লন্ডন রাজকীয় মোমের যাদুঘরে একদিন
ভাইবা দেখলাম ভালো লেখক হওনের যোগ্যতা আমার নাই, তবে ভালো দেখক হওনের আছে। পায়ের নিচে সরিষা নিয়া জন্মানোর কারণে কয়দিন পর পরেই একেকদিকে ছুটতে মন চায়। কপাল গুণে কায়কারবারও এমন জুটছে আমার ভাগ্যে যে বছরে অন্তত আধা ডজন বিদেশ ভ্রমণ বান্ধা। বিয়ার আগে হাফ চান্সরে ফুল চান্স বানাইয়া একেক সময়ে একেক দিকে উইড়া যাইতাম। ইদানীং ঘর সংসার নিয়া এতই ব্যস্ত যে সহসা কোনোদিকে যাবার সময় পাইনা, যদিও মন পাখি খালি উড়াল দিতে চায়। তাই বৃষ্টিমেদুর দিনে ঘরে বসে পুরানা দিনের জাবর কাটি। আজকে কেন জানি আমার খালাত ভাই তাপসের কথা মনে পড়লো, বেচারা এক্কেবারে গ্যাদাকালেই লন্ডন চলে গেছিল পড়াশোনা করতে। আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেবল আমি আর আমার বড়ভাই মাঝে সাঝে গিয়ে ওরে চড়-চাপড় মাইরা আসি( আইজকালকার পুলাপান মাইরের উপরে না রাখলে বখাটে হইতে আড়াই দিনও লাগে না)। বছরে একবার লন্ডন যাওয়া হয়ই, মূলত এই কারণেই ভাইটা এখনও লাইনে আছে তো গেলবার যাবার পরেই বদমাইশটা কয় এইবার কোনো মারামারি নাই, আমি তোমার জন্য দারুণ একটা গিফট কিনে রাখছি। তবে কী সেইটা এখন কইবো না, আমার কাজকাম শেষ হইলে শনিবার সকালে আমারে সেইখানে নিয়া যাইব। আমি আর বিশেষ মাথা ঘামাইলাম না, পোলাপান মানুষ, হয়তো এক বাক্স চকলেট ফকলেট কিনে রাখছে।
শনিবার সকালে সে আমারে নিয়া গেল লন্ডনের মোমের যাদুঘরে। ঐটা অনেকদিন বন্ধ ছিল কী সব সংস্কারের কারণে, খোলার পয়লা দিনেই চারদিকে দারুণ ভিড়। তার মধ্যে অগ্রীম টিকেট কেনা থাকায় আমরা গটগট কইরা ভেতরে চইলা গেলাম। বাইরের অপেক্ষায় থাকা মানুষদের চোখে হিংসা আর খালাত ভাইটার মুখে যুদ্ধজয়ের হাসি।
আচ্ছা এখন কিছু ছবি দেখাই আপনাদের-
ঢোকার মুখেই এই মোমের মহিলারে বসে থাকতে দেখে ধোকা খায় অনেক লোক
স্যামুয়েল জ্যাকসন আর জন ট্রাভোল্টার সাথে আমার বিটলা ভাই
আমি গিয়া একটু মুরুব্বীদের সাথে দাঁড়াইলাম
তোপসে গিয়া চার্চিলরে চাইপা ধরলো
শুমাখাররে হারাইয়া দিয়া কী ফুর্তি!
যুবক পেলেরে দেখলাম এক কোনায় চুপচাপ বসা, পিছনে ওস্তাদ মুহম্মদ আলী
পাশেই বেকহ্যাম ( গুরু ম্যারাডোনার মূর্তি না দেইখা খুব মেজাজ খারাপ হইছিল)
খালতো ভাইয়ের কবলে এইবার স্পাইডারম্যান
বলিউড কর্নার ( ঢালিউডের কেউ নাই, আমি মনে মনে নায়ক মান্নারে খুঁজতেছিলাম)
হাল্ক মামায় বেহুদা ক্ষেইপা এরে ধরে, ওরে মারে ( আমারে ছাড়া)
উইল স্মিথ, পেনেলোপি ক্রুজ আর পিছনে কার চকচকে চান্দি ঠিক মনে পড়তেছে না
মেরিলিন মনরোর রূপের কাছে আইসা ভাইটার দিল খান খান
ছবি ব্লগ দিয়া মজা পাইতেছি। খাটনি কম, কিন্তু অনেক কথা বলা হয়ে যায়। মোমের যাদুঘরে শুধু মুর্তিই না, নানা ধরনের ঐতিহাসিক ঘটনাবলী নিয়া ভার্চুয়াল ট্যুর, তারপর পয়সা দিয়া ভয় খাওনের লাউঞ্জ অনেক কিছুই আছে। এক টানে কেমনে অনেক গুলা ঘন্টা চলে গেল টেরও পাই নাই। আসলেই দারুণ মজা পাইছিলাম। খালতো ভাইটারে সেইবার কানপট্টি না দিয়াই চইলা আসছিলাম। তবে সামনে আবার যামু, এইবার যদি আরও মজার কিছু আয়োজন না করে তাইলে ওরে হাত-পা বাইন্ধা টেমস নদীতে বিসর্জন দিয়া আসুম। আর ভালো কিছু দেখে আসলে আরেকটা ব্লগ আর কিছু প্যানপ্যানানি দিয়া আপনাগোরে জ্বালামু।
আয়হায় মাইয়াগুলা আবার উথাল-পাথাল কান্দাকাটি শুরু করছে। আমি কম্পিউটার সামনে বসলে বা সিগারেট খাইতে গেলেই এমন করে। থাউক আজকে আর ছবি বাড়াইলাম না, গিয়া বাচ্চা সামলাই
মেরিলিন মনরোরে দেইখা দিলডা মনের মত খান খান হয়ে গেল। মনরোর সাত দিনের চুল্কানির কথা এখনও ভুলতাম পারি নাই । আফসুস
আপ্নে একলা না চাংকু ভাই--আমরা কেউই ভুলতে পারি নাই
আহারে সৌন্দর্য আফারা...
হ, মূর্তিগুলা এত জীবন্ত যে দেখলেই ছুঁইতে ইচ্ছা করে
মনরোরে তো সেরাম হট লাগতাছে! জেটা-জোন্স অথবা মনিকা বেলুচ্চি ছিল না?
মনরো তো হটনেসেরই রোল মডেল
জিটা জোন্স বোধহয় ছিল, কিন্তু বেলিচ্চুরে দেখি নাই কোথাও
মুরুব্বীগো পাশে আপনারে ভালোই মানাইছে। আপনার ভাইতো জেনিফাররে প্রায় পাইড়াই ফেলছে।
আপনার ব্লগগুলা পইড়া খুব মজা পাই।
ধইন্যবাদ ভাইজান
দারুন তো!
আসলেই
হিংসিত হৈলাম ... আপ্নে খালি ঘুড়েন
এখন অনেক কমাইয়া দিসি বস, আগের আমিরে আমিও হিংসা করি
অজিল্যান্ডে আসনের পর কি আম্রাবন্ধু আড্ডা করন যাইবো ?
যাইবো না ক্যান? আমি আড্ডার পোকা
হাহাহাহাহা !
ধন্যবাদ
বুশি আর ব্লেয়ারের মাঝখানে দাড়াঁইছেন... যদি পাদুকা উড়িয়া আসিতো?
~
হায় হায় সেইটা তো ভাবি নাই!
সবই তো বুঝলাম ভাইয়া, কিন্তু, কি গিফট কিনছিলো, এইটা তো কইলেন না!!!
মিউজিয়ামের অগ্রীম টিকেট কিনছিল দুইটা, সেইটার তার গিফট। ছাত্র মানুষ ঐটাই অনেক তার জন্য। স্যরি বুঝাইয়া বলা হয় নাই লেখায়
আপনের লগে লগে ফ্রিতে মিউজিয়াম ঘুরে আসলাম। এইটাই কি কম পাওয়া নাকি??
হিংসাইলাম! কবে যে যাবার পারুম!
বোহেমিয়ান যারা তারা তো এমনিতেই পথে পথে থাকে, যাইতে আর কী সমস্যা?
কোনোটা যে মানুষ আর কোনটা যে মুর্তি বোঝাই মুশকিল, তয় আপনারে মাইনাস , হিংসিত করার লাইগা।
বুঝতারলাম আপ্নে ছবির মেয়েগুলিরে বিয়াফক ভালা পান
মাইনাস। ছবিগুলা পঁচা!!!!!!!! এক্টুও ভালু না।(চরম হিংসায় হিংসিত)
বুঝলাম ছবির ম্যাচো মার্কা হিরুগুলিরে তোমার বেজায় ভাল্লাগছে
মামুন ভাই খালি খালাতো ভাইয়ের বাসায় বেড়ান, আমি খালাতো বোন না বলে আমাকে চোখে দেখেন না
আসিতেছি আপা, মেয়েগুলি এট্টু বড় হোক
মোমের পুতুল ভালু পাইলাম
মন্তব্য করুন