গল্প: বাক্সবহির্ভূত পুতুল
ইংলিশ রাজ্যের ফুটপাথে কেউ গ্লাভস্ না খুললে তার সঙ্গে হ্যন্ডশেক করা হয় না। আমেরিকার পথেও একজন ভদ্রলোক কখনোই গ্লাভস্ না খুলে কোনো সুন্দরীর সঙ্গে হ্যন্ডশেক করে না। তবে দু'দেশেই অপেরা কিংবা উচ্চমার্গীয় পার্টি কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোয় গ্লাভস্ না খুলেই অনেকে কাজ চালিয়ে দেয়। এটা হচ্ছে ডিমান্ড অভ সিচুয়েশন। মানবসমাজে প্রচলিত এই হ্যন্ডশেকের রীতিটা আমার কাছে বেশ উপাদেয় ও স্বাস্থ্যকর মনে হয়। এতে মানুষে মানুষে ঘনিষ্ঠ যোগসাজশ ঘটে। কেননা দু'জন মানুষের মধ্যে স্পর্শ বিনিময়ের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে-মাংসে একটা সুক্ষ্ণ দ্যোতনা সৃষ্টি হয়, যা মানুষকে সামান্য হলেও প্রভাবিত করে।
আমি নিজে অনেক বড় বড় বিপদ থেকে উদ্ধার পেয়েছি হ্যন্ডশেকের কল্যাণে। আবার মজার অনেক ঘটনাও আছে হ্যন্ডশেক নিয়ে। দুনিয়ায় কখনো কখনো চূড়ান্ত আনপ্রেডিক্টেবল এবং আউট অভ বক্স প্রকৃতির মানুষের দেখা পাওয়া যায়। নিয়া ছিলো তেমনই একজন মানুষ। ওর সঙ্গে চমৎকার একটা সম্পর্ক হয়তো হতোই না, যদি প্রথমদিন হ্যন্ডশেক নিয়ে একটা গণ্ডগোল আমাদের মধ্যে না হতো।
আমাদের বায়িং হাউসটা উত্তরা থেকে বাংলামটরে সরিয়ে আনার পর পর স্প্যনিশ একটি কোম্পানী যোগ দিয়েছিলো, আমাদের নিয়মিত খদ্দের হিসেবে। দুই কোম্পানী মিলে এক অফিস। কিন্তু মানুষ সাকুল্যে পাঁচজন। সেখানে একবার একটা মেয়ে আসলো সেই দেশ থেকে। ঝকঝকে চেহারা আর কোঁকড়া সোনালী চুল। প্রথমদিন দেখা হতেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো হ্যন্ডশেকের উদ্দেশ্যে। আমি খুব ভাব নিয়ে সে হাত ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। ওদের দেশে মনে হয় ছেলে-মেয়েতে হ্যন্ডশেক করাটা বিশেষ ভদ্রতা। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো খানিকটা সংকোচ কাজ করেই এক্ষেত্রে। আর মেয়েটিকে দেখেও বেশ ভালো লেগেছে। এ অবস্থায় হ্যন্ডশেক করে ফেলাটা উচিত হবে না।
আমি দেখেছি মানুষে মানুষে দুরত্ব কমে আসলে সংকট বৃদ্ধি পায়। মুগ্ধতা কমে যায়। ক্ষেত্রবিশেষে কেটেও যায়। যাক্ যে কথা বলছিলাম; হাত ফিরিয়ে দিতেই একটি রামধমক ভেসে আসলো, তবে খুব ক্ষীণ স্বরে। প্রায় স্বগতোক্তির মতো করে। হয়তো নিজেই নিজেকে বলেছিলো। আমাকে শোনাতে চাচ্ছিলো না। তাও আমি শুনে ফেললাম, ম্যানার জানে না নাকি?
আমিও রামউত্তর করলাম, স্বগতোক্তির মতো করেই। তবে সে যেন শুনতে পায় সে উপায়টুকু রেখে। 'জানি বলেই তো আপনার হাত ধরলাম না। ওটা যে এ দেশের প্রেক্ষাপটে বড্ড বেমানান প্রিয় বিদেশিনী।' সে কিছুক্ষণ চোখ বড় বড় করে তাকিয়েছিলো। তারপরে চোখে-মুখে একটা দুষ্টু ধরনের হাসি ফুটিয়ে সরে গেল। এই মেয়েটার এক্সপ্রেশনগুলো এত পার্ফেক্ট আর এত দারুণ হচ্ছিলো যে বলার নয়।
তখন ভেবেছিলাম, যাক্ আপদ গেছে। আপদ মানে হ্যন্ডশেক না করাটাকে ভিন্নভাবে নিলে আমি বিপদে পড়ে যেতাম। কারণ এই বিদেশিনীর কাছ থেকেই আমাকে বিভিন্ন অর্ডার ফাইনালি এপ্রুভ করাতে হবে।
কিন্তু দেখা গেল ঘটনা চলতে শুরু করেছে উল্টোপথে। মেয়েটি আমাকে দেখলেই হাত বাড়িয়ে দেয়। যেন এটা ওর কাছে একটা মজার খেলা। দ্বিতীয়দিনও হাত ধরলাম না। তৃতীয়দিনও হাত ধরলাম না। সে কিছু বলে না। ভরা মজলিসে হাত এগিয়ে দেয়, আমি মাথা ঝাকিয়ে বাউ করি। আমার মনে হয়, হাত বাড়িয়ে দেয়ার পর কেউ যদি সেটা না ধরে তাহলে যে একটা অপমানজনক পরিস্থিতি তৈরী হয়; সেটি এ মেয়ে জানেই না।
এরপরে চারদিনের দিন করলাম কি, ওর হাত ধরে ফেললাম এবং তারপরে আর ছাড়লাম না। দশমিনিট পর সে 'ঘাট হয়েচে, মাপ চাইছি' বলে কেঁদে-কেটে অস্থির হয়ে গেলো। তাও ছাড়লাম না। পনেরো মিনিট পর শাদা মুখটা লজ্জায় না অপমানে না আর কিছুতে জানি না, কিন্তু লাল হয়ে উঠতে দেখলাম। তাও ছাড়লাম না। বিশ মিনিটে সে সিরিয়াস মুডে জানতে চাইলো, আমি কি আমার অর্ডারটা হারাতে চাই? তাও ছাড়লাম না। পঁচিশ মিনিটে সে আমাকে পুলিশে দেবার ভয় দেখালো। তাও ছাড়লাম না। আধঘন্টা পরে বললো, ঠিক আছে চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি। এ কি কথা! ভালো করে ওর মুখের দিকে তাকালাম। ফান করছে এমন কোনো ভাবের লেশমাত্র নেই। এবং আমার দিতে সপ্রশ্ন চোখে তাকিয়ে আছে। যেন উত্তর চায়। হাত ছেড়ে ঝেড়ে দৌড় দিলাম।
বিদেশিনী এরপর টিজিংএর মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিলো। পরদিন হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি নর্মল একটা হ্যন্ডশেক করার নিয়তে হাত বাড়াচ্ছি। চট করে হাতটা গুটিয়ে নিলো। খুব মেজাজ গরম হলো। আমি করলাম কি, হাত বাড়িয়ে ধরেই রাখলাম। যেন সে হাত না দেয়া পর্যন্ত নামাবো না। সে একটু পর 'লাগবে না' টাইপ হাত নাড়ানোর ভঙ্গি করলো। তবু নচ্ছারের মতো হাত বাড়িয়ে রাখলাম। সে বিভিন্ন ডেস্কে যায়, আমি সঙ্গে সঙ্গে যাই, বাড়ানো হাত নিয়েই। অফিসের লোকজন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে আর মজা পায়। মেয়েটি কিছুক্ষণ পর আমাকে নিয়ে নিজের রুমে গেল। দরজাটা বন্ধ করে সামনা-সামনি বসলো। বসে আমার হাত ধরলো। টের পেলাম, হাতে ভালোই শক্তি। মুখ-চোখ খুব সিরিয়াস। বললো, নাও ধরে থাকো। যতক্ষণ খুশি।
আগের দিন দৌড় দিয়েছিলাম বলে আজ শক্ত করে ধরে আছে। টানাটানি করাটা ভদ্রতার মধ্যে পড়ছে না। কি করবো বুঝতেও পারছি না। এমন সময় বাঁচিয়ে দিলেন ঠাকুর। পিওনটা কোনো এক বিচিত্র কারণে হুট করে একটা নক দিয়েই রুমে ঢুকে গেল। আর বিদেশিনী ইলেক্ট্রিক শক খেয়ে পিছিয়ে গেলেন। আমি ইচ্ছে করে তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। এতো মেয়ে নয়, সাক্ষাৎ ভয়ংকর। রুমে নিয়ে গিয়ে বলে হাত ধরে থাকো।
মনে মনে ঠিক করলাম, এর থেকে দূরে থাকতে হবে। তবে সে সুযোগ বেশিদিন মিললো না। এরপরে দু’দিন মেয়েটি জানি কোথায় গিয়েছিলো। হয়তো অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে যেতে হয়েছিলো। সেখান থেকে ফিরে একদিন দেখলাম সারাদিন হাসিখুশি মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ইচ্ছা হচ্ছিলো গিয়ে জিজ্ঞেস করি, কি খবর? কিন্তু করলাম না। বিকালে বের হওয়ার সময় সে’ই এগিয়ে এলো, কি খবর জানতে চেয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো। আমি কাজের মধ্যে ছিলাম বলেই হয়তো ও'র সঙ্গে যে একটা দুষ্টুমীর ব্যপার আছে সেটা ভুলে, স্বাভাবিক নিয়মে হাত এগিয়ে দিলাম। সে পুরোনো দিনের মতো নিজের হাতটা গুটিয়ে ফিচেল টাইপ একটা হাসি দিয়ে সামনে থেকে সরে গেল।
এতদিন ভাবতাম বিদেশী মেয়েগুলো খুব সিরিয়াস টাইপ হয়। মুভি-টুভিগুলোতে তো তেমনই দেখেছি। কিন্তু এখানে তো দেখছি উল্টো ঘটনা। আমি চেষ্টা শুরু করলাম এড়িয়ে এড়িয়ে চলার। দেখা হলে আগাই না। আগালেও পাশ দিয়ে কাটি না। যদি কখনো পাশ কাটানো পড়েও, তো মুখ তুলে তাকাই না। চলতে থাকলো। ভাবখানা এমন যে, আমি ভীষণ ভীতু আর লাজুক প্রকৃতির একটা ছেলে এবং তোমাকে খুব সমঝে চলি।
সেদিন বিকেলে মনোযোগ দিয়ে একটা ওয়ার্ক-অর্ডার তৈরী করছিলাম। নাক-মাথা-কপাল মনিটরের ভেতর গুঁজে দিয়ে কাজ করছিলাম। এমন সময় টেবিলে নক নক পড়লো। মাথা তুলে চারিদিকে ঘুলঘুট্টি অন্ধকার দেখে খানিকটা হতচকিত হয়ে গেলাম। এরমধ্যে ঘর আলো করে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। পরনে শাদা জামা। তাকাতেই একটা হাসি দিলেন। দেখে ভালো লাগলো। কিন্তু তারপর যখন হাত বাড়িয়ে দিলেন আর দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা গেল না। নিশ্চই মনের ভেতরে কোনো ফন্দি আছে। আমি না দেখার ভান করে জিজ্ঞেস করলাম, কি কেমন আছেন? ক’দিন মনে হয় চিনতেই পারছেন না? মেয়েটি কোনো কথা না বলে নিজের বাড়িয়ে দেয়া হাতের দিকে চোখ দিয়ে ইশারা করতে থাকলো।
এ অবস্থায় হাত বাড়ানো ছাড়া আর কিছুই করার নেই। ক্ষীণ একটা চিন্তা মাথায় ছিলো, হয়তো মেয়েটি ভালোভাবে হ্যন্ডশেক করবে। হাত টান দিয়ে ভেংচি কাটবে না। সৌভাগ্যবশত তেমনই ঘটলো। নিবিড়ভাবে হাত ধরে ও একটা মধুর হাসি দিলো। আমিও প্রত্যূত্তরে হাসলাম এবং কিছুক্ষণ ওর হাত ধরে থাকলাম। এই মেয়েটির হাতের ভেতর একটা বিষয় আছে। ধরলে নিজের হাতটা কেমন জানি এ্যাডজাস্ট হয়ে যায়। হয়তো স্বাভাবিকের চেয়ে ওর হাতটা একটু বড় বলেই।
অনেকে আছে হ্যন্ডশেকের ক্ষেত্রে হাত মিলিয়েই হাত ছাড়িয়ে নেয়। এটা ঠিক ভদ্রতার মধ্যে পড়ে না। কারণ এ সময় কিছুক্ষণ হাত ধরে কথা-টথা বলার প্রয়োজন আছে। নোটবুক মুভিটায় ছেলেটার বাবার সঙ্গে মেয়েটির হ্যন্ডশেকের দৃশ্যটা ভালো করে খেয়াল করলে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। যাক্ আমি কিছুক্ষণ হাত ধরে রাখলাম। এরপরে হাত ছাড়িয়ে আনতে চেষ্টা করলাম। তখন কি জানি একটা বিষয় নিয়ে টুক-টাক কথা হচ্ছিলো আমাদের মধ্যে।
চেষ্টা করেও হাত ছাড়িয়ে আনতে পারলাম না। বেশ শক্ত করে ধরে আছে। আমি ভাবলাম হয়তো আরো একটু ধরে রাখতে হবে। সেটা ভেবে আরো একটু ক্ষণ ধরে রাখলাম। কিন্তু তারপরেও হাত ছাড়াতে পারলাম না। শক্ত করে ধরে আছে এবং ও মুখে পুরোনো সেই হাসিটা ফিরে এসেছে। এই হাসিটা ও যখন আমার সঙ্গে একটা কিছু করে কেবল তখনই দেয়। কিউট, চোখে-মুখে দুষ্টুমীমাখা একটা হাসি।
আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না, এটা কি প্রতিশোধ কিনা। তাহলে একটা কাজ করা যায়। ওর মতো আমিও বলি, ধরে থাকো যতক্ষণ খুশি। যেই ভাবা সেই কাজ। বললাম। প্রত্যূত্তরে সে কোনো কথা বললো না। কিন্তু আমার ঠিক চোখের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে হাসতে থাকলো।
একটু পর হাতে অল্প চাপ অনুভব করলাম। মনে হলো, কাছে টানছে। টেবিল থেকে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে অধৈর্য্য হয়ে টানাটানি শুরু করলো মেয়েটি। ঘটনাটা কি? শুনশান-নিরিবিলি একটা ঘরের মধ্যে এই মেয়ে আমাকে টানে কেন?
ও টেনে আমাকে একদম নিজের খুব কাছাকাছি নিয়ে নিল। তারপরই চট বাইরের দিকে হাঁটা দিলো উল্টোঘুরে। আমাকে টানতে টানতেই। সন্ধ্যায় দিপকদের সঙ্গে সাকুরা’য় যাবার একটা কথা আছ। সেটা ওকে বলার সুযোগই পেলাম না। ততক্ষণে মেয়েটি আমাকে নিয়ে গাড়ি বারান্দায় চলে এসেছে। আগেও একদিন দেখেছি, নিজের গাড়ি সে নিজেই ড্রাইভ করে। জোর করে গাড়িতে ঢুকিয়ে দরজা লাগিয়ে তারপর হাত ছাড়লো। এ পর্যন্ত কিন্তু কোনো কথা নেই।
ওর বারিধারার অ্যপার্টমেন্টটায় ঢোকার মুখে গাড়ি থেকে নেমে চাবি দারোয়ানের হাতে দিয়ে দিলো। দিয়ে আবার আমার হাত ধরলো এবং টানতে টানতে ফ্ল্যাটের দিকে এগোল। যেন আমি স্বেচ্ছায় গেলে হবে না, আমাকে টেনেই নিয়ে যেতে হবে। মেয়েটির সুন্দর সাজানো ফ্ল্যাট দেখে আবারো মুগ্ধ হলাম। এদিক-ওদিক তাকানো শুরু করলাম। মেয়েটি উইন্ডো টেবিলের ওপর একটা স্পট লাইট জ্বালিয়ে সেখানে আমাকে নিয়ে গেল এবং হাত ধরে মুখোমুখি বসলো। সারা ঘর অন্ধকার। শুধু মাথার ওপর অল্প একটু আলো। আনুষ্ঠানিক পরিবেশ। কিন্তু হাতের বিষয়টা বুঝতে পারছি না। আর এমন চোখের মণিতে ঠাঁয় তাকিয়ে থাকাটাও বুঝতে পারছি না।
টিক-টক টিক-টক ঘড়ির আওয়াজের সঙ্গে সময় একসময় গড়িয়ে যাওয়ার গতি বাড়িয়ে দিলো। সেটা প্রথম টের পেলাম ডান পকেটে রাখা মোবাইল ভাইব্রেট করে ওঠায়। ডান হাত তো আটকে আছে। অনেকক্ষণ পর নীরবতা ভেঙ্গে ‘এক্সকিউজ মী’ চাইলাম। যাতে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করতে পারি। মেয়েটি যথারীতি দুষ্টু ভঙ্গিতে মাথা নাড়িয়ে আমার অন্য হাতের দিকে চোখের ইশারা করলো। বাম হাত দিয়ে খানিকটা কসরত করেই মোবাইল বের করতে হলো। দিপককে বললাম, তোরা শুরু কর। আমি এসে তোদের ধরবো। এছাড়া বলার কিছু ছিলোও না।
মেয়েটি হঠাৎ কথা বলে উঠলো, কিছু খাবে? কিছু খাও প্লীজ। এই প্লীজটা বলার সময় ও ইচ্ছে করে আমার দিকে খানিকটা ঝুঁকেও আসলো। আর ঠিক তখনই আমি বুঝতে পারলাম; এ আসলে আমার সঙ্গে যা কিছুই করছে, সবকিছুই হচ্ছে সিম্পলি দুষ্টুমী।
আমিও মজা পেলাম। বহুদিন এমন দুষ্টের দেখা মেলে নি। তার দিকে বেশ খানিকটা ঝুঁকে এবং মুখের প্রায় কাছাকাছি মুখ নিয়ে বললাম, না খাবো না সুন্দরী। খেতে গিয়ে তোমাকে ধরে রাখার সুযোগ মিস্ করতে চাই না এক সেকেন্ডের জন্যও।
বিদ্যূৎগতিতে হাত ছেড়ে উঠে গেল মেয়েটি। মনে হয় একটু লজ্জাই পেয়ে গেছে। চট করে ফ্রীজটা খুলে কি জানি বের করে, ঘাঁটাঘাটি শুরু করে দিলো। প্রায় ঘন্টাখানেক বা তারো অনেক বেশি সময়, ধরে রাখার কারণে আমার হাত বেশ আর্দ্র হয়ে উঠেছিলো। অনেকক্ষণ পর মুক্তি মেলায় আমি তাই নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। এরই মধ্যে সে নিজের জন্য একটা স্ট্রবেরী ক্রাশ আর আমার জন্য চকলেট নিয়ে এসেছে। ইয়া বিশাল গ্লাস। জানতে চাইলাম, এতে দুধ আছে কি না? সে মাথা নেড়ে আশ্বস্ত করার পর জিনিসটা এক চুমুকে শেষ করে ফেললাম। তারপর বললাম, এখন তাহলে উঠি। এটা হয়তো দেশের একটা বিশেষ জেলার বাসিন্দাদের মতো কাজ হয়ে গেল, কিন্তু কিছু করার নাই। একটা একা বাসায় একটি একা মেয়ের সঙ্গে কতক্ষণ আর বসে থাকা যায়?
ও আবার আমার হাত ধরলো। দরজা পর্যন্ত হেঁটে হেঁটে আসলো। এবং বের হয়ে যাওয়ার সময় যেতে-দিতে-একদম-ইচ্ছে-হচ্ছে-না টাইপ একটা লুকসহ আমার হাত ধরে দরজার কপাটের সঙ্গে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। ভাবখানা এমন যে, আমি জোর করে ছাড়িয়ে না নিলে সে আমার হাত ছাড়বেই না। আমিও খুব অল-ডে-আই-হেট-টু-গো টাইপ ভঙ্গি করে শেষমেষ হাত ছাড়িয়েই নিলাম। ওর চোখে সত্যি মনে হলো একটা বেদনা ছায়া পড়তে দেখলাম। এটা ভেবে কি বিভ্রান্ত হবো কি না বুঝতে পারলাম না ঠিকমতো। পরে সেসব ভাবা যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের কাজে মনোযোগ দিলাম। আপাতত সেটা হচ্ছে জোরে জোরে সাইকেল চালানো।
তবে একদিন এভাবে বাসায় চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য রুটিন হয়ে দেখা দিলো। এরপরে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সে আমার জন্য অপেক্ষা করতো। এবং আমি বের হওয়ার তোড়জোড় করতেই এগিয়ে এসে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিতো। প্রতিদিন যে হাত ধরে বসে থাকতাম তা নয়। মূলত দুইজনের একটা কমন ইন্টারেস্টের জায়গা ছিলো কিং অভ ফাইটার-৯৭। এই গেমটা খেলতে বসলে সময় যে কোনদিক দিয়ে পার হয়ে যেতো টেরই পেতাম না। প্রথম প্রথম আমার কাছে হারলে মেয়েটি ক্ষুব্ধ হতো শুধু, কিন্তু সেটির কোনো প্রকাশ থাকতো না। পরের দিকে হারলেই বালিশ দিয়ে আমার পিঠে দমাদম বাড়ি দেয়া শুরু করতো। মাঝে মাঝে গলা টিপে ধরতো। যেন এখনই খুন করে ফেলবে। আবার কখনো কখনো আমার বুকের ওপর চড়ে বসে আমারই মাথার চুল টানতো ভয়ংকরভাবে। ভাগ্য ভালো যে, চুলগুলো গোঁড়ার সঙ্গে খুব শক্তভাবে জোড়া লাগানো। নাহলে ওর টানাটানির পর আর খুব বেশি সংখ্যক মাথার ওপরে থাকার কথা ছিলো না। এসব খুনসুটিতে বেলা কেটে যেতো। এবং বেশ ক’দিন পর্যন্ত সে খুনসুটি শেষই হচ্ছিলো না।
একদিন অফিসের বস্ এটা নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বললেন। তিনি আবার কিছুটা চাঁছাছোলা প্রকৃতির মানুষ। সরাসরি জানতে চাইলেন, মালটাকে ঝোলাচ্ছো কেন? আমি বললাম, আমি ঝোলাচ্ছি না সে আমাকে ঝোলাচ্ছে? তখন তিনি বললেন, তুমিই বা ঝুলছো কেন? এরা বেশিদিন একদিকে আগ্রহ ধরে রাখতে পারে না। সিরিয়াসলি ঝুলে পড়ো না। পরে আক্ষেপ করতে হবে। আমি বস্ ইজ অলওয়েজ রাইট নীতি মেনে চলি। সেই সঙ্গে কেউ কিছু বললে তার সঙ্গে আর কি বলে নি, সেটাও খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি। অগত্যা আবারো মেয়েটিকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা শুরু করলাম।
একদিন বললাম, বাসায় জরুরি কাজ আছে। আজ তোমার সঙ্গে যেতে পারবো না। সে চোখে বেশ অনুনয়ের দৃষ্টি ফুটিয়ে বলেছিলো, জাস্ট ফর আ কাপল অভ ম্যচেস্। ধরো পাঁচ ম্যচের একটা সিরিজ হলো। তারপর চলে যেও, প্লীইইজ। আমি নিষ্ঠুরের মতো বলেছিলাম, নো। আই কান্ট।
এরপরের দিন বললাম, একজন ডিলারকে কনভিন্স করতে ছুটতে হবে। আজ পারবো না। সেদিন সে কিছু না বলে মাথা নিচু করে বালিকাদের মতো এলোমেলো পাএ সামনে থেকে সরে গিয়েছিলো। ওর চলে যাওয়ার ভঙ্গিতেই বুঝতে পেরেছিলাম, যা হওয়ার হয়ে গেছে।
পরিবর্তন দেখে বস্ খুশি হলেন। একদিন আমাকে ডেকে বেশ লেকচার দিয়ে দিলেন, হৃদয় লেন-দেনের সেরা স্থান সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস। তাছাড়া কলেজ প্রাঙ্গনও নেহায়েৎ মন্দ না। কিন্তু অফিস ভাই কাজের জায়গা। যদিও আমি জানতাম, আমরা যা করতাম সেগুলো হৃদয় লেন-দেনের বিষয় নয়। কিন্তু সেসব বললাম না। কি হবে কথা বাড়িয়ে। বেশ ক’দিন বিকালে কেউ ডাকতে আসে না দেখে খুশি হলাম।
কিন্তু এক সময় সেই খুশিটা মলিন হয়ে গেল। মেয়েটির সঙ্গে করা মারপিট, খুনসুটিগুলো আসলে নিস্তরঙ্গ জীবনে কয়েকদিনের জন্য বেশ ভিন্নতা এনে দিয়েছিলো। এখন সেটা মিস্ করছি। ভালোমতোই। ভাবলাম একদিন দুপুরে একসঙ্গে খাই। বাইরে কোথাও। এতে নিশ্চই অফিসের কারো সমস্যা হবে না। সেই ভেবে বেলা থাকতে থাকতে তার কাছে গিয়ে কথাটা পাড়লাম। মুখের ওপর না করে দিলো। শুধু তাই নয়, জানিয়ে দিলো হ্যংলা ইন্ডিয়ান জহির আব্বাস ভোলপুরি’টার সঙ্গে নাকি আগে থেকে লাঞ্চের ফন্দি আঁটা আছে।
আমার খানিকটা নিজের ওপর মেজাজ গরম হলো। এই কারণেই আসলে বাঙালির কিছু হলো না। পাতলা মন। দু’দিন পর ঠিকই গলে যায়। এখন ভালো হলো না? খুব মানুষের কাছে গিয়ে যেচে অপমান হয়ে আসলাম। একটু মন খারাপও হলো। চারটাদিনও পুরোপুরি অতিক্রান্ত হয় নি, এরই মধ্যে নতুন বন্ধু জুটে গেছে। বাবাহ্!
স্মোকিজোনে গিয়ে পরপর দু’টো অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে আসলাম। অফিসের চা-কফি দু’টোই ভালো। আমি দু’টো একসঙ্গে নিলাম। শেষ করে সিগারেটের ফিল্টার পাএ পিষে ওয়ার্করুমে ঢুকলাম। মনিটরের ভেতর ঘাড়সমেত মাথা ঢুকিয়ে ডেটাশীট তৈরীতে মনোযোগ দিলাম। কে যেন বলেছিলো, আপনি অওকাত কাভি ভুল না মাত্। অমরেশ পুরি হতে পারে। মনে করতে পারছি না।
কাজ করতে করতে কতক্ষণ সময় পার হয়েছে খেয়াল করি নি। হঠাৎ টেবিলে পেলাম নক নক। এটা আমার পরিচিত নক। তাই মাথা না তুলেই জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে?
-দুপুরে খেয়েছেন?
না।
-কেন খান নি? আমি রাজি হই নি তাই?
না।
-এখন খাবেন?
না।
-আমার সঙ্গে বের হবেন?
না।
-আজ কি কোনো কাজ আছে?
না
-তাহলে চলেন যাই।
কনসিকোয়েন্টলি না বলে যাচ্ছিলাম বলে শেষ না-টা নিজে নিজেই বের হয়ে গেছে। যদি খেয়াল করে বলতাম, তাহলে বলতাম- হ্যাঁ জরুরি কাজ আছে। কিন্তু এখন একটা কথা বলে ফেলেছি এবং আমি জানি মেয়েটি খুবই সেনসেটিভ। মাথা নিচু করে এলোমেলো একটা বিশেষরকম হাঁটা জানে। পেছন থেকে একবার দেখলে খবর হয়ে যায়। বেশ ক’দিন পর থেকে সেটার ইফেক্ট দেখা দেয়। তার আগ পর্যন্ত হালকা খচখচ করে শুধু।
মাথা তুলে তাকালাম। ওর সঙ্গে যাওয়া যাবে না কোথাও, এ ব্যপারে ডিটারমাইন্ড হয়ে গেছি। কারণ বাঙালির পাতলা মন সংক্রান্ত সমস্যা থেকে আমাকে বের হতে হবে। আবার বিষয়টাকে কাটাতেও হবে হালকাভাবে। আমার সাধারণত মানুষজনকে নিজের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে দিতে ইচ্ছে করে না। কারণ সবাই-ই কম-বেশি সেই সুযোগের সদ্ব্যহার করে। যদিও আমি মাঝে মাঝে নিজের কথা নিজেই ভুলে যাই। মানুষকে সুযোগ দিয়ে দিই অজান্তেই।
আমি ওর দিকে তাকাতেই হাত বাড়িয়ে দিলো। মুখভর্তি দুষ্টুমী। ইচ্ছে হলো আমিও আজ একটু ওর মতো করি। বললাম, আসলে যাওয়ার ইচ্ছা তো ছিলোই। কিন্তু সোনিয়া সেই দুপুর থেকে ফোন করে যাচ্ছে। ও নাকি আজ বিকেলে আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়। পুরোনো বন্ধু। কেন যে দেখা করতে চায়, জানি না। কিন্তু কথা দিয়ে ফেলেছি বস্। পারবো না।
এটা বলতেই, যা ভেবেছিলাম, তাই ঘটলো। এলোমেলো পাএ একজন মানুষ আমার সামনে দিয়ে চলে গেল। এতে আমি কি দুঃখিত হলাম, না সুখী হলাম; বুঝতে পারছিলাম না। এও বুঝতে পারছিলাম না, আমার ভেতর এত কেন সিদ্ধান্তহীনতা? আমি তো চাইছিলামই, ওর সঙ্গে বাইরে না যেতে।
সেদিন বিকেলে আর কোনো কাজ ছিলো না। গুলশান- ২ নং চত্বরে একটা দোকান আছে। দারুণ শর্মা পাওয়া যায়। মন খারাপ থাকলে আমার আজকাল খেতে ইচ্ছে করে। এটা আগে করতো না। কুং ফু পান্ডা দেখার পর থেকে এই নতুন অভ্যাসখানি গজিয়েছে। মন্দ না। খেতে খেতে নিত্যনতুন বিষয় মাথায় এসে ভীড় করলে, একসময় পুরোনো মন খারাপের কারণটা চাপা পড়ে যায়। মন খারাপ থাকার সময়টুকু পার হয়ে গেলে বিষয়টা নিয়ে ঠান্ডা মাথায় ভাবতে পারি।
গুলশানের দোকানটায় আমি মাঝে মাঝেই সেখানে যাই এবং শর্মা খাই। সেদিন দুইটা বিফ শর্মা, একটা ডাবল ডিমের ওমলেট, সসেজ, ফ্রেঞ্চ ওনিয়ন স্যূপ আর একপ্লেট সালাদ নিয়ে খেতে বসলাম। ক্ষিদেটা লেগেছে ভীষণ। যে ছেলেটা খাবার দিচ্ছিলো তাকে বললাম, একটা লার্জ কোক দিতে।
একমনে খাচ্ছিলাম, আশপাশে কি হচ্ছে দেখি নি। হঠাৎ টেবিলে পুরোনো নক নক পেলাম। মাথা তুলে দেখি ঘটনা সত্য। তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। মুখে চোর ধরার হাসি। আমি অবশ্য কোনো কৈফিয়তের ধার ধরলাম না। বললাম, বসেন।
সে বললো, তোমরা আসলে যেন কেমন। দুপুরে যখন বাইরে খেতে যাওয়ার জন্য বললে, তখন ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গিয়েছিলাম। দেখতে চাইছিলাম, রিফিউজ করলে কি করো? তুমিও আমাকে গত ক’দিনে কম রিফিউজ করো নি। ইভন আজ বিকেলেও। কিন্তু তুমি কিছুই করলে না! তোমাদের মধ্যে আগ্রহ বিষয়টাও এত কম? দু’টো সিগারেট ফুঁকে এসে ঠিক কাজ করতে বসে গেলে। এমনকি আমিও যে সারা দুপুর নিজের চেয়ারেই বসে ছিলাম, সেটাও একবার মাথা তুলে দেখলে না। আই জাস্ট কান্ট বিলিভ দিস্। তবে আমার কাছে আচরণটা খুবই বোল্ড লেগেছে, ফ্রাঙ্কলি স্পীকিং। সেজন্যই বিকালে নিজেই গেলাম তোমার কাছে। তুমি যে ত্যঁদোড় কম নও, সেটা কি আর আমি জানি না ভেবেছ? জানি বলেই ক্রস্-চেকটা করতে হয়েছে। আমি ড্যাম শিওর ছিলাম যে, সোনিয়া'র গল্পটা বানোয়াট। হি হি ধরে ফেলেছি ড. ওয়াটসন। আমাকে ফাঁকি দিতে চাও? তোমার সাহস তো কম নয়।
জানতে চাইলাম, আর এলোমেলো পাএ হেঁটে চলে যাওয়াটা?
-সেটা অবশ্য রিফিউজ হয়ে খারাপ লেগেছিলো বলেই।
আমার মনটা অনেক ভালো হয়ে গেল। দুষ্টামী সাময়িক বন্ধ রেখে বললাম; আচ্ছা ম্যডাম, ভুল হয়েছে। মাপ চাইছি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অনেক তো বক বক করলেন। এবার একটু মাথাটা ঠান্ডা করে বসেন। দুইভাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করি। সারাদিন যেহেতু কেউই খাই নি।
সে একদম পাশে এসে বসলো। সামনের চেয়ারটায় বসলো না। বসে আমি যেন ঠিকমতো খেতে না পারি তাই একটা হাত ধরে থাকলো। আমি অবশ্য আরো এক দফা খাবারের অর্ডার করে অন্য হাতে কাজ চালাতে থাকলাম। কারণ জানি; এই মেয়েটি শুধু উন্মাদ না, একটি বদ্ধ উন্মাদ। তাই বেশি ঘাঁটাঘাটি না করাটাই সমীচিন হবে।
---
সোনালী চুলের মেয়ের হাত ধইরা কি না খুশি হইসে!
হাহাপগে
কিডা খুশি হইসে? আপ্নারে

লেখা কিরাম হৈসে কন।
এই গল্পের কি কোন সিরিজ হবে?
এত এত ডিসক্লেইমার বকেয়া, ফের আরেকটা? সব ডিসক্লেইমার নিয়ে একটা গল্প লেখেন
বদ্ধ উন্মাদ মেয়েটারে ভালু পাইলাম
খাইছে!!... পুরা তব্ধা খাইয়া গল্পটা পড়লাম... সেই যে দুনিয়া চক্কর দেয়ার গল্পটার মতো স্পেলবাইন্ড হইয়া...
হাত ধরা নিয়া আমার কিছু থিওরি আছে, কিন্তু কমু না... :)
আর ডিসক্লেইমার পরে দিবেন এই বান্দ্রামি কেন... কবে দিবেন শুনি?
হাত ধরে ফেললে ভাললাগাটা কেটে যেতে পারে। আমি দেখেছি দুরত্ব কমে আসলে সংকট বৃদ্ধি পায়। মুগ্ধতা কমে যায়। ক্ষেত্রবিশেষে কেটেও যায়। - কথা সত্য অতিব। মুগ্ধতা কেটে গিয়ে তিক্ততাই সৃষ্টি হয়, আরো সংকট তৈরী হয় যখন সেই তিক্ততা নিয়েই ভান করে করে পথ চলাটা...
দারুণ তো মেয়েটা। দুষ্টু মেয়েটাকে ১০০ +।
লেখাটা এতই উমদা যে পড়তে পড়তে অফিসের টেবিলেই মাথা দিয়ে ঘুমাইয়া পড়তে ইচ্ছা করতেছে।মীরের জন্য ৫ টা আইসক্রিম বরাদ্দ হলো।
জয়ি@ আই স্ক্রীম, ইউ স্ক্রীম... উই অল যতই চিক্কুর দিয়া করি স্ক্রীম "মীর কে রে!!" কোন লাভ নাই!... যাও আরো ৫টা আইসক্রীম দিমুনে, তুমি ওর টিকিটা দেখাও তো পারলে...
মীরের টিকি আছে?কেম্নে জানলা তুমি?জোরে একটা টান দিয়া দিও।
মন দিয়া খুঁজো পাইবা @ জেবীন
মন কুথায় দিতে হপে বলেন, আমিও খুঁজি তাইলে।
এই গল্পের উন্মাদিনী কি মৃত্যুর পর ও হাত ধরে থাকবে হরর মুভীর মত। আমার এখনই ভয় করছে। নামটাও তো দিয়েছেন
ভুতুড়। বাপরে,---
গল্প পইরা লাজবাব! সিম্পলি সুইট
কিন্তু ডিসল্লেইমার আগের গুলি একটাও তো বলেন নাই।
শার্লক হোমসরে ডাকো।
স্বর্ণকেশীর মোবাইল নাম্বারটা পাওয়া যাবে?!
ডিসক্লেমার পরেই লিখো, সে হাত ছাড়লে পরে
সায়ান আর স্বর্নকেশী দেখি এখন ঢাকাতে
মুবারক হো
তাই নাকি? আমি তো ভেবেছিলাম বুঝি উল্টোটা হয়।
যে কাজ করেছিলেন তার পরে এভাবে অপমানিত হওয়াটা জরুরী ছিলো।
আহা...
হৃদয়ে কচলাকচলির জানান দেয়
মীরের অভিজ্ঞতা কিংবা কল্পনাশক্তি তো ব্যাপক
উরি মারাত্মক !!
মন্তব্য করুন