ইউজার লগইন

তানবীরা আপুর সারপ্রাইজ বার্থডের দিনে!

মনটা ভালো। ভালো থাকার অনেক কারন আছে একে একে বলি। প্রথম কারন বিসিএস সংশোধিত পাইকারী লিস্টেও নিজের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার জ্বলজ্বল করতে দেখে, এশেজের এতো দারুন জমজমাট শুরু দেখে, অনাহুতের মতো তানবীরাআপুর বাসায় গিয়ে জন্মদিনের কেক ভক্ষণ ও আড্ডাবাজি, জ্যোতি আপুর সাথে রিকশায় দারুন আড্ডা, শেষে চায়ের দোকানে এসে এহতেশাম পুলক আমার মজার আড্ডা, বাসায় ঢূকেই তাজ্জব বনে যাওয়া মামার একদিন আগে ঢাকায় ফেরা, সব মিলিয়ে বাম্পার একটা দিন কাটলো। কালকেও বাম্পার দিন যাবার সম্ভাবনা আছে, যদি গোলাম আজমকে ফাসি দেয়। আমার মনের ভেতরে কিছুটা সন্দেহ, তাও আশা করছি আল মাহবুবের কাচ্চি খেয়েই রাতের খাবার হিসাবে উদযাপন করবো। দেখা যাক কী হয়! আগের মতো সেই খুশী খুশী ভাব নাই। কারন কাদের মোল্লার ফাসীর আপিলের খবর নাই, সাঈদীর রায় কার্যকর হবার খবর নাই, এখনো ঢিলে তালে চলতেছে অনান্য কার্যক্রম তাতে সন্দেহ অবিশ্বাস হবেই। আর নির্বাচন পরের বছরেই, তাই পলিটিক্যাল কারসাজি মুলক আপোষের ব্যাপার স্যাপার তো থাকেই। দেখা যাক কী হয়, ফেসবুকের ভাষায় বলি ফিলিং হোপফুল!

আজ সময় গেলো ঘুমিয়েই। সেহরী খেয়ে ঘুমাতে গিয়েও দেখি ঘুম আসে না। মোবাইলে গুতাগুতি আর ইউটিউব দেখতে দেখতে ছয়টা বাজালাম। রোজা না থাকলে এক কাপ চা খেতে যাবার জন্য বাইরে ঘুরে আসা যেতো। কিন্তু রোজার দিন, সারাটা দিন পড়ে আছে উপোষের তাই ঘুমিয়ে পড়লাম। বেশী সময় ঘুমাইনি। বারোটাতেই উঠলাম। উঠে আর কি আল্লাহর দিনের ফেসবুক আর পত্রিকার দিকে চোখ বুলালাম। কাল একটা সিনেমা পুরাটা দেখি নাই তা শেষ করলাম। ছবির নাম কমান্ডো। ছোটোবেলায় এই টাইপের ছবি আমার খুব পছন্দের ছিলো। শুক্রবারের বিটিভিতে খুব চেয়ে থাকতাম মারপিটের ছবি দেখবো বলে। কিন্তু ওতো একশন আর কই? সবই তো বাংলাদেশে সামজিক একশন মার্কা ছবি। তবে বড় বেলায় আমার এইসব একশন ভালো লাগে না। আর তামিল তেলেগু ছবির আজাইরা একশন দেখতে দেখতে এখন আর চোখের শান্তি পাই না এগুলাতে। তাও রোজার দিন টাইম পাস তাই দেখতে হলো ছবিটা। তবে নায়ক বেসিক্যালি ভিলেন তো তাই তাঁর বডি ফিটনেস যে কোনো বলিউডের হিরোর চেয়ে ভালো। এরকম দারুন একশন অনেকদিন বলিউড দেখে নাই। আর র‍্যাম্বো মার্কা কাহিনীর ভেতরে নাচ গান। পিউর টাইমপাস মুভি। কারেন্ট চলে গেলো। গোসল নামায শেষে একটা বই নিয়ে বসলাম। আবু ইসহাকের গল্প সমগ্র। আগে পড়া শেষ। তাও পড়ি বইটা খুব ইন্টারেস্টিং। কারেন্ট আসলো। ব্লগ দেখলাম। তিনটা চারটা কমেন্ট আসছে। দেখে হাসি পাইলো। আহারে এককালে মানুষ বলতো লিখতে, লিখতাম না। কি সব লিখতাম তাতেই সবাই ঝাপিয়ে পড়তো। এখন সেধে সেধে প্রতিদিন লিখি তিনটা করে কমেন্ট পাই বড়জোর। হাসি পায়। তাও লিখে যাই। কে পড়লো না পড়লো ভেবে কাজ নাই। আমার লেখা আমাকেই লিখতে হবে। আবার টাইম পাসের জন্য সিনেমা নিয়ে বসলাম। মামা পেনড্রাইভে দিয়ে গিয়ে গিয়েছিলো রাজনা নামের এক মুভি। ধনুশ ও সোনম কাপুরের ছবি। ব্যাবসাসফল ছবি। ফার্স্ট হাফ দেখলাম। ফার্স্ট হাফ দারুন। নায়ক ধনুশের অভিনয় স্কিল ভালোই। তাঁর চেহারা দেখে শান্তি পাই। এই চেহারা নিয়ে যদিও এতো ব্লকব্লাস্টার সাউথের হিরো হতে পারে তবে আমার চেহারাও খারাপ কিছু না। কাল ইউটিউবে সভ্যতা নামের এক মেয়ের গান শুনে ভাবতেছিলাম আহা আগের দিন থাকলে ট্রাই মারতাম একটা। এতো ভালো অঞ্জনদত্তের গান গায় মেয়েটা। শুনেই শান্তি। যাই হোক আবার কারেন্ট গেলো আবার বই নিয়ে বসা। এবার হাতে মাহমুদুল হকের নির্বাচিত ইন্টারভিউ নিয়ে বই হীরন্ময় কথা। আগেও পড়া আছে তাও চোখ বুলিয়ে নেয়া। ইফতারীর সময় হয়ে আসে। বেরিয়ে পড়ি ভাইয়ার অফিসে। এই ঢাকা শহরে ভালোমন্দ ইফতারী খাওয়ার প্রতিদিনের জায়গা আমার একটাই!

অফিসে যেতে হয় বাসা থেকে হেটে। সারাদিনে এই শেষ বিকেলে আমার বের হওয়া। অবাক লাগে রোজার দিনের এই আয়েশী দিন যাপন দেখে। রাস্তাঘাটে ইফতারী ইফতারী গন্ধ। রোজার শুরুর দিক তাই এই গন্ধ আরো প্রকট। এই ইফতারী জিনিসটা আমার কাছে খুব ভালো একটা সময় লাগে। সারাদিন না চা খেতে না পারার বেদনা ভুলিয়ে দেয়। হাটতে হাটতে যাই অফিসে। থরেথরে ইফতারী সাজানো। ফল ফ্রুটও আছে ভালোই। আজান আর শুনা হয় না সময় হয়ে গেলেই খাওয়া শুরু। ইফতারী দারুন ছিলো আজ। খেতে খেতে টাইম শেষ। নামায না পড়েই দোড় দিলাম। কারন জ্যোতি আপুকে কথা দিছি সাড়ে সাতটায় থাকবো শিশুমেলার সামনে। আগে ভাগেই চলে গেলাম রিক্সা নিয়ে। যেয়ে চাচীর দোকানের এক চা খেলাম। বালের চা বানাইছে তাও গিললাম। গ্যাস্ট্রিকের কারনে বমি বমি আসছিলো। আপু আসলো রিক্সায় চলে গেলাম তাতাপুর বাসায়। নক করেই অবাক। দেখি কেক টেক নিয়ে তাতাপু বসা ডাইনিংয়ে। আমি তো আসমান থেকে পড়লাম। তাতাপুর জন্মদিন আর আমি জানি না। পরে আবিস্কার করলাম কারন ফেসবুক। ফেসবুকের কারনেই এখন আর জন্মদিন সেভাবে মনে রাখা হয় না। নয়তো সকাল বেলাতেই কেনো জানি মনে হচ্ছিলো আজ কারো জন্মদিন! যাই হোক যেয়েই কেক কাটা দেখলাম, কেক খেলাম। জমিয়ে আড্ডা দিলাম তিন জনে। আড্ডার বিষয় ফেসবুক আর ব্লগ নিয়েই। আমার খুব মজা লাগে অনলাইন বিষয়-আশয় নিয়ে অফলাইন আড্ডা মারতে। সময় যে কিভাবে চলে গেলো দ্রুত টেরই পেলাম না। দেখি সময় সাড়ে নয়টা বাসায় ফিরতে হবে। রিক্সা পেয়ে গেলাম। জ্যোতিপুর সাথে হেনতেন কতো বিষয় নিয়ে আলাপ। সব চাইতে মজা পেলাম এলমার রোজা রাখার গল্প শুনতে শুনতে। আপুকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে শ্যামলীর ওলিগলি ঘুরে চায়ের দোকানের এলাকায় ফেরা। রিক্সা ভাড়া দিয়েও উনাকে ১৫ টাকার নাস্তা করলাম। উনার চোখে মুখে আনন্দ ফ্রি খানা পেয়ে। চায়ের দোকান আসলাম নান্নুরে দিলাম ঝাড়ি অযথাই। এহতেশাম আসলো,পুলক আসলো, দারুন আড্ডা। ঝাড়ি খেয়ে নান্নু অসাধারণ দুইকাপ চা খাওয়ালো আমাকে। হাটতে হাটতে বাসায় ফিরলাম। গান শুনছিলাম অঞ্জন দত্তের নতুন ছবি গনেশ টকিজের ইয়ে জিন্দেগী। খুব মিস্টি হিন্দী গান। সেভেন্টিজের গন্ধ গানটাতে। ইয়ে জিন্দেগী বহুত হাসি, সাজি হে ইয়ে দুনিয়া/ মাগার ইয়াহা তেরী তারা কোই নেহী মেরী জাঁ!

http://www.youtube.com/watch?v=YauEbTTpzvc

পোস্টটি ৪ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

টোকাই's picture


শান্ত, আড্ডা পাগল্ মানুষ আমি। আর এখন একা একা সময় কাটাই ফেসবুক আর ব্লগের লেখা পড়ে। কত মজা করে আড্ডা মারতেসেন, তাও আবার ব্লগের বন্ধুদের সাথে। যদিও আমার সাথে কারই পরিচয় নাই, তবুও আপনার গল্প শুনে হিংসা লাগতেসে। যাইহোক, দেশে গেলে সবাইকে জোর করে ধরে এনে আড্ডা মারবো ফর সিউর। অনেক ভাল থাইকেন আর অনেক লিখতে থাকেন, আমাদের পড়ার ম্যাটেরিয়াল বানান।

আরাফাত শান্ত's picture


ধন্যবাদ ভাইয়া। এই ঝিমানো ব্লগে আপনার মতো পাঠক পেয়ে আমরা খুশি। ভালো কাটুক দিন। ভালো থাকেন!

সামছা আকিদা জাহান's picture


আড্ডা আড্ডা আড্ডা। ঘুমাইলা কই। খালি তো আডাডাই। লেখা শুরু আড্ডা দিয়ে শেষ ও আড্ডা দিয়ে। মাঝে সময় করে শুধু একটু ঘুমানো। খুব মিস করি এই আড্ডা।
ঢাকায় আছ বলেই সম্ভব। তানবীরার জন্মদিন ভুলেই গেছি।সেই সাথে ভুলেছি ও ঢাকায় এসেছে। ধন্যবাদ মনে করিয়ে দেবার জন্য। বিসিএস এর পরবর্তি ধাপগুলিতে সফল হও।

আরাফাত শান্ত's picture


একটার মেইন ভাইভা দিলাম কিছুদিন আগে। দোয়া কইরেন আপু!

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


আহা! কি চমত্‍কার একটা দিন! ফিল গুড কথাবার্তা ভালো লাগে খুব।

আরাফাত শান্ত's picture


থ্যাঙ্কস বর্ণ। জলদি ব্লগে নিয়মিত হও!

লীনা দিলরুবা's picture


দারুণ দিন কাটালে।
তানবীরাকে জন্মদিনে বিলম্বিত শুভেচ্ছা।

আরাফাত শান্ত's picture


আপনারে খুব মিস করি আপু Sad

জ্যোতি's picture


আমিও টাস্কি খাইছিলাম কেক কাটার সময়ে উপস্থিত হয়ে। দারুণ আড্ডা হলো তাতাপুর সাথে । তোমাকে থ্যাংকু সাথে যাওয়ার জন্য ।

১০

আরাফাত শান্ত's picture


আপনারেও থ্যাঙ্কু হুজুগটা তোলার জন্য!

১১

নিভৃত স্বপ্নচারী's picture


দারুণ দিনযাপন।
শুভ জন্মদিন 'তানবীরা'। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।

১২

আরাফাত শান্ত's picture


Smile

১৩

শওকত মাসুম's picture


বাজিকে দেরী হলেও জন্মদিনের শুভেচ্ছা। কেক্কুক খাইতে চাই

১৪

আরাফাত শান্ত's picture


বাসায় যেয়ে খেয়ে আসেন!

১৫

তানবীরা's picture


Party Party Party Love

১৬

আরাফাত শান্ত's picture


আর ভুলুম না ডেইট! Steve

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

আরাফাত শান্ত's picture

নিজের সম্পর্কে

দুই কলমের বিদ্যা লইয়া শরীরে আমার গরম নাই!