ইচ্ছে হলে ভালবাসিস , না হয় থাকিস যেমন থাকে স্নিগ্ধ গাংচিল
'শুধু মাঝে মাঝে মন খারাপ লাগে' লিখে কয়টা দিন আসলেই মন খারাপ ছিল। বাসার লোকজন লেখাটা পড়ে আমাকে প্রচুর স্বান্তনা দেয়ার চেষ্টা করলো। বিশেষ করে আম্মু। শুনে আমি হেসেছি। আর বলেছি, ইউ নো নাথিং জন স্নো।
আমার সবচেয়ে প্রিয় টিভি সিরিয়াল ছিল ফ্রেন্ডস্। খুবই সহজ ছিল সিরিয়ালটা। আজকালকার সিরিয়ালগুলা সহজে হজম হতে চায় না। ম্যাড মেন পর্যন্ত ভাল ছিল। গেম অব থ্রোন্সও ঠিক আছে। কিন্তু দি রোবট ইদানীং মাথার সবগুলো নিউরণ টেনে টেনে ছিড়ে দিচ্ছে।
কিছু একটা করা দরকার কিন্তু কিছুই করা হচ্ছে না। আগের লেখায় বলেছিলাম আমার রুমের নাম দিয়েছি গুহা। মীর্স কেভ। গুহায় বসে বাইরের সবার পদধ্বনি শুনি। বেশিরভাগই সাব-সাহারান। ওদের জীবন অপেক্ষাকৃত ফর্সাদের চেয়ে অনেক কালারফুল। মাঝে মাঝে প্রতিবেশি তাম্মাম এসে দেখে যায়, সবকিছু ঠিক আছে কিনা। আর আমি কাউচে আধশোয়া হয়ে বিড়ি টানি।
এই তো, সব কথা বলে দিলাম। বিশ্বাস করো আর না করো, দিন যাচ্ছে তুমুলগতিতে। পাশাপাশি আমিও ছুটছি। মাঝে মাঝে বর্তমান অবস্থার সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে যাই। দু'চারটা বাক্য বিনিময় হয়। আমি জিজ্ঞেস করি, হেই বর্তমান অবস্থা, কি অবস্থা? কেমন আছো? আমার বর্তমান অবস্থা উত্তর দেয়, ভালো কিন্তু খানিকটা স্লো। তুমি কি আর একটু জোরে ছুটতে পারো ব্রো?
বাইরে কোথায় যেন মিউজিক বাজছে। সম্ভবত কোনো এক ইন্ডিয়ানের রুমে। খুব কৌশলে ওস্তাদ ওদেরকে দিয়ে এক্সাক্টলি সেই মিউজিকটাই বাজিয়ে নিচ্ছে, যেটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে তোমার-আমার অসংখ্য স্মৃতি। সবকিছু বানের জলের মতো হুড়হুড় করে মনে পড়ে যাচ্ছে।
পলিনা শেষ লেখাটা গুগলে ট্রান্সলেট করে পড়ে আমাকে বলেছে, বাদ দাও পুরোনো জীবনের কথা। সামনে তাকাও। আমি সামনে এবং আশপাশে ভাল করে তাকিয়ে ওকে বলেছিলাম, লাভ কি? কোথাও তো সে নেই।
আসলেই আমার সামনে, পেছনে, ডানে, বামে, দরজার আড়ালে, বাইরের রাস্তায়, বিড়ি খাওয়ার ব্যালকনিতে, পাশের ডর্মিটরিতে, সত্যি কথা বলতে গেলে সাড়ে সাত হাজার কিলোমিটার রেডিয়াসের মধ্যে, কোথাও তুমি নেই। ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন মন খারাপ করে বসে থাকি, শুধু এই একটা কথা ভেবে।
তারপর এক সময় আস্তে আস্তে নিজেকে টেনে নিয়ে যাই ক্লাস-মেনসা-গেল্ড অটোম্যাট ইত্যাদির দিকে। তার আগে রাস্তায় কিছু চেনা-জানা মানুষের সাথে দেখা হয়। অথচ কখনো ভুল করেও তোমার সাথে দেখা হয় না।
মনে আছে, বিয়ের আগে আমাদের শেষ ঝগড়াটা কিভাবে শেষ হয়েছিল? প্রায় তিন মাস পর তোমাকে প্রথমবার দেখেছিলাম বইমেলাতে, ম্যুরাল নামের চমৎকার বইটা কিনে ফিরছিলে। হঠাৎ তোমার চোখে চোখ পড়ে গেল। তারপরও দু'জন দু'দিকে হাঁটছিলাম। জাস্ট চোখদেরকে ফেরাতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, ওরা অনন্তকাল একে অপরকে দেখতে চায়। এক অমোঘ আকর্ষণে আমরা দু'জন দু'জনের কাছে এগিয়ে গিয়েছিলাম।
আচ্ছা, ওইভাবে যদি আবার কখনো দেখা হয়, তুমি কি করবে? আমাকে চেনো না- এমন একটা ভাব করে সরে যাবে, ঠিক না? ভুলেও সেই কথা চিন্তা করো না, কেকে পামকিন? দি অনলি থিং ইউ ক্যান ডু ইজ, দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরা। চাইলে একটা পচিশ মিনিটের চুমুও দিয়ে দিতে পারো। আমি মাইন্ড করবো না।
আর তারপর আমরা দু'জন একে অপরের হাত ধরে হেঁটে হেঁটে পার হয়ে যাবো বিস্তীর্ণ সাইবেরিয়া। ঠান্ডায় জমে যেতে যেতে ভালবাসা বুঝে নেবো তোমার অনিন্দ্য সুন্দর দু'টো চোখ থেকে। আর আঙ্গুলের গোড়া দিয়ে হয়তো আলতো করে ছুঁয়ে দেবো তোমার গাল। আমাদের চুমুগুলো হয়ে থাকবে ঐতিহাসিক, চিরকাল।
তবে বিশ্বাস করো আর না করো, আই ডু নট কেয়ার। অ্যান্ড অলসো আই ডু নট নো। এই মহান সকালে যদি আর সবকিছুর বিনিময়ে তোমার সঙ্গে খানিকক্ষণ কুডল করার সুযোগ পেতাম, তাহলেই আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম। মাদার নেচার বিষয়টা জানে। তাই সে আমার জানালায় আছড়ে পড়ার জন্য এক পশলা তুমুল বৃষ্টি পাঠিয়েছে।
এনিওয়ে, যেহেতু তোমাকে একটা শক্ত জাপটানি দেয়ার সুযোগ আপাতত নেই, তাই ঘর অন্ধকার করে, কার্ট কোবেইনের মাই গার্ল শুনতে শুনতে এই হোমো লেখাটা লিখে ফেললাম। কেমন হয়েছে বলে যেও। এবং অতি অবশ্যই, ভাল থেকো পেন্টুশ। ভালবাসা নিও।
---
হুম
হুম মানে কি ভাইজান?
হুম মানে আপনার সার্বিক অবস্থা নিয়া এট্টু চিন্তিত ব্রো!
চিন্তায়েন্না ব্রো। আমি ভালই আছি, সারভাইভ করতেসি
পড়ে গেছে?ফলোআপ দিয়েন তো।
আচ্ছা দিবো। আছেন কেমন?
হুম
ইউ নো নাথিং জন স্নো
আমরাও মীরের সাথে গলা মিলাইয়া কইলাম... ভালো থাইকো পেন্টুশ
আমি তো জান্টুশ চিনি, পেন্টুস চিনি না
লেখাটা ভালো পাইলাম। এরম লেখা আজকাল লুকজন লিখে না। মাইনষে পেম ভুলে যাইতেছে। এমন দুনিয়া দিয়া কি করুম!!
লেখা ভাল পাইলেন জেনে খুশি হইলাম। আপনের লেখা কবে পাবো?
লেখাটা কপি কইরা রাখলাম। সময় মতো খালি কিছু এদিক সেদিন কইরা পাঠায় দিবো।
বইটার নাম ''মুরাল'' না সেই বইমেলার বেস্ট সেলার ছিলো ''ম্যুরাল'' নামক বইটা।
আর শেষমেশ খোঁজখবর কী নিছে?
রাসেল ভাই ভয় দেখান কেনু?
বইয়ের নাম এখনই চেঞ্জ করতেসি। বানাম ভুল হইছিল
ভালো লেখা কি না জানিনা, কিন্তু নিজেকে ২৫ বছরের যুবক মনে হলো। শরীরে একটা শিরশিরে অনুভূতি...। শুধু একবার যদি রিওয়াইন্ড করা যেতো সময়টা... হায় চিল, সোনালী ডানার চিল... ভালো থেকো পেন্টুস
ভাল থাকুক জগতের সব পেন্টুশেরা।
বহুদিন পর ব্লগে এসে আপনার দুটো লেখা পড়লাম এবং ক্রাশ খেলাম
লেখা স্বার্থক!!
মন্তব্য করুন