ইউজার লগইন

বেড়াল এবং কাঁকড়া পূরাণ

ব্যাপক তত্ত্ব-তালাশের পরে একটা বিষয় জেনে মনটা একটু শান্ত হলো। অস্ট্রেলিয়ান সরকার অন্তত একটা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষদের কুকুর-বিড়ালের চাইতে বেশিই মর্যাদা দেয়। সেটা হলো বাংলাদেশে শিক্ষিত, শান্তিপ্রিয়, ভদ্দরলুকদের জন্য বিস্তর কাটখড় পোড়ানোর পরে অস্ট্রেলিয়ায় ঘাঁটি গাঁড়ার সুযোগ থাকলেও, বাংলাদেশী কুকুর-বিড়ালদের জন্য সেই সুযোগ একেবারেই নাই, বেচারিরা এক্কেবারে অচ্ছুৎ সেই সব পেয়েছির দেশে। গত কিছুদিন যাবৎ মন-মেজাজ একেবারে খাপ্পা হয়ে আছে—কেন সেই প্রসঙ্গে আছি একটু পরে।

অস্ট্রেলিয়া কোনোকালেই আমার স্বপ্নের দেশ বা এ ধরনের কিছু ছিল না, জবরদখল করা বা ঐতিহাসিকভাবে লুটেরা কোনো দেশের আলো-বাতাস আমার কাছে তাজা লাগে না। আমি নিরিবিলি, নির্ঝঞ্ঝাট জীবন যাপনের ভিখারী। তাইওয়ানে সেই সুযোগটা আছে। বেশ ভালো আছি, ছিলাম এখানে। কিন্তু ঘর-সংসার পেতে এখন ঠেকে গেছি। নিজে শান্তিতে থাকা গেলেও বাচ্চা পালার জন্য তাইওয়ান মোটেও সুবিধাজনক দেশ না, অন্তত জামাই-বউ দুইজনেই যদি বিদেশী হয়—আমরা যেমন। তার উপরে খোদার মর্জিতে আমাদের আবার একবারে আধাগণ্ডা ছানাপোনা। ভরভরন্ত সংসার, কিন্তু সামলাতে গিয়ে অবস্থা তথৈবচ। বাচ্চা পালার জন্য আত্মীয়-স্বজনের কোনো বিকল্প নাই, আর এই পোড়ার দেশে আমাদের আত্মীয়-স্বজন তো দূরের কথা বাংলাদেশী কম্যুনিটিরই কোনো নাম-গন্ধ পাই না। সব দিক বিচার বিবেচনা করে ঠিক করলাম শ্বশুরের দেশেই চলে যাই, অন্তত বউয়ের দিকের আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় বাচ্চা মানুষ করা কিছুটা সহজ হয়ে আসবে। তবে মেরুদণ্ডের তেত্রিশতা হাড্ডির মধ্যকার এক-আধটা অক্ষত থাকতেও ঘর জামাই তকমা লাগানোর কথা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারি না। তাই তাঁদের ব্যাপক অনুরোধ-উপযোগ সত্ত্বেও আস্তানা গাঁড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম বহুদ্দূরের এক শহরে।

একটা দেশে একটানা প্রায় দশ বছর থাকার পর ঠিকানা পালটানো বিশাল ঝক্কির ব্যাপার। আর এ তো শুধু বাসা বদলানো না, একেবারে মহাদেশ বদলানো। তবুও ধৈর্য্য ধরে সবকিছু গুছিয়ে যাচ্ছিলাম। মাস কয়েক আগে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে ঘর-বাড়ী দেখে এসেছি, ব্যবসা-বানিজ্যের যোগাড়-যন্ত্র করেছি। বাচ্চাদের পাসপোর্ট, আমাদের অর্থ-কড়ির ঝুট-ঝামেলা সামলানো সব ভালো ভাবেই চলছিল। কিন্তু ঘোর বিপত্তি বাঁধলো আমাদের বাসার আর দুই সদস্যকে নিয়ে। সেবাস্তিয়ান আর বিলি, আমাদের দুই পোষা বেড়াল। একেবারে গ্যাদাকাল থেকে আমাদের সাথে আছে। একটাকে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম গারবেজ কালেকশন এরিয়ার পাশে, ধবধবে সাদা, মাত্র দুইমাস বয়সী হুলো সেবাস্তিয়ান এতিমের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আর গাড়ীর নিচে চাপা পড়ে বিলি মাতৃহীন হওয়ায় পার্কিং এরিয়া থেকে তাকে অভুক্ত, অশক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে আসে আমার বউ। এখন এরা পূর্নবয়স্ক, রীতিমতো প্রশিক্ষিত পোষা বেড়াল। তো এত বছর ধরে এদের পেলেপুষে বড় করার পরে হুট করে ফেলে দেবার কথা তো কল্পনাই করতে পারি না। তাই পশু ডাক্তারের সাথে আলাপ করতে গেলাম এদের অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যাবার বিষয়ে। গিয়ে সব শুনে তো আমার চোখ ছানাবড়া।

প্রথমে তাদের গায়ে মাইক্রোচিপ বসাতে হবে, নাম-পরিচয়, ঠিকানা সবকিছুর বৃত্তান্ত সহ। তাও নির্দিষ্ট ডিজিটের, নির্দিষ্ট মেশিন রিডেবল হতে হবে। সেই ব্যবস্থা আবার আমার শহরে নাই, তাই যেতে হবে অন্য কোথাও। তারপরে অনলাইনে অ্যাপ্লাই করতে হবে। মোটামুটি ৩০ পাতা ভর্তি তথ্য, নির্দেশনা। অ্যাপ্লিকেশন অ্যাক্সেপ্টেড ( কবে হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই, দুই সপ্তাহ লাগতে পারে আবার ছয় মাসও) হবার পরে বেড়ালগুলোর রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে, তারপর এই সেই নানা ধরনের টীকা, ইঞ্জেকশন ইত্যাদি ইত্যাদি। সেসব ঝামেলা শেষ হবার পরে ফ্লাইট বুকিং, বিশেষ ধরনের খাঁচায় পুরে। বেড়ালের ফ্লাইট টিকেটের দাম আর আমার বাচ্চাদের টিকেটের দাম প্রায় সমান। যাক ভাবছেন বোধহয় ঝামেলার এই শেষ। না পাঠক আরেকটু শোনেন, খেলার মাত্র হাফ টাইম বিরতি এই পর্যন্ত।

অস্ট্রেলিয়া পৌঁছানোর পরে বেড়ালগুলোকে পাঠাতে হবে অ্যানিম্যাল কোয়ারেন্টিনে। কমসে কম এক মাসের জন্য। এই এক মাস তারা থাকবে বিশেষ ধরনের বেড়াল আবাসনে। সেখানেও ভি আই পি থেকে ভবঘুরেদের মতো হরেক রকমের থাকার ব্যবস্থা—শুধু ফেল কড়ি মাখ তেল। এক মাস সেখানে থাকার পরে তাদের মধ্যে কোনো রোগশোকের আনাগোনা দেখা না গেলে তবে মিলবে চূড়ান্ত ছাড়পত্র। আর কপাল মন্দ হলে তাদের ইমিগ্রেশন প্রসেস সম্পন্ন হবে না, ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হবে যেখান থেকে এসেছে সেখানে। বলেন এইসব বাড়াবাড়ির কোনো মানে হয়? পুরা প্রক্তিয়ায় জলের মতো টাকাও খরচ হবে, কিন্তু তারপরেও নিশ্চয়তা নেই যে আপনি আপনার পছন্দের পোষা প্রাণীগুলোকে সাথে রাখতে পারবেন। তাওতো একটা ভালো সম্ভাবনা আছে যে শেষ পর্যন্ত ওদের বের করে নিয়ে আসতে পারবো, কিন্তু ওদের জন্ম যদি বাংলাদেশে হতো ( ভয়ে আমার হাত-পা...)!

আর আমি কি না আশা করে ছিলাম, ওখানে যাবার পরে দেশ থেকে নিয়ে আসবো ছোট ভাইটাকে, অথবা বাবা-মা শেষ বয়সটা আমাদের সাথে কাটাবেন দক্ষিন মহাসাগরের তীরে। এখন দু’টা বেড়াল সেখানে নিতেই জান বেরিয়ে যাবার অবস্থা, দু’জন পূর্ণবয়স্ক মানুষ কাছে আনার আবেদন করলে না জানি কত হাইকোর্টই দেখিয়ে দেবে। জবরদখল করা জমিনে ভূমিদস্যুরাই সর্বেসর্বা। আচ্ছা আজকে এত হাহুতাশ কেন করছি কে জানে? শুকরিয়া করা উচিত যে বিস্তর কাটখড় পোড়ানোর পরে হয় তো বাবা-মাকে কাছে নিয়ে আসতে পারবো, কপাল ভালো যে তাঁরা বাংলাদেশী। শ্রীলংকান তামিল বা আফগানী মুসলিম হলে তো কোনো সুযোগই ছিল না। বৈধভাবে ভিসার আবেদন করলে জুটবে নিমেষেই প্রত্যাখ্যান, আর অবৈধ(!)ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শরণার্থী হিসেবে আসার চেষ্টা করলে তো একেবারে কালাপানি। সত্যিই কী বিচিত্র এই পৃথিবী, এক কালে কালাপানির শিকার হয়ে যারা এই দেশে আসতে বাধ্য হয়, এখন তারাই ডানে-বামে যাকে খুশী কালাপানির শাস্তি দিচ্ছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনকে মধ্যাঙ্গুলি দেখিয়ে নতুন নিয়ম জারী হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। শ্রীলংকান বা আফগান বা আফ্রিকান শরণার্থীদের আর মূলভূমিতেই পা রাখতে দেয়া হবে না। অস্ট্রেলিয়ান পানিতে ঢুকলেই বেঘোরে ধরা পড়বে সদা জাগ্রত নৌবাহিনীর হাতে। আর তারপর বস্তাপুরে বেড়াল ছানার মতো তাদের চালান করে দেয়া হবে পাপুয়া নিউ গিনি বা আড়াই হাজার মাইল দূরের ক্রিসমাস দ্বীপে। সেখানে ছয় মাসের বাধ্যতামূলক নজরদারী, পরীক্ষা-নীরিক্ষা, যাচাই-বাছাইয়ের পরে সারভাইভাল অভ দ্য ফিটেস্ট এর তত্ত্ব অনুসারে অল্প কিছু লোকের ভাগ্যে হয়তো শিকে ছিঁড়বে। বাকীদের ভাগ্যে কী ঘটবে তা খোদাই জানেন। আর আমি কি না বিলাপ করছিলাম আমার বেড়ালদের একমাসের কোয়ারেন্টিন নিয়ে! আসলেই মানুষ সহজ তুষ্ট হতে জানে না।

মজার ব্যাপার কী জানেন? ক্রিসমাস দ্বীপ বিখ্যাত কী কারণে শুনবেন? সেখানকার লাল কাঁকড়াদের জন্য। যারা কিনা বছরে একটা সময়ে নিজের আস্তানা যেরে গুটিগুটি পায়ে পাড়ি জমায় দ্বীপের অন্যপ্রান্তে, বিনা বাঁধায়। প্রতিবছর প্রায় পনের কোটি কাঁকড়া দ্বীপে ভেতরে আস্তানা থেকে পাড়ি জমায় সাগরের তীরে। লোকেরা তাদের ছবি তোলে, ভিডিও করে, ট্যুরিস্টদের আকৃষ্ট করে এই অসাধারণ প্রাকৃতিক মাইগ্রেশন দেখিয়ে। অথচ একই দ্বীপে কাঁটাতারের বেড়াজালে, ডিটেনশন সেন্টারে ছোট্ট ছোট্ট ঘরে গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য হয় হাজারে হাজারে ভাগ্য নিপীড়িত গরীব মানুষ। তাদের ছবিও কেউ তোলে না, তাদের খবরও কেউ করে না।

কে বলেছিল আপনাদের কালো মানুষ হয়ে জন্মাতে? লাল কাঁকড়া হয়ে জন্মালে অন্তত মুক্ত মানুষের মতো হেঁটেচলে খেতে পারতেন।

ওহ্‌ ভালো কথা প্রতিবছরই অস্ট্রেলিয়ায় ঘটা করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সম্মেলন, কনভেনশন, সেমিনার ইত্যাদি আয়োজিত হয়। আমি একবার গিয়ে তাদের জ্ঞানগর্ভ বক্তিমা শুনে আসবো কি না ভাবছি। অন্তত বিনে পয়সায় এমন সার্কাস দেখা সুযোগ আর কোথায় পাব বলেন?

পোস্টটি ১১ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


মানুষের দামই মনে হয় সবচাইতে কম... Sad দুনিয়ার সবখানেই।

মামুন হক's picture


খুব কষ্টের একটা কথা বললেন ভাই। মানুষের পৃথিবীতে আসলেই গরীব মানুষের কোনো দাম নাই।

রাফি's picture


ছিঃ ছিঃ এইভাবে বলে নারে ভাই.......। এরা বিশাল সভ্য, জাপানের "তিমি নিধনের" তীব্র প্রতিবাদ হপ্তায় হপ্তায় জানায়।

অষ্ট্রেলিয়ানরা হৈলো কুইড়ার এক শেষ, সব কিছু চায় এরা রেডিমেড নিজের ব্রেকফাষ্ট টেবিলে। রেসিজম পরতে পরতে আছে, অথচ উপরে রোমান্টিক মাল্টিকালচারিজমের ভন্ডামী চলে। আসেন, আরো কত কিছু দেখবেন মাইটগো দেশে.......

আসতেছেন কোন স্টেট এ?

মামুন হক's picture


সেটাই রাফি ভাই। ভাবতেছি সাদা অস্ট্রেলিয়ার ভূত এখনো তাদের ঘাড় থেকে হয় তো নামে নাই পুরাপুরি। আমি আসতেছি সাউথ অস্ট্রেলিয়ায়, অ্যাডেলেইডে। আপনি আছেন কই?

রাফি's picture


আমি পার্থ, ওয়েষ্টার্ন অষ্ট্রেলিয়ায়। এখান থেকে সিডনী-মেলবোর্নের চেয়ে বালি অনেক কাছে।

এডিলেডে গত দুইবছর গেছলাম ৩-৪দিনের জন্য, আবার গেলে আওয়াজ দিমু.....।

টুটুল's picture


এডিলেডে আমার এক দোস্ত গত সপ্তাহে গেল... দেখা হইবো হয়তো আপনার সাথে Smile

মাহবুব সুমন's picture


Steve Cool আপনের বাড়িতে হামলা দেয়ার প্লান করতাছি।

মামুন হক's picture


আসেন আসেন, উয়েল্কাম Smile হামলা দিয়া কামলা খাটবেন আর কি, নতুন বাড়ীর কতো কাম Smile

জ্যোতি's picture


খাইছে। বিলাই এর কি কপাল! বিলাই বিদেশ যাইবো তাতে কত ফরমালিটি!
বিদেশ যাইতে মন্চায়।মেয়েরা কেমন আছে ভাইয়া? ছবি দেন না কেন সপ্তাহে এক্টা করে?

১০

মামুন হক's picture


মেয়েরা আছে ভালো। সাঁতার শিখতে ইদানীং সুইমিং পুলে যায় মায়ের সাথে। সুইমিং ডায়াপার পরে পানিতে ভাসে। সে এক দেখার মতো দৃশ্য! ছবি দিব নে Smile

১১

জ্যোতি's picture


Shock ভাইয়া, ছবি দেন দেখি তাড়াতাড়ি! সাঁতার কাটার দৃশ্যটা দেখি। দুই বোনে কি করে দেখতে মন্চায়।

১২

মামুন হক's picture


সব ছবি তো রেডি নাই আমার কাছে, তবুও খুঁজেপেতে দুইটা দিলাম। পরে ছবি ব্লগ দিবো Smile

First pool party!

Iyla floating!

১৩

জ্যোতি's picture


ওরেরেরেরেরেরেরেরে!!!!!!! এরা দেখি সত্যিই সাঁতার শিখতেছে নতুন স্টাইলে। মাশাল্লাহ। আদর দিয়েন ভাইয়া। কবে যে এদরে নিয়ে আসবেন!কোলে নিব কিন্তু।

১৪

রাসেল আশরাফ's picture


ছবি তে আর কাজ হচ্ছে না ভিডিও দেন.।

১৫

জ্যোতি's picture


ভাতিজার সাথে চ্রমভাবে একমত। তবে ছবিও দিতে হবে।ছবি দেখতে ভাল্লাগে, মন্চায়।

১৬

পান্থ রহমান রেজা's picture


তাত্তাড়ি ভাতিজিদের ছবি ব্লগ দেন। অপেক্ষায় পান্থ চাচ্চু! Tongue

১৭

মামুন হক's picture


ছবি ব্লগ তো তিনটা অলরেডি দিয়ে ফেলছি পান্থ চাচ্চু--আমার পেছনের ব্লগগুলা ঘুরে আসেন একটু কষ্ট করে। সামনে আরও দিব Smile

১৮

পান্থ রহমান রেজা's picture


আচ্ছা, দেখতেছি!

১৯

মীর's picture


আমার পিচ্চি পিচ্চি বাবু দুইটা সাঁতার কাটছে। দেখে মন ভরে গেল

২০

মুক্ত বয়ান's picture


অস্ট্রেলিয়ায়ই তো কয়দিন পর পর ইন্ডিয়ানদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে কয়দিন ধরে। Sad
কি বিচিত্র অবস্থা। Sad

২১

মামুন হক's picture


হ্যাঁ, ইন্ডিয়ানরা তো মারকুটে না তাই তাদের ধরে ধরে মারে। কিন্তু লেবানিজদের কাছে গেলে আবার লেজ গুটিয়ে ফেলে। ইন্ডিয়া সরকারীভাবে এর প্রতিবাদ করছিল, এতে তাদের নিজেদের আরও ক্ষতি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান সরকার স্কিলড মাইগ্রেশনও শুনেছি বন্ধ করে দেয়ার পথে--কে জানে সামনে আরও কত খেলা বাকী।

২২

বকলম's picture


আশেপাশের প্রায় মানুষকে যখন দেখি অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা পাড়ি দিতে খুব উৎসাহী তখন আমার কেন জানি নিজের দেশ ছাড়া আর কিছু ভাল লাগে না। হয়তো এখন প্রবাসে বলেই হয়তো। সবসময় মনে প্রাণে চাই নিজের দেশে একটা শান্তির জীবন হোক। পরের দেশে গিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতে চাই না।

প্রবাসের এই পিঞ্জরেতে
স্বইচ্ছার এই কারা ভোগে
দু মুঠো সুখ দেশের তরে
শান্তি খুঁজি এটাই ত্যাগে।

বাংলা তুমিই স্বর্গ আমার
তোমায় সদা স্বপ্নে খুঁজি
তোমার মাটি শীতল পাটি
তোমাতেই যেন এ চোখ বুজি।

২৩

মামুন হক's picture


দারুণ বলেছেন বকলম। আমিও চাই সব ফেলে নিজের মাটিতে ফিরে যেতে, কিন্তু সাহসে কুলোয় না।

২৪

রাসেল আশরাফ's picture


কপাল ভালো বাংলাদেশী কুকুর-বিড়াল আর শ্রীলংকান তামিল বা আফগানী মুসলিম হয়ে জন্মাইনি তাইলে জীবনে আর কিছু করে খেতে হতো না। Puzzled Puzzled Puzzled

তয় আমার কাছে মনে হয় কোনমতে যদি গায়ের চামড়াটা সাদা হতো তাইলে দুনিয়ার সব জায়গায় দাম পেতাম।

২৫

মামুন হক's picture


হুম, এই অনুভূতিটা খুব কষ্টের। এমন এক আনফেয়ার জগতে আমাদের বসবাস

২৬

মেসবাহ য়াযাদ's picture


অবশেষে কী হৈলো ? বিলাইয়ের কথা কৈছিলাম...

২৭

মামুন হক's picture


কিছু হয় নাই এখনও মেসবাহ ভাই। প্রসেসিংয়ে আছি। দেখা যাক কী হয়।

২৮

মেসবাহ য়াযাদ's picture


অফটপিক : ইউরোপিয়ান অনেকগুলো দেশের ভিসা একসাথে দেয়া হয়। এ দেশগুলোর নাম কি জানাতে পারেন বস ?

২৯

মুক্ত বয়ান's picture


ভাইয়া, এইখানে পাবেন...
http://www.eurovisa.info/

৩০

নড়বড়ে's picture


বিড়ালের জন্য শুভেচ্ছা Big smile

৩১

মামুন হক's picture


ধন্যবাদ নড়বড়ে Smile

৩২

মীর's picture


বিড়াল-কাঁকড়াদের চেয়ে ভালো আছি মানি না। উন্নত দেশগুলো সঙ্গে তৃতীয় দেশগুলোর মধ্যে যোজন যোজন ফারাক। সায়েন্স ফিকশনে পড়ি একই গ্রহে দুই শ্রেণীর মানুষ বাস করে। একদল উঁচুতে থাকে, জ্ঞান-বিজ্ঞান-সংস্কৃতি আর লাইফস্টাইলে উঁচ্চতর। আরেকদল নিচে থাকে, তাদের থাকে কদাকার নাম, কদাকার বৈশিষ্ট্য এবং কদাকার জীবন। এই দলের মধ্য থেকে একজন নায়ক বা নায়িকা বের হয়ে আসেন। তিনি সাধারণতঃ উঁচুতে থাকা মানুষগুলোর যে নেতা তার ক্লোন হয়ে থাকেন। কিংবা উঁচুর কেন্দ্রীয় কম্পিউটারের একটা অংশ। সেই নায়ক বা নায়িকা নিচুজাতের দুরাবস্থার অবসান ঘটান।

সেরকম কোন পরিণতির জন্য আক্ষেপ করছি। বাস্তব আর সায়েন্স ফিকশনের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে বাস্তবে আক্ষেপ করতে হয়, কারণ এমনটি কখনো ঘটবে না। সায়েন্স ফিকশনে অপেক্ষা করতে হয়, বইয়ের শেষে এমন ঘটবেই।

মামুন ভাই কেমন আছেন? আপনারে দেখলে ভালো লাগে।

৩৩

মীর's picture


বিড়াল-কাঁকড়াদের চেয়ে ভালো আছি মানি না। উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দেশগুলোর মধ্যে যোজন যোজন ফারাক। সায়েন্স ফিকশনে পড়ি একই গ্রহে দুই শ্রেণীর মানুষ বাস করে। একদল উঁচুতে থাকে, জ্ঞান-বিজ্ঞান-সংস্কৃতি আর লাইফস্টাইলে উচ্চতর। আরেকদল নিচে থাকে, তাদের থাকে কদাকার নাম, কদাকার বৈশিষ্ট্য এবং কদাকার জীবন। এই দলের মধ্য থেকে একজন নায়ক বা নায়িকা বের হয়ে আসেন। তিনি সাধারণতঃ উঁচুতে থাকা মানুষগুলোর যে নেতা, তার ক্লোন হয়ে থাকেন। কিংবা উঁচুর কেন্দ্রীয় কম্পিউটারের একটা অংশ। সেই নায়ক বা নায়িকা নিচুজাতের দুরাবস্থার অবসান ঘটান।

সেরকম কোনো পরিণতির জন্য আক্ষেপ করছি। বাস্তব আর সায়েন্স ফিকশনের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে বাস্তবে আক্ষেপ করতে হয়, কারণ এমনটি কখনোই ঘটবে না। আর সায়েন্স ফিকশনে অপেক্ষা করতে হয়, কারণ বইয়ের শেষে এমনটিই ঘটবে।

মামুন ভাই কেমন আছেন? আপনারে দেখলে ভালো লাগে।

৩৪

মামুন হক's picture


ভালো আছি ভাই। আপনাকে দেখলেও ভালো লাগে Smile
আর কী বলব ভাই, শ'খানেক বছরের নিচেই এই জীবন, কেটে যাবে একভাবে না একভাবে। শুধু বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে সুখে থাকা যাবে না এই যা---কী আর করা, মানুষের সব স্বপ্ন তো আর পূরণ হয় না।

৩৫

নজরুল ইসলাম's picture


আগে ৭ বার ইন্ডিয়া গেছি, কোনোদিন এম্বাসি পর্যন্ত যাইতে হয় নাই। এই প্রথম যাইতে হইতেছে। আর কী কমু?

৩৬

মামুন হক's picture


আর কী বলবি দোস্ত, ধীরে ধীরে আমাদের একঘরে করে দেয়া হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে।

৩৭

নুশেরা's picture


১। জোড়া পরী আর বিড়ালের জন্য শুভেচ্ছা। আপনার লেখার দুর্দান্ত গতি আর বিষয়বৈচিত্র্য একটানে পড়িয়ে ছাড়ে।

২। শ্বশুরবাড়ী থেকে বহুদ্দূরের শহরে আস্তানা গেড়ে "বউয়ের দিকের আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় বাচ্চা মানুষ করা কিছুটা সহজ হয়ে আসবে" কেমন করে, বুঝলাম না। তবু আপনার ইচ্ছা বাস্তবায়িত হোক। দেশ থেকে আপনার পরিবারের সবাইকে কাছে পেয়ে যাবেন নিশ্চয়ই।

৩। সন্তানদের বিকাশসহায়ক পরিবেশ, জানমালের নিরাপত্তা, আর্থিক সাশ্রয় ইত্যাদি বহু যুক্তিযুক্ত কারণে শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে একই বা পাশাপাশি বাড়ীতে বাস করতে দেখেছি নারীপুরুষ দুপক্ষকেই, তাদের কারোরই মেরুদণ্ড ক্ষয়ে গেছে বলে মনে হয়নি। আবার শ্বশুরবাড়ি থেকে বহুদূরে থাকা "আইজই তোর বাপের বাড়ির থন ঘড়ি রেডু সাইকেল নিয়া আসবি"র মেরুদণ্ডী পুরুষও কম নেই আমাদের!

৪। অন্যদেশের অভিবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করি। দশবারো বছর আগে পত্রিকায় দেখেছিলাম চার লাখের ওপর ভিনদেশী পেশাজীবি বাংলাদেশে কাজ করছেন যাদের বেশীরভাগের কোন ওয়ার্ক পারমিট দূরে থাক বৈধ ভিসাও নেই (এই সংখ্যা এখন কতো হতে পারে?)। বড়সড় এক্সিকিউটিভদের বাদ দিয়ে একটা মুখচেনা উদাহরণ: বাংলাদেশের বিখ্যাত অভিনেত্রীকে বিয়ে করার আগে ৫ বছর ধরে ঢাকায় ছিলেন যে রিঙ্গো, তিনি এসেছিলেন স্রেফ ১৫ দিনের ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে! আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র জনগণের কষ্টের টাকায় চালু থাকা নাগরিক সুযোগসুবিধায় কিংবা জব অপরচুনিটিতে অবৈধ ভিনদেশীর ভোগদখল নির্বিবাদে মেনে নেয়, নিজস্ব নাগরিকের সুখসুবিধার প্রতি দায়িত্ববান কোন রাষ্ট্র সেটা এতো সহজে করবে কেন! যত সম্পদশালী্ই হোক, রাষ্ট্রীয় পরিষেবার একটা নির্ধারিত কাঠামো আছে, সীমা আছে। আমার সন্তান প্রতিবন্ধকতার শিকার, তো অস্ট্রেলিয়া সরকার কেন তাকে নিখরচার ব্যবস্থার সুযোগ দেবে যেখানে তাদের নিজেদের নাগরিক অপেক্ষমান তালিকায় আছে? বহু বহু রিফ্যুজিকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে, তাদের পাশাপাশি নিয়মিত অভিবাসীরাও সিস্টেমের এক্সপ্লয়েটেশন কম করেননি। প্রতিক্রিয়াটা আকস্মিক বলে চোখে লাগছে বেশী। ভারতীয় ছাত্রদের ওপর নির্যাতনের কাহিনী অনেকাংশে মিডিয়া হাইপ। ২০০২ থেকে দফায় দফায় কয়েক বছর থাকার অভিজ্ঞতায় বললাম। মাহবুব সুমন ভাই আমার চেয়ে ভালো জানেন।

৩৮

মামুন হক's picture


নুশেরা আপা,
আসলে বুঝিয়ে বলতে পারি নাই, প্রস্তাব ছিল মেলবোর্নে শ্বাশুরীর বাড়িতে ওঠার অথবা ভিক্টর হারবারে শ্বশুরের বাড়িতে। বেশ ভালো রকমের জোরাজুরিই চলছিল, মধুর যন্ত্রণা আর আরকি। আমাদের আসলে দরকার একই দেশে থাকা, যাতে যাওয়া-আসা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে নিজেদের উপরে চাপটা কম লাগে। তাই একটু দূরেই মানে দক্ষিনে ঘাঁটি গাঁড়তেছি, যদিও শ্বশুরের ঠিকানা থেকে খুব বেশী দূরে না। আসলে সারা জীবনই মানুষের দাক্ষিণ্য ছাড়া চলে আসছি, এখন একটু আধটু কেউ সাধলেও অস্বস্তি লাগে। মধ্যবিত্ত বাঙ্গালী সেন্টিমেন্ট বলতে পারেন আর কি Smile

আর অভিবাসন নিয়ে অনেক কথা আছে, পরে আরও বিস্তারিত লেখার আশা রাখি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য।

৩৯

শওকত মাসুম's picture


নতুন জায়গায় থাকাটা আনন্দদায়ক হোউক। মেয়ে দুটাকে আদর দিয়েন।

৪০

মীর's picture


বিড়াল-কাঁকড়া নিয়ে প্যাঁচাল পাড়তে গিয়ে মূল কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। অস্ট্রেলিয়ায় নতুন শুরু শুভ হোক। কবে থেকে সেখানে ঘাঁটি গাড়ছেন? আপনার জন্য একটা ই-বুক ডাউনলোড করে রেখেছি। কিন্তু এরপরে কি করবো বুঝতে পারছি না।

৪১

মামুন হক's picture


মীর ভাই,
কষ্ট করে মেইল করে দেন, mamunডটtwnঅ্যাটgmail.com
আগাম ধন্যবাদ ভাই Smile

৪২

তানবীরা's picture


অনেক আগে এই লেখাটা লিখেছিলাম

http://www.mukto-mona.com/Articles/talukder/mulloheen_Jibon.pdf

৪৩

মামুন হক's picture


হ আফা

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.