল বাবা ক্যাবলা কাবা আয়নার কারিগর- গানের সুরে গাওয়া হচ্ছে। আমার বারান্দার ঠিক সামনে একটা মাইক লাগানো হয়েছে। মেজাজ ভীষণ খারাপ হচ্ছে।
এসমস্ত লোকজনরে উপযুক্ত জবাব দেবার ইচ্ছা থেকেই আমি এমন একজন মেয়ে হতে চাই যা এরা জীবনে দ্যাখে নাই। আমারে দেখে তখন রাগের চোটে নতুন কোন গান বানাতে ইচ্ছে করবে এদের। সেই গানের কথা হয়তো আরো বেশি অশ্লীল হবে। কিন্তু আমি চলবো আমার মতোই। আমার সাথে যদি কেউ আমার মতো করে চলতে পারে তবে সে থাকবে, তা না হলে “একলা চলো" নীতি অনুসরণ করবো। তখন আমি থাকবো আমার রাস্তায় আর সে থাকবে তার রাস্তায়। এতেই আমি ভাল থাকবো। বিয়ে-শাদী করে টিপিক্যাল ঘর-সংসার করা আমারে দিয়ে হবেনা। কারণ আমি সবার সাথে মিশতে পারিনা। এই মেশা-মিশির একটা বিরাট সমস্যা আছে আমার। কেউ যদি আমারে বুঝতে পারে তাইলে সে সারাজীবন ফুল এন্টারটেইনমেন্টের সাথে কাটায় দিতে পারবে আর না পারলে ঘৃণা করবে। তাতে অবশ্য কোন সমস্যা নাই। এ জগতে কত মানুষই তো ঘৃণা করলো! তাতে আমার বয়েই গেলো। কেউ যদি তারপরও জোর-জবরদস্তি করে আমার সাথে থাকতে চায় তাকে বলা হবে, “তোমার জন্য আমি কখনোই রান্না-বাড়া করে রাখতে পারবোনা, তবে মাঝে মাঝে তুমি যদি নিতান্তই চাও তোমার প্রিয় কোন আইটেম বানায়া রাখতে পারি। তবে অবশ্যই শর্ত সাপেক্ষে। প্রতিবার মুখে লোকমা দিবা আর পঁচা হইলেও বড় বড় চোখ করে বলবা, এত্ত মজার রান্না আমি কোনদিনও খাই নাই। আমি তোমার কাপড় ধুয়ে দিতে পারবোনা, ইস্ত্রিও করবোনা, তবে যদি চাও তোমার শপিং করে দিতে পারি। কিন্তু অবশ্যই আমার পছন্দমতো কাপড় কেনা লাগবে। তোমার টাকা আমার টাকা, আমার টাকাও আমার টাকা। প্রতি মাসে কোন কারণ ছাড়াই আমাকে গিফট করে চমকে দিতে হবে। বাচ্চা-কাচ্চা হওয়ানোর কথা কস্মিনকালেও ভাববানা। বাচ্চা-কাচ্চার খুব বেশি শখ থাকলে আরেকটা বিয়ে করে দূরে চলে যাবা। আমার কাছে ঘষ্টানি পারবানা। যাযাবরের মত থাকবো আমরা, আজকে এখানে তো কালকে ঐখানে। বন্ধুর মতো সারাক্ষণ সাথে থাকতে রাজি আমি কিন্তু আমার ঝগড়া তোমাকে সহ্য করতে হবে। কান্নাকাটি একদম করতে পারবানা তুমি, কারণ কান্না আমি পছন্দ করিনা। কখনো তোমার মন খারাপ হলে, আই ক্যান হ্যাভ ইউ আ লং ড্রাইভ স্যার। কিন্তু আমার মন খারাপ হলে তোমাকে যথেষ্ট পরিমাণের প্যাম্পারিং করতে হবে। যেহেতু আমি ভীষণ ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি সেহেতু আমাকে নিয়ে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াবা তুমি, তার বিনিময়ে অসুখের সময় সারাদিন এবং সারারাত তোমার নার্সিং করতে রাজি আমি। তুমি ঘুম থেকে উঠতে না চাইলে বেশিক্ষণ ডাকাডাকি না করে গায়ে পানি ঢেলে দিব আমি কিন্তু আমাকে ঘুম থেকে জাগানোর সময় অবশ্যই এক কাপ চা বানায়া ডাক দিবা তুমি”।
এইসব শর্ত দেখে যেকোন ছেলে ভয়ে পালাবে এই ব্যাপারে আমি ১০০ ভাগ নিশ্চিত। সেই জন্য আমি দিন দিন লিস্টটাকে অত্যন্ত আনন্দের সাথে আরো বেশি লম্বা করতেসি। মাঝে মাঝে আবার মডিফিকেশনও করি। কত কিছু যে আকাশ-পাতাল চিন্তা আসে মাথায়! মাঝে মধ্যে ভাবি, নেক্সট জেনারেশনকে কি গিফট দিয়ে যাওয়া যেতে পারে? এমন কোন কিছু, যার কারণে ওরা সারাজীবন আমাকে মনে রাখবে। এই তালিকায় এক নাম্বারে আছে একটা পুরনো ক্যাসেট প্লেয়ারের সাথে কিছু ক্যাসেট। ক্যাসেট দিতে গেলে সাথে আবার একটা পেন্সিলও গিফট করতে হবে। কারণ ক্যাসেট বার বার প্যাঁচাবে আর ওরা সেটা পেন্সিল দিয়ে খুলবে। এটা করতে পেরে আমার ধারণা ওরা খুব মজা পাবে, ঠিক যেমনটা ছোটবেলায় আমি পেতাম। নানুর রুমে খুঁজলে একটা ক্যাসেট প্লেয়ার এবং সাথে অনেকগুলো রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি, ভাওয়াইয়া এবং কবিগানের ক্যাসেট পাওয়া যেতে পারে। যেগুলো নানু শুনতো। সেগুলা এতদিন ভাল থাকলে হয়। তাহলে বংশ-পরম্পরায় ওদেরকে আমি এগুলো দিয়ে যেতে পারতাম।
টিভি আমি খুব বেশি একটা দেখিনা। আরেকদিন একটা বিজ্ঞাপন দেখলাম, “হ্যালো পুনুপুনু, হায় কুচিকুচি” দেখে মজা পেলাম। বাংলাদেশের মেয়েরাতো এখন এতো বেশি সস্তা হয়ে গেছে যে কলকাতার বাংলা সিরিয়ালের নায়িকার ড্রেসের জন্য পর্যন্ত সুইসাইড করছে। আর ঘরে ঘরে যেমনভাবে এই বাংলা, হিন্দী সিরিয়ালগুলি চলে তাতে আমি খুবই শংকিত। মানুষকে কমপ্লিকেটেড এবং কুরুচিপূর্ণ করার জন্য আর কি কিছু লাগে!
আজকে বরিশালের এক লোক দাবি করলো, রবীন্দ্রনাথ নাকি বরিশালে গিয়ে প্রথম সাহিত্য চর্চার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। বরিশালের ভাষা সাহিত্যে ব্যবহার করার কারণেই তিনি কিংবদন্তী হয়েছেন। আমি বললাম, “বরিশালের ভাষা! কোথায়?” তিনি গম্ভীর হয়ে উত্তর দিলেন, “মোর ভাবনারে কি হাওয়ায় মাতালো- এই লাইনটা শুরুই হয়েছে “মোর” শব্দটা দিয়ে। বলেন, এই শব্দটার উৎপত্তি কোথায়?”
ছোটবেলায় ঘুমানোর সময় আম্মু সবসময় গান বাজাতো। আমি, আমার মা’র কারনেই গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যেতাম। একটা গান ছিল, “পাহাড়ী ঝর্ণা তুমিতো জানোনা, ঝর ঝর আমিও ঝরি, আমিও ঝরে পড়ি”। আজকে বহু বছর পর অফিসের গাড়িতে এই গানটা শুনলাম এবং যথারীতি নস্টালজিয়ায় চলে গেলাম। এরপর থেকে সারাক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে- আমিও ঝরে পড়ি।
আজকে বরিশালের এক লোক দাবি করলো, রবীন্দ্রনাথ নাকি বরিশালে গিয়ে প্রথম সাহিত্য চর্চার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। বরিশালের ভাষা সাহিত্যে ব্যবহার করার কারণেই তিনি কিংবদন্তী হয়েছেন। আমি বললাম, “বরিশালের ভাষা! কোথায়?” তিনি গম্ভীর হয়ে উত্তর দিলেন, “মোর ভাবনারে কি হাওয়ায় মাতালো- এই লাইনটা শুরুই হয়েছে “মোর” শব্দটা দিয়ে। বলেন, এই শব্দটার উৎপত্তি কোথায়?”
এপিক হইছে ডায়লগ খান, পোষ্ট বরাবরের মতোই দারুন!
মজা পাইসো না? আমার যা রাগ লাগসে শুনে! বলে কি!
মজাই মজা, কপি করে রাখলাম, ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঝেড়ে দিতে পারি
আচ্ছা দিও।
লিস্টটা ম্রাত্তক হৈছে!
বরিশালের ব্যাপারটা চ্রম।
নস্টালজিয়া রক্স।
তাই নাকি? থ্যাঙ্কু ম্যাঙ্কু
আরে ! এর'ম একজনকেইতো চাই আমার ! ভারি মজার মেয়েতো তুমি ! তোমার সব শর্ত বিনা আপত্তিতে মানতে রাজি আমি ! এখনো এমন কিছু বুড়িয়ে যাইনি ! মাত্র ষাট ! থাকপা আমার সাথে ? প্রিয়, রাগবেনা কিন্তু বলছি ! ব্লগীয় বন্ধু বলে প্রস্তাব দিলাম ! রাজি না হবার কোন কারণ নাই ! আমার লাল টুকটুকে একটা কার আছে, তোমার ঠোঁটের চেয়েও লাল । রাতদিন ঘুরে বেড়ানো যাবে । মাইরি বলছি একেবারে বর্তে যাবো আমি ! তবে হমস্যা একটা আছে । দেশের বাড়িতে ৫৪'র এক বুড়ি আছে । শালী জানতে পারলে আমার কিন্তু খপর আছে !
ভাল থেকো প্রিয় ! তোমার লেখা কিন্তু তোমার মতোই মজার ! উপভোগ করলাম !
আঙ্কেল, আন্টিকে বলবেন আপনার দিকে বিশেষভাবে নজর রাখতে। আপনারতো মতিগতি বিশেষ সুবিধার না বলে মনে হচ্ছে। আর আন্টিকে অ্যাওয়ার্ড দিতে ইচ্ছে করছে, আপনাকে এতদিন সহ্য করার মত অপরিসীম ধৈর্য্য দেখানোর জন্য।
তবে ওনার ধৈর্য দেখানোর ফল এখন আমাদের ভোগ করতে হচ্ছে
তুমি আবার ফোড়ন কাটছোযে ! দুই কিন্নরী যদি একসাথে স্টিং কর, তয় মুই বেচারা যাই কই ?
তোমার উত্তর কিন্তু যুতসই হ্যনি আমার জন্য ! মানতেই হয় ঘিলুতে বেশ কূটবুদ্ধি রাখ । আংকেল ডেকে সব পানসে করে দিলেযে । দাদু, নানু পাতালে অন্ততঃ আধেক দোর খোলা থাকতো ! যখন তখন আসার সুবিধে থাকতো । মানছি হাইরা গেলাম প্রিয় ! ভাল থেকো ।
ঘিলুতে তো কূটবুদ্ধি কিছু রাখতেই হবে, আঙ্কেল। তা না হলে আপনার মতোন লোকজনদেরকে ট্যাকল দিব ক্যামনে?
এত ক্ষট করে ট্যাকল করার দরকার কি প্রিয় ? শেকল পরিয়ে দিলেইতো পারো ! আর আমিতো শেকল পরতে একপায়ে খাড়া !
খুন্সুটি বেশ ভাল জমছে, তাইনা ? আমি কিন্তু নাছোঁড়বান্দা টাইপের, শেখ হাছিনার মতো । যার হাত ধ্রি, ছাড়িনা কিছুতে । কপালে তোমার ভোগান্তি আছে !
ভাল থেকো বন্ধু ! শুখে থেকো !
আমার রুচির এত বিকৃতি ঘটে নাই যে আপনার সাথে খুনসুটি করবো। আমি মডারেটর হলে আপনাকে এই ব্লগ থেকে বের করে দিতাম। আমার মূল্যবান সময় থেকে আপনার জন্য যথেষ্ট সময় ব্যয় করা হয়েছে। আর করবো না। আশা করি আপনি নিয়মিত একজন মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
তোমার উত্তর কিন্তু আমার জন্য মোটেই মিষ্টি হয়নি । আঙকেল ডেকে সব পান্সে করে দিয়েছ । বলি 'দাদু' 'নানু' পাতালে কি এমন অসুবিধে হতো তোমার ? অন্ততঃ আধেক দোরতো খোলা থাকতো আমার জন্য । আজকাল্কার ছেড়ি গুলা এত কূটবুদ্ধির হয় কেন বুঝিনে ! হাইরা গেলাম প্রিয় ! তবে ক্ষট হচ্ছেনা । বন্ধু প্রিয়র কাছেইতো হারলাম ।
আমিও ।
বরিশাল এ ব্যপক মজা পাইলাম। কবিগুরু জীবিত থাকলে মনে হয় তিনিও মজা পাইতেন।
হাহাহাহাহাহাহাহা।
এই লিস্টটা আরো বড় করে একটা লম্বা লিস্ট বানায় রাখবো।
তারপর যদি কেউ নাদান চেহারা বানায়া আমারে পটানোর জন্য আসে তখন এই লিস্টটা হাতে ধরায় দিব। খুব মজা হবে, তাই না ভাইয়া?
হিন্দী কিংবা বাংলা ছবির গানের সুর নকল করে এ ধরনের গানের একটা হুজুক শুরু হয়েছে কয়েক বছর ধরে। ইদানীং ভ্যানে করেও এ ধরনের গানের ক্যাসেট/সিডি বিক্রিও চলছে। আজব লাগে এসব দেখে।
লেখাটা অনেক মজারু। ভাল লাগলো অনেক
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
দারুণ একটা লেখা আপু। ইস আমার যদি তোমার মত এমন একটা বোন থাকত
থ্যাঙ্কু। তোমার কোন বোন নাই? আমার পাচঁটা বোন একটা ভাই আছে। আর আমি সবার বড়। ওদেরকে আমি সারাদিন খালি শয়তানি শিখাই।
হেসে হেসে ক্লান্ত হয়ে গেলাম
দ্যাট অসাম লিস্ট
মন্তব্য করুন