হলমার্ক কেলেঙ্কারী ও একটি পরিবারের আনন্দ-বেদনার গল্প
আমার আব্বা আনোয়ার উল্লাহ সিরাজী ছিলেন একজন গরিব মানুষ।
নোয়াখালীর চরে তার কয়েক একর জমি ছিল। কিন্তু জমি নিয়ে ঝামেলা ছিল প্রচুর। প্রায়ই মাইজদী ছুটতে হতো তাকে। শেষে জমিটমি রেখে চলে আসেন বাড়ি। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার দিকে নজর দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু কোনো চাকরি নেই। ভিটেমাটিটুকু ছাড়া আর কোনো জায়গা-জমিও নেই। দশ ছেলেমেয়ে নিয়ে মহাসমুদ্রে পড়ে যান তিনি। নিজে খাবি খেয়েও ছেলেমেয়েদের আগলে তুলে রাখেন। পরে প্রাইমারি স্কুলে একটা চাকরি পান। কিন্তু তাতে কি আর চলে? দারিদ্র্যের সঙ্গে এক অসম যুদ্ধ শুরু হয় তার।...
আমি কেন আমাদের পরিবারের গল্প বলছি? আপনারা শুনবেনই বা কেন? না, আপনাদের শুনতে হবে। প্রতিদিন তো শুধু দুর্নীতি আর কেলেঙ্কারীর কাহিনি শোনেন। আজ শুনুন একটা অন্যরকম গল্প!
আনোয়ার উল্লাহ সিরাজীর সন্তানরা বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত (আমি ছাড়া)। তার চতুর্থ সন্তান আ ন ম মাসরুরুল হুদা সিরাজী সোনালী ব্যাংকের জিএম। গত ১ জানুয়ারি রংপুর থেকে বদলি হয়ে যোগ দেন প্রধান কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বিভাগের জিএম হিসেবে। যোগ দিয়েই সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখাসহ তিনটি শাখার অনিয়মের কিছু তথ্য পান তিনি। এবং এই শাখাগুলো পরিদর্শনের উদ্যোগ নেন। এটাই কাল হলো তার জন্য। মাঝখানে অনেক নাটক শেষে রূপসী বাংলা শাখা পরিদর্শনের আগে আগে তাকে একদিনের নোটিশে বদলি করে দেওয়া হয় একসঙ্গে কুমিল্লা ও সিলেটে। তারপর রংপুরে।
এ ঘটনাগুলো যখন ঘটছিল, নানা আশঙ্কার সঙ্গে তিনি এ কথাও আমাদের বলতেন--তার জীবন আজ হুমকির মুখে। এসব শুনে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারণ আমরা নির্বিবাদ থাকতে ভালোবাসি। আমাদের পরিবারের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। কারও সাথে সম্পত্তির দ্বন্দ্ব নেই। তাই হুমকি বিষয়টা আমাদের কাছে নতুন। আমরা রাগও করেছিলাম তার ওপর--কেন স্রোতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে গেলেন? উল্টো তিনি আমাদের বুঝিয়েছেন। আব্বার জীবন থেকে শিক্ষা নিতে বলেছেন। এবং তিনি আমাদের এটা বিশ্বাস করতে বলেছেন--সততার জয় একদিন হবেই।
আজ আমরা কত কঠিনভাবে বুঝতে পারছি, মাসরুরুল হুদা সিরাজী যদি এই ভুমিকাটা পালন না করতেন, কত ক্ষতি হয়ে যেত আমাদের। আমাদের পরিবারটা আক্ষরিক অর্থেই ডুবে যেত একেবারে।
তবু একটা হতাশা আমাদের ছিল। গণমাধ্যম শুধু কেলেঙ্কারীর নায়কদের নিয়ে মেতে আছে। সোনালী ব্যাংকের যে দুয়েকজন কর্মকর্তা সত্যিকারের নায়কের ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের নিয়ে কারও কোনো আগ্রহ নেই কেন?
অবশেষে আমাদের হতাশা কাটল। আজ ৫ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর প্রথম পাতায় শওকত হোসেন মাসুম ভাইয়ের অনুসন্ধানী রিপোর্টে জিএম মাসরুরুল হুদা সিরাজীসহ দুয়েকজন কর্মকর্তার কীর্তি প্রকাশিত হয়েছে। আজ ৫ সেপ্টেম্বর আমাদের পরিবারে আনন্দের বন্যা বইছে। এই আনন্দের মূল্য সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার চেয়ে অনেক বেশি।
আমাদের পুরো পরিবারের পক্ষ থেকে আমি শওকত হোসেন মাসুম ভাই ও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানাই। মাসুম ভাইকে সকালে ফোন করে আমার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। সে জন্য মাসুম ভাই নিশ্চয়ই আমাকে ক্ষমা করবেন।
ধন্যবাদ জানাই ডেইলি স্টারকে, ৭১ টিভিকে--এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রচার করার জন্য। ধন্যবাদ আরিফ জেবতিককে। ফেসবুকে মর্মস্পর্শী একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
স্যালুট মাসরুরুল হুদা সিরাজীকে। আরিফ ভাইর সাথে একমত । এমন কিছু লোক এখনো এদেশে আছে বলে বঙ্গোপসাগর এখনো দেশটাকে ডুবিয়ে দেয়নি।
ধন্যবাদ আপনাদের পরিবারের এই অসাধারণ কাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আমরাও সৎ পথে থাকার জন্য পেলাম প্রেরণা অফুরান।
ফেসবুকে শেয়ার দিলাম.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।।।
শ্রদ্ধা!
কী বলবো সিরাজী, কিছু কি বলার আছে.....
মাসরুরুল হুদা সিরাজীকে স্যালুট। যা দিনকাল...আল্লাহ আপনাদের পরিবারকে দেখে রাখুন।
কলমে আর মুখে সরব থাকার জন্য মাসুম ভাইকে ধন্যবাদ।
এইসব দেখে গতকালকে সরকারদলীয় বর্ষীয়ান সাংবাদিক এবিএম মুসা নতুন একটা শব্দ ব্যবহার করলেন "অর্থনৈতিক রাজাকার"!
পরিশেষে, ধন্যবাদ ঘটনাটি আমাদের জানানোর জন্য।
~
হ্যাটস অফ টু মাসরুরুল হুদা সিরাজী।
ওনাদের মতো আজও কিছু মানুষ আছে বলেই এখনো শত হতাশার মাঝে বাংলাদেশ টিকে আছে... স্যালুট.. আমি নিজেই আবেগাক্রান্ত হয়ে গেলাম..সুযোগ পেলে ভাইয়ার সাথে একদিন দেখা করতে চাই..
এমন একটা পরিবারের কারো সাথে পরিচয় আছে... এইটা ভাবতেই গর্ব হচ্ছে সিরাজী ভাই... মাসরুরুল হুদা সিরাজী ভাইকে আমার এবং আমদের পক্ষ থেকে থেকে স্যালুট জানাই।
সিরাজী ভাই - আজ আপনার পরিবারের জন্যে আমরা সবাই গর্বিত । সত্যই এমন একটা পরিবারের কারো সাথে পরিচয় আছে... এইটা ভাবতেই গর্ব হচ্ছে সিরাজী ভাই.। টুটুলের সাথে একমত ।
সামান্য সহায়তা করতে পেরেছি বলে আনন্দ হচ্ছে
সিরাজী পরিবারকে ধন্যবাদ।
এমন সিরাজীরা আছেন বলেই দেশ এখন বেঁচে আছে।
হাজার মাল, মোদাচ্ছের, আবুল, গুপ্ত হারালেও দেশের বিন্দু মাত্র ক্ষতি হবে না। কিন্তু এমন একটা সিরাজীর কিছু হলে দেশ আরে দেশ থাকবে না।
Totally agree with you.
অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় ব্যাংকই
হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা হঠাৎ করে উদ্ঘাটিত হয়নি। সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সবাই তা জানতেন। ব্যাংকই মূলত অর্থ আত্মসাতের সব ধরনের ব্যবস্থা করে দেয়।
হলমার্ককে প্রথম ঋণ দিয়েছিল পরিচালনা পর্ষদই। এই সুযোগ নিয়ে রূপসী বাংলা শাখা নিয়মিতভাবে হলমার্ক গ্রুপকে জালিয়াতি করতে সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট বেশির ভাগ কর্মকর্তা এই জালিয়াতির সুযোগ করে দেন। জালিয়াতির ঘটনা যাতে উদ্ঘাটিত না হয়, সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তা জালিয়াতির কথা জানতে পেরে তা উদ্ঘাটনের ব্যবস্থা নিলে তাঁদের বদলি করা হয় এক দিনের নোটিশে। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতাও ছিল। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক উপদেষ্টা, একজন প্রতিমন্ত্রীর নামও পাওয়া যাচ্ছে। পরিচালনা পর্ষদ এখন বলছে, তারা বিষয়টি জানত না। অথচ অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তত তিনজন পর্ষদ সদস্য এর সঙ্গে জড়িত আছেন। পর্ষদের নজরদারির অভাবে হলমার্ক গ্রুপকে সুবিধা দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। রূপসী বাংলা শাখা থেকে হলমার্কের পাশাপাশি ডিএন স্পোর্টস গ্রুপকে অনিয়ম করে ৬৫ কোটি টাকা দিয়েছে। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের সময় গ্রুপটির প্রতিনিধিরা স্বীকার করেছেন, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী বাহারুল ইসলাম তাঁদের আত্মীয় হন।
রূপসী বাংলা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এ কে এম আজিজুর রহমান এ ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেছেন। সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবীর এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক হলমার্ক গ্রুপকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে এসেছেন। সব মিলিয়ে ৩২ জনকে চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এখন।
প্রথম ঋণের অনুমোদন দেয় পর্ষদ: সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা (সাবেক শেরাটন হোটেল) ২০১১ সালের ২০ এপ্রিল সুতা ও সুতাজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য হলমার্ক স্পিনিং মিলস লিমিটেড প্রতিষ্ঠার জন্য পরিচালনা পর্ষদে একটি প্রস্তাব পাঠায়। পর্ষদ হলমার্ক স্পিনিং মিলের নামে ৬৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা ঋণের অনুমোদন দেয়। হলমার্ক গ্রুপের ঋণ নেওয়ার পালা এভাবেই শুরু।
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল প্রথম আলোতেই, গত ২৪ মে। তবে কীভাবে হলমার্কের মতো একটি অখ্যাত গ্রুপ এই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে, তা নিয়ে অনুসন্ধান করেছে প্রথম আলো। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে নতুন নতুন অনেক তথ্য।
দুই মাসের রহস্য: সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার ঋণ অনিয়মের বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে চলতি ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে। সে সময় আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বিভাগের (আইটিএফডি) মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ছিলেন আ ন ম মাসরুরুল হুদা সিরাজী। ১ জানুয়ারি এই পদে যোগ দিয়েই ডিসেম্বরের একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন থেকে তিনটি শাখার অনিয়মের কিছু তথ্য পান তিনি। এর মধ্যে স্থানীয় শাখার (লোকাল অফিস) অনিয়মের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা, রূপসী বাংলা শাখায় ৩৫০ কোটি টাকা এবং গুলশান শাখায় প্রায় ১২৫ কোটি টাকা।
এই তিন শাখা পরিদর্শনের জন্য অনুমতি চাওয়া হয় এমডির কাছে। এমডি হুমায়ুন কবীরের কাছে আইটিএফডির জিএম সিরাজী নিজেই নোটটি হাতে করে নিয়ে যান। তারিখটি ছিল ২৬ জানুয়ারি। এমডি অনুমোদন দেন। অথচ সেই পরিদর্শন কাজটি শুরু হলো ৪ এপ্রিল।
রূপসী বাংলা শাখার ওপর বিশেষ কার্যক্রম নিরীক্ষা (ফাংশনাল অডিট) পরিচালনা করে সাইফুল শামসুল আলম অ্যান্ড কোম্পানি। তারা বলেছে, কেন দুই মাস পর নিরীক্ষা শুরু হলো এর কোনো সদুত্তর তারা পায়নি। আর ওই দুই মাসে রূপসী বাংলা শাখা থেকে হলমার্ক গ্রুপ ও আরও পাঁচটি প্রতিষ্ঠান জালিয়াতি করে নিয়ে গেছে এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্যাংকটির এমডি হুমায়ুন কবীর আইটিএফডিকে নিরীক্ষা চালানোর অনুমোদন দিলেও এর সঙ্গে একটি মৌখিক নির্দেশ দেন। নির্দেশটি হলো, আগে স্থানীয় শাখা ও গুলশান শাখায় নিরীক্ষা করতে হবে। এই দুই শাখার নিরীক্ষা শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিয়ে তবেই যেতে হবে রূপসী বাংলা শাখায়। বিষয়টি নিয়ে সোনালী ব্যাংকের সাতজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে।
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, এরপর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিদর্শন শাখা থেকে নিরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরিদর্শন সেলের উপমহাব্যবস্থাপক তখন এস এইচ এস আবু জাফর। উদ্যোগ নেওয়া হয় গুলশান শাখা পরিদর্শনের। এবার বাধা দেন ডিএমডি মাইনুল হক। পরিদর্শন সেলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শওকত আলী এই পরিদর্শন দলের দলনেতা ছিলেন। মাইনুল হক তাঁকে গুলশান শাখায় পরিদর্শন না করার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের কথা শওকত আলী জানিয়ে দেন ডিজিএম আবু জাফরকে। এরপর জিএম সিরাজী এবং আবু জাফরসহ কয়েকজন কর্মকর্তা যান এমডির কাছে। সবার সামনেই এমডি ফোন করেন ডিএমডিকে।
বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, সে সময় এমডি ও ডিএমডির সঙ্গে খানিকটা উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। একপর্যায়ে এমডি হুমায়ুন কবীর বলে ওঠেন, ‘আপনি এমডির আদেশকে মানতে চান না।’ এরপর এমডির আদেশ বহাল থাকে।
তবে এই পরিদর্শনও নির্বিঘ্নে হয়নি। ডিএমডি মাইনুল হক পরিদর্শন দলের দুই সদস্যকে বিভিন্ন সময় ডেকে এনে অন্য কাজ দেন। এই ফাঁকে বাড়তে থাকে রূপসী বাংলা শাখার অনিয়ম। শাখাগুলোর দায়িত্বে থাকা মহাব্যবস্থাপক কার্যালয় বা জিএম অফিসের দায়িত্বে ছিলেন মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ননী গোপাল নাথ। আইটিএফডি থেকে পরীক্ষামূলক পরিদর্শন করার জন্য ১৪ মার্চ চিঠি দেওয়া হয় জিএম অফিসকে। আইটিএফডিকে এ সময় জানানো হয়, রূপসী বাংলা শাখায় অনিয়ম হচ্ছে। অভিজ্ঞ লোকবল দিয়ে প্রধান কার্যালয় থেকেই এর পরিদর্শন করা ঠিক হবে। তখন রূপসী বাংলা শাখায় অনিয়মের পরিমাণ ছিল ৫০০ কোটি টাকা।
অনিয়ম বাড়তে থাকায় আইটিএফডি আর নিরীক্ষা সেল থেকে রূপসী বাংলা শাখা পরিদর্শনের জন্য আবার অনুমোদন চাওয়া হয় এমডির। এবার এমডি অনুমোদন দেন। ঠিক হয় ৪ এপ্রিল থেকে শুরু হবে পরিদর্শনের কাজ। ১ এপ্রিল এই সিদ্ধান্ত হয়।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, এরপর শুরু হয় নতুন এক সংকট। ২ এপ্রিল আইটিএফডির জিএম মাশরুরুল হুদাকে বদলি করা হয় কুমিল্লায়। পরদিনই ছাড়পত্র দিয়ে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বদলি করতে বাধ্য হয়েছেন এবং চেষ্টা করেও ঠেকাতে পারেননি—মাশরুরুল হুদাকে এ কথা এমডি নিজেই ডেকে নিয়ে বলেছিলেন। তবে এর আগের দিন অর্থাৎ ১ এপ্রিল পরিদর্শন সেলের ডিজিএম আবু জাফর রূপসী বাংলা শাখা পরিদর্শনের জন্য এজিএম শওকত আলীর নেতৃত্বে একটি দল তৈরি করে দেন। এর পরও বদলি করা হয় আবু জাফরকে।
তবে ৪ এপ্রিল থেকে রূপসী বাংলা শাখা পরিদর্শনকাজ শুরুর সিদ্ধান্ত তখনো বহাল ছিল। ৩ এপ্রিল রাত সাড়ে সাতটায় শওকত আলীকে ফোন করে পরিদর্শন সেলের জিএম নুরুল ইসলাম চৌধুরী পরদিন রূপসী বাংলা হোটেল শাখায় না যেতে নির্দেশ দেন। তবে নির্দেশটি মৌখিক থাকায় পরদিন পরিদর্শন দল রওনা হলে শাখায় পৌঁছানোর আগেই আবার ফোন দেন জিএম নুরুল ইসলাম চৌধুরী। ডিএমডি মাইনুল হকের নির্দেশ অনুযায়ী ফিরে আসতে বলেন তিনি। এজিএম শওকত আলী ফিরে এসে পুরো বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়ে জিএমের লিখিত নির্দেশ চান। এমডিকে জানানো হলে বলা হয়, ডিএমডি মাইনুল হকের নির্দেশে আরেকটি দল করা হয়েছে, তারাই যাবে পরিদর্শনকাজে। ডিজিএম সফিজ উদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে সেই দলটি পরিদর্শনকাজ শুরু করে আরও এক সপ্তাহ পর। এই দল পরিদর্শন প্রতিবেদন জমা দেয় ৩০ জুন। এর মধ্যেই কুমিল্লায় বদলি করা হয় এজিএম শওকত আলীকেও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত: সোনালী ব্যাংকের পরিদর্শনে অনিয়ম উদ্ঘাটিত হলেও এর আগেই রূপসী বাংলা শাখার ওপর পরিদর্শন শুরু করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে রূপসী বাংলা শাখার বিষয়ে অভিযোগ আসা শুরু হলে ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন শুরু করে। ওই সময় সেখানে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। পরিদর্শনকাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয় এ সময়। তবে মোদাচ্ছের আলী এই অভিযোগ অস্বীকার করে আগেই প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি নিজের কাজে সেখানে গিয়েছিলেন এবং সহায়তা করতে আগ্রহও দেখান।
সাবেক এমডি হুমায়ুন কবীরের চুক্তির মেয়াদ শেষ। অনেক চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি ফোনও ধরছেন না। তবে গত ২৯ জুন হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে হুমায়ুন কবীর বলেছিলেন, যা হয়েছে তা তাঁর অজ্ঞাতে হয়েছে।
ডিএমডি মাইনুল হকের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। গত রোববার সোনালী ব্যাংক কার্যালয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলেন তিনি। তবে সব ধরনের অভিযোগই অস্বীকার করেন। পাল্টা তিনি কৃতিত্ব দাবি করে বলেন, ২৬ জানুয়ারি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কাজ শুরু করেনি। এ কারণেই তিনি নতুন দল গঠন করে ৪ এপ্রিল পরিদর্শনের আদেশ দেন। জিএম নুরুল ইসলাম চৌধুরী দেখা করলেও কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
সোনালী ব্যাংকের নানা স্তরের আরও কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হলমার্ক কেলেঙ্কারির খবর অনেক আগে থেকেই সবাই কমবেশি জানতেন। নানা ধরনের কথাবার্তাও প্রচলিত ছিল। হলমার্কের এমডি তানভীর মাহমুদ আসতেন ব্যাংকে। একাধিক বৈঠকও হয়েছে। একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথাও ব্যাংকে প্রচলিত ছিল।
রূপসী বাংলা শাখার ব্যবস্থাপক এ কে এম আজিজুর রহমানকে সবচেয়ে মেধাবী ডিজিএম হিসেবে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ থেকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে। এত অনিয়ম হচ্ছে, পরিদর্শন চলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করছে—এর মধ্যেও সবচেয়ে ভালো ডিজিএমের পুরস্কার হিসেবে আজিজুর রহমানকে ডিএমডি মাইনুল হকের সঙ্গে ওমান পাঠানো হয়। ব্যাংকের প্রতিবেদনেও প্রশংসা করে তাঁকে অত্যন্ত মেধাবী ব্যাংকার বলা হয়েছে। আর এভাবেই হলমার্ক গ্রুপকে অর্থ আত্মসাৎ করার সব ধরনের পরিবেশই তৈরি করে দেয় সোনালী ব্যাংক।
প্রথম আলোয় প্রকাশিত মূল রিপোর্টটি পাবেন এখানে
আমরা বন্ধু ব্লগ পরিবারের পক্ষ হতে সিরাজী ভাই ও তার পরিবারের প্রতি রইল শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন।
একজন সৎ কর্মকর্তা এবং তার পরিবারকে সন্মান দেখিয়ে পোস্ট স্টিকি করা হলো।
গুড জব মডু। আমি তো ভাবসিলাম, আপনে খালি ফার্স্ট পেইজ থেকে পোস্ট সরানোর সময় দেখা দেন। সিনিয়র সিরাজী ভাইরে দেইখা ইনস্পায়ার্ড হইসেন নাকি?
খবরটি জেনে আনন্দিত ও গর্বিত বোধ করছি!
স্যালুট মাসরুরুল হুদা সিরাজী!
মাসরুরুল হুদা সিরাজীকে স্যালুট। অভিভূত হলাম। সৎ মানুষের কস্ট বেশি, কিন্তু আনন্দ অসীম। শুভ কামনা থাকল সিরাজি পরিবারের প্রতি।
গতকাল আরিফ জেবতিক ভাইয়ের স্ট্যাটাস দেখেই খুব ইচ্ছা হচ্ছিল এই মহান দেশপ্রেমিক মানুষদের পরিচয় জানার।একজন পাঠকের পক্ষ থেকে সেই সৎ মানুষ এবং আপনাদের পরিবারের সকলকে সশ্রদ্ধ সালাম রইল।
মাসরুরুল হুদা সিরাজীকে স্যালুট। তার প্রতি রইল অনেক শ্রদ্ধা।
নিউজটা সকালেই পড়েছি।এখন আপনার পোষ্ট পড়ে অভিভূত হলাম।শ্্রদ্ধা এমন একজন মানুষের জন্য।
মাসরুরুল হুদা সিরাজীকে স্যালুট। তার প্রতি রইল অনেক শ্রদ্ধা।
নীরবে স্যালুট আর শেয়ার দিয়ে আরো মানুষ কে ব্যাপারটা জানার সুযোগ করে দিলাম। উনি আমাদের দেশের গর্ব।
মাসরুরুল হুদা সিরাজী'রা আছেন বলেই হয়তো এখনো কোথাও না কোথাও আশার আলো টিকে আছে।ধন্যবাদ সিরাজী ভাই বিষয়টা আমাদের জানানোর জন্য।এমন একজন আলোকিত মানুষ আপনার ভাই , ভাবতেই ভীষণ ভালো লাগছে।কারণ আপনার সুত্র ধরে তিনি তো এখন আমাদেরও অনেক কাছের মানুষ।
সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
যারা পোস্টটি পড়েছেন, পছন্দ করেছেন, ফেসবুকে শেয়ার করেছেন--সবাইকে আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আর মাসরুরুল হুদা সিরাজীও সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আর এবি মডারেটরকে ধন্যবাদ পোস্টটি স্টিকি করার জন্য।
ও হ্যাঁ, যারা মন্তব্য করেছেন- তাদের তো অবশ্যই ধন্যবাদ।
aponar anondo koto ami bojhate parbo na tobe ami to ei sotter juddher ek soho joddha ami jani ei poth koto koster koto voyer koto atonker. amar sathe amake sahazzo kore jassen onek nam na zana sanbadik vayera abar majhe majhe keu keu biporite obosthsn ney kintu ei bondhura na thakle hoyto etodine srote ga vasiye kure kure more jetam othoba shesh hoye jetam. ami o amra sobsomoy o dekha real hiro der sathe jader kotha keu vabe na.
amar somosto valobasa r ekansho aponader jonno roilo.
I am pleased to extend my sincere thanks and gratitude to my above friends for their valuabl
appreciations. Mainul H Siraji is our youngest brother. He has the magnetic exposure of
touching one's heart by his pen. Virtually I did my duties, nothing gorgious.
Thank you indeed
Masrurul Huda Siraji
এমন একজন আলোকিত মানুষ আপনার ভাই , ভাবতেই ভীষণ ভালো লাগছে।তার প্রতি রইল অনেক শ্রদ্ধা।
সিরাজী, আপনার এবং আপনার পরিবারের প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। সব কিছু নষ্টদের দলে চলে গেলেও মাসরুরুল হুদা সিরাজীর মতো মানুষেরা আছে বলেই এখনো আশার আলো দেখতে পাই। আল্লাহ ওনার এবং আপনার পরিবারের সকলের মঙ্গল করুক।
সিরাজী, আপনার এবং আপনার পরিবারের প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। সব কিছু নষ্টদের দলে চলে গেলেও মাসরুরুল হুদা সিরাজীর মতো মানুষেরা আছে বলেই এখনো আশার আলো দেখতে পাই। আল্লাহ ওনার এবং আপনার পরিবারের সকলের মঙ্গল করুক।
স্যালুট, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা।
শ্রদ্ধা...
সিরাজী স্যার আপনাকে স্বশ্রদ্ধ সালাম, আল্লাহ আপনার এবং আপনার পরিবারের প্রতি বিশেষ রহমত নাজিল করুন এবং ঐ শয়তানদের হাত থেকে রক্ষা করুন, আমীন।।
স্যালুট !!
আপনারাই আমাদের আলোকবর্তিকা..
Salute to the son of the soil....................
Salute to the son of the soil.........
স্যালুট !
একটা ছোট কারেকশন। জাফর স্যার ফেসবুক ব্যবহার করেন না। যে পেইজটা শেয়ার করেছিল, তা শুধুমাত্র একটা ফ্যান পেইজ।খুব সম্ভব এই শেয়ারের ব্যাপারে স্যার নিজেও কিছু জানেন না।
মহান মানুষটারে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। যে অফার উনাকে দেয়া হয়েছিল, সে লোভ সংবরং করতে বুকের পাঁটা লাগে। এমন মানুষের দেখা পাওয়া ভাগ্যের বিষয়।
সিরাজী ভাই, আপনের বড় ভাইকে আপনের এক ছোট ভাইয়ের সালাম পৌছায় দিয়েন।
মাসরুরুল হুদা সিরাজীর মত মানুষেরা এখনো এদেশে আছে বলে, দেশটা এখনো ডুবে যায়নি।
হ্যাটস অফ টু মাসরুরুল হুদা সিরাজী।
যদিও প্রথমে জানতাম না আপনার ভাই। কিন্তু এম হুদা সিরাজী নামটা দেখেই আপনার কথা মনে হয়েছিল। মনে হয়েছিল আপনার আত্মীয়ই কেউ হবেন। হ্যাটস অফ। দেশে এই ধরনের পরিবার এবং মানুষকেই দরকার। দু:খজনক হলেও সত্য দেশের বেশী অংশ মানুষ এখন অসভ্য।
আপনাদের মন্তব্যগুলো পড়ি, আর কেন জানি আমার চোখ ভিজে ওঠে। কী যেন একটা বোধ গলার কাছে এসে আটকে যায়। আপনাদের বলা এক একটা কথা আমাদের জন্য বিশাল পাওয়া। অমূল্য।
আবারো ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা সবাইকে।
আপনাদের ভালোবাসায় আমরা আপ্লুত। এবং আরো ভালো কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত।
হ্যাটস অফ টু মাসরুরুল হুদা সিরাজী।
Hats off and salute to Mr. Siraji and his team to capture the biggest corruption in banking
sector of the history of Bangladesh. We have very few things to proud of - but once
again U-3 makes us proud again. I m sure that most of the citizen of Bangladesh will
pray that Almighty Allah always b with U and ur family and save U from any danger.
Our country should reward U something as a token of our gratitude. But I m afraid,
no government will do that. But I m sure that Almighty Allah must reward U some in
Akherat as crore of people pray for U. I couldn't stop my tears. Thank U, Sir-thank
U all again. Thanks to Prothom Alo to let us know us about those men who are always
behind the news as no other media report about U guys. thanks again.
স্যালুট জনাব মাসরুরুল হুদা সিরাজী।
আমি সিরাজী স্যারের সাথে সরাসরি কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। উনি যে কতটা Honest এবং কড়া লোক তা আমি জানি। স্যারের নীতিটা কিছুট এরকম, "পাওনা এক পয়সাও ছাড়বেনা.......আর দূর্নীতির এক পয়সাও নেবেনা"।
অনেকদিন পর প্রিয় সিরাজী ভাইয়ের লেখা পড়লাম (যদি আমার ভুল না হয়ে থাকে)। সেই ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম থেকে তার লেখা পড়ে যাচ্ছি। মাঝখানটাতে উনাকে আর কোথাও খোঁজে পচ্ছিলাম না।
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা মাসরুরুল হুদা সিরাজী’র প্রতি- উনাদের মতো ব্যক্তিত্বরা আছেন বলেই আমরা এখনো টিকে আছি, স্বপ্ন দেখার সাহস পাচ্ছি।
আর কতো চুপ করে থাকা জায়।৪০ বছর চুপ করে করে আজ আমাদের এই দসা।আমাদের পাশের সবাই উন্নয়ন এর দারপ্রান্তে।আর আমারা পড়ে আছি এখনো রাজনীতির দুষ্টু বেড়াজালে। আজ যদি আমারা সিরাজি ভাই এর এই পথচলার সাথে একাত্মা না হতে পারি এবং সামনের সকল অন্যায় এর বিরুধে আওয়াজ না তুলতে পারি তাহলে উপরে সকল মন্তব্য হবে বৃথা।
its real time shout out.keep ur voice high.keep ur move forward.we all ve to do ot togeather...its time save our motherland which is only remaing gift from our Ancestors.
মন্তব্য করুন