কা্বজাব - ১
যখন আমার বয়েস ৮/৯ তখন কি যেনো একটা গুরু গম্ভীর বই পড়ছিলাম। নামটা আজ যদিও মনে নেই, তবে একটা লাইন মনে আছে। “মানুষের জীবন দুঃখ ও সুখের সমষ্টি, যেখানে সুখের মুহুর্ত খুব কম। আর আমাদের জীবন কাটে সেই সব মুহুর্ত রোমন্থন করে আর সেই সব মুহুর্তের আশায়।” ভয়াবহ ধরনের সত্য কথা। সত্য যে তার প্রমান প্রায়ই পাই যখন মানুষকে দেখি বিভিন্ন বার্ষিকী করতে। কেউ আবার মৃত্যুবার্ষিকীকে টেনে আনবেন না। উদাহারন হতে পারে বিবাহ বার্ষিকী অথবা প্রেমিক-প্রেমিকাদের বর্ষপূর্তি। একটা কাপলের কি আর কোন ভালো ঘটনাই ঘটে না? তবে কেন একটা তারিখের স্মৃতি রোমন্থন করে চলা সারা জীবন? অনেক চিন্তা করেছি উত্তর পাইনি। এমনকি আমার এক্স – গার্লফ্রেন্ডকেও মনে হয় প্রশ্ন করেছিলাম । উত্তর পাইনি।
কোন একটা ওয়েস্টার্ণে পড়েছিলাম “ আমরা নিজেদের খুব গুরুত্বপূর্ন ভাবতে ভালোবাসি। সবাই যার যার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ন। মনে করি মৃত্যু যখন আসবে আসবে ঢাকঢোল পিটিয়ে, চারপাশে থাকবে গুরুগম্ভীর, দুঃখ ভারাক্রান্ত মুখ করা পরিজনেরা। আর এই সব হয়না দেখেই আমরা নাটক থিয়েটার সিনেমা দেখি। নিজেদের বড় ভাবার অহমকে সুড়সুড়ি দিতে।“ খাটি সত্য কথা। মানুষের কথা জানি না, নিজের কথা বলি। অন্তর দিয়ে অনুভব করেছি আসলেই এই সব কারনেই সিনেমা নাটকের এই সব দৃশ্যে আমরা পুলকিত হই। এখানে মনে পড়ে একবার এক পত্রিকায় জেমস বন্ড মুভি কেন জনপ্রিয় তার উপর ফিচার পড়েছিলাম। সেখানে ব্যাখ্যা ছিলো পুরুষেরা নিজেদের রাফ এন্ড টাফ ভাবতে ভালোবাসে। দামী গাড়ি, দামী লাইফ স্টাইল, প্লেবয় জীবন ইত্যাদি প্রতিফলিত হয় দেখে বন্ড সিরিজ পুরুষদের মাঝে জনপ্রিয়। এবং মহিলারা সব সময় একটু ড্যাশিং, পয়সাওয়ালা, স্মার্ট, ড্যাম কেয়ার ধরনের পুরুষ পছন্দ করে তাই তারা বন্ড সিরিজ পছন্দ করে।
আজকাল এই সব অনর্থক জিনিস মাথায় ঘুরে খালি। আর একটার পর একটা সিগারেট পুড়ে চলি। মনে হয় এমন কেউ নেই যে কোন নাটক বা সিনেমা দেখে বা কোন বই পড়ে রাতে বিছানায় শুয়ে নিজেকে কোন চরিত্রের জায়গায় রোমন্থন করেনি। সবই ওই আমাদের অহমকে সুড়সুড়ি দেয়ার চেষ্টায়। শুধু মাত্র নিজের বাজে সময় ভুলে থাকতে।
দেবদাসের কাহিনী যে খুব আহামরি তা আমার কাছে লাগেনি। আমার চোখে পড়েছে দেবদাসের লুচ্চামি, যে এক নারীতে পাগল হওয়ার পরেও নর্তকীর প্রেমে মশগুল হয়। চোখে পড়েছে তার স্ববিরোধী ভালোবাসা যা সমাজে স্বীকৃত হবে না। একই কথা খাটে বিলাসী গল্পের ক্ষেত্রে। দয়া করে কেউ ভাববেন না আমি শরৎবাবুর সমালোচনায় বসেছি। আমি শুধই মানব চরিত্র বিশ্লেষনের চেষ্টায় আছি। দেবদাসের আমল দূরে থাক এখনো আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত পরিবারে মদ্যপান কবিরাগুনাহর থেকেও বড় কিছু। কিন্তু তার দেবদাস এতো জনপ্রিয় কেন? কারন তার ওই প্রেম কাহিনী আমাদের অহমকে নাড়া দেয়। নিজেকে কল্পনা করি দেবদাসের জায়গায়। মনে করি আমিই দেবা আমার পার্বতীর জন্যে মদ খেয়ে দাড়ি রেখে জীবন শেষ করছি। কিন্তু বাস্তবতা কি? বাস্তবতায় গান করি “ চলে গেছ তাতে কি নতুন একটা পেয়েছি, তোমার চেয়ে অনেক সুন্দরী।“ আগের কথায় ফিরে যাই। আমি এমন লোক দেখেছি যে ছবি দেখে বলছে “ আহারে পুলাডা মদ খাইতাছে কত দুঃখ পুলাডার। মাইয়াডা এমন করল। খা বাবা খা। আহারে।” অথচ ওই লোকের ছেলে যদি কোন দিন মদ খেয়ে ঘরে ফিরে কি হবে একমাত্র পরমকরুনাময়ই জানেন। তবে ছবিতে মদ্যপানের দৃশ্য দেখে কেন ওই লোক আবেগ আপ্লুত হয়? কারন একটাই অহমে কাতুকুতু।
অহমের সুড়সুড়িতে কেন আমরা ভেসে যাই। অনেক ভাবার চিন্তা করেছি। কারন আমার কাছে মনে হয় নিজের দুঃখকে ভুলে থাকা। সুখময় মুহুর্তের আশায় তাকিয়ে থাকা। সুখ স্মৃতি রোমন্থন করা। নিজেকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা। নিজেকে বুঝতে না দেওয়া ভিতরে ভিতরে আমরা সবাই বড় অসহায়, একা, বড় ভীতু, সব হারাবার ভয়ে সদা সংকিত।
আছেন কেমন?এত অলস কেন?পোষ্ট দিতে এত দেরী করলে জরিমানা হপে।
জটিল গবেষণা করলেন। কাহিনী কি?
অলস হিসাবে আমার সুনাম অনেক আগে থেইকাই আছে। জরিমানা হিসাবে মাঝে মাঝে পুস্টের লগে ইমু দিমু নে
পার্বতীর জন্য মদ খেয়ে গড়াগড়ি দেয় সেরকম দেবদাস এই যুগে আছে নাকি।
সেকথা যাক। কিন্তু পোলাডা লন্ডন থেকে ফিরে এরাম উদাস হয়ে গেল কেন ভাবতেছি।
রিয়েলে নাই দাদা। কিন্তু মুভি দেইখা সবাই দেবা
কাহিনী কি?
মাসুম ভাই কিসের?
বিবাহ জরুলী
আরেকটা করবেন!!!!!!!!!!!!!!!!
এই দিনটাতে তারা খুব সম্ভবত একসাথে কাটানো জীবনটা রিভিউ করে। একটা মানুষ অনেকটা একই কারণে পঞ্চাশতম জন্মদিনের দিন উদাস হয়ে যায়, "দেখতে দেখতে কতগুলো বছর পার করে দিলাম....."
আমি করি না নাটক তো দূরের কথা, সিনেমাও স্বল্প দৈর্ঘ্যের ধৈর্য্যের কারণে দেখি না। গল্পের বইও পড়ি না, মূলত গবেষণামূলক বই পড়তে পছন্দ করি। একারণে ঘুমানোর সময় নিজেকে কোন নায়কের জায়গায় না ফেলে বরং একজন গবেষকের জায়গায় ফেলে নোবেল পুরস্কারের যোগ্য গবেষণা করে ফেলি। ব্যাপারটা আসলে মনে হয় সেই অহমেই গিয়ে ঠেকতেছে....
রিভিউ আর রোমন্থনের খুব একটা পার্থক্য আছে কি? আর হ্যা যা বললেন দিনের শেষে সবই অহমে যায়
কথা সত্য। নিজেরে নিয়াই তো পুরা জীবন...এই দুনিয়ায় কেউ কারো জন্য না। তাই নিজেরে নিয়া চিন্তাই আসল চিন্তা, বাকি সব ফাও
টিক টিক
ভালো বিষয় ধরছিলেন। আইলসামী আর তাড়াহুড়ো না করলে একটা ভালো লেখা দাঁড়াতো। অহমের ব্যাপারে একমত।
ভাই ভাল্লাগে না। আমি একমাত্র আইলসামীতেই পারদর্শী। তাই সবখানে ছাপ থাকে।
হুঁ, মানুষ মূলত একা
তবু দোকা হয়া যান
দোকা হইয়া লাভ কি?
হুঁ, মানুষ মূলত একা
তবু দোকা হয়া যান
সবারই লেজ কেটে যাওয়া উচিৎ
মারডালা রে মারডালা কোথাও একটা পেজগী লাগছে, যেহেতু পেজগী ছুটাইতে পারুম না তাই এই উদাসীক্ষণে, প্রিয় কবির দুইটা লাইন কয়ে যাই : " অবশেষে জেনেছি মানুষ একা।
জেনেছি মানুষ তার চিবুকের কাছেও ভীষণ অচেনা ও একা!"
মন্তব্য নিস্প্রোয়োজন। কবি নিজেই সব বলে দিল।
মন্তব্য করুন