আমিও একটু ধরাধরি করি [উৎসর্গ কানু গ্রুপ]
প্রচণ্ড ক্লান্ত। ঘুমাতে যাবার আগে আমার একটা ধরা খাওয়ার কাহিনী বলে যাই।
তখন স্কুলে পড়ি। সিদ্ধান্ত নিলাম পাড়ায় একটা অনুষ্ঠান করবো। মহল্লাবাজী আরকী। এসব সাধারণত বড়ভাইরা করে, কিন্তু স্কুলের শেষকালে নিজেরে তো বিরাট মনে হয়, আমরা কী করবো? তাই আমরাও একটা বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর নাটকের আয়োজন করে ফেললাম।
কিন্তু খরচ দিবো কে? এটা নব্বই দশকের শুরুর আমলের কথা। তখন হাজার কয়েক টাকা হইলেই এইরকম একটা অনুষ্ঠান নাজেল করে দেওয়া যাইতো। কিন্তু এই টাকাই পাই কই? বড় ভাইগরে ধরি, এরে তারে ধরে দুশো তিনশো টাকা করে যোগাড় করি। কাজল ভাইয়ের প্রেস থেকে অনুষ্ঠানের একটা আমন্ত্রণপত্র ছাপাই বিনা পয়সায়। সেইখানে লাইন ধরে অতিথি হিসেবে নাম ছাপাই যাদের যাদের টাকা দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই কার্ড এরে তারে দিয়ে কিছু টাকা নেই।
আমাদের মহল্লা বলতে গাবতলী মাজার রোডে। অনুষ্ঠানের দুদিন আগেও যখন আমাদের হাতে টাকা পয়সা ঠিকমতো আসছে না, তখন পাশের মহল্লার এক বড় ভাই বললো- আরে তোমরা জুয়েলের কাছে যাও, ওর তো টার্মিনালে বিরাট দোকান, তোমগো মহল্লায় বিয়া করছে, সেই হিসাবে তো তোমগো দুলাভাই লাগে। একটা দাবী আছে না?
পরদিন সকালে আমি আর মামুন একটা কার্ডের উপর বড় করে 'দুলাভাই' লিখে গাবতলী টার্মিনালে হাজির। দূর থেকে দোকানটা খুঁজে বের করি, কিন্তু ভেতরে ঢুকি না। দোকানের ভেতরে একটা মাত্র লোক, সে নিজেই জুয়েল দুলাভাই ভাই কী না তা জানি না। ঢুকি লাগোয়া হোটেলে। দুজনে মিলে পেটভরে লটপটি আর লুচি খাই। তারপর চা সিগারেট খেতে খেতে হোটেলের ছেলেটারে জিজ্ঞেস করি সে জুয়েল ভাইকে চেনে কী না? সে চেনে বলে জানায়। এবং জানায় জুয়েল ভাই এখনো দোকানে আসে নাই।
আমরা সিগারেটে শেষটান দিয়ে খুব ভাব নিয়ে পাশের দোকানে গিয়ে লোকটারে জিজ্ঞেস করলাম- ঐ মিয়া, দুলাভাই আহে নাই এহনো?
-কোন দুলাভাই?
-আরে ঐ যে, এই দোকানের মালিক জুয়েল ভাই... আমগো দুলাভাই লাগে তো...
-ও না, জুয়েল তো এখনো আসে নাই, একটু পরে আইবো, ক্যান?
-কাম আছে, আপনে কে?
-আমি এই দোকানে কাম করি...
-আইচ্ছা, তাইলে এই কার্ডটা রাখেন, আইলে দিবেন, কইবেন লালকুঠি থেকা আমরা আইছিলাম। বিকালে আবার আসুম। (স্মৃতি থেকে লেখা, ধারণাকেন্দ্রিক)
তো আমরা চলে আসলাম। তারপর বিকেলে সেই বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হতেই ঝাড়ি... হৈ মিয়া, তোমরা কী করছো এইটা?
দোকানে তখন আমাদের দুলাভাই [!] জুয়েল ভাই স্বয়ংই উপস্থিত ছিলেন, হোটেল বয়ের ভুল ইনফর্মেশন পায়া আমরা...
উনি অবশ্য তিনশ ট্যাকা দিছিলেন...
[এই গল্পটার কথা ভুলেই গেছিলাম। আজকে পিকনিক থেকে ফেরার পথে পুরনো সেই মহল্লায় নেমে গেলাম আমি। স্কুলের বন্ধুদের রিইউনিয়নের কাজ চলছে, চান্দাবাজী চলছে, অনেক বছর আগের এই গল্পটা হুট করেই মনে পড়লো]
নাজু ভাই পিকনিকের পোস্ট কই?
ফ্লোরে শুইয়া নৌকায় দাড়াইয়া তো অনেক ছবি তুলছেন দেখলাম। জলদি পোস্ট চাই
@ শাতিল
সেই পোস্ট দেওনের এনার্জি নাই এখন, পরে দিমুনে। কিন্তু আপনে ছবি দেখলেন কই?
টুটুল ভাই দেখাইলো
ফাংশনের টাকা নাই আবার লুচি - লটপটি !!!!
আমিও ফটুক দেখতে চাইইইইইই
আরে বাবা, লুচি লটপটি বা তারো চেয়ে মজাদার খাওনের জন্যই তো চান্দাবাজী... ফাংশান তো এমনেও হইবো অমনেও হইবো...
পিকনিকের সচিত্র বিবরণের আগে আর কোনকিছু চাই না...
তবে আপনাদের কীর্তিকলাপ পড়ে টেনিদা এন্ড কোং এর কথা মনে পড়ে গেলো
পিকনিকের সচিত্র বর্ণনা শুরু হবে আজকে থেকে। এবিতে কয়দিন শুধু পিকনিক পোস্টই থাকবে মনে হয়। আমার অনুরোধ থাকবে প্রত্যেকেই নিজের মতো করে পিকনিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করুক।
ভালো কথা, উৎসর্গ কই?
দিছি তো!
কাইল থেইকা দেখতাছিলাম, পয়লা পাতায় পোষ্ট থাকুক আর না থাকুক, সব খালি কানু গুরুফ রে উৎসর্গ করা হৈতাছিলো....ভাবতাছিলাম, পীর হৈয়া গেলো নাকি?
এইখানে আইসা বুঝলাম, উৎসর্গ দেখি চান্দা আদায়ের মত নেয়া হৈতাছে......ইয়া মালিক!!!!!
পুলাপান বেশী বেশী বুজতেছে। কেউ কি কাউরে কয়া দিছে , কারে উৎসর্গ করতে হইবো? সবাই বুঝদার মানুষ, যারে যোগ্য মনে করছে তারে উৎসর্গ দিছে
বিলাইসব খানে ম্যাও ম্যাও করে কেন; পোস্ট লাইক্কর্লাম
আমার কাছাকাছি এক ধরা কাহানি আছে
লিখে ফেলেন
টাকা তো পাইছিলেন, তাইলে আর বড়সড় ধরা কৈ?
দুলাভাইরেই না চিইনা যখন শালাগিরি ফলাইলাম...
ও ... এর লাইগ্গা মিরপুর নামলেন?
ধরা ভাল্লাগছে
হ, হঠাৎ কইরা মনে হইলো মিটিংটা সাইরা যাই। নাইলে আজকে যাইতে হইতো
ধরার গিট্টু টা কষা হৈছে......শালা-দুলাভাই সম্পর্ক জিন্দাবাদ......
আমি কখনো ধরা খাইছি কি না, মনে করার চেষ্টা কর্তেছি। মনে পড়লে আম্মো লিখবো।
সবচেয়ে ভদ্র ধরা খাওয়ার কথা কইলেন মনে হয়।
হেহে!!! আমারো টেনিদার কথা মনে পড়ল । খাই খাই পাট্টি
মন্তব্য করুন