আমি ক্ষণকাল সেই নৌকায় সওয়ার হয়েছি মাত্র
"শরীরই শ্রেষ্ঠতম সুখের আকর। গোলাপের পাপড়ির ওপর লক্ষ বছর শুয়ে থেকে, মধুরতম দ্রাক্ষার সুরা কোটি বছর পান ক’রে, শ্রেষ্ঠতম সঙ্গীত সহস্র বছর উপভোগ ক’রে যতোখানি সুখ পাওয়া যায়, তার চেয়ে অর্বুদগুণ বেশি সুখ মেলে কয়েক মুহূর্ত শরীর মন্থন ক’রে।"
কি কথা! এরকম করে বলে দেয়ার মতো মানুষ আজ আমাদের মাঝে নেই। তবে হুমায়ুন আজাদ স্যারের সব লেখা আমি পড়ি নি। পড়ে পরে বলতে পারবো, তিনি নেই বলে কি অসহায় মানবজীবন কাটাতে হবে? নাকি নতুন একটা ওয়ে-আউট খুঁজে নিতে পারবো।
আমি জীবন নিয়ে কি করতে চাই, সে ব্যপারে নিশ্চিত নই। মাঝে মাঝে মনে হয় সিনেমা পরিচালক হবো। আবার কখনো-সখনো পরিব্রাজক হতেও মন চায়। কেউ কি জানে, আমি সম্ভবত এই ব্লগে এবং ব্লগের বাইরের পৃথিবীতে সবচে' স্বল্প জ্ঞানী মানুষ? প্রতিনিয়ত শিখছি, মনে আনন্দ হচ্ছে, সেই আনন্দকে সঙ্গী করে পথ চলেছি। যখন খারাপ লাগছে তখন সেটার ভেতর থেকেও কোনো একটা আনন্দ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আমি জানি না এমন করে কেন সবকিছু নিচ্ছি। হয়তো কোনো একদিন কানায় কানায় ভরে যাবে সোনার তরী।
কবিগুরুর সোনার তরী কবিতাটা পড়লে আমার এক ধরনের অনুভূতি হয়। এমন সবার হয় কি না জানি না। মনে হয় কোনো এক মেঘলা সূর্যাস্তের মুহূর্তে নদীর পাড়ে একা বসে আছি। মনের ভেতর অনেক ভয়। তাই নিয়ে বসে বসে ভাবছি। ভাবনার জগতে ডুবে যাওয়া আমার সবচে' প্রিয় খেলা। কয়েকটা ভাবনা জাগানো লাইন,
"ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই— ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি—
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।"
রবীঠাকুরও তবে ভয় পেয়েছিলেন? কিন্তু কিসের ভয়? কেন তার চোখে পড়েছিলো আকাশে ঘন কালো মেঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে?
আমি এই ব্লগে লিখা-লিখির অপচেষ্টা চালাচ্ছি আজ প্রায় বছরখানেক। কিন্তু আজো আমার যেটা মনে হয়, মাত্রই বুঝি ব্লগে এ্যকসেস্ পেলাম। কেন এমন মনে হয় জানি না। সবসময় নতুন নতুন যোগাযোগের মধ্য দিয়ে যাই। দারুণের চেয়ে বেশি দারুণ লাগে।
আমাদের হুমায়ুন আজাদ স্যার বলে গেছেন, মানুষ যখন তার শ্রেষ্ঠ স্বপ্নটি দেখে তখনি সে বাস করে তার শ্রেষ্ঠ সময়ে। আমি এখনো আমার শ্রেষ্ঠ স্বপ্নটি দেখি নি। সে স্বপ্নটির কাঠামো নির্মাণের চেষ্টা করছি মাত্র। তবে শত কাঠখড় পুড়িয়েও কোনো একদিন কোনো একটা স্বপ্ন দেখে আমার মন ভরবে, এমন মনে হয় হবে না। এই নাকের সামনে ঝুলতে থাকা মূলোখানি ধরার চেষ্টাই বোধহয় করতে থাকবো জীবনভর। নানাভাবে, নানামাধ্যমে।
তবে যদি সব ফ্যান্টাসী হারিয়ে শেষতক কোনো সরকারী অফিসের কেরানী হয়ে যাই, আমার খারাপ লাগবে না একটুও। এই বোধ কিভাবে আমার মনে জন্ম নিল কে জানে। সরকারী কেরানীদের আমি কটাক্ষ করি না। হেন-তেন কোনোকিছু না হওয়াকে আমি কম গুরুত্ব দিই। আর খারাপ না লাগার কারণ সম্ভবত' আমার স্বল্প চাহিদা।
নৌকার ওপর বসে থাকলে প্রতিনিয়ত ঢেউগুলো পরিবর্তিত হয়। যে ঢেউটা মাত্রই চোখের সামনে ঝিলিক দিয়ে উঠেছিলো, সে পরমুহূর্তে দৃষ্টিসীমার বাইরে মিলিয়ে যায়। আরেকটা নতুন ঢেউ সেখানে মাথা তোলে। কেন জানি মনে হচ্ছে, একটা কূল-কিনারাবিহীন নদীতে ঢেউএর ওপর চড়ে বসেছি। এই ঢেউ বেয়ে এগিয়ে চলাই জীবন। এই নদীর কোনো শেষ নেই। আমি ক্ষণকাল তাতে সওয়ারী হয়েছি মাত্র।
---
আজকে প্রথম কারো পোষ্টে দুইবার লাইক দিলাম। খুব ভালো লেগেছে তোমার নিজেকে লেখা এই চিঠিটা
আমি জানি।
=========================================
এই সকালবেলা মনটা ফুরফুরা হয়ে গেল। ধন্যবাদ মীর।
ভাইস্তা দেখি ম্যালা কিছু জানে
বাঁচতে হলে জানতে হবে।
মীর ভাই, সোনার তরী লৈয়া কথা কৈতে গিয়া যেখানে থামছেন- আপনেরে নোবেলটা দিয়া দিতে মন চাইতেছে। দিমু ? যান, দিয়া দিলাম... এইবার রবী'দার লগে বাত-চিৎ কৈরা আসেন...
আপনার এই ডায়ালগ
শুইনা মরমে মৈরা যাইতে ইচ্ছা করতাছে।
থ্যাংকু সোন্দর একখান পোস্ট পয়দা করনের জন্য
বান্ধাইয়া রাখা উচিত
পুরা পোষ্টই বান্ধায়া রাখা উচিত। কাল এজন্যই বলছিলাম , পোলাডা একটা জিনিস!
--- ভাইরে এরই নাম মনে হয় নিয়তি।
পোলাডা একটা জিনিস !!
সারাক্ষন ভাবে । কত কিছু ভাবে । মনের কথা ভালো লাগলো ।
চরম লাগল ভাইয়া
এই লেখা পড়ার পর কার সাধ্য যে আপনাকে সল্পজ্ঞানী মানুষ কয়?
হুমায়ুন আজাদ আমিও পুরোটা পড়িনি। পড়তে ইচ্ছে করে। পারি না। সরকারী অফিসের কেরানীর জীবন কিন্তু বেদনার। ওটি হতে না চাওয়াই ভালো। আর জীবন নিয়া এত এত ভাবনা করার টাইম কখন পান?? আপনার কি কুন কাজ নাই
কুনু কাজ নাই জানেন। একদম কাজহারা
করণিকের জীবন বেদনার কেন?
কাজ নাই? আহা কি সুখ!
ওনাদের জীবন দেখেন নাই? অফিসরত অবস্থায় বাবার বয়েসি এমন কিছু মানুষদের তো মুখোমুখি হই। তারা যখন দাঁড়িয়ে যান তখন কুকড়ে যাই। কষ্ট পাই। দাঁড়ানোর মত ঘটণার মুখোমুখি হওয়া তাদের জন্য কেমন তা ভাবার সাহস হয়না, আমার নিজের জন্য বেদনার।
ডিট্টো।
আর ইউডি'রা তাও একসময় হিসাবরক্ষক বা অফিস সুপার হয়ে যায়। কিন্তু এলডি যারা, তারা সারাজীবন কলম পেষে। অথচ প্রাপ্তির খাতা শূন্য।
যাক্ তাও আমার কখনো মনে হয় না এই কাজটা বেদনার। আসলে যার যার প্রাপ্য সম্মান তাকে দিতেই হবে। দেখা গেল নিজ যোগ্যতায় আপনি একদিন এমন একটা জায়গায় পৌঁছুলেন, যে সারা দেশের মানুষ দাঁড়িয়ে আপনাকে সম্মান জানালো। তখন অসংখ্য বেশি বয়েসী মানুষ সেই সারিতে থাকবে। এটা কিন্তু যোগ্যতাকে সম্মান করা। সেসময় আপনের খারাপ লাগলে তো চলবে না।
অসম্ভব ভাল লেখেন আপনি। খুবই ভাল লাগলো
এই লাইনটা কমন পড়ছে থ্যাংকস মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।
আরেকজন বিনয়বাবু
মাসুম ভাই আর মীর এই ব্লগে এবং ব্লগের বাইরের পৃথিবীতে সবচে' স্বল্প জ্ঞানী মানুষ?
হা হা হা হা হা.... কৌতুক অফ দ্যা ডে
ভাবীজান গড়াগড়ি পাইড়া হাসেন ক্যান? কথা সত্যতো।
সত্য তথ্য পইড়াই তো হাসলাম
মীর আর মাসুম ভাই তো আমার জ্ঞান বিষয়ক জ্ঞানরে সংশয়ে ফালাইয়া দিলো...
মীর নামক এই স্বল্প জ্ঞানী ছেলেটার লেখা বহুদিন পড়ি নাই, তাই নিজেরে খুব বঞ্চিত বঞ্চিত মনে হচ্ছিল, এই পোষ্ট পড়ে এবং মাসুম ভাইয়ের কমেন্ট পড়ে এবং ভাস্কর দা'র কমেন্ট পড়ে নিজের ম্যালা জ্ঞান অর্জন করলাম....।
ভালো থাকুন প্রি্য লেখাকেরা।
মন্তব্য করুন