চলে যায় ভালো সময়গুলো!
গত তিন দিন জীবনে এক ব্যাতিক্রমী এক্সপিরিয়েন্সের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে। না চাইতেই এত বড় সাফল্য আমার জীবনে আর আসে নি। সাফল্য পেতে উন্মুখ হয়েও ছিলাম না। তাও এসে গেল, হঠাৎ করেই। হুট করে আসা এই সাফল্যে কিছুটা লজ্জিত ও কুন্ঠিত অবস্থাতেই কাটছে দিন। তেমন হাতি ঘোড়া কিছু উদ্ধার করি নাই, সামান্য বিসিএসে রিটেন আর ভাইবা শেষে সাময়িক ভাবে সুপারিশ পাওয়া প্রশাসনের তালিকায় স্থান পেয়েছি। যদিও নিয়োগ এখনও দিল্লি বহুদুর তাতেও আমি এই সাফল্যে নিজেই আনন্দে আটখানা। আর যাদের নিয়ে আমার জগত তারা আনন্দে ৮*৮*২= ১৩২ খানা!
নিতান্তই ভাগ্যের উদার বদান্যতায় আমার এই সাফল্য সহজ ভাবে বললে আল্লাহর অশেষ রহমত। কারন আমি সামান্য পরিশ্রমও করি নি। অংশগ্রহন করতে পারাটাকেই বড় ব্যাপার মনে করে কাজ গুলো খালি সম্পন্ন করেছি। তাতেই এই সাফল্যে আমি খুবই হতচকিত ছিলাম। যখন রেজাল্ট দেখছিলাম তখন পাশ করা কিন্তু নিয়োগ না পাওয়া রোলের ভেতরে নিজের নাম না দেখে সাময়িক বিরক্ত লাগছিলো। পরে দেখি আমার স্থান তার চেয়েও শতগুন উত্তম জায়গায় । মুহুর্তের ভেতরে মনে হলো এই দুনিয়া এখন আমার আন্ডারে, বারাক ওবামার চেয়েও পাওয়ারফুল লোক আমি। সবাইকে জানালাম কম আর বেশী। ফেসবুকে স্ট্যাটাসে মুর্হুমুর্হু লাইক কমেন্ট, আহা কি অসাধারণ একটা দিন। আমার আম্মু আব্বু যে আনন্দিত তা না দেখে আমি মোবাইলে কথা বলেই সুখের শিহরন টের পাই। আমার খুবই ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে যখন জানাচ্ছিলাম তখন সে এত বার মাশাল্লাহ বললো তাতে আবেগে নিজেই ভাসছিলাম। আর বাল্য- কলেজ- ইউনির বন্ধুরা তো সব প্রেডিকশন মিলে গেছে তাদের এই খুশীতে উচ্ছসিত। ভাইয়া ভাবীর কথা কি বলবো! উনারা তো শব্দ হারিয়ে ফেলেছে আমার এই সামান্য অর্জনে। সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব সময় জীবনে আসলো! হিন্দীতে একটা কথা তো আছে 'কুকুরেও মাঝে মধ্যে দিন আসে' আমারও মনে হয় সেরকম এক দিন এসে পড়লো। মোবাইলে নানা মানুষের নানা অভিনন্দন বার্তা, ভুলে যাওয়া অসংখ্য প্রিয়ভাজনেষু মানুষের সাথে আলাপ, সব মিলিয়ে এক ইউনিক ব্যাপার!
নান্নুর চায়ের দোকান তো নাই, মানুষ গুলো আছে তাদের মনে যে উচ্ছাস। আমার গল্প দেখি পুরো মোহাম্মদপুর ছড়িয়ে গেছে। কিছু ব্যাংকার ভাই আছে আমার খবরে তারা অবাক, কেমনি সম্ভব তা মেলাতে ব্যাস্ত। কারন সারাদিন তো দেখে চায়ের দোকানেই বসে থাকি! আমার যারা আড্ডার মেট তারা সব আমার মেধার প্রশংসায় পঞ্চমুখ, বন্ধু এহতেশাম তো এক কাঠি সরেস সে তার যত বন্ধু আছে সবাইকে জানাচ্ছে আমার কথা। আমি খাওয়াবো উলটো হামজায় নিয়ে গিয়ে আমাকেই খাওয়ালো খুশীতে। তারপর গত দুই দিন চলে গেল, দিন যাচ্ছে সেই খবরে রেশেরেশেই। যেখানেই যাই সেখানেই এই আলাপ, বিরক্ত হই আবার মজাও লাগে। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি কি এমন দিন চেয়ে ছিলাম?
জানি না কতদুর কি হবে, জানি না করতে পারবো নাকি সরকারী চাকরী, জানি না কবে চুড়ান্ত নিয়োগ পাবো কি না তবে এতো দূর আসছি তাতেই আমি খুশী। এখন হলে ভালো না হলেও কিচ্ছু করার নাই। পলিটিক্যাল ডামাডোলে কত কিছিমের খেলা চলে পিএসসিতে, তাও নিজের এই হুট করে পাওয়া প্রাপ্তিতে খুবই আনন্দ লাগছে আর তার চেয়েও বেশী ভালো লাগছে আমার সামান্য ভালো খবরে সবার মনে কি উচ্ছাস। এত ভালোবাসা অনেক মানুষ বাপের জন্মেও পায় না, আমি পেয়ে গেছি না চাইতেই! ধন্যবাদ সবাইকে। থ্যাঙ্কস আমার এই ব্লগের ও অনলাইনে বন্ধুদের। চাকরী যদি পেয়ে যাই এই বিসিএসেই তবুও শত ব্যাস্ততাতেও ব্লগ লেখা ভুলবো না। কারন নিজেকে নিয়ে লেখার ও অন্যকে নিয়ে ভাবার দারুণ এক স্পেস আমার এই ব্লগটায়!
আরেব্বাহ! খুব ভালো একটা নিউজ। সকাল সকাল মনটাই ভালো হয়ে গেলো। শুভকামনা ব্রাদার, লক্ষ কোটি শুভকামনা। জীবনে অনেক বড় হবেন আপনে
এখনি না... তবে জয়েনিংয়ের পর একটা পার্টি অবশ্যই হোক
অভিনন্দন আবারো
শান্তর জন্য শুভকামনা, শুভেচ্ছা সবসময়। অভিনন্দন ভাইয়া। অনেক বড় হও।
বইমলোর সময় ঢাকায় থাইকো।
আর ব্লগ কিন্তু লিখো সবসময়।
আবার ও অভিনন্দন এবং অনেক শুভকামনা।

এটা আসলেই বিশাল খুশির খবর। আনন্দের খবর।
আমরাও খুশি।দোয়া করি আমাদের ছোটভাইগুলো যেন সুস্থ থাকে,ভাল থাকে ।
এ তো বিশাল সু সংবাদ। অভিনন্দন তোমাকে। অনেক অনেক ভাল থাকো ভাইয়া..
অভিনন্দন আবারো
অভিনন্দন
অনেক সুযোগ এসে যাবে দেশকে কিছু দেবার। যদি ভালবাস দেশকে যদি নিজেকে হত্যা না কর তবে দেখবে এর চেয়ে বড় সুযোগ আর নেই। এই দেশ এমন প্রজন্মই চায়। দেখবে কত কাজ রয়েছে করবার। আশা করি গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাবে না অথবা ভাববে না অন্যেরা করে নাই আমি কেন করব? কেউ না কেউ করে সবাই করে না। তোমার সৌভাগ্য তুমি সুযোগ পেয়েছ। উইস উ গুড লাক।
মন্তব্য করুন