কিছু কথা কিছু ছোট ছোট দৃশ্য আর কিছু পরিকল্পনা
বিষয়ভিত্তিক কিছু কার্যক্রম নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। হাজার দশেক বেঁতের লাঠি জোগাড় করে রাখা দরকার। অন্তত যেকোন রকম তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ নিশ্চিত করে রাখার জন্য। শিবিরগুলা শূকর বেশি। গতকাল ইস্ট-ওয়েস্টের ছেলেপিলেদেরকে ওরা ধাওয়া করেছিলো। মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসার সময়। রামপুরাতে। এদের যেকোন সময় প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
চট্টগ্রামে হরতাল কেমন হচ্ছে, সে খবর এখনো পাই নাই। আজকে যদি চট্টগ্রামে কোনো গণ্ডগোল হয়, তাহলে সেটা যে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নাই। পত্রিকাগুলো ইতোমধ্যে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছে। এখন একটা বারুদের ঘষাই যথেষ্ট স্ফূলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ার জন্য। আজকের পত্রিকার শিরোনামগুলো নিয়ে একটা কোলাজ করার চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বিবিসি, সিএনএন-এর ওয়েবসাইটগুলোতে বাংলাদেশের খবর ফলাও করে ছাপা হচ্ছে। ইতিবাচকভাবেই হচ্ছে। সেগুলো নিয়েও কিছু করা যায় কিনা ভাবছি।
কিছু ছোট ছোট দৃশ্য
দুই বন্ধুর গলায় গলায় ভাব। হেঁটে হেঁটে মহাসমাবেশে ঢুকলো। থানার সামনের ফুলের দোকানগুলো পর্যন্ত ওরা একসঙ্গেই ছিলো। তারপর বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো। কখন বিচ্ছিন্ন হয়েছে কেউই টের পায় নি। মহাসমাবেশ শেষে দুই বন্ধু একে অপরকে খুঁজে পেলো পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে। কে কোথায় সমাবেশ দেখেছে, তার ঠিক নেই। কিন্তু দু'জনের মধ্যে ফিলিংস্ এক। দু'জনেই উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপছে। আর শপথ নিতে নিতে দু'জনেরই হাত ব্যথা হয়ে গেছে।
দুইটা ছোট ছোট পিচ্চি। মনে হয় কলেজে-টলেজে পড়ে। ওরা তো আর অতো কিছু বুঝে না। মনে করেছে; ইউনিভার্সিটিতে এমন আন্দোলন, নিশ্চই বাম সংগঠনগুলোই এর অর্গানাইজার। মহাসমাবেশ শেষে ওরা ফুলের দোকানগুলোর সামনে হাঁটছিলো আর বলছিলো, আমার আজই ছাত্র ইউনিয়নে ভর্তি হতে ইচ্ছে করছে। একজনের বক্তব্য শুনে আরেকজন খুব তাকে সাপোর্ট করলো।
মঞ্চের কাছাকাছি খুব মানুষের ভীড়। পা ফেলার জায়গা নেই। দুই পাএর ওপর একবার দাঁড়াতে পারলে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করতে হয়। শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। নাহলে যেকোন সময় ছিটকে পড়তে হবে। এর মধ্যে সামনে যাওয়ার কোনো উপায় দেখতে পাচ্ছিলাম না। দৃষ্টিসীমায় মঞ্চ নেই। কানের কাছে সারাক্ষণ কেউ না কেউ স্লোগান দিচ্ছে। যে কারণে মঞ্চের ভাষণ ঠিকমতো শোনা যাচ্ছে না। তারপরেও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে ঠিকই জায়গা হয়ে যায়। এভাবে যেতে যেতে এমনকি মঞ্চের সামনে গিয়ে বসেও পড়া গেলো। কয়েকটা ছেলেপিলে হাতে হাত ধরে বৃত্ত তৈরি করেছিলো। বৃত্তটাকে এগিয়ে নিচ্ছিলো দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের মধ্য দিয়ে, যারাই বৃত্তের ভেতর ঢুকছিলো, তাদের বসিয়ে দিচ্ছিলো। সিস্টেমটা খুবই কার্যকরী দেখলাম। তবে রাস্তায় প্রচুর অনর্থক খোড়াখুড়ি করা হচ্ছে দেখলাম। বড় বড় গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে শাহবাগের সড়কদ্বীপগুলোতে। সাবধানে চলাফেরা না করলে ঘটতে পারে যেকোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
রাতে প্রতিবাদী গান শুনতে পেটে হালকা শূন্যতা অনুভব করছিলাম। হঠাৎ দেখি মুড়ির গামলা চলে এসেছে। মুড়ি আর চানাচুর মাখা। অদ্ভুত খাবার। এক মুঠো তুলে নিলাম। ভ্রাতৃত্ববোধ এত সুন্দর ছিলো যে গামলা নিয়ে মুড়ি বন্টন করতে একটুও কষ্ট হচ্ছিলো না ছেলেগুলোর। মাঝে মাঝে উড়ে আসছিলো বিস্কুটের প্যাকেট। কোথা থেকে আসছিলো, খুঁজে বের করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। ব্যর্থ হয়ে প্যাকেট সাবাড়েই মনোযোগী হলাম। এরই মধ্যে চলে আসলো পানির বোতল। আশ্চর্যের ওপর এবার 'বেশি আশ্চর্য' হয়ে গেলাম। একেকটা বোতল দু'তিনজনে ভাগ করে শেষ করলাম। অনায়াসেই। এই জনতাকে দেখলে কে বলবে, এরা স্বার্থপর বিশ্বনিন্দুক আত্মকেন্দ্রিক বাঙালি? যারা রাস্তায় একটা ছিনতাই হতে দেখলে মাথা নিচু করে অন্যদিকে হাঁটা দেয়? যারা একটা মেয়েকে টিজিংয়ের শিকার হতে দেখলে উল্টো মেয়েটিকেই দোষ দেয়?
কিছু তিতে কথা
শাহবাগের আন্দোলনে সরব উপস্থিতির হার বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হতে হবে। সবাইকে। আর অনলাইনের অ্যাক্টিভিটিও বাড়াতে হবে। ফেসবুকে নিশ্চই আমরা অনেক আন্দোলন সম্পর্কিত লেখা শেয়ার করছি। ছবি শেয়ার করছি। স্ট্যাটাস দিচ্ছি। ফেসবুক কিন্তু খুবই দ্রুতগতি সম্পন্ন একটি ওয়েবসাইট। আজ থেকে পাঁচ দিন পর আরো পাচশ' রকমের শেয়ার, ছবি, ট্যাগ, স্ট্যাটাসের জ্বালায় এসব আন্দোলনের স্মৃতি চাপা পড়ে যাবে নিচের দিকে। সেই তুলনায় ব্লগ অনেক কার্যকর একটা প্ল্যাটফর্ম। যারা ফেসবুকে অ্যাক্টিভিটি বাড়িয়ে দিয়েছি, তাদেরকে অনুরোধ করবো ব্লগেও সমান মাত্রায় অ্যাকটিভ থাকতে। যারা সশরীরে শাহবাগে নেই, তারা ব্লগে বেশি করে আসুন। যারা আছেন, তারা তো আসবেনই। তাদের জন্য সেটা ফরজ। সবাই মিলে প্রাণবন্ত আলাপ তৈরি করুন। আন্দোলনের ঘটনা, ছবি, টুকরো স্মৃতি শেয়ার করুন। বিশেষ করে যারা বিদেশে আছি, তারা এই অংশগ্রহণের পুরোভাগে থাকার দায়িত্ব গ্রহণ করুন। আন্দোলনকারীরা যখন মাঠে-ময়দানে মিছিল-স্লোগান নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, তখন আপনারা এই জায়গাগুলোকে সচল রাখবেন। কাজ এটুকুই। শুধু প্রবাসীরাই না, সবাইকে এ আয়োজনে সবকিছু ভুলে অংশ নিতে হবে। এই ব্লগ পোস্টগুলো একেকটা বড় স্মৃতি হয়ে থাকবে। সময়ে এগুলো ইতিহাসের দলিল হয়ে সাক্ষ্য দেবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের এ সুযোগ ছিলো না। এখন আছে। নতুন দিনের ইতিহাসকে মুছে যেতে দেয়া যাবে না কোনোভাবেই। আসুন সবাই এক হই।
---
এই জনতাকে দেখলে কে বলবে, এরা স্বার্থপর বিশ্বনিন্দুক আত্মকেন্দ্রিক বাঙালি? যারা রাস্তায় একটা ছিনতাই হতে দেখলে মাথা নিচু করে অন্যদিকে হাঁটা দেয়? যারা একটা মেয়েকে টিজিংয়ের শিকার হতে দেখলে উল্টো মেয়েটিকেই দোষ দেয়?
ধন্যবাদ।
-একমত। আমি কয়টা ছবি তুলেছিলাম
একটা ছবি ডিস্টার্বড্ হয়ে গেলো কেমনে?! জামাত-শিবিরের চক্রান্ত মনে হয়
একমত
থ্যাংক ইউ প্রিয়, যে ছবিটা নষ্ট হইসে সেটা আবার দেন।
ক তে কাদের মোল্লা
তুই রাজাকার তুই রাজাকার
গ তে গোলাম আজম
তুই রাজাকার তুই রাজাকার
এই স্লোগান গুলো একটা পোস্টে রাখা প্রয়োজন... আপনার সংগ্রহে আছে?
ক তে কামরুজ্জামান
তুই রাজাকার তুই রাজাকার
গ তে গোলাম আজম
তুই রাজাকার তুই রাজাকার
ম তে মুজাহিদ
তুই রাজাকার তুই রাজাকার
ব তে বাচ্চু
তুই রাজাকার তুই রাজাকার
স তে সাঈদী চোরা
তুই রাজাকার তুই রাজাকার
স তে সাকা
তুই রাজাকার তুই রাজাকার
-হেইইইইইই্! বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ রাজাকারের বিরুদ্ধে কোন রায় দিয়েছে?
- দিয়েছে
- কোন সে রায়?
-ফাঁসি ফাঁসি
কফিন রেডি বডি চাই
রাজাকারের ফাঁসি চাই
মেইড ইন পাকিস্তান
জামাতে ইসলাম
রাজাকারের ফাঁসি হবে
পাকিস্তানের মাটিতে
একটা দুইটা শিবির ধর
ধইরা ধইরা জবাই কর।
একটা ভুল লিখেছি। ঠিক হবে এইটা
রাজাকারের কবর হবে
পাকিস্তানের মাটিতে
এটা খুবি সত্যি কথা যে, ফেসবুক থেকে তথ্য খুজে বের করা আর সাগরের মাঝে কিছু খোজা একি সমান
সব্বাইকে অনুরোধ ... ব্লগের পাতায় লিখে রাখুন
শুধু অনুরোধ না, সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুরোধ।
ছোট বেলার কথা মনে পইড়া গেল....
আসুন সবাই হাতে হাত রেখে রাজাকার নিধনে ঐক্যবদ্ধ হই।
বেত কাজ হবে না, বাঁশ দরকার ( বাকি সব কিছু হয়ে যাবে )
মিঠা-তিতা সবই আসলো। কিছু ছবি জুড়ে দিলে জমতো।
সহমত। সব ঠিক আছে এবং কিছু ছবির অভাব আছে।
আর লেখকের বক্তব্যের সঙ্গেও সহমত।
আমাদের ধমনীতে শহীদের রক্ত!
মন্তব্য করুন