ফাদারহুড
মাসুম, মধ্যবয়সী একজন মানুষ। বিয়ে করেছিলেন মাস ছয়েক। বিয়ের আগের অগোছালো একজন মানুষ। জীবনজাপনে কোনো জীবনবোধ ছিলো না। প্রতিটি রাতের শুরু হতো নেশা দিয়ে। মদ, গাজা আর সিগারেটে কেটে যেতো প্রতিটি একাকিত্বের রাত।
একটি কাঠের চেয়ার; ঠায় দাড়িয়ে আছে অপরিষ্কার বারান্দায়। ধুলো জমে যার রং ই পাল্টে গিয়েছে। মাসুম ইফতার শেষে বারান্দায় দাড়িয়ে বিড়ি ফুকছে। কিছুটা অন্যমনস্ক ভংগিতে তাকিয়ে আছে ধুলোপরা ওই চেয়ারের দিকে। হঠাৎ ক্রিংক্রিং শব্দে মোবাইল বেজে উঠলো। বউ কল দিয়েছে বোধহয়!!!
পারেও মেয়েটা। অসীম ধৈর্য নিয়ে সর্বদা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিয়ের পরে এই মেয়েটা জীবনবোধই পাল্টিয়ে দিয়েছে।আজ বিকালে তো তার ডাক্তারের কাছে যাবার কথা। এই কলটা কি সেই আপডেট জানাবার জন্য নাকি গতানুগতিক? এই ভাবতে ভাবতে কলটি রিসিভ করলো মাসুম।
অস্ফুট স্বরে বললোঃ হ্যালো।
ওপাশ থেকে হাসির রিনিরিন শব্দে বললোঃ আসবা কবে?
কেন?
নাহ, এমনি। তোমার সাথে কথা আছে।
বলো।
না, মানে ডাক্তার বলছে সুখবর আছে।
প্রচন্ড মুডি মানুষটি হো হো করে হেসে বললোঃ তাই তো বলি বউ এত্তো লজ্জা পায় কেন?
হুম। এইকথা কিভাবে বলে? আমি রাখি। মা ডাকছে।
একটা কথা ...
কি?
তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
হ, জানি। ঢং বাদ দাও। আমি গেলাম৷
আচ্ছা। সাবধানে থেকো।
এরপরই মন খারাপ করে থাকা মানুষটি হো হো করে হাসতে লাগলো। তার চোখে মুখে আনন্দের দ্বীপ্তি। যার সাথেই দেখা হচ্ছে তাকেই জড়িয়ে ধরে বলছেঃ তোর ভাবীর রেজাল্ট পজিটিভ।
তার এই শিশু সুলভ আচরন দেখে মনেহচ্ছে, পিতৃত্বের আনন্দের কাছে দৈনন্দিন জীবনের দুঃখ নস্যি।
হয়তোবা এরই নাম ফাদারহুড।
ভালো থাকুক সকল অনাগতরা, আর আনন্দে থাক তাদের বাবারা।
ভালো থাকুক সকল অনাগতরা, আর আনন্দে থাক তাদের বাবারা।
হুম! বাবারা ভালো না থাকলে অনাগতরা কিভাবে আসবে
মন্তব্য করুন