ফিরোজ শাহরিয়ার'এর ব্লগ
জীবনের পথে প্রান্তরে
অনেক দিন পরে এলাম। সবাই ভাল আছেন নিশ্চয়। সময় সুযোগ অনেক বেশী থাকা সত্বেও নেট ঘাটা ঘাটিতে বসতে মন চাইতো না। বই মেলাই প্রায় দিনেই যাওয়া পড়ে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তেমন কোন বই কেনা হয়নি। লিটিল ম্যাগ চত্বরে গিয়ে মুরালটা দেখলাম গত পরশু। ভাবছি আজ অথবা কাল কিনে ফেলবো। কি লিখবো ভেবে পাচ্ছিনা। ও দাড়ান, সবাইকে একটা কবিতা শোনাই-
জীবন উল্লাসে মাতি নবযৌবনে,
অতুষ্ট থাকে মন অচেতন্যে।
যৌবনে জয়গান গেয়ে উঠে চিত্ত্ব,
অজীর্ন অজুহাত দুর হয় নিত্য।
মনের ময়ূর তখন পেখম মেলে,
বর্ষার আগমনের প্রহর গোনে।
অতৃপ্ত হ্রদয়ের বাসনা যত,
হতে চাই অচিরে অঙ্কুরিত।
আবেগের আবডালে উঠে আসে মন,
শোনেনা সদায় সে নিষেধ বারণ।
দূর থেকে বহুদুরে চেনা অবেশে,
পথ যেন খুজে ফেরে পথের শেষে।
প্রজাপতির রঙিন পাঁখায় রংধনুর ছাঁয়া,
যেন সে খুজে ফেরে কোন এক মাঁয়া।
মায়াবী সে মাঁয়ায় জড়াতে জীবন,
আবেগী হয়ে উঠে উতলা যৌবন।
আজও হেঁটে যাই সবুজের পথ ধরে, লাল সূর্য্যের দিকে।
পূর্বাচলে আজ উদিত যে-সূর্য, প্রতিদিনের হয়েও সে প্রতিদিনের নয়; তার রক্তিমতায় ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আমাদের মনে পড়বে; আকাশ যে-কোমলতায় আজ উদ্ভাসিত, একাত্তরের সম্ভ্রমহারা ১০ লাখ মা-বোন-জায়ার ক্রন্দন ধোয়া সে-উদ্ভাস; ভোরের যে-রাঙা আলোটি আজ স্পর্শ করেছে ভূমি, স্বদেশের সেই পবিত্র ভূমি ভিজে আছে বঙ্গবন্ধুর রক্তে, আর সেই রক্তস্রোতে মিশে আছে জাতীয় ৪ নেতা তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান ও মনসুর আলীর উষ্ণ শোণিত। দেন দরবার নয়, কারও দয়ার দানে নয়, সাগর-সমান রক্তের দামে বাংলাদেশ অর্জন করেছে স্বাধীনতা, রক্ত-সাগর পেরিয়ে বাঙালি জাতি পৌঁছেছে তার বিজয়ের সোনালি তোরণে।
স্টিভেন পল জবস- জীবন জুড়ে তিনি।
স্টিভ জবসের জন্ম ১৯৫৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিস্কো শহরে। পুরো নাম স্টিভেন পল জবস। বাবা-মা ছিলেন অবিবাহিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জুটি। এর মধ্যে মা জনা চিবলে আমেরিকান ও বাবা আবদুল ফাত্তাহ জান্দালি ছিলেন সিরিয়ান বংশোদ্ভূত।
চিঠি
মৌরী,
সোন্ধ্যার মায়াময় হাতছানি যখন আমাকে ছুঁয়ে যেতে পারেনা, তখন ভাবি এ গোধুলী বেলাটা বুঝি আমার জন্য নয়। বিকেলের সোনাঝরা রোদ গুলো যখন উঁকি দিয়ে আমাকে বলে কাছে আসতে, আমি যেন আমার শরীরের প্রতিটি ভাজে তখনো রোদের তীব্রতা অনুভব করি। অথচ তুমি দেখ, এই সে দিনের কথা যখন চৈত্রের প্রখরতা গুলোও আমার কাছে মনে হত বৃষ্টির ফোঁটার মত। এখন রোদ ভিষণ ভাবে পোড়ায় আমাকে। তাই আর বাইরে যায়না সেই দিনের মত করে। ছয় তলার এই ঘরের পূর্ব দিকেই আমার বাস। তুমি হয়তো সেটা জানতেও। কিন্তু জানালাটা খুলে দেখা হয়না অনেক দিন। ধুলো আর মরিচীকাই ভরেগেছে সব।
এভাবে চলে যেতে দিতে নেই!
প্রতিটি বস্তু কিংবা প্রাণী যায় বলি না কেন, সব কিছুতেই একটা ভাল আর মন্দ দিক আছে। কখনো কথনো এই মন্দ দিক গুলো আমরা একান্ত ভাবে কাছে ডেকে নিয়ে আসি। এর প্রভাবে ভেসে যায় আনন্দ, ক্লান্ত হয় সুখ। প্রায় প্রতিটা পরীক্ষার রেজাল্টগুলো প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর জীবনে যেন এক একটা অধ্যায় বয়ে নিয়ে আসে। এই অধ্যায়ের সমাপ্তিগুলো হয় খুব আনন্দের আর নয়তো বিষাদের। ২০১১ সালের এইচ,এস,সি পরীক্ষার রেজাল্টেও এই সকল বিষয়ের ব্যাতিক্রম কোন কিছু ঘটেনি। আনন্দে ভেসে গেছে সারা দেশ আবার কেঁদেছে অনেকেই। এবার সারা দেশে এইচ,এস,সি পরীক্ষার্থীর সংখ্যার তুলনাই সারাদেশে পাসের হার ছিল ৭৫.০৮। যা গত বছরের তুলনাই ০.৫৪ হার বেশী। এ বছরই রেকর্ড সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়ে সারা দেশকে আনন্দের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছে আরো একবার। ফলাফল প্রকাশের পর আনন্দে উল্লাসে মেতেছে সবাই। বাবা, মার বুকটা যেমন বড় হয়েছে তেমনি কলেজগুলোও। এই গৌরব যেমন একদিকে বাড়তি
চেনা সুখের অচেনা দুঃখ !
আজকাল প্রায় সময়ই নিজেকে খুব শূন্য শূন্য মনে হয়। কেমন যেন দুঃখ দুঃখ ভাব। সামান্য সামান্য দাড়িতে নিজেকে ওটার সঙ্গী করতে বেশ ভালোই লাগে। একটা কিচ্ছু যদি ভালো লাগে! নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করার চরম পরীক্ষাগুলো দিতে মজায় লাগে। যদি জয়ী হওয়া যায় তাহলে খুব সুখী মনে হয়। তবে আমার নিজের কষ্ট বলে যেমন কিছু নেই, তেমনি সুখ বলেও কিছু নেই। যা আছে তার সবটুকুই যেন ধূসর মরিচীকা মাত্র।
খুব ছোটবেলা থেকেই কেমন যেন নিজের কষ্টগুলোকে কষ্ট বলে মনে হতোনা। আবার অন্যের কষ্টগুলোকে মানতে পারতাম না। নিয়তি আর বাস্তবতার কাছে বেশ ভালো ভাবেই হেরে যেতাম আমি। বুঝতে দিতাম না কাওকেই, চোঁখ বুজে মেনে নিতাম সব কিছুকে। একা চলার ক্ষমতা যেমন আমার ছিলনা, তেমনি একা চলতেও আমাকে বাধা দেয়নি কেও কথনো। যতটুকু শিখেছি পরিবার কেন্দ্রিক তার সবটুকুই যেন সোনা। তারপরেও কেন জানি আমার ভিতর লক্ষ্য করার মত কোন কিছু নাই।
একটি আংটি এবং ভালবাসা!
হঠাত্ করেই লোডশেডিং। গতবছর গরমের চাইতে এবার ঢাকা শহরে লোডশেডিং এর প্রবনতা বেশ কোম। কিন্তু লোডশেডিং এর এই দেশে লোডশেডিং ছাড়াও যেন কেমন, কেমন লাগে! তারপরও প্রায় ঘন্টা দুয়েক হবে বিদুত্ গেছে। বেশ অনেকদিন পরে লোডশেডিং বলেই কি আসার আর নামই নাই? পরে শুনতে পেলাম ট্রান্সফরমার নষ্ট হওয়াতে এই দশা! রাত সাড়ে এগারোটা মত ঘড়িতে। কিছুক্ষণ আগে ঝুম করে একটা বৃষ্টি হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হলেও প্রকৃতি কিন্তু এখন বেশ চুপচাপ। হঠাত্ করেই ছাদে যেতে ইচ্ছে হলো, প্রকৃতির এই চুপচাপ মায়াজালটা দেখার জন্য আর হাজার বার না পারা একটি কাজ সম্পূর্ন করার জন্য।
আমার বৃষ্টিগুলো...
মাঝে মাঝে জীবনটাকে নিয়ে আর চলার ইচ্ছাটুকু অবশিষ্ট থাকেনা। আবার ভাবি এভাবেই হয়তো বেঁচে থাকতে হয়। মনের অজান্তে ভেসে ওঠা এত্তো এত্তো কথাগুলো নাগরিক জীবনের সাথে এতটুকু মিল এনে দিতে পারেনা। যেন মনে হয় দু পাশের দু দিক। আঁকাবাকা পথে, সোজা পথের খোজ আর ক্লান্ত পথিকের ঘামে ভেজা শরীর। মায়া আর স্বপ্ন ভরা জীবনের বাকিটা পথও হয়তো এভাবেই কেটে যাবে, আর নয়তো কিছু একটা অন্যরকম ঘটবে!
আজ থেকে বেশ কিছুবছর আগে, যখন বৃষ্টিগুলো আসতো সুখের ভেলা নিয়ে। জানালার পাশে বসে দুরে কুয়াশার মত বৃষ্টি দেখতাম। চলে আসতো আমার কাছে। ময়াবনের মায়াজাল নিয়ে, সে এসে কানে কানে বলে যেত ভালবাসার কথা। হ্রদয়কে ভিজিয়ে দিত, গান শুনাতো আর প্রতিটি ফোটা শব্দে যেন ভেসে যেতাম তারি ভেলায়। মেঘেদের দেশে এসে, ভালবেসে, অবশেষে ফিরতাম বাড়ী। যেন-
"এমন দিনে তারে বলা যায়
এমন ঘনঘোর বরিষায়
এমন মেঘস্বরে বাদল-ঝরঝরে
তপনহীন ঘন তমসায়"
আমরা লজ্জা পাই !!!
'কক্ষে ঢুকেই পিছন থেকে হামলা চালায় ও। চুলের মুঠি ধরে দুই চোখে আঙুল ঢুকিয়ে দেয়। কামড়ে নাক-মুখ ক্ষত-বিক্ষত করে। রক্তে পুরো শরীর ভরে যায়। এক পর্যায়ে মেঝেতে পিছলে পড়ি নিজের রক্তের উপর।' কথাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক 'রুমানা মনজুরে'র। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের একজন শিক্ষিকার যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সমগ্র দেশের চিত্রটা আসলে কি?
ভাবতে অবাক লাগে আমরা এত সুন্দর সভ্য সমাজের মানুষ! যে সভ্য সমাজে একবিংশ শতাব্দিতে এসেও আমাদেরকে মৌলিক শিক্ষাগুলো গলধঃকরণ করতে হয়। সারাদিন রাত ভেবে ভেবে অনেক বড় মাপের মানুষ হয়েও ভুলে যায় আমাদের নৈতিকতাকে। বা, কি চমত্কার! যেন সিংহের মত আমি পুরুষ, নারীদের চোঁখ উপড়ে নিতে পারি। এটাই মনে আসল নৈতিকতা!
ভালবাসার অন্য পাশে
জীবনটা প্রতিনিয়তই বদলে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে তো বেশ খানিকটা পথ চলে এসেছি। বদলে যাওয়া এ জীবনের অর্থ খুজে দেখেছি অনেকবার, কিছুই পাইনি আমি। ভালবাসার খুব নিকট দিয়ে চলে গেছি শুধু ছুঁয়ে দেখতে পারিনি। শুনেছি মানুষের মাঝেই নাকি মানুষের বাস, এক পলক চোঁখ বন্ধ করলেই তাকে খুজে পাওয়া যায়। কতবার চেষ্টা করেছি, কিছুই খুঁজে পাইনি। জীবনের মাঝখানে থেকেও জানতে না পারার অপূর্ণতা আমাকে কুরে কুরে খাই। ভালবাসতে না পারার ব্যর্থ চেষ্টাগুলো বার বার আমার চোঁখে ধরা দেয়। ভাষাহীন মুখ আর গুমরে কেঁদে যাওয়া মুহূর্তগুলো এসে ধরা দেয় প্রতিনিয়ত।
আর এক বসন্তের খোঁজে
ছোটবেলায় ঘাঁসফুলগুলোর দিকে যখন চেয়ে থাকতাম ওরা আমাকে দেখে প্রচন্ড হিংসা করতো। প্রচন্ড ক্ষোভে সবগুলোকে ছিড়ে ফেলে কান্না শুরু করতাম। আম্মু এসে বলতো কিরে, কাঁদছিস কেন? শুনে হেসে উড়িয়ে দিয়ে আবার ফুঁলগাছগুলো লাগিয়ে দিতো। এখন আর ঘাসফুলগুলোকে দেখা হয়না সেভাবে, সেই কথাগুলোই শুধু মনে পড়ে। আসলে জন্ম-জন্মান্তরের সংস্পর্শে ক্রমে আগত সৌহ্রদ্যের বাসনা গুলো কখনো ভোলা যায়না। এটাই মনে হয় দুঃখের রহস্য।
এই রহস্যঘেরা পৃথিবীতে এসে বার বার নিজেকে পৃথিবীর বুকে শপে দিতে মন চাই। হয়ে উঠেনা। বার বার খুব আপন করে কাছে ডাকলেও দুর হতে হাতছানি দিয়ে শুধু ফিরিয়েই দেয়। মানুষের আর্বিভাব পৃথিবীতে হলেও সে পৃথিবীর অনাত্নীয়ই থেকে যায় হয়তো। প্রকৃতির রুপ বৈচিত্র্য ও নানা রস রহস্যের মাঝখান থেকে যখন নৈসর্গিক মায়াজালের স্পর্শ খুজতে যায়, পৃথিবী আমাকে আশ্রয় না দিয়ে অনেক দূরে ঠেলে দেয়।