অমল ধবল চাকরি
আমি একটা পত্রিকায় লেখতাম। একদিন তারা জানাইলো আমারে তারা চাকরি দিতে চায়। চাকরির কাগজপত্র রেডি, আমি যোগদান করি যেন।
আমি করলাম না।
তখনো পর্যন্ত একটাই সিদ্ধান্ত, চাকর হইতে রাজী না।
মাসখানেক আটকায়া রাখনের পরে কর্তৃপক্ষের লগে মিটিং করলাম। শর্ত একটাই, আমারে আমার মতো থাকতে দিতে হবে। কাজ হইলেই হইলো। আমি কখন আইলাম গেলাম, এসব নিয়া মাথা ঘামানি চলবে না। তারচেয়ে বড় কথা, আমার পোশাক নিয়া কথা কওন যাইবো না। তারা রাজী হইলো।
আমি পয়লা চাকরীতে জয়েন করলাম, সে প্রায় একযুগ আগের কথা।
কিছুদিন পরেই নতুন জগতের নতুন চাকরির খবর। এখানে কোনো কর্তৃপক্ষ নাই। আমার মতোই চলবে সব। কাজটাও মনপছন্দের। রাজী হয়ে গেলাম।
কিন্তু পত্রিকাওয়ালারা ছাড়তে রাজী না। অগত্যা তারা জানাইলো যে শুধু শুক্রবারে বিকালে আইসা মাসে চাইরদিন অফিস করলেই চলবে।
আমি মাঝখানে দুইমাস দেশের দুই শীর্ষ কোম্পানীর বেতন খাইলাম। স্কয়ার আর বেক্সিমকোর।
কিন্তু তখনো নীতিবান ছিলাম। নিজের কাছে খারাপ লাগতো। কাজ করি না কিছু করি না। হুদাই দুই চাইরটা আইডিয়া দিয়া বেতন খাই।
ছেড়ে দিলাম।
তার বছরখানেক পরেই আমার চাকরি জীবনের শেষ হইলো। আমি নিজেই একটা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে গেলাম মুফতে। লাড়েলাপ্পা...
বিয়ে করলাম। বউয়ের ছাউ হবে। বউ সারাদিন একলা একলা বাসায় থাকে। ভাবলাম এই সময় বউয়ের পাশে থাকা দরকার। আমি বাণিজ্য বাদ্দিয়া ক্ষেপ বাণিজ্যে মন দিলাম। ঘরে বসে বসে লিখি, দিনের পর দিন ঘরেই থাকি। বাইর হই না। বউরে যে সময় দেই তা না, কিন্তু কোনো ঝামেলা হইলে তাৎক্ষণিক আমি পাশের ঘরে, এই বা মন্দ কী? দূরের অফিসে থাকার চেয়ে পাশের ঘরে বসে কাজ করাটা নিশ্চয়ই বউয়ের জন্য স্বস্তিদায়ক?
সেই থেকে ভয়ানক ঘরকুনো হয়ে গেলাম। আর কোথাও যেতে টেতে ইচ্ছা করে না।
বছরখানেক এভাবে কাটানোর পর, নিধি যখন একটু বড় হইলো। তখন ভাবলাম এবার আবার জগৎটারে দেখি।
এক জাতীয় দৈনিক অফার দিলো সপ্তাহে দুইদিন খালি হাজিরা দিলেই বেতন দিবে। তবু রাজী ছিলাম না। কিন্তু জোরাজুরিতে রাজী হয়ে গেলাম।
কতেক মাস পরেই বুঝলাম, এই জ্যাম প্রবন শহরে এখন আর আমার কোথাও যাইতে ভালো লাগে না। ছেড়ে দিলাম।
ক্ষেপের চেয়ে ভালো রাস্তা আর নাই। এটা সত্য। কিন্তু এরচেয়ে যন্ত্রণারও কিছু নাই। রাইত দিন চব্বিশ ঘন্টা নিজের কাছেই বন্দি।
গত একমাস মন খুলে কিছুই করতে পারি নাই কাজের অত্যাচারে।
ধুর, আর ভাল্লাগেনা...
স্বাধীনতার মনিহার আমায় নহি সাজে
আজকে মনে হইতেছে, একটা চাকরি করলে ভালো হইতো। ৯টা ৫টা অফিস করতাম। তারপর দুনিয়া গোল্লায় গেলেও আমার কোনো ঝামেলা থাকতো না
*
শিরোনামটা রাহাত খান থেকে টুকলি
ঠিক বলেছেন নজরুল ভাই।সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে ৭ টায় অফিসের গাড়ি ধরে সারাদিন কলুর বলদের মত খেটে রাত ৮ টায় রাস্তার জ্যাম ঠেলে বাসায় আসলেও রাতে একটা নিশ্চিত ঘুম দেয়া যেত। টেনশন করা লাগতো না।
আমারো মনে হয় .. আহা আপনাগো কত্ত শান্তি... আমাগোর মতন সাত সকালে আরামের ঘুম ফালাইয়া ছুটতে হয় না
রাতে ঘুমাই আর না ঘুমাই, সকালে উঠতে ইচ্ছে করুক আর না করুক সকালের লাখ টাকা দামের ঘুম ছেড়ে অফিসে ৯ টায় আসতেই হবে।ঘুম ঘুম চোখে বসে ব্লগ দেখছি কিন্তু বাসায় থেকে ঘুমাবো সেই সুখ নাই কপালে। শালার কেরানীর জীবন।বহুত সুখে আছেন নজরুল ভাই। সুখে থাকতে ভূতে কিলানির দুঃখে পাইলো আপনারে।
আপনার এক জীবন বটে!
অর্থনৈতিক মন্দায় পইড়া বিদেশী সংস্থার গদী উল্টানির পর ভাবছিলাম আতান্তরে পড়ব, পড়ি নাই।ঘরে বইসা গত দুই বছর ধরে অনুবাদ, দোভাষীর কাজ, টুকটাক লেখালেখির কাজে ভালই চলতেছে। আমারো মাঝে মাঝে মনে হয় একটা চাকরী থাকলে মন্দ হয়না। মিস করি বাসে চড়া,৯-৫টা কেরাণীগিরি।
শিরোনাম রাহাত খানের থেকে টুকলি না মেরে ব্যাকরণ বই থেকে টুকলি মারেনঃ সুখে থাকতে ভূতে কিলায়
ভাঙ্গারে ঝাঝা
একটাই কথা কওনের আছে!
নদীর এপার কহে....
নুশেরার কমেন্টটা পছন্দ হৈছে।
চাকরী করার সময় ভালো লাগে না আবার বাদ দিয়ে বাসায় বসে থাকতেও ভালো লাগে না। নজরুল ভাইয়ের হইলোটা কি?
নুশেরা ঠিকই বলেছে......।
নজু ভাই জান,
আমার অনেক বলার আছে, কিন্তু আজ না।
শুধু আমার অফিস ডিউটি আওর্যাস দেখুন -
শনিবার - সকাল ১১ টা থেকে রাত ৯ টা = ১০ ঘন্টা
রবিবার - সকাল ৮ টা থেকে রাত ৬ টা = ১০ ঘন্টা (লজ্জায় আরো বেশী থাকতে হয়!)
সোমবার - সকাল ১১ টা থেকে রাত ৯ টা = ১০ ঘন্টা
মঙ্গলবার - রাত ১০ টা থেকে পর দিন সকাল ৮ টা = ১০ ঘন্টা (নাইট ডিউটি)
বুধবার - অফ ডে
ব্রহস্পতিবার - সকাল ১১ টা থেকে রাত ৯ টা = ১০ ঘন্টা
শুক্রবার - সকাল ৭ টা থেকে রাত ৫ টা = ১০ ঘন্টা (লজ্জায় আরো বেশী থাকতে হয়!)
আমার বাসা থেকে আসতে যেতে সময় লাগে ২/৩ ঘন্টা, ফাল্গুনে, জ্যাম কঠিন।
দিনে ১০ ঘন্টা আমাদের কন্টাক টাইম! বছরিক ছুটি ২০ দিন। একটানা ৩দিনের বেশী ছুটি নাই। হলে বেতন কাটা। বুঝুন অবস্থা। বেতন - আহামরি কিছু নয়। তদুপরি - আমাদের মালিকের মুখ খারাপ, গালি ছাড়া কথা বলতে পারে না। দিনে দুই চারটা গালি তো আছেই।
চাকুরী করবেন?
তবুও করছি, কারন আমি বিবাহিত, রাত পোহালেই আমার, ওয়াইফ ও সন্তানের টাকা লাগে! হাহাহা.।
আসলে সবই ভাগ্য! নিয়তি!!
(চাই এক আর হয় আরেক, ভাবছি জীবনের শেষ চেষ্টা করব - আর একবার চাকুরী ছেড়ে দিব, অন্য কিছু করব!)
কাকার অফিসে কাম কি??????? রবিবার আর শুক্রবার আসলে লজ্জা পান কেন???????
ভাতিজা, আমি পাহারাদার। বসদের আগে অফিস থেকে বের হই কিভাবে? যখন তখন ডাকে! না পেলে জানতে চায় - কখন আসে, কখন যায়! উত্তর নাই।
এইটা তো রবীন্দ্র সংগীতের এডিটেড টাইটেল!!!
মূল গানটাও শুইনা দেইখেন, ভাল্লাগ্বে।
আর, লেখা? সেইটা তো বরাবরের মতই ভালো পাইলাম।
আহারে সুখ........ নয়টা-পাচটার জীবনেও সুখ আছে অবশ্য। রুটিনের মধ্যে ঢুকে যাওয়ার সুখ.....
চাকরি ভালো লাগে, আবার ভালোও লাগে না!
আমি নজরুল ভাই হইতাম চাই। নজু ভাই, আসেন বদলা বদলী করি।
বোহেমিয়ানের কমেন্টে সুতীব্র জাঝা!
আমি অনেক ভেবে দেখছি আমার একজন এরাবিয়ান শেখ টাইপের কাউকে দরকার। তার ১০১ নম্বর বিবি হলেই চলবে। চারটা গোল্ডেন ক্রেডিট কার্ড থাকবে, আনলিমিটেড। আমি সারা বছর এদিক সেদিক ঘুরবো, যা ইচ্ছে তাই করবো, খাবো, কিনবো।
যা যা আমার স্বপ্ন তা আমার সাধ্যে পূরন হতে ৫০০০০০০০ বছর লাগবে
সুতরাং বাসায় থাকি আর ছাদে কোনটাই আমার জন্যে লাভজনক না
নদীর এপাড় ওপাড় নিঃশ্বাস বিশ্বাস টাইপ আর কি !!!
নজরুলভাইকে অনেকদিন পর দেখলাম। নিধিমণি কেমন আছে?
নতুন লেখা দেন বস।
মন্তব্য করুন