শেক্সপিয়ারের জন্য ভালোবাসা
শওগাত আলী সাগর
সাবজেক্ট লাইনে চোখ না পড়লে মেইলটা আমি ডিলিটই করে ফেলতাম। আজকাল জাংক মেইলে ইনবক্স এতোটাই সয়লাব হয়ে থাকে যে সতর্কভাবে খেয়াল না করলে অনেক প্রয়োজনীয় মেইলও ডিলিট হয়ে যাবার আশংকা থাকে। প্রেরকের ঘরটা অপরিচিত ঠেকায় এই মেইলটা্কেও প্রায়ই ডিলিট করে ফেলেছিলাম। অমনি পেছন থেকে বর্ণমালা চিতকার করে উঠে- ইট সিমস লাইক মাই মেইল । হাউকাম সামবডি সেন্ড ই-মেইল টু মি ইন ইউর ইমেইল।
বর্ণমালা কখন আমার পেছনে এসে দাড়িয়েছে টের পাইনি। তার কণ্ঠস্বরের উত্তেজনায় আমি মেইলটার সাবজেক্ট লাইনের দিকে চোখ ফেরাই। বোল্ড করে সেখানে লেখা রয়েছে ‘মেইল ফর অনিন্দিতা।‘ এবার আমারও অবাক হবার পালা্ । বর্ণমালার নামে কোনো ইমেইল আসার কথা নয়। আমাকে ভাববার সময় না দিয়েই মেইলটার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে সে। তার পর ‘ইয়াহু’ বলে চিতকার করে ওঠে।
- লুক, আই হ্যাভ অ্যা গুড নিউজ।– বর্ণমালার উচ্ছাস দেখে আমি মেইলটার উপর চোখ রাখি। এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলি মেইলটা।
‘শেক্সপিয়ার ইন একশন’- কানাডার খ্যাতনামা ক্লাসিক্যাল থিয়েটার কোম্পানি। মূলত: বাচ্চা এবং তরুন দর্শকদের জন্য শেক্সপিয়ারের নাটক পরিবেশনা তাদের কাজ। মেইলটি পাঠিয়েছে কোম্পানির আর্টিস্টিক ডিরেক্টর মাইক্যাল কেলির অফিস থেকে তার সহকারি।ভ্যালেনটাইনস ডে তে তারা শেক্সপিয়ারের সনেট নিয়ে বিশেষ একটি শো করতে যাচ্ছে। সেই শো’র জন্য তারা বর্ণমালাকেও মনোনীত করেছে।আনন্দ আর উত্তেজনায় বর্ণমালা আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি অবাক বিস্ময়ে আমার সাড়ে সাত বছরের কন্যার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। ওর এই উচ্ছাস যতোটা না শো’তে পারফরম করা নিয়ে,তারচেয়েও বেশি শেক্সপিয়ার নিয়ে।
গত কয়েক মাস ধরেই শেক্সপিয়ার নিয়ে তার মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করছে। শেক্সপিয়ারের জগতবিখ্যাত ট্র্যাজেডিগুলো, তার চরিত্রগুলো নিয়ে মাঝে মধ্যে এমনসব প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়,আমার নিজের বিব্রত হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পরীক্ষা পাশের জন্য শেক্সপিয়ার পড়েছি, তারপরও বিভিন্ন সময় টুকটাক পড়া হয়েছে, কিন্তু সাড়ে সাত বছরের একটা মেয়ের সঙ্গে তার বোধগম্য করে শেক্সপিয়ার বিষয়ক আলোচনা আমার জন্য কখনো কখনো একটু কঠিন হয়ে যায় বৈ কি! কিন্তু তাতে কি? তার উতসাহে তাতে ভাটা পড়ে না। বরং বাড়তি উতসাহে সে শেক্সপিয়ার নিয়ে মেতে থাকে।
শেক্সপিয়ার সম্পর্কে তার এই আগ্রহটা তৈরি করেছে এই কোম্পানিটিই।কেবল শেক্সপিয়ারের থিয়েটার করাই নয়, শেক্সপিয়ার নিয়ে নানা ধরনের কাজ করে এই ‘শেক্সপিয়ার ইন একশন’ কোম্পানিটি। তার অন্যতম একটি ‘শেক্সসপিয়ার ফর কিডস’।শহরের বিভিন্ন জায়গায় সামার ক্যাম্প করে তারা ছোট ছোট বাচ্চাদের শেক্সপিয়ারের সাহিত্য কর্ম সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেয়। কোম্পানির খ্যাতনামা অভিনেতা অভিনেত্রী ছাড়াও পেশাদার প্রশিক্ষকরা সেই সব ক্যাম্পে শেক্সপিয়ারের নাটকে অভিনয় সম্পর্কে হাতে কলমে শিক্ষা দেয়। ক্যাম্পের বাইরে টরন্টো পাবলিক লাইব্রেরীর বিভিন্ন শাখায়ও তারা এই কর্মসূচীটির আয়োজন করে।
গত ফলে টরন্টো পাবলিক লাইব্রেরীতে ‘শেক্সপিয়ার ফর কিডস’ নামে একটা ওয়ার্কশপ করেছিলো এই থিয়েটার কোম্পানি। স্কুল বন্ধ থাকায় বর্ণমালাকেও সেই ওয়ার্কশপে দিয়েছিলাম আমরা। প্রতি শনিবার দুই ঘন্টা করে দুই সপ্তাহের ওয়ার্কশপ।ওয়ার্কশপের সংক্ষিপ্ত যে ফ্লায়ারটা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো পাবলিক লাইব্রেরীর কেনেডি/এগলিনটন ব্রাণ্চের নোটিশ বোর্ডে তাতে ধারনা দেওয়া হয়েছিলো শেক্সপিয়ারের নাটকের অভিনয় সম্পর্কে শেখানো হবে এই ওয়ার্কশপে। সত্যি বলতে কি, অভিনয় শেখা নয়, স্কুল বন্ধের দুটি ঘন্টা অন্তত কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে মেয়েটা সেই ভাবনা থেকেই তাকে ওয়ার্কশপে দেওয়া ।
২.
একগাদা কাগজপত্র হাতে নিয়ে বাসায় ফিরে বর্ণ। জানতে চাই- ‘ক্লাশটা কেমন হলো মা?’
- ‘ওয়াণ্ডারফুল’- এক কথায় উত্তর দিয়ে হাতের কাগজপত্রের দিকে মনোযোগী হয় সে। কাগজপত্রগুলো আসলে আর কিছু না, শেক্সপিয়ারের কয়েকটি নাটকের কাহিনীর সারসংক্ষেপ। মানে গল্পটা। বুঝতে অসুবিধা হয় না বাচ্চাদের উপযোগি করে গল্পগুলোকে সাজানো হয়েছে। ওয়ার্কশপের ক্লাশে শেক্সপিয়রকে পরিচয় করে দেওয়া হয়েছে বাচ্চাদের সঙ্গে। দুই সপ্তাহ ধরে শেক্সপিয়ারের নাটক থেকে পাঠ, অভিনয় ইত্যাদি করে করে শেক্সপিয়ার যেন হয়ে ওঠে ওদের অতি পরিচিত একজন।
কিন্তু বিপত্তি বাধে অন্যজায়গায়। ওয়ার্কশপের ক্লাশে পড়া হ্যামলেট, ম্যাকবেথ কিংবা রোমিও অ্যাণ্ড জুলিয়েট যেন ওর তৃষ্ণাটা আরো বাড়িয়ে দেয়।
- বাবা আই ওয়ান্না রিড হোল শেক্সপিয়ার’- বর্ণর আবদার।
ঘরের বইয়ের তাক থেকে নিজেই খুজেঁ বের করে ‘কমপ্লিট ওয়ার্কস অব শেক্সপিয়ার’। আদ্যোপান্ত বইটা হাতিয়ে রেখে দেয়। আমি জানি এটার ভেতর ঢুকতে পারা সাড়ে সাত বছরের একটি মেয়ের কর্ম নয়। আমাদের বড়দেরই বেশ হিমসিম খেতে হয়। পকেট থেকে ছোট্ট একটা নোটবুক বের করে বর্ণ। বলে ‘বাবা, লুক দিস ইজ মাই মোমো বুক।অ্যাণ্ড আই হ্যাভ অল দা শেক্সপিয়ার টাইটেল ইন ইট।‘ ছোট্ট নোটবুকটাতে শেক্সপিয়ারের সকল বইয়ের নামের তালিকা। প্রশ্ন করি, এই টাইটেলগুলো তুমি কিভাবে সংগ্রহ করলে। বর্ণর সহজ উত্তর – জাস্ট গুগলড ইট।অ্যাণ্ড আই ফাউণ্ড হোল বাণ্চ অব শেক্সপিয়ার টাইটেল। আই ওয়ানা রিড অল দিস বুকস।
ইংরেজী সাহিত্যের জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক ই নেসবিটের কথা মনে পড়ে যায়। বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় এই লেখিকা তার বাচ্চাদের নিয়ে গিয়েছিলেন শেক্সপিয়ারের নাটক দেখতে। কিন্তু নাটক শেষ হবার আগেই বিগড়ে যায় তার ছেলেমেয়েরা। ‘বোরিং’- এইটুকু প্রতিক্রিয়া প্রকাশেই তারা সীমিত থাকেনি। নাটকের কাহিনীটা যে অত্যন্ত দূর্বোধ্য তাও বলেতে তারা ভুল করে নি। বাড়ী ফিরে ছেলেমেয়েদের নিয়ে বসেন নেসবিট। তিনি নিজের মতো করে কাহিনীটা বলতে শুরু করেন। অবাক কাণ্ড যে নাটকটা বাচ্চাদের কাছে এতো বোরিং মনে হয়েছে, তার কাহিনী শুনতে গিয়ে একটুো নড়াচড়া করছে না তারা। হঠাৎ থামেন নেসবিট।‘তারপর’- একসঙ্গে চেচিয়ে ওঠে বাচ্চারা। ‘ খুবই চমতকার গল্প”- এটা, সমস্বরেই প্রতিক্রিয়া জানায় ছেলে মেয়েরা।
- কিন্তু এটা তো ওই নাটকেরই কাহিনী, যেটা তোমাদের কাছে বোরিং মনে হয়েছে।
- কাহিনীটা বেশ চমতকার। তারপর... বাচ্চাদের জবাব।
নেসবিট গল্প বলা শেষ করেন। এবার ছেলে মেয়েরা ঘিরে ধরে তাদের লেখিকা মাকে। ‘গল্পটা আসলে তোমার লেখা উচিত মা।‘- সমস্বরে দাবি জানায় ছেলেমেয়েরা। নেসবিটের ভাবনাকেও নাড়া দেয়। তারমানে গল্পটা ওদের পছন্দ, শুধু এর ভেতরে যেতে পারছিলো না। ঠিক করলেন তিনি শেক্সপিয়ারের লেখার মৌলিকত্ব নষ্ট না করেই কাহিনীগুলো আবার লিখবেন। করলেনও তাই । জন্ম নিলো ‘শেক্সপিয়ার’স স্টোরিজ ফর চিল্ড্রেন’।
আমিও ঢুকে পড়ি টরন্টো পাবলিক লাইব্রেরীর ওয়েবসাইটে। সেক্সপিয়ার ফর কিডস’ কথাগুলো লিখে সার্চ দিতে থাকি। বর্ণর বুঝার মতো করে লেখা শেক্সপিয়ারের গল্পগুলো খুজেঁ বের করতে হবে। একে একে টাইটেল ভেসে আসে কম্পিউটারের পর্দায় ।আর আমি সেগুলোকে বুকিং দিতে থাকি।
৩.
- সনেট? শেক্সপিয়র’স সনেট? আই লাভ ইট!
বর্ণর কথায় কান না দিয়ে আমি মেইলটাতে মনোযোগি হয়ে উঠি।প্রোগ্রামটার ধরন সম্পর্কে মোটামোটি বিস্তারিত ধারনাই দেওয়া হয়েছে মেইলটিতে। তবু আরো বেশি ধারনা দিতে ঢুকে যাই ওদের ওয়েবসাইটে। এবার কিন্তু সত্যি সত্যি আামার বিস্মিত হবার পালা। ভ্যালেনটাইনস ডে’র আগে প্রতিবছরই বাচ্চাদের একটি টিম তৈরি করে এই থিয়েটার কোম্পানি। সামার ক্যাম্প আর পাবলিক লাইব্রেরীর ওয়ার্কশপ থেকে অনেকটা নিরবেই তারা বাছাই করে তাদের আগামী তারকা। আর ভ্যালেনটাইনস ডে তে তাদের বিশেষ আয়োজন হয় শেক্সপিয়ারের সনেট নিয়ে। না, মঞ্চ সাজিয়ে হলরুমে তারা এই শো’টি করে না। তাদের পরিবেশনার ধরনটি সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং আমার কাছে একেবারেই নতুন।
ধরুন, কেউ একজন তার প্রিয় কোনো মানুষকে ভ্যালেনটাইনস ডে’তে বিশেষ কোনো উপহার দিতে চায়। ফুল কিংবা অন্য কোনো উপহার সামগ্রীতো সবাই দেয়। কিন্তু বিশেষ কিছু, যাকে বলে ‘সামথিং স্পেশাল’- উপহার যারা দিতে চায়,তারা যোগাযোগ করেন এই থিয়েটার কোম্পানির সঙ্গে। প্রিয় মানুষটির নাম ফোন নম্বর দিয়ে দেন সেখানে। ভ্যালেন্টাইন ডে তে নির্দিষ্ট মানুষটিকে ফোন করে এই থিয়েটার কোম্পানি। তারপর তাদের পেশাদার আবৃত্তিকাররা পড়ে শুনায় শেক্সপিয়ারের রোমন্টিক কোনো সনেট।বর্ণমালাকে ঠিক এই কাজটিই করতে হবে। টেলিফোনে কোনো একজনের প্রিয় কোনো মানুষকে পেড়ে শুনাতে হবে শেক্সপিয়ারের রোমান্টিক কোনো সনেট। এর জন্য অবশ্য কোম্পানিটিকে ফি দিতে হয়। প্রতিটি সনেট পড়ার জন্য কোম্পানিকে দিতে হয় ২৫ ডলার। মজার ব্যাপার, ভ্যালেনটাইনস এর আগে কবিতা পিপাসু মানুষরা প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে ‘শেক্সপিয়ার ইন একশন’ কোম্পানির কাছে। না, টাকাটা কিন্তু কোম্পানির তহবিলে যায় না। বাচ্চাদের দিয়ে কবিতা পড়িয়ে যে টাকাটা আসে সেটা তারা দিয়ে দেয় পাবলিক লাইব্রেরীর তহবিলে। বাচ্চাদের জন্যে শেক্সপিয়ার শিক্ষায় ব্যয় হয় সেই অর্থ।
৪.
থিয়েটার কোম্পানির প্রশিক্ষক বলে দিয়েছেন বর্ণকে সনেট দুটো মুখস্ত করতে হবে না। কেবল ভালো করে পড়তে হবে যাতে আটকে না যায় কোথাও। কিন্তু বর্ণ এর মধ্যে দুটোই সনেটই মুখস্ত করেই সেরেছে। প্রস্তুতিও চলছে তার পুরোমাত্রায়। সেই প্রস্তুতি আর উত্তেজনার ছোঁয়া পেতে পেতে ভাবতে থাকি, এরা কিভাবে শেক্সপিয়ারকে বাচ্চাদের নার্ভের, অনুভূতির মধ্যে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। অবচেতনভাবেই একটা প্রশ্ন তৈরি হয় মনে। বাংলাদেশে কি কখনো এমন কোনো আয়োজন হবে? নিদেনপক্ষে ‘রবীন্দ্রনাথ ফর কিডস’ ধরনের?
লেখা ভালো লেগেছে। রর্ণ এর জন্য শুভকামনা রইলো
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনারা এতো ভালো কেন বলুন তো?
চমৎকার লাগলো
নিয়মিতে পড়তে চাই... বাচ্চাদের সাথে আলোচনা, গল্প সব ব্লগে তুলে দেন। কারন অনেক কিছু জানা হয়ে যায় আপনার লেখায়।
আপনারা বিরক্ত না হলে আমার কোনো অসুবিধা নাই। কন্যাদের নিয়ে অভিজ্ঞতাগুলো আমি মাঝে মধ্যেই লিখে রাখি। আপনাদের উতসাহ পেয়ে সবার সঙ্গে শেয়ার করার সাহস পাচ্ছি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
মনে হয় না।
====================
আরো লেখা চাই।
রাসেল,আসুন না আমরা ইতিবাচক কিছু একটা প্রত্যাশা করি। হতেও তো পারে। আমি তো ভাবি হবে নিশ্চয়ই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
্দারুন উদ্যোগ তো! আপনার ঝরঝরে লেখার কারনেই জিনিষটার ব্যাপারে পড়তে ভালো লাগ্লো! জানা গেলো ভালো একটা সিস্টেমের কথা।
আপনার পিচ্চির সাথে কথাবার্তার এই লেখাগুলো অনেক কিছু জানায়, জানার আগ্রহও বাড়ায়। আরো লিখুন।
েলখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। । অনেক ঘটনা দেখেই মনে হয় আহা এগুলো যদি আমার দেশের ছেলেমেয়েরা পেতো! সেই রকম একটা আকুতি থেকেই মাঝে মধ্যে কাগজে আকাআকি করা। আপনাদের ভালো লাগলো মাঝে মধ্যেই শেয়ার করা যাবে। আবারো ধন্যবাদ।
রবীন্দ্রনাথ ফর কিডস আবশ্যই সম্ভব যদি সেরকম সৃষ্টিশীল কোন মানুষ সেটার দায়িত্ব নেন। তবে সুকুমার রায়/ সত্যজিত রায়/ হুমায়ুন আহমেদ কিন্তু খুব অনায়াসেই হতে পারে। টাকা যত না বেশী দরকার, তার থেকে বেশী দরকার ডেডিকেটেড গুণী মানুষ। দেশে দুটারই কিছুটা টানাটানি আছে।
ইশ, কি দারুন একটা প্রজেক্ট! আমাদের শিশুদের জন্য যদি করা যেত!
হুমায়ূন ফর কিডস?? ভাল কিছু দিয়ে বাচ্চারা জীবন শুরু করুক
হুমায়ুনের শিশুদের গল্পগুলা অসাধারনঃ বোতল ভূত, নীলহাতি, পুতুল, বোকাদৈত্য, এমন আরো আনেক উদাহরন আছে। "ভাল কিছু দিয়ে বাচ্চারা জীবন শুরু করুক" মানে বুঝলাম না। একটু ব্যাখা করবেন?
আমাদেরও হয়তো একদিন হবে। সেদিনটা কবে আসবে তার জন্য কতোদিন অপেক্ষা করতে হবে সেটাই আমাদের জানা নেই। বাংলাদেশে কিন্তু অনেক সংগঠন আছে যারা অনায়াসে এ ধরনের একটা উদ্যোগ নিতে পারে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কিংবা প্রথম আলোর মতো যেইসব পত্রিকার বন্ধুসভা জাতীয় ফোরাম আছে তারাও নিতে পারে এই ধরনের উদ্যোগ।
লেখাটা পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
দারুন উদ্যোগের গল্প!
ধন্যবাদ আপনাকে।
লাইক শর্মি সেইড, সুকুমার রায় আর উপেন্দ্রকিশোর রায়ই হতে পারে একটা বাচ্চার জন্য দূর্দান্ত একটা স্টার্টিং।
তবে আমাদের দেশে এরচেয়ে ভালো কাজও হতে পারে। কানাডা শুধু শেক্সপীয়ার নিয়ে কাজ করছে। আমরা বাংলা ভাষার সেরা ২০ জন সাহিত্যিককে নিয়ে এই কাজ করতে পারি। এটা কেমন শোনায়?
এত বড় উদ্যোগ নিতে সাহস হচ্ছে না? ওকে, আমরা কেবল হুমায়ুন আজাদ স্যারের আব্বুকে মনে পড়ে বইটা নিয়ে চলে যেতে পারি ৬-৯ বছর বয়েসী শিশুদের কাছে। পিচ্চিদেরকে হুমায়ুন আজাদ ভালোভাবে বুঝানোর জন্য আমাদের গুগলিং করার সুযোগ নেই। কারণ আব্বুকে মনে পড়ে লিখে গুগলে গুতালে খুব বেশি কিছু আসে না। কিন্তু ওয়ে আউট আছে। আমরা আগে হুমায়ুন আজাদকে ভালোভাবে পড়ে-জেনে নিতে পারি। তাহলে আর গুগল মামাকে লাগবে না। নিজেরা নিজেদের বাচ্চাদেরকে নেসবিটের মতো করে হুমায়ুন আজাদ বোঝাতে পারবো। বাচ্চারা যখন তাকে সত্যি সত্যি বুঝতে পারবে, তখন আপনি দেখতে পাবেন- ভ্যালেন্টাইনস্ ডে'তে প্রিয়জনকে পড়ে শোনানোর মতো কবিতা স্যার কম লিখে রেখে যান নি।
কিংবা চাইলে কানাডার আইডিয়া না নিয়ে আমরা নিজেরাও খুঁজে বের করতে পারি ভালো কোনো আইডিয়া। শুধু আমাদের যুবকদের এটা বিশ্বাস করতে হবে যে; হ্যাঁ, মনে হয় সম্ভব। এই বাংলাদেশেই সম্ভব।
তবে এই বিশ্বাস করায় আবার বিপদ আছে। তাহলে কিন্তু নিরাপদ দুরত্বে বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলার এবং দায়িত্ব পাশ কাটিয়ে আরামের জীবন যাপন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
আমার "আব্বুকে মনে পড়ে" পড়া নাই।
আর জীবনে আসলে বিশ্বাস আর নিরাপত্তা, দুটাই লাগে।
'আব্বুকে মনে পড়ে' অসাধারণ একটা বই
আইডিয়া উদ্ভাবনে আমাদের মেধাও কম নয়। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের শিশুদের মনন বিকাশে এর চেয়েও ভালো কোনো আইডিয়া নিয়ে কেউ না কেউ এগিয়ে আসবে। আমি শুধু কানাডার একটা উদ্যোগের তথ্যটা শেয়ার করলাম।
অনেক ধন্যবাদ চমতকার মতামত এবং আলোচনার জন্য। আর লেখাটা পড়ার জন্য তো অবশ্যই।
দারুণ সব ব্যাপার-স্যাপার! মাত্র সাত বছর বয়সের বাচ্চার আগ্রহ দেখে টাসকি খেলাম।
হুমমম! পরিবেশ অনেক কিছু করে। আমাদের (বাংলাদেশের) বাচ্চাদের আগ্রহ কিন্তু আরো অনেক বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা আগ্রহ দেখানোর পরিবেশ পায় না। কিংবা আমরা মনোযোগ দেই না।
ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য।
সেক্সপিয়ারকে ছোট বেলায় চিনেছি নাটকের কল্যানে এর পরে বড় হয়ে তার সনেট আর বিভিন্ন উপন্যাস পড়ে।
আরো লেখা দিন এই ধরনের। পড়ে ভাল লাগছিল।
ধন্যবাদ আপনাকে। উতসাহ পাচ্ছি আরো লেখার ।
বাহ্।দারুণ ব্যাপার তো!আরো এমন পড়ার আগ্রহ হলো।
ধন্যবাদ আপনাকে।
একবার মুক্তমনায় কাজ করার সময় আমরা দু বন্ধু মিলে উদ্যেগ নিয়েছিলাম আরজ আলী মাতুব্বর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন, পল কার্জ, রিচার্ড ডকিন্স ইত্যাদি অনেকের জীবনী বাচ্চাদের উপযোগী করে লিখব। কাজ শুরুও করেছিলাম। শেষে কেন যেনো আর কাজটা শেষ হলো না
আপনার চিন্তার প্রতি রইল শুভকামনা
দারুন।
অনুষ্ঠান কেমন গেল?
মন্তব্য করুন