সম্পর্ক
আজকে অফিসে যখন প্রচণ্ড ব্যস্ততায় খাওয়ার সময়টুকুও পাচ্ছিলাম না ঠিক তখন তিথির ফোন এলো। এতদিন বাদে হঠাত করে ও কি মনে করে ফোন করলো চিন্তা করতে করতেই ফোনটা ধরে বুঝতে পারলাম যে মেয়েটা কাঁদছে। হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো,
- আপু, সামির না বিয়ে করে ফেলেছে।
- মানে কি?
- হুম, সত্যিই সামির গতকাল বিয়ে করেছে। আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
উত্তরে আমি আর কিছুই বলতে পারলাম না। আমার মনে পড়ে গেল ক্যাম্পাসের সেই পুরোনো দিনের স্মৃতিগুলো। যখন আমি, আকাশ, তিথি আর সামির একসাথে ঘুরে বেড়াতাম। সম্পর্কে তিথি আমার মামাতো বোন। বয়সে আমার দুই বছরের ছোট। ছোট্ট বয়সে মা হারা এই বোনটা আমার খুব প্রিয়। ও আমার ভীষণ আদরের কারণ আমি ওর মা’র অনেক আদরের ছিলাম। আমার মনে হতো, ওপর থেকে ওর মা আমাকে দেখছে আর বলছে, “মিথিলা, তিথিকে তুমি দেখে রেখো। ওকে কোন কষ্ট পেতে দিওনা”। আমি চেষ্টা করতাম ওর বন্ধু হয়ে থাকতে। ইউনিভার্সিটিতে যখন আমরা পড়তাম তখন সামিরের সাথে ওর সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাই আমি শুধু তিথিরই না সামিরেরও একজন ভাল বন্ধু হবার চেষ্টা করেছিলাম। যখন ইউনিভার্সিটি পাশ করলাম, তখন তিথির বিয়ের প্রসঙ্গ এলে আমার মামা ওদের সম্পর্ক মেনে নেননি। তাই ওরা দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, ফ্যামিলি যেহেতু মেনে নিচ্ছেনা সেহেতু তাদের অমতে ওরা কিছু করবেনা। কিন্তু ওরা কেউ কোনদিন বিয়েও করবেনা। এভাবেই কাটিয়ে দিবে সারাজীবন। এতে যদি কখনো বাবা- মা’র মন গলে এবং তারা ওদের সম্পর্কের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেয় তাহলেই বিয়ে করবে। তিথি যখন আমাকে ওদের সিদ্ধান্ত এসে জানালো আমার মনে হল, এটা সামিরের জন্য সহজ হলেও তিথির জন্য কঠিন। কারণ আমাদের সমাজে এখনো ঐ অবস্থা আসেনি যে একটা মেয়ে বিয়ে না করে সারাজীবন কাটিয়ে দিবে আর আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবার সেটা মেনে নিবে। আমি ওকে ভরসাহারা করলাম না, শুধু বললাম সময় সব ঠিক করে দিবে। সেই সামিরই আর অপেক্ষা না করে বিয়ে করে ফেললো অথচ আমাদের তিথি ওর পথ চেয়ে বসে রইলো।
অফিস থেকে বাড়ি ফেরার সময় এই ঘটনাটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। এজন্য আমি নিজেকে দায়ী মনে করছিলাম। মনে হচ্ছিল, বড় বোন হিসেবে নিজের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পারিনি। আমি যদি আরেকটু বিচক্ষণ হতাম তাহলে মনে হয় আমার ছোট বোনটাকে এরকম ভুক্তভুগী হতে হতোনা। আজকে অনেকদিন বাদে আমার আকাশের কথা মনে হচ্ছিল। আকাশকে আমি খুব ভালবাসতাম। বাসার সবার অমতে একপ্রকার জোর করেই আমি আকাশকে বিয়ে করেছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল, ওকে না পেলে বোধ হয় আমি মরে যাবো। তাই পরিবারের সবাইকে বাধ্য করেছিলাম আমাদের বিয়েতে রাজি হতে। সেই আকাশের সাথে আমি এক ছাদের নীচে এক বছরও কাটাতে পারিনি। আমাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে আমার মামা আর সাহস পাননি তিথির পছন্দের ছেলের সাথে ওর বিয়ে দিতে। আর এ কারণেই আজকে ওর এই দুর্দশা। আমার খুব রাগ হচ্ছিল সামিরের উপর। ছেলেটা কি আর কটা দিনও অপেক্ষা করতে পারতোনা!
এবার আমার কথায় আসি। আমি মিথিলা মাসুদ, জন্মের পর থেকেই নানা রকমভাবে নিজেকে প্রুভ করে যাচ্ছি। ডাক্তার যখন মা- বাবাকে আমার অস্তিত্বের সংবাদ দেন তখন তারা মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেননা বলে চাননি আমি পৃথিবীতে আসি। আমাকে এ্যাবরশন করানোর জন্য অনেক রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হলেও ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এই পৃথিবীতে আমার আগমন। তখন থেকেই আমি ছিলাম “আনওয়ান্টেড বেবি”। এরপর আমার চার বছর বয়সে জন্ম নিল ছোট বোন ঐন্দ্রিলা। সেই চার বছর বয়স থেকেই আমি হয়ে গেলাম বড় বোন। আমার বাবার আর্থিক অবস্থা তখন ভাল না থাকার কারণে একটা পুতুল কিনে আনা হতো এবং বলা হতো, “মিথিলা, পুতুলটা তোমার ছোট বোনকে দাও”। তখন হয়তো পুতুলটা দিয়ে আমার খুব খেলতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু আমি দিয়ে দিতাম। কারণ আমি বড় বোন। আমাকে তো সব সহ্য করতে হবে! খুব শাসন, নিয়ম- শৃংখলা আর বিধি- নিষেধের মধ্যে বড় হয়েছি আমি। যেখানে কোন স্বাধীনতা ছিলনা। আর প্রতিনিয়ত ছিল সারা দুনিয়ার কাছে নিজেকে প্রুভ করার এক অপরিসীম প্রচেষ্টা।
সেই আমি যখন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হলাম তখন পরিচয় হলো আকাশের সাথে। আকাশ, আমার জীবনের প্রথম প্রেম। প্রথমে ছিলাম ক্লাসমেট, পরে বন্ধু এর কিছুদিন পর প্রেমিক- প্রেমিকা। আকাশের সাথে মিশে আমি উড়তে শিখলাম, দেখলাম জীবনের সব কয়টা রঙ, প্রথমবারের মত নিষিদ্ধ স্বাধীনতা উপভোগ করলাম, আর পেলাম এক অদ্ভুত অনুরণন। ও এসেছিল আমার জীবনে প্রবল জোয়াড় হয়ে। যে জোয়াড়ে ভেসে গেছিলাম আমি এবং আমার সবকিছু। পরিবারের কাছে আমি যেভাবে ট্রিট হতাম আকাশের কাছে ঠিক তার উলটো। বাসায় আমি ছিলাম বড় আর ওর কাছে থাকতে চাইতাম একদম ছোট্ট হয়ে। মনে হতো, ও আমার সব কিছু বুঝবে, আদর করবে, প্যাম্পার করবে, আমার শেল্টার হবে; যা আমি কখনো পাইনি। আমি ওকে পাগলের মত ভালবাসতাম আর ও আমার একটু কিছু বুঝতে না পারলেই খুব রাগ করতাম। আমি ওর ব্যাপারে খুব বেশি পজেসিভ ছিলাম। ওকে অন্য কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখলেই চিতকার- চেঁচামেচি করতাম। ইউনিভার্সিটির কেউ আকাশকে নিয়ে কিছু বললে আমি গলার রগ ফুলায়ে সবার সাথে ঝগড়া করে আসতাম। ও পড়ালেখা এক্কেবারে করতে চাইতোনা। আমি ওকে টেনে ক্লাসরুমের দিকে নিয়ে যেতাম আর রুমের সামনে গিয়ে পেছন থেকে একটা ধাক্কা দিয়ে ক্লাসের ভেতর ঢুকায় দিতাম। রেজাল্ট খারাপ করবে ভেবে ওর সব এ্যাসাইনমেন্ট রাত জেগে আমি করে দিতাম। ওকে পড়াতাম আসলে ওর জন্য না আমার নিজের জন্য। কারণ ও পরীক্ষায় পাশ না করতে পারলেতো বিয়ে করতে পারবোনা। ও যেদিন মাস্টার্স পাশ করে রেজাল্ট শীটটা আমার হাতে তুলে দিল এত গর্ব হচ্ছিল, যে মনে হচ্ছিল আমিই যেন একই সাথে দুইবার গ্র্যাজুয়েট হলাম। যদিও ও সেটা কোনদিনও স্বীকার করেনি। ও বলতো, আমি না থাকলেও ও মাস্টার্স কমপ্লিট করতে পারতো। এটা এমন কোন বিগ ডিল না। আর আমি ওকে আমার কলিজার একটা অংশ ভাবতাম। ওর কোন কিছুই ওর জন্য করতামনা, করতাম আমার নিজের জন্য। আমরা একসাথে মার্কেটে ঘুরে বেড়াতাম আর এমনভাবে জিনিসপত্র কিনতাম যে মনে হত সংসারের যাবতীয় জিনিস কিনছি। আমি ওর কি লাগবে মনে করে কিনতাম আর ও আমারটা। আকাশের পড়া-লেখা, চাকরি-বাকরি সব কিছু নিয়েই আমার মধ্যে প্রচন্ড টেনশন কাজ করতো। ভয় লাগতো, কোন কারণে যদি বিয়েটা আটকে যায়? যদি ওকে না পাই? আমিতো বড় মেয়ে তাই পরিবারের অবাধ্য হতে পারবোনা। এজন্য টেনশনটা হয়ে যেত দ্বিগুণ। আমার মাথায় তখন কাজ করতোনা, আকাশকে বিয়ে করা মানে শুধু আকাশকেই বিয়ে করা না। ওর পরিবারকেও বিয়ে করা, তাদের সাথে চলা এবং তাদেরকে ম্যানেজ করা। আমি স্বপ্ন দেখতাম, বিয়ের পর তো আমরা দুজনেই হাওয়া, আমাদেরকে খুঁজে পাবে কে? সপ্তাহে দু- তিনদিন দুজনেই নিজেদের বাবা-মা’র সাথে কথা বলে নেবো, তাহলেই ফুরাবে। কারণ, ছোট্ট আমি মনে করতাম আমার যেমন পরিবারের প্রতি কিছু কষ্ট আছে, আকাশেরও মনে হয় সেটা আছে। তাই আমরা বিয়ে করে নিজেদের মত থাকবো। বাবা-মা’দেরকে আর জ্বালাবোনা। আমার তখনকার সময়ে শুধু একটাই কষ্ট ছিল যে, আমি আকাশের প্রথম প্রেম ছিলামনা। আমার আগে পূরবী নামের একজনের সাথে ওর প্রেম ছিল। আমি খুব কষ্ট পেতাম তখন এই ভেবে যে, “আমি কেন আকাশের জীবনে প্রথম এলামনা? আমার সাথে ওর আগে কেন পরিচয় হয়নি”? আবার এটাও ভেবে আফসোস করতাম যে, “পূরবী কত বোকা! আকাশকে বিয়ে করেনি”! আর এখন? আমার এগুলো ভেবে হাসি পায়। মনে হয়, এর চেয়ে কত বড় বড় ঘটনা অপেক্ষা করছিল আমার জন্য আর আমি কিনা এটা নিয়ে কষ্ট পেতাম! এখন ভাবি, পুরবী বুদ্ধিমান ছিল। তাই সে সময়মতো সরে যেতে পেরেছে। তা না হলে হয়তো আজকে আমার জায়গায় ও থাকতো!
আকাশকে বিয়ে করে আমি ওর বাসায় যৌথ পরিবারে উঠে এলাম। ওর সাথে মিশতে আমার ঠিক যতটুকু ভাল লাগতো ওর পরিবারের সাথে খাপ খাওয়াতে গিয়ে আমি ঠিক ততটুকুই সমস্যায় পড়লাম। ওর পরিবার ছেলের বৌয়ের মধ্যে যে জিনিসগুলো আশা করছিলেন আমি সেরকম ছিলামনা। তাই তাদের এক্সপেক্টেশন যথাযথভাবে পূরণ করতে না পারার কারণে আমাকে প্রতিনিয়ত অপমানিত হতে হয়েছে। আমি মন খারাপ করে আকাশের কাছে সেটা বলতে গিয়ে অনেকদিন ওর কাছে দ্বিতীয়বারের মত অপমানিত হয়েছি। আকাশ ওর পরিবারকে অনেক বেশি ভালবাসতো, তাই ও কখনো কোন ক্ষেত্রেই আমার সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করতোনা। ওর ধারণা হত, আমি ওর পরিবার নিয়ে বাজে কথা বলার চেষ্টা করছি। দেখতে লাগলাম, আমার প্রতি ওর বিশ্বাস ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি সেই সময়টায় খুব অসহায় হয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু কাউকে বলতে পারছিলাম না। আমি আমাদের দুইজনের মধ্যকার কোন সমস্যা কখনো আমার পরিবারকে জানাইনি কিন্তু আকাশ সেটা হর-হামেশাই করতো। এমনকি আমাদের মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটি হলেও ও আমার বাবা-মা’কে ফোন দিয়ে আমার নামে নালিশ করতো। আমি খুব লজ্জা পেতাম। ও সারাদিন ওর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতো, আমার জন্য ওর কোন সময় ছিলনা। আর আমি কত রাত বারান্দার গাছগুলোর সাথে একা একা কথা বলে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ওর অপেক্ষায় পার করেছি। আমি মাঝে মাঝে ওর কাজের জায়গায় যেয়ে বসে থাকতাম। দেখতাম, ও জুনিয়রদের সাথে গল্প করছে কিন্তু আমাকে দেখে উঠে আসছেনা। আমার মধ্যে খুব অভিমান কাজ করতো। কারণ আমি হয়তো এটা ভেবে ওখানে যেতাম, আমাকে দেখে ও দৌঁড়ে চলে আসবে। শুধুমাত্র ওর সাথে থাকার অদম্য ইচ্ছা থেকেই আমি অফিস থেকে সরাসরি বাসায় না ফিরে ওর কাজের জায়গায় চলে যেতাম। ও আমাকে সময় দিতে পারতোনা, তাই আমি ওর আশে-পাশে সারাক্ষণ ঘুর ঘুর করতাম আর এমন ভাব দেখাতাম যে, আমি ওর জন্য আসিনি, এমনিই এসেছি। খুব কষ্ট পেয়েছিলাম, যেদিন আমি দৌঁড়ে গিয়ে ওর হাত ধরেছিলাম আর ও আমার হাতটা এক ঝটকায় সরিয়ে দিয়েছিল। পুরানো অভ্যাসবশতই আকাশের পরিবারের সাথে একদিন আমার রাগা-রাগি হল। ওর বোনের বিয়ে সংক্রান্ত একটা জটিলতায় ওকে দোষ দেয়া হচ্ছিল বলে আমি প্রতিবাদ করাতে উনারা আমার উপর রেগে গেলেন। এরপর থেকে ওদের বাসায় সবার জন্য খাবার বানানো হত শুধু আমি আর আকাশ ছাড়া। সকাল বেলা অফিসে যাওয়ার আগে আমি আমার আর ওর জন্য নাস্তা বানিয়ে তারপর যেতাম। আমার অবশ্য এটা মজাই লাগতো। স্বামীর জন্য নাস্তা বানানোর মধ্যে আমি একরকম সংসার সংসার ফ্লেভার পেতাম যার জন্য আমি মরিয়া ছিলাম। কিন্তু আকাশ ছোট-খাটো বিষয় নিয়েও আমাকে কথা শোনাতে ছাড়তোনা। ও ওর পরিবারের সবার কথা ভেবে আমাকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতো। কেননা, আমি খাপ-খাওয়াতে পারছিলামনা। অনেক রাতে বাড়ি ফিরে ও ভিডিও গেম খেলা বা মুভি দেখা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যেত আর আমি অপেক্ষা করতে করতে একসময় ঘুমিয়ে পড়তাম। আবার এমনও হয়েছে আমি বারান্দার গ্রীল ধরে সারারাত কেঁদেছি কিন্তু ঘর থেকে ওর গাঢ় ঘুমের নিঃশ্বাস শুনতে পাচ্ছিলাম। আমি এখন আর মঙ্গলবারে কখনো বেড়াতে যেতে চাইনা। কারণ মঙ্গলবারে বেড়াতে যেতে চাওয়ার কারণে একবার ও আমাকে ওর পরিবারের সামনে খুব অপমান করেছিল। আমি বুঝতে পারছিলামনা, আমার সাথে এটা কি ঘটছে? যে আকাশকে আমি স্বামী হিসেবে পেয়েছিলাম তাকে কি আমি চেয়েছি? তার জন্য আমি নামাজ পড়ে দোয়া করতাম যেন, আমাদের বিয়ে হয়? এই কি সে, যে আমাকে স্বপ্ন দেখা শিখিয়েছিল? নাকি একই আদলে গড়া অন্য কোন মানুষ যাকে আকাশ ভেবে ভুল করছি? আমার স্বপ্ন আর বাস্তবতার ভেতর ব্যাপক ফাড়াক তখন। কিন্তু আমি এর কারণটা ধরতে ছিলাম অপারগ। আমি শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম তখন।
এর কিছুদিন পরে আমি মিথিলা মাসুদ, আমার স্বামী আকাশ সরোয়ারকে ডিভোর্স দেই। যেদিন আমি ঐ কাগজটাতে সই করি সেদিন খুব কাঁদছিলাম কারণ আমি ওকে খুব ভালবাসতাম। ও ছিল সেই পুরুষ যার হাত আমি প্রথম ধরেছিলাম। ওর হাত ধরেই আমার স্বপ্ন দেখা শুরু। কিন্তু আমার সেদিন একটা কথাই বার বার মনে পড়ছিল যে, মঙ্গলবারে বেড়াতে যেতে চেয়েছিলাম বলে ও আমার পিঠে লাথি মেরে মেরে বলছিল, “আমাকে মুক্তি দে তুই, প্লীজ আমাকে মুক্তি দে”। আমি ওকে সারাজীবনের মত মুক্তি দিয়ে দিলাম।
ঘুম আসছে না, এমনিতেই নিজের পোস্ট দেখতে মোবাইল থেকে আসলাম দেখি হোয়াট এ সুইট সারপ্রাইজ, তোমার পোস্ট। সুইটনেস বেশিক্ষন টিকলো না, লেখাটা পড়ে মন খারাপ হলো। এমনিতেই আমি সারাদিন মনখারাপের উপাদান খুজেঁ ফিরি, গল্পটা পড়ে তা আরো ঘনিভুত হলো। তোমার লেখা বরাবরের মতোই টাচি আর দারুণ!
এখন থেকে সব কিছুর মধ্যে মন ভাল করার উপাদান খোঁজার ট্রাই নিবা। ক্যামন?
নো মোর হতাশাবাদ। 
বেশি কিছু আশা করা ভুল!
ভুল সবই ভুল এই জীবনে পাতায় পাতায় যা লিখা সব ভুল
বিএনপি নেতা আসিফের সেই আমলের এক গান মনে পড়ে গেল,
ভুল করেছি তাই কেদেছি
কান্নার শেষ হলো না
ভুল কি আমি একা করেছি
তোমারও কি কিছু ভুল ছিল না!
আমাদের পাশের বাসায় বাপ্পী নামের একটা ছেলে ছিল। ছোটবেলায় ও আমাকে দেখলে গাইতো, ও পাষাণী বলে যাও কেন ভালবাসোনি, মুছে দিয়ে যাও তুমি এই চোখের পানি।
ওর কল্যাণেই আমি আসিফের এই একটা গান শুনসি। এছাড়া এই গায়কের আর কোন গান শুনিনি আমি। 
এখনো তুমি পাষানীই রয়ে গেলা!~

থ্যাঙ্কস বাপ্পী
কে বলসে আমি পাষাণী? আমি কত রুমান্তিক!
আমি আমি জানি জানি
কে কতটুকু, কি, কত খানি!
তুমিতো আমার ছোট্ট ভাইয়া, তুমি আর কি জানবা?
প্রেম আর বিয়ার পরের জীবন এক ভাবলেই যত ঝামেলা। তোমার লেখায় ডেপ্থ আরো বেশি থাকে, তাই তোমার গল্প আরও ইউনিক হবে ভাবছিলাম। তবুও নেক্সট গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম, কিপিটাপ। ভালো থাইকো পিয় প্রিয়'পু..
সবাইতো বিয়ের পর জীবনটাকে একদম পানসে করে ফেলে। আমার গল্পের স্বপ্নাতুর নায়িকা বিয়ের পরই বেশি বেশি প্রেম করতে চাইছে ওর জামাইয়ের সাথে। তাতে ক্ষতি কি? তোরা সবাই এত পাষাণ কেন?
রিয়েলিটি সাক্স!
ধুর! সকাল সকাল মনটা দিলেন খ্রাপ কইরা।

গল্পটা পড়ে মন খারাপ হয়নি, নায়িকা সাহসী, শী ডিজারভস মাচ বেটার এনড শী উইল গেট দ্যাট ..... অনেক অনেক শুভ কামনা মিথিলার জন্যে
এতদিন কোথায় ছিলেন? নেদারল্যান্ডের তানবীরা সেন?

ক্যামন আছেন আপু? আমার ব্লগ এতদিন আপনার কমেন্টের শূণ্যতা বোধ করছিল।
গল্পটা অনেক ভাল লাগলো। বাস্তবধর্মী ।
বিশ্বাস করি মিথিলা আবার নতুন করে বেঁচে উঠবে।নিজের জন্য বেঁচে থাকুক সে । নতুন কোন আকাশের জন্য নয়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
এইতো চাই সাহস তবে এর সাথে চাই আবেগ শূন্য চিন্তা ও তার বাস্তবায়ন।
ধন্যবাদ। কেমন আছেন আপু?
মন খারাপ করা একটা গল্প তবে তুমি সমাজের কিছু কাপুরুষের সত্যিকার চেহারাটা তুলে ধরেছ
কি খবর তোমার? ক্যামন আছো তুমি?
গল্পটা চমৎকার (y)
পড়ে খুব ভাল লাগল....
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন