জার্নি ফ্রম হেভেন
এই পোষ্টটা আমার একটা লাইভ ব্লগিং টাইপের পোষ্ট। অনেকদিন লেখি না। মন করে লেখার জন্য আকুপাকু! কিন্তু গোলাম হোসেনের উপায় ছিল না, তাই আমারও নাই লেখার পথ। বাসে সবাই ক্লান্ত ঘুমোচ্ছে তখন লিখছি আমি এই অন্ধকারে বসে বসে। জানি না লেখা শেষ করতে পারবো কিনা! কারন আগের চেয়ে বেশি হ্যাং ওরফে তব্ধা খায় সেট। ঢাকায় গিয়ে এর চিকিত্সা করা ছাড়া পথ নাই। আর এন্ড্রয়েডে কি লিখবো? এই মায়াবী টায়াবি দিয়ে? যদিও সব বন্ধুরই এখন বাসায় নেট আছে তাও সেখানে বসে লিখতে ভালো লাগে না। কারন দেখলেই বলবে আইছে ইমরান এইচ সরকার, ঢাকা থেকে চিটাগাংয়ে ব্লগিং করতে! তাই বন্ধুদের অনুনয় বিনয় সত্তেও তাদের পিসিতে বসি নাই। আমার জন্য মোবাইলই যথেষ্ট। বেহুদা অন্যের প্রাইভেসী নষ্ট করে লাভ নাই!
বাস চলছে দুর্বার গতিতে। লীনাপুর শহর ফেনীর উপর দিয়ে। আর হানিফ তো হানিফই। খালি টানছে এই বৃষ্টি ভেতরেই। যদিও ভয়ে ছিলাম মুষলধারে হবে কিনা! আল্লাহ বাচাইছে বৃষ্টির মাত্রা হালকা! আমার সিট টা মারাত্মক। ঠিক চাকার উপরেই, পাশে কেউ নাই। এরকম রাজ কপাল কয়জনের থাকে? তবে আমার পাশের সারির ছেলেটা ভাবের। হেডফোন কানে লাগিয়ে মোবাইলে সিনেমা দেখে। সিনেমার নাম মনে হয় এ গুড ডে টু ডাইহার্ড। ভালোই ডিজিটাল বাংলাদেশ। সেই ছেলে বাদে আশে পাশে যত লোক সব সিট নামিয়ে ঘুমোচ্ছে। উঠার সময় অনেক নিউ জেনারেশনের ছেলেপেলে দেখলাম। সব ইয়াংস্টারই দেখি এখন ঘুমায়। আর আমার মতো এক আবুল বসে বসে বসে কানে কবীর সুমনের গান শুনতে শুনতে মোবাইলে লিখে যায় অযথাই! প্রতিবার যা হয় এবারও তাই হলো। সাত সাতটা দিন থাকলাম কত শত সময় আড্ডা দিলাম তাও চট্টগ্রামে থাকার খায়েশ মেটে না। মনে চায় আরও এক মাস থাকি। কিন্তু চাইলেই আর থাকা যায়! আর কত দিন. ভার্সিটির ক্লাস দুটো মিস গেল এই সফরের কারনে। একটা চাকরীতে জয়েন করার কথা তাও পিছিয়ে দিলাম এত দিন থেকে। তাই এই দুর্যোগপুর্ন আবহাওয়ায় রওনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই হলো। একদিন হরতাল ছিল আর তারপরের দিন এত রিকোয়েষ্ট করলো থেকে গেলাম। আজকেও সারাদিন এত অনুরোধ শুনলাম থেকে যাবার জন্য তাও বুকে পাথর বেধে না না করেই গেলাম। যদিও আগে দু তিনবার অনুরোধ করলেই আমি থেকে যেতাম কিন্তু এবার আর লম্বা করলাম না, যথেষ্ট হইছে। এরপরের উইকেই আবার আসছি এক ক্লোজ বড় ভাইয়ের বিয়েতে! এবারও গিয়েছিলাম বিয়ের উসিলাতেই। এক বন্ধু বিয়ে করলো। খুব খুশী সে। এই জীবনে কোনো ছেলেকে বিয়ে করে এত খুশী হতে দেখি নাই। আমার ঢাকা থেকে আগমনে সে আরও খুশি। গার্মেন্টসের কমার্শিয়াল অফিসার সে। বিয়ের ছুটি মাত্র তিনদিন। এই তিনদিন ছুটির গল্প শুনে খুব আমার মন খারাপ হলো। বেচারা একটা আয়েশে বিয়া করবে তারও সময় নাই, বেকুবের মত এক দেড় দিনের জন্য কক্সবাজার থেকে ঘুরে আসো হানিমুনের নামেঅ। কী যন্ত্রনা। আর আমাদের এই চিটাগাংয়ে এখন দুই শ্রেনীর বন্ধুরাই আছে। হয় ইপিজেডের অফিসার নয় নেভী অফিসার যেকোনো একটা। ছাত্র বলতে শুধু এক দুই জন, এমবিএ করছে বলেই আমার মত বেকার বেকার ভাব। তবে তাও লোকের অভাব হয় নি আড্ডা মারার, সময় কাটানোর ঘূরাফেরার জন্য।
এই শেষ বেলাতেও আসার সময় লম্বা এক দফা আড্ডা দিলাম। আমার বাস ছাড়ার কথা ছিল সাড়ে এগারোটায়। বাসার পাশে থেকেই উঠবো। দশটাতেই রেডি হয়ে বসে আছি। আমাকে বিদায় দিতে চারজন ছিল। কাউন্টারের পাশের হোটেলে বসেই বয়ান শুরু করলাম। কোন ভালো আলোচনা না যত নিত্তনৈমিত্তিক আলাপ তর্ক আছে তা নিয়েই। সাত দিন বেশি আলাপ শাহবাগ নিয়েই হলো। আমাকে শাহবাগ নিয়ে আক্রমন করে আমি সাধ্যমত চেষ্টা করি জবাবের। জবাব দিতে যেয়ে অলরেডি আওয়ামীলীগের দালাল উপাধি পাইছি। শালার সারা জীবন ফেসবুকে এত সরকার বিরোধী স্ট্যাটাস দিয়ে এখন আমাদের এই দশা। আর পতেংগাতে এত শিবিরের প্রভাব একটু উচ্চস্বরে কিছু বললেই লোকজন কিভাবে যেন তাকায়! তবে আশার কথা হল বন্ধুরা কেউ হেফাজতি না, বিএনপি মনস্ক। তবে তাদেরকে কিছু বললেই হেফাজত নিয়ে, নাস্তিক ব্লগার ট্যাগ খেতে হয়। আমি ওদের চেয়ে বেশি নামায কালাম পড়ি ছোটবেলা থেকেই তাও! কী আর করার। যাই হোক রাত বাড়ছে। কুমিল্লা পার হচ্ছে। হোটেলে থামবে একটু পরেই। আজ এতটুকুই থাক!
শুভ সকাল।
ওয়েলকাম ব্যাক,
আপনেরে ব্লগে দেখলেই ভালো লাগে।
এরকম এক সপ্তাহের কোন তুলনা হয় না আসলে।
টাচ সেটে টাইপের মত পেইন কম আছে!
তোমারেও ব্লগে কম কম দেখি কেন?
তোমার মুখে প্রশংসা শুনতে ভালো লাগে। ভালো থাকো। আরো নিয়মিত ব্লগে থাকো!
শরীর মন ভালো যাইতাছে না ভাই, তাই!
এক সপ্তাহ পর আবার বিয়া খাইতে যাইবেন কেম্নে?
ঈদে বাড়ি যাইবেন না?!
শরীর খারাপ মানা গেল! মন কেন খারাপ?
চিটাগাংয়ে যাবো দুইদিনের জন্য, সেখান থেকে বাড়ী। ভাইয়ার খুব কাছের বন্ধুর বিয়ের দাওয়াত যেতে হবেই
শরীর মন ভাই ভাই,
তাই কিছু করার নাই!
বিয়ে করে এত খুশি হবার আর একটা কারন বোধ হয় তিন দিনের ছুটি। আহা বেচারা । বন্ধুরা যাই সাপোর্ট করুক নাস্তিক বলাতেই বুঝা যায় তাদের মানসিক অবস্থান হেফাজত ঘিরেই, ভাল থাকুন।
আপনার কথাই হয়তো ঠিক। বাই দ্যা ওয়ে আপনি আমারে আপনি করে বলেন কেন?
আচ্ছা শান্ত প্লিজ বলুন মোবাইলে কিভাবে খন্ডতত আর চন্দ্রবিন্দু লিখব।
বলে দিছি!
আর কিছুতেই অবাক হইনা। মতামত নিজের পছন্দ না হলেই একটা খেতাব দিয়ে দেয় মানুষ। এত হিপোক্রেট হয়ে গেসে আমাদের দেশের মানুষ চিন্তাই করা যায়না। এটা হচ্ছে সেই "অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করি" টাইপ কথা বার্তা। সবার নিজস্ব পছন্দ অপছন্দ থাক্তেই পারে। কারো উপর কিছু জোর করে চাপানো যায়নাতো, তাইনা?
কি আর করা এর নামই আমজনতা খালি সবাইরে ট্যাগ করে বেড়ায়!
শুভ সকাল।
ওয়েলকাম ব্যাক,
আপনেরে ব্লগে দেখলেই ভালো লাগে।
সেইম টু ইউ!
মন্তব্য করুন