হ্যাডম ইন্সপেক্টর!
বাংলাদেশে পিডিএ নিষিদ্ধ না নাকি পিয়াল ভাই! বছর খানেক আগে প্রশ্নটা করেছিলো অরূপ। কথাটার অর্থ বুঝিনি, ধরে নিয়েছিলাম ওর মতো মানুষ যখন বলছে তখন বিষয়টা কোনো হাইটেক গ্যাজেট হবে। এরপর সে ব্যাখ্যা দিলো পিডিএর- পাবলিক ডেমোনেস্ট্রন অব অ্যাফেকশন। অন্যভাবে বললে দিনদুনিয়া ভুলে যাওয়া। আরেকটু কঠোর ভাষায় -প্রকাশ্য বেলেল্লাপনা। ধানমন্ডী লেকে কয়েকটা ঘটনা দেখে জানতে চেয়েছিলো অরূপ। উত্তরটা দেওয়া হয়নি।
আমার ইদানিং খুব আক্ষেপ হয় ২০ বছর পরে জন্ম না নেওয়ার জন্য। ইদানিং প্রেম করিয়েদের যে সুযোগ সুবিধা তার ছিটেফোটাও পেলে জনমটা স্বার্থক ঠেকতো। চিঠি চালাচালির সময় মুহূর্তের ভগ্নাংশের সেই হাত ছোঁয়ার আবেশ নিয়ে গোটা সপ্তাহ কাটিয়ে দেওয়ার প্রাচীনতা ভাবলেই নিজেকে যাদুঘরের মমি মনে হয়। ঘটনা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার। অফিস থেকে বাসায় ফিরছি, সঙ্গে এক ছোটোভাই। রমনা থানার উল্টো দিকের মোড়টায় দাড়িয়ে পার হবো রাস্তা। চোখ পড়লো রিকশায় এক জুটির দিকে। ছেলেটার বয়স মেরেকেটে উনিশ-বিশ, মেয়েটার আরো কম। অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিলো অনুরোধের ধরণ। দৃশ্য মাঝে একটা গাড়ি চলে আসায় পরের অংশটুকু বুঝে নিতে হলো। বিটিভি সেন্সরশিপের সুবাদে এগুলো আবার আমরা ভালোই বুঝি।
জ্যাম ছাড়লো, রাস্তা পেরুলাম আর ঘটতে থাকলো ঘটনা। জুটির রিকশা থামালো একটা পুরুষ জুটি। দুই তরুণ, বয়স ২৩-২৪। নেমেই ছেলেটাকে সপাট চড়। আওয়াজটা স্পষ্ট শোনা গেলো, আহত ছেলে অনেকক্ষণ গাল থেকে হাত নামাতে পারেনি। সঙ্গে খুব অশ্লীল ভাষায় মেয়েটাকে গালাগালি। একজন পারলে তাকে চুমু খায়। চলার পথে দৃশ্যটা থমকে দিলো আমাদের মতো বেশ কয়েকজন পথচারীর। এবার আবির্ভাব এক যুবকের। একটু সিনিয়র, ২৭-২৮। সে ধরলো ওই দুই তরুণকে। এইটা তোমরা কি করলা! একজন বললো- ‘ভাই দেখছেন ওরা কি করতেছিলো, রাস্তাঘাটরে আম্রিকা বানাইয়া ফেলছে, বেয়াদব কতগুলা।’ ‘তাতে তোমার কি অসুবিধা। তুমি কেনো গায়ে দিলা! পায়ে ধইরা মাফ চাও।’
তিনমুখী এই বাদানুবাদে আমরা দর্শকরা ভুলেই গিয়েছিলাম এলাকার কথা। দেওয়ালের ওপাশে আসল ওস্তাদেরা বসে আছেন। তাদের কয়েকজন চা সিগারেট খাচ্ছিলেন রাস্তার ওপারে (থানায় ধুমপান নিষেধ)। এবার তারা আসলেন। জানতে চাইলেন কি ঘটনা। তারপর সবাইকে নিয়ে গেলেন ভেতর অতিথি হতে। খুব ইচ্ছে ছিলো শেষ দৃশ্যটা দেখার। কিন্তু তাড়া থাকায় সম্ভব হয়নি। নিশ্চয়ই সবপক্ষই খুশী হয়েই বের হয়েছে সেখান থেকে। কারণ সব কটি চরিত্রই বেশ পয়সাওয়ালা ঘরের মনে হয়েছে। আর কে না জানে কোথায় কিসের কদর।
শেষ কথা :শিরোনামে গানটা দেশী এমসি’স নামে একটা বাংলা ব্যান্ডের, পোস্টের ঘটনাটার সময় কেনো যেন এটাই মাথায় এসেছিলো, বিমার কাছে থাকলে পাঠানোর অনুরোধ রইলো। ওদের ব্যানড অ্যালবামে গানটা পেলাম না।
অসুবিধা নাই, আস্তে আস্তে সবার চোখের অভ্যাস হইয়া যাবে
কথা সেইটাই অভ্যস্ত চোখ এখন বারবার দেখতে চায়
অনেকদিন-অনেকদিন পর অরপি'র পোস্ট পড়লাম। যথারীতি দারুণ এবং অভিনব বিষয়বস্তু। তবে লেখাটা আরো বড় হওয়ার ন্যায্য দাবি রাখে। ওই যে লিখলেন না, তাড়া থাকায় শেষ দৃশ্য দেখা সম্ভব হয় নি। আমারও কিন্তু মনে হচ্ছে পোস্টটিই বুঝি শেষ হলো না। তার আগে কথক তাড়াতাড়ি করে উঠে গেলেন।
যাক, তবুও ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা রইলো।
আসলে চাকরি নিয়া ভীষণ ব্যস্ত আছি, টাইমই পাই না। সেইদিন নজরুলের পুরানো এক পোস্ট দিয়া আবার ঢুকলাম। পড়ার জন্য ধন্যবাদ
আমিও আপনের মতো ব্যাকডেইটেড আছি
আমি ঠিক ব্যাকডেইটেড না, লিখলাম আর কি
মাগার পিয়াল ভাই ... দেশি এমসি'স এর (ব্যানড , ব্যানড ভার্সন টু) দুইটা এ্যলবামেও তো 'হ্যাডম ইন্সপেক্টর' নামে কুনু গান পাইলাম না
হ, তাইতো দেখতেছি, তয় আমি শুনছি গানটা, কোনো গানে আছিলো মনে হয় তাইলে, দেখি ঢাকাইয়া গ্যাংস্টাজ শুইনা
রিকশায় এমন অনেক কিছুই চোখে পড়সে। ঢাকা ভার্সিটিতে সন্ধ্যায় হাঁটলে ফুটপাতে তিনফুট দূরে দূরে জুটি বসে থাকে (মাঝেমাঝে একটু বেশিই আগে এইটা), এমনিতে অত গায়ে লাগে না। কারো খারাপ লাগলে তার না দেখাই উচিত। একটা লিমিটের মধ্যে রাখা উচিত যদিও, মনে হয়। লিমিটের সংজ্ঞা পরিস্থিতিই ঠিক করে দেয়, তবে মিনিমাম একটা প্রাইভেসির সেন্স থাকা উচিত। কিন্তু একটা ছেলে একটা মেয়ে রিকশায় একটু অন্তরঙ্গ হয়ে বসে থাকলে বা চুমু (pecking) খেলেই "দেশ আম্রিকা হয়ে গেল" বলে চিল্লাচিল্লি করাটা ফালতু লাগে, এবং সবসময় উদ্দেশ্যটাও এদের খুব সৎ থাকে না।
অমি ভাই কি দেখসেন, জানিনা অবশ্য।
ব্যাপারটা শুধু চুমুতে আটকে ছিলো না, একটু জাপটাজাপটিও ছিলো
নাউজুবিল্লাহ!! দেশ তো রসাতলে গেল দেখি!
হাহাহা, রসাতলে যাইবো ক্যান! এইসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা, লাখে একটা। পোলাপাইন চিপা চিনে, যারা পায় না, তারাই পাগল হইয়া যায়
আসলে এত মজার একটা পোষ্টে আঁতলামি করতে ইচ্ছা করছে না। কিন্তু কথা গুলো মনের ভেতর আকুলি বিকুলি করছে--- বলেই ফেলি।
আমি জাপানে আছি, গত পাঁচ বছর। এখানে প্রকাশ্যে এরকম দৃশ্য দেখা যায় না বল্লেই চলে। গত পাঁচ বছরে আমি দেখিনি।এদের আকাশ সংষ্কৃ্তির ক্ষেত্রে অনেক নিয়ম নীতি আছে।
আমার মনে হয়, আমাদের দেশে এসবের পেছনে বড় একটা কারণ ইন্ডিয়ান সংষ্কৃ্তি। এ দেশে সিনেমা মানেই, সুড়সুড়ি দেওয়া যৌনতা নেই।
আমি কোন কিছুর বিপক্ষে নই, কিন্তু মার্জিত ব্যবস্থা সবার ই কাম্য হওয়া উচিত..
আতলামী ভালো হইছে, আপনার পয়েন্টটা সঠিক। পোষাক অ্যাটিচুডে স্টার প্লাসরে ফলো করার প্রবণতা আছে নতুন জেনারেশনের
এ দেশে মানে, জাপানকে মীন করেছি। কিন্তু ইন্ডিয়ার দিকে দেখুন এবং এগুলো সারাক্ষণ আমাদের দেশী চ্যনেলে চলছে..
জাপানে যারা বাংগালী আছেন, তারা ছেলেমেয়েদের নিয়ে দেশে ফিরলে, প্রথম কিছুদিন তাদের বাচ্চারা হিমশিম খায় দেশী বাচ্চাদের সাথে তাল মেলাতে।
বুদ্ধিতে যত না দেশী বাচ্চারা এগিয়ে, তার চেয়ে অনেক বেশী এগিয়ে অকালপক্কতা, কূটকৌশল আর ডেঁপোমিতে। (তাই বলে সবাই নয়, বেশীর ভাগই এমন) এটা বাচ্চাদের দোষ নয়, সিষ্টেমের----।
আঁতলামোটা কি একটু বেশী হয়ে গেল?
না, ঠিকই আছে
আমার কোন হ্যাডম নাই!
মুকুলের কমেন্ট দেইখা হাসতেই আছি ...
পিয়াল ভাইরে দেখে ভাল লাগতেছে।
পোস্ট'র ব্যাপারে কমেন্ট করার কিছু নাই, দেশ রসাতলে গেলে কার কি!
যে দেশ একটা জুটিকে নিরিবিলতে বসার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে না, সেই দেশে এই ধরনের পিডিএ থাকাও উচিত না। দুইটা পোলা-মাইয়া চুমু খাবে-জাপটা-জাপটি করবে, এতে অন্যদের চোখ টাটানোর কারণ হলো তারা এখনও এই কাজগুলা করার সামর্থ্য অর্জন করতে পারে নাই। ব্যর্থতা অন্যের সাফল্যকে ঈর্ষাতুর করে, অন্যের সাফল্যকে আঘাত করতে চায়!
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন
মন্তব্য করুন