শেরিফ আল সায়ার'এর ব্লগ
গল্প: গরিবের অসুখ
আমার বাপজান হইলো গিয়া কাঠ মিসতিরি। এই ধরেন, আপনাগো বাসা-বাড়িতে যেই টেবিল-চেয়ার আছে এসব বেবাক বাপজান বানাইয়া দিতে পারবো। বাপজান মাঝে মইধ্যে কয়, চলতে চলতে বলে কাম করে। এই ধরেন, কাঠের যে দোকানগুলা থাহে না? ওইহানে হুটহাট কামের লোক লাগলে বাপজান কইরা দেয়। আমারে কয়, হে-য় টেবিল-চেয়ার বানাইতে পারে। আসলে কচুডাও পারে না। পোলার কাছে ভালা হওনের লাইগা এসব কয়। তয় ওই যে চেয়ার টেবিলে যে রঙ করে এইডা ভালো পারে। আমি নেজ চোহে দ্যাখছি, এর জইন্যেই কইতে পারি।
ভাবতে পারেন, পোলায় এত বাপ বাপ করে ক্যা? মায়ে কই? মা কাম করে মাইনষের বাড়ি। কার বাড়িত কাম করে কেমনে কমু? মায়ে খালি সকালে ঘুম থেকা উইঠা দেয় দৌড় আর আহে হেই সন্ধায়। আমগার জইন্যে ভাত আর বাসি তরকারি লইয়া আহে। এট্টু গন্ধ লাগলেও প্যাট ভইরা খাই। প্যাট ভরন দিয়া কথা।
মাঝে মইধ্যে মায়েরে জিগাই, আম্মা তুমি বাসি খাওন আনো ক্যান? হেরাও কি বাসি খায়?
ব্লগার রাসেল পারভেজের সাক্ষাৎকার (প্রসঙ্গ শাহবাগ আন্দোলন)
ব্লগার রাসেল পারভেজ মারা গেলেন ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০। তার সঙ্গে আমার ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে দীর্ঘ আলাপ হয়। শাহবাগের ওপর গবেষণা কাজ করতে গিয়ে তার একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ হয় সেসময়। সেই সাক্ষাৎকারের একটি অংশ প্রকাশ পায় ‘শাহবাগের জনতা’ গ্রন্থে (২০১৫)। সেই অংশটিই পুনপ্রকাশিত করলাম ব্লগে।
তার সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় অংশ অপ্রকাশিত। কথা ছিল দীর্ঘ সময় পর সেটি প্রকাশ করার। অপ্রকাশিত অংশটি নিশ্চয় প্রকাশ করবো কোনো একদিন।
প্রশ্ন: শাহবাগ আন্দোলনটা যে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখ শুরু হলো,এখানে আপনার যুক্ত হওয়াটা কীভাবে হলো?
পিএইচডি অ্যাপলিকেশন ব্যর্থ হওয়ার অভিজ্ঞতা: পর্ব ১
অনেকেই যখন পিএইচডি করতে যায় তখন বেশ জ্ঞাননির্ভর পোস্ট দিয়ে ব্যাখ্যা করে কিভাবে কিভাবে সে পিএইচডি পেলো। এই জ্ঞানটা নিশ্চিতভাবেই খুব জরুরি। তাদের নিয়মগুলো, পরিশ্রমগুলো থেকে হবু পিএইচডি করতে আগ্রহীরা অনেক কিছু শেখে।
তবে আমার মনে হলো, আচ্ছা ব্যর্থ পিএইচডি অ্যাপলিকেন্টদের অভিজ্ঞতাও জানানো জরুরি। এটাও হবু আগ্রহীদের কাজে দেবে। যদিও যারা আমার মতো পিএইচডি ফান্ড পায় না তারা লজ্জায় বলেও না। আমি তাই ভাবলাম নিজেরটাও তুলে ধরি। ব্যর্থতার কথা কেউ তো বলে না। বলে সফলতার কথা। আমি না হয় ব্যর্থতার কথা বলেই যা যা শিখলাম সেটা জানালাম। বিষয়টা হলো, আমি চেষ্টাটাকে চালিয়ে যাইনি। কেন পস দিয়ে রেখেছি। সে ব্যাখ্যা দ্বিতীয় পর্বে বলবো। আপাতত গল্পটা শুরু করা যাক---
ওয়ার ক্রাইমস ফাইল- এর পরিচালক নন বার্গম্যান!
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্রের মধ্যে অন্যতম “ওয়ার ক্রাইমস ফাইল”। এমনকী বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে এটাই প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত তথ্যচিত্র। ১৯৯৫ সালে তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করে অালোচনায় অাসেন বাংলাদেশে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যান। বেশ কয়েকটি অনলাইন সূত্রে উল্লেখ অাছে ডেভিড বার্গম্যান ওই তথ্যচিত্রের পরিচালক। বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে “ওয়ার ক্রাইমস ফাইল” তথ্যচিত্রের পরিচালক ছিলেন হাওয়ার্ড ব্র্যাডবার্ন। তথ্যচিত্রটিতে একজন প্রতিবেদক হিসেবেই কাজ করেছেন বার্গম্যান।
যাপিত জীবনের অজানা ইতিহাস
নর্দমা থেকে উঠে আসা মাছিটা প্লেটের ভাতের উপর পড়লো। খুবই বিরক্তিকর। এই আকাল সময়ে, অভাবের ভেতর যখন একপ্লেট ভাতের মূল্য অনেক, তখন হারামজাদা মাছি পাশের নর্দমা থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসলো। তার পায়ে নিশ্চয়ই পাশের বাড়ির দারোয়ানের পেশাপ লেগে আছে। পাশের বাড়ির দারোয়ান শেখ মতিন প্রায়ই এ নর্দমায় তার কাজ সারে। হলদে পেশাপের গন্ধে টিকা মুশকিল। তবুও এ নর্দমা ঘেষা টিনের ঘরেই আমাকে বাস করতে হয়।
কংক্রিটের অবহেলার মিথ্যামাখা শহরে নর্দমার পাশে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাওয়ার গল্প এ দেশের ইতিহাসে লেখা হবে না। রাষ্ট্র তো যুদ্ধের কথা পুঁথিবদ্ধ করে কিংবা রাজনৈতিক চোরদের কথাও লিখে রাখে। কিন্তু আমার মতো গ্রাম থেকে উঠে আসা গরীব সংসারের ছেলেরা প্রতিনিয়ত নিজের ভাগ্য ফেরাবার চেষ্টায় যে সংগ্রাম, যে যুদ্ধ করে চলে তাদের কথা কোথাও কখনও লেখা হয় না।
হতে পারে, যদি আমি মহান কোনো ব্যক্তিতে পরিণত হই। তখন আমার কষ্টের গল্প মানুষ শুনতে চাবে, পড়তে চাবে। তারপরও এ কষ্ট, এ বঞ্চনা, এ গ্লানিবোধ কেউ কখনও অনুভব করবে না।
গল্প: গরুচোর কাশেমের গল্প
কাশেমের গরুর গোশত্ খুব পছন্দ। প্রতিরাতে তার গো গোশত্ চা-ই, চাই। বউরে সবসময় বলে রাখে, প্রতি রাইতে আমারে গরুর গোশত্ দিবা। বউ প্রায়ই বলে, আপনে গরু খাওন বন্ধ দেন। গরু খান আর আমার উপর অত্যাচার করেন।
কাশেম মুচকি হাসে। বউরে জড়িয়ে ধরে। গালে চুমু খায়। তারপর বলে, তুমিই তো আমার পেয়ারে গাই।
বউ আল্লাদের সুরে সুরে বলে, উউউ... আপনে আমারে গাই বলতে পারলেন?
দুজনে এরপর ভালোবাসাবাসি করা শুরু করে। দুজনের পেয়ার বেশ। জীবনের বড় সময় দুজন একসঙ্গেই পার করে দিয়েছেন। সন্তান আছে দুইজন। একজন সৌদি থাকে, আরেকজন পাকিস্তান।
দুইজনই পুত্র। মাশাল্লাহ দিলে দিনের পথেই আছে। সৌদিতে আল্লাহর দরবারে ইবাদত বন্দেগী করে। আর কাজ করে। কিসের কাজ করে তা অবশ্য কাশেম বলতে পারবে না। কিংবা এ সংক্রান্ত তথ্য জানলেও কাশেম কখনও প্রকাশ্যে কিছুই বলেনি। তাই আমরাও জানতে পারি না কাশেমের বড় পুত্র কুদ্দুস মোল্লা সৌদিতে কি করে।
গল্প: আওয়াজ
-স্যার, ঘুমাচ্ছেন?
- না, মোকাররম। চোখ বন্ধ করে ছিলাম। বলো কি বলবা।
-ছাত্ররা স্যার আপনার বিরুদ্ধে আলাপ সালাপ শুরু করেছে।
-কোথায়?
-টঙ দোকানে। নিজেদের আড্ডায়।
-করুক। ছাত্রদের কাজই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কথা বলা। ওই বয়সে আমিও বলেছি।
- যে কোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে স্যার। তাই বলছিলাম...
- বিগড়াবে? কী আর হবে? বিপ্লব হবে?
- হতেও পারে স্যার।
- ভয় পেও না মোকাররম। আজকাল ছেলেপেলেরা বিপ্লব কি জিনিস বোঝে না। তাদের জন্ম বিপ্লবের জন্য হয়নি। তারা কাপুরুষ। পুলিশের ডান্ডার বাড়ি খেলে সুরসুর করে ঘরে চলে যাবে।
- নাও তো যেতে পারে স্যার।
- যাবে না? না গেলে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেব। তারা হলো চাকরির জন্য পড়ে। এ ভয় সামলানোর ক্ষমতা তাদের নেই।
- তবে স্যার, অবস্থা ক্রমশ আপনার বিপরীতে যাচ্ছে। শুনেছি প্রক্টর তাদের পক্ষে যাচ্ছে।
নিছক প্রেমের গল্প
ভালোবাসার অর্থ কি?
জানি না তো!
প্রেমর অর্থ কি?
জানি না তো!
অনুভূতি কাকে বলে?
জানি না তো!
যখন কেউ তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে; তখন তোমার ভেতরটা কি নাড়া দেয়?
কই, না তো!
ধূর! তোমার এই ‘না তো’ দুটি শব্দ ছাড়া আর কিছু নেই?
হা হা হা। না নেই।
আচ্ছা তোমার সাথে কি সারা জীবন আমার এসএমএসে কথা বলতে হবে?
তাও তো জানি না।
তুমি কি কোনদিন আমার হাত ধরবে না?
হাত ধরবো কেন?
ওমা! আমি তোমাকে ভালোবাসি যে!
ভালোবাসলেই হাত ধরতে হয়?
অবশ্যই! হাত ধরে চুপ করে আমরা দু’জন চোখ বন্ধ করে রাখবো।
তারপর?
তারপর আর কি। ভালোবাসার আবেগটাকে ভাগাভাগি করে নেবো।
তুমি এতো স্বপ্ন কীভাবে দেখো?
স্বপ্ন ছাড়া কি মানুষ হয়? কেন তুমি স্বপ্ন দেখো না?
স্বপ্ন কীভাবে দেখে?
তার মানে কি হলো? ফাজলামি করো?
হা হা হা।
এই হাসি আর কতদিন? দুই মাস কিন্তু পার হয়ে যাচ্ছে।
আপনার কি মনে হয়?
বহুদিন থেকে একটা বিষয় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সেটা হলো বর্তমান তরুণ প্রজন্ম ঠিক কোন বিষয়টি নিয়ে ভাবে। ঠিক কোন বিষয়ে তাদের ইন্টারেস্ট গড়ে ওঠেছে। উত্তরটা খুব সহজ আবার উত্তরটা খুব কঠিন। একটা সময় গেছে যখন তরুণদের সময় গেছে বিপ্লব করে করে। আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে অনেকগুলো দশক পার হয়ে গেছে। সেটা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত গড়িয়েছে। এরপর আবার স্বৈচার বিরোধী আন্দোলনে সময়েও ছিল তরুণেরা।
তাই প্রশ্নটা এলো। বর্তমান প্রজন্ম কি নিয়ে ভাবে? আমি এমন অনেককে চিনি যারা দেশকে গালি দিয়ে মোটামুটি গোষ্ঠী উদ্ধার করে। কেউ কেউ দেশের রাজনীতি নিয়ে তর্ক বিতর্ক শেষে একমত হয় যে, ‘এই দেশের খুব কিছু উন্নতি হওয়ার নয়। কারণ রাজনীতি আমাদের বারবার ১০০ পা পেছনে নিয়ে যাচ্ছে। ’
গল্প: হাল্কা প্রেমের গল্প
রাত হয়েছে। হিম শীতল হাওয়াতে জড়িয়ে যায় সাবেত। কিছুক্ষণ পরপর গাড়ির হর্নের আওয়াজ আসে। খুব জোরে নয়। মনে হয় আওয়াজগুলো খুব চুপে চুপে রাতের নিরবতা ভেদ করে এগিয়ে আসে। কিংবা আওয়াজটা সাবেতের কাছ হয়ে আরও দূরে গিয়ে হারিয়ে যায়।
সাবেতের হাতে সিগারেট। ধোঁয়া উড়ে। ধোঁয়াও হারিয়ে যায় বাতাসে।
বিষাক্ত ধোঁয়া কি বাতাসে চিরকাল থেকে যায়? এমন প্রশ্ন হুট করেই তার মনে আসে। সে ভাবে; আর সিগারেটে ফু-লাগায়। ধোঁয়া আবার বের হয়। আবার হারিয়ে যায়। ধোঁয়ার সাথে বাতাসের খেলা। মজা লাগে।
এমনই খেলা সে শুরু করেছিল মাসখানেক আগে। বন্ধুদের সাথে খেলা। অফিসে নতুন জয়েন করা সিনিয়র ম্যানেজার ম্যাডামের সাথে খেলা।
ম্যাডাম দেখতে সুন্দর না। চেহারাতে বয়সের ছাপ আছে। বয়স হবে ৩৫ কিংবা ৩৬।ম্যাডাম খুব স্মার্ট। কথা বলার ভঙ্গিটা খুব সুন্দর। মায়া লাগে।
গল্প: মজনু
অন্ধকারে মিটিমিটি আলো জ্বলে। কালা কুচকুচা একটা মেয়ে বিড়াল মেউ মেউ করে হুট করে দৌড় দেয়। মনে হয় কেউ বিড়ালটাকে দৌড়ানি দেয়। বিড়ালটা হারিয়ে যায় অন্ধকারে।
ঝি ঝি পোকা ডাকে। মনে হয় তাদের নিশ্বাস নেয়ার প্রয়োজন হয় না। কিংবা ঝি ঝি করে ডাকাটাই তাদের নিশ্বাস নেয়া।
মাঝে মাঝে দূর থেকে কান্নার আওয়াজ আসে। গোঙানো কান্না। শুনশান নিরবতার মাঝেও পাহারাদার নিরবতা ভাঙতে চায় তার বাঁশির আওয়াজ দিয়ে। হঠাৎ পাতা ভেঙে যাওয়ার আওয়াজ আসে। মনে হয় কেউ হেঁটে যাচ্ছে।
দূরে দেখা দেয়া যায় শুধু ঘুটঘুটে অন্ধকার। শুধুমাত্র হাঁটার জায়গাটাতেই আলো পড়ছে মিটিমিটি। এর মাঝেই মজনু তার বন্ধুদের সাথে গাঁজা টানে। মজনু গাঁজা টানে জোরে। ভটভট করে ধোঁয়া বের হয় নাক-মুখ দিয়ে। তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে- আহ্ আসমান! কত ব-ব-ড়।
দুইহাত দুইপাশে দিয়ে বলে- আয় আসমান মোর কুলে আয়।
মৃত্যুর গল্প
মৃত্যু একদম সহ্য করতে পারি না। কেউ মারা গেছে শুনলেই আমি দূরে ভাগি। কারণ মৃত্যুকে বড্ড ভয় হয়। একটা অন্ধকার জগতে থাকাটাকে ভয় পাই না। ভয় পাই একা হয়ে যেতে হবে এই ভেবে।
তারপরও মৃত্যু দেখতে হয়েছে। দাদুকে যেদিন শুয়ে থাকতে দেখেছি সেদিন ভয়ে সারা শরীরটা ঝিম ধরে ছিল।
দাদুকে যখন কবরে নামানো হচ্ছিল তখন ভয়ে আমার শরীর কাপছিল। সেই দিনই একটা মানুষকে কবর দেয়া দেখি। মাটির ঘর। বাশের ছাউনি। তার ভেতর দাদুকে শুইয়ে দেয়া হলো। মাটি চাপা দিল। আব্বুর চোখের পানি সেই প্রথম দেখি। নিজ মা'কে এভাবে মাটিতে শুইয়ে দেয়া পৃথিবীর সবচাইতে কঠিন কাজ।
তারপর নানুকেও দেখি।
আমি ফিরে যেতে চাই...
ইদানিং বৃষ্টিটা দেখাই হলো না। দেখা হয়েছে হয়তো কিন্তু ঠিক মতো উপলব্ধি করা হলো না।
অথচ একটা সময় বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তায় বৃষ্টি পড়া দেখতাম।
কি সুন্দর সেই দৃশ্য। বৃষ্টির ফোঁটা রাস্তায় পড়ে। আবার গাছের পাতায়ও পড়ে।
বৃষ্টি পড়ার শব্দ।
পাকা রাস্তায় মাটির গন্ধ পাওয়া যেতো না।
খুব ইচ্ছে করতো তখন মাটির গন্ধ শুকবার। কিন্তু উপায় কই?
উপায় নাই।
দিন দিন সব কিছু যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। ইদানিং কেনো জানি মনে হয়, কাজ করে হয়তো সময়টাকে হয়তো নষ্ট করছি।
কিন্তু কাজ তো করি ভবিষ্যতটাকে সুন্দর করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে।
মানুষ সবসময় ভবিষ্যতের জন্য কাজ করে, কষ্ট করে। কিন্তু সেই ভবিষ্যতটা কবে আসবে? সেই জন্মের পর থেকে ভবিষ্যতের চিন্তা কিন্তু ভবিষ্যতটা আর আসলো না।
অণুগল্প: মেয়েটি
১.
কনিংবেল চাপ দিলাম।
একটি মেয়ে হেঁটে এসে বিল্ডিং-এর কলাপসেবল গেট খুলে দেয়।
সেই প্রথম দেখি।
কি মিষ্টি চেহারা।
সেই বাসাতেই আমরা বাসাটা ভাড়া নেই।
আমাদের পাশের ইউনিটেই থাকে।
ধীরে আমরা বন্ধু হয়ে উঠি।
আমরা ঘুরি। রিক্সা দিয়ে। আইসক্রিম খাই।
সারারাত ফোনে কথা বলি।
এপার-ওপার বরান্দায় দাড়িয়ে কথা বলি।
একদিন বুঝতে পারি আমি তার প্রেমে পড়েছি।
নানান ভাবে তাকে বোঝাই।
সে বোঝে।
কিংবা বোঝে না।
একদিন সাহস করে জড়িয়ে ধরি।
ভাবছিলাম- মেয়েটির হ্নদয়ে ভালোবাসা আছে।
কিংবা ভাবছিলাম, হয়তো একটা চড় খাবো।
জড়িয়ে ধরে বললাম- আমাকে ছেড়ে তুমি যেয়ো না।
বলতে বলতে- ঠোটে চুমু খেয়ে বসলাম।
মেয়েটির চোখ বেয়ে পানি বেরিয়ে আসলো।
আমি কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললাম- আমি তোমাকে ভালোবাসি।
মেয়েটির মাথা আমার কাঁধে ছিল।
ভালোবাসি শব্দটা শুনতেই সে চমকে উঠে।
ধর্ম বিক্রি বন্ধ করতে হবে
আমি ঢাকায় বেড়ে উঠেছি। ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছি সংস্কৃতিমনা পরিবারে। যেখানে গান-বাজনা-নাচ-বিতর্ক কোন কিছুতে বাধা নেই। নির্বিকারভাবে তিন ভাইবোনের যা করতে ইচ্ছে হতো তাই করতে পেরেছি। কারও খাবার প্লেটে ভাত বেশি আর কারও প্লেটে কম এই বিষয়টির সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় ‘মিনা কার্টূনের’ মধ্য দিয়ে। সেই কার্টূনে দেখেছি মিনাকে মাছের ছোট টুকরা দেয়া হয় আর মিনার ভাইকে দেয়া হয় বড় টুকরো। সমাজ সচেতনার নানান উদ্যোগ মাঝে মাঝে শিশুদের মনে আটকে যেতে পারে। আমার মনেও আটকে গিয়েছিল। একজন মার কাছে সন্তানের বিভেদকরণ অত্যন্ত ভয়াবহ ইঙ্গিত বহন করে। ভাবতেই পারি না আমার মা অথবা বাবা তার সন্তানকে ছেলে- মেয়ে ভাগে ভাগ করে নিবেন।