যখন চোখের জন্য শরীরে কোনো পানি অবশিষ্ট থাকে না
তখন আমার একটা সিনেমা দেখতে খুব ইচ্ছে করে।
মেয়েটির প্রিয় ছিলো টিনের কৌটার আনারস। ছেলেটা তাই প্রতিদিন এক টিন আনারস কিনে ফিরতো বাসায়। তার বুকে আশা ছিলো, যতদিন টিনগুলোর এক্সপায়ারি ডেট থাকবে, ততদিনের মধ্যে মেয়েটি ফিরে আসবে। আর যদি মেয়েটি ফিরে না আসে, তাহলে ছেলেটা বুঝে নেবে তার ভালোবাসাও এক্সপায়ার্ড হয়ে গেছে। ছেলেটা বিশ্বাস করতো, জগিং এমন একটা কাজ যা করতে হয় একান্ত গোপনে। একা একা। জগিং করলে শরীর থেকে বাড়তি পানি ঝরে পড়ে, কান্নার জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। ছেলেটা কখনও কাঁদতে চায় না। ঠিক এক মাস পর, তার ২৫ তম জন্মদিনের আগের দিনে, জমানো টিনগুলোর ডেট এক্সপায়ার্ড হয়ে যায়। ছেলেটা ৩০ টিন আনারস একসাথে খেয়ে ফেলে এবং পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়। সে ভেবে নেয়, পাকস্থলীতে উপর্যুপরি অ্যালকোহল ঢাললে বমি হবে আর বমি হলে সংকট সৃষ্টিকারী বস্তুরা বের হয়ে যাবে। তাই ভেবে ছেলেটা একটা শুঁড়িখানায় চলে যায়। সেখানে দেখা হয় সাদা চামড়ার সানগ্লাস পড়া একটি মেয়ের সাথে। সেই মেয়েটি কথা বলার মুডে ছিলো না কিন্তু ছেলেটার তাকে ছাড়তেও ইচ্ছে করছিলো না। ছেলেটার মনে হচ্ছিলো মেয়েটি খুব একা। নাহলে রাতে সে সানগ্লাস পড়ে থাকতো না। রাতে কেউ তখনি সানগ্লাস পড়ে, যখন সে অন্যদের নিজের চোখ দেখতে দিতে চায় না। হয়তো সে চোখে জল জমে থাকে বলে। মদের টেবিলের এমন সিচুয়েশনগুলো সাধারণত বৃথা যায় না। তারা দু'জনও এক কথা-দুই কথায় ফ্রি হয়ে যায় এবং একসাথে পানাহার শুরু করে। এক সময় বারের ক্লোজিং টাইম হয়ে যায় কিন্তু দু'জনের একসাথে থাকার ইচ্ছে শেষ হয় না। যখন তাদেরকে উঠে যেতে বলা হয়, তখন মেয়েটি জানায় তার একটা বিশ্রামের জায়গা দরকার। ছেলেটা তাকে নিজের বাসায় নিয়ে যায়। মেয়েটি ঢুকেই ঘুমিয়ে পড়ে। ছেলেটা চার প্লেট শেফ সালাদ, বেশ কয়েক প্লেট ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং আরও নানারকম খাবার একাই সারা রাত ধরে বসে বসে খায়। দু'দুটো পুরোনো সিনেমা দেখে ফেলে। মেয়েটি বেঘোরে ঘুমুতে থাকে। ভোরবেলা ছেলেটা জগিং করতে বের হয়। যাওয়ার আগে মেয়েটির পায়ের জুতাগুলো খুলে নিজের টাই দিয়ে মুছে পরিস্কার করে রেখে যায়। ছেলেটা তার জমানো কথার কিছুই মেয়েটিকে বলতে পারে না। জগিং করতে করতে ছেলেটা নিজের পেজার ফেলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে জানে তার ভালোবাসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ভালোবাসার মানুষ আর খোঁজ করবে না। পেজারটা ফেলে সে বেশিদূর যেতে পারে না। তার আগেই কল আসে এবং সে জানতে পারে আগের রাতে দেখা হওয়া মেয়েটি চলে যাবার আগে তাকে শুভ জন্মদিন জানিয়ে গেছে।
যে দোকানে শেফ সালাদ পাওয়া যায়, সেখানে পাখির মতো সুন্দর একটি মেয়ে কাজ করে। আর পাশের রাস্তায় ডিউটি করে আরেকটা পুলিশ। আগের ছেলেটাও পুলিশই ছিলো। এবার আরও একটা পুলিশ এলো্। ওই দোকানের মেয়েটি উচ্চস্বরে গান শুনতে শুনতে কাজ করে। এটাই ওর পছন্দ। নতুন পুলিশটা জানতে চায়, মেয়ে তুমি আর কি পছন্দ করো? মেয়েটি বলতে পারে না। বলে, ভেবে বলবো। এই ছেলে আর মেয়ে দু'টোর মধ্যে প্রেম হয় না কিন্তু আবার একেবারে যে কিছুই হয় না তাও না। ছেলেটার পুরোনো বান্ধবী একদিন একটি চিঠি নিয়ে, ছেলেটাকে তার কাজের জায়গায় খুঁজতে যায়। ছেলেটা সেদিন কাজে যায় নি। তাই পুরোনো বান্ধবী চিঠিটা শেফ সালাদ যে দোকানে পাওয়া যায়, সে দোকানের মালিকের হাতে দিয়ে চলে যায়। চিঠির খামের ভেতরে ছিলো ছেলেটার বাসার একটা এক্সট্রা চাবি। যখন পুরোনো বান্ধবীর সাথে সম্পর্ক ছিলো, তখন ছেলেটা তাকে দিয়েছিলো। সেই চাবি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই পুরোনো বান্ধবী ওকে খুঁজতে গিয়েছিলো। দোকানের মালিক ও মেয়েটি অনেকবারই ছেলেটাকে চিঠিটা দিয়ে দিতে চায় কিন্তু ছেলেটা কখনো চিঠিটা নিতে চায় না। এভাবেই একসময় বাসার চাবিটা চলে যায় দোকানের মেয়েটির হাতে। সে চুপি চুপি, যখন ছেলেটা কাজের জন্য বাইরে থাকে, তখন ওই বাসায় গিয়ে বসে থাকতো। সেখানে সে টেডি বিয়ার আর অ্যাকোরিয়ামের মাছেদের সাথে খেলতো, পুরোনো বান্ধবীর পুরোনো কাপড় পরে আয়নায় নিজেকে দেখতো, ঘরটা বারবার ঝাড়ামোছা করতো এবং আরও অনেক পাগলামি করতো। সে একসময় ধরা পড়ে যায় ছেলেটার হাতে। খুব সুন্দর একটা সমাপ্তি আছে এই দু'জনের গল্পের।
এ দু'টো গল্প নিয়ে কি একটা সিনেমা হতে পারে না? নাকি হয়ে গেছে, আমি কিছুই জানি না?
---
নাহ, কমন পড়ল না!
ভাল লাগল ছেলেটার গল্প।
এমন সিনেমা আছে কি না জানা নেই, কারণ আমার সিনেমা দেখা হয় খুবই কম
দুঃখিত আমি সিনেমা বানাই না
চাংকিং এক্সপ্রেস। কিং শেফ স্যালাড না, শেফ স্যালাড। খিদা পেয়ে গেল।
সিনেমা বানানো হোক। দারুন
আমি সিনেমাটা যেনো কল্পনা করে ফেললাম। সত্যি কি বানানো যায় না?
মন্তব্য করুন