ইউজার লগইন

ভ্রমণ প্রমাদ

(এইটা একটা আজাইরা পোস্ট, নিজ দায়িত্বে পড়ুন)
জানি টুটুল ভাই হয় তো ক্ষেপে যাবেন এই পোস্ট পড়ে, বন্ধু নজ্রুলিস্লাম তো হিংসার সায়রে আমাকে ভাসিয়ে দিয়েছে সেই কবেই। তবুও দুরুদুরু বুকে বলেই ফেলি—আর সব কয়টা মহাদেশ দেখা হলেও উত্তর আমেরিকায় আজতক পা পড়েনি আমার, এইবার বোধহয় তারও একটা হেস্তনেস্ত হতে চলেছে। তবে এবারের যাত্রা একেবারেই বাধ্য হয়, পেটের ধান্ধায়, কোনো প্রমোদ ভ্রমণ না, সুতরাং হিংসাটিংসা একটু রয়েসয়ে ভাইসগল।

মূলত বাপ হবার পর থেকেই আমি বিদেশযাত্রা অনেকটা কমিয়ে দিয়েছি, এখন যা যাই সেগুলো সকালে অফিস যাবার আগে বাথরুমে যাবার মতো, না গেলেই নয়, আর গা ভেজানো হয়ে গেলেই গামছা-তোয়ালের দফারফা করে হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে আসা। দেশ হিসেবে আমেরিকার প্রতি আমার কোনো মোহ নেই, এর আগে একবার আমেরিকার ভিসার জন্য আবেদন করেছিলাম। সেই ২০০৩ সালে। ভিসা অফিসার আমার চেহারা আর পাসপোর্টের রঙ দেখেই আবেদন খারিজ করে দিলেন, রীতিমতো বিনা বাক্যব্যয়ে। আমার দিস্তা দিস্তা কাগজপত্র, ডকুমেন্টের একটাও উল্টিয়ে পর্যন্ত দেখলেন না। ৩০ সেকেন্ডে প্রত্যাখ্যাত হয়ে আমার ব্রহ্মতালু পর্যন্ত জ্বলে উঠলো, কারণ জিজ্ঞেস করলে সরকার বাহাদূর হেলাভরে জানালেন, উই হ্যাভ টেকনিক্যাল রিজনস বাহাইন্ড নট ইসুয়িং ইউ ভিসা দিস টাইম, প্লিজ ট্রাই ফ্রম ইওর হোম কান্ট্রি। ‘টেকনিক্যাল রিজনস’ কী সেটা আজও আমার মাথায় না ধরলেও একটা আন্দাজ আছে। তখন আমরিকা মাত্র তার সমস্ত আসুরিক শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে মাইনকা চিপায় পড়া দূর্বল ইরাকের উপরে। আমরা তাইওয়ানের প্রবাসীর তখন নানা ধরনের প্রতিবাদ সভা করেছিলাম, ইংরেজি পত্রিকায় বিস্তর লেখালেখি করেছিলাম। অনলাইন পিটিশন ইত্যাদিও চলছিল জোরকদমে। হয় তো সেগুলোই অ্যাম্বাসীর হর্তাকর্তাদের নজরে এসে সমস্ত প্রবাসীরাই তাদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। বেশ কয়েকবছর তাইওয়ান থেকে অন্য দেশের নাগরিকদের আমেরিকার ভিসা দেয়া প্রায় বন্ধ ছিল। যাই হোক, সেই অপমানের জ্বালা ভুলতে আমার অনেক সময় লেগেছিল, যেভাবে ভিসা অফিসার মাছি তাড়ানোর ভঙ্গীতে আমারে বিদায় করে দিলেন সেটা ভুলতে সময় লাগাটাই স্বাভাবিক।

ভেবেছিলাম আর কোনোদিন আমেরিকা যাবার কথা মুখেও আনবো না। যদিও ব্যবসা-বানিজ্য করি তাদের সাথে, প্রয়োজনে সেখানকান লোকজন এসে দেখা করে যায়। কিন্তু আমাকে অনেক অনুরোধ করেও আর কেউ ভিসার আবেদন করতে রাজী করাতে পারেনি। কিন্ত এবারে সেই অভিমান ভুলতেই হলো। অনেকগুলো অনিবার্য কারণ একসাথে দল বেঁধে এমনভাবে হামলে পড়লো যে অভিমান ভেঙ্গে আমাকে আবার আমেরিকান অ্যাম্বাসীর দুয়ারে হাজির হতে হলো। তবে আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম যে এবারেও হয় তো এরা কোনো খুঁত বের করে বলবে যাও বাচ্চা শো রহো। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম ভিসা অফিসার খুব আন্তরিক , নানা ধরনের আলাপ করলেন, বাসার খোঁজ খবর নিলেন ( পরে জেনেছিলাম আমি যার অতিথি হয়ে যাচ্ছি তিনি সরাসরি এখানকার ডিরেক্টরের সাথে আলাপ করে রেখেছিলেন, মামু-খালুর জোর সব দেশেই চলে দেখি!)। ভিসা চেয়েছিলাম ৭ দিনের, দিয়ে দিলেন পাঁচ বছরের, বললেন ওটাই নাকি ন্যুনতম ভিসার মেয়াদ। নিজের অজান্তেই দাঁতে কেলিয়ে হেসে ফেললাম, অন্তত আবারও অপমানিত হতে হয়নি গরীব দেশের নাগরিক হবার কারণে সেই আনন্দে। ধন্যবাদ দিয়ে বের হয়ে আসবো তখন সেই ভিসা অফিসার ছোট্ট একটা গিট্টু লাগিয়ে দিলেন। বললেন আমি যেহেতু তাইওয়ানের নাগরিক না, তাই ভিসার আবেদুন অ্যাক্সেপ্টেড হবার পরেও আলাদা প্রসেসিং টাইম লাগবে, দুই তিন দিন থেকে বড়জোর এক সপ্তাহের। তবে আমার ফ্লাইট যেহেতু প্রায় সপ্তাহ তিনেক পরে তাই সেটা কোনো সমস্যা হবে না, আমি নিশ্চিন্তে যোগাড়-যন্ত্র শুরু করে দিতে পারি।

আমি আসলেই নিশ্চিন্ত মনে আয়োজনে লেগে গেলাম। যেহেতু যাচ্ছি একটা আন্তর্জাতিক কনভেনশনে, অন্যান্য দেশের অ্যাসোসিয়েটদেরও জানালাম। অস্ট্রেলিয়ানরা জানালো তাঁরাও আসছেন, দুবাই , ভিয়েতনাম, ইন্ডিয়া থেকেও লোকজন প্রস্তুতি নিল, আর আমেরিকার নানা প্রান্তের লোকজনেরাও ফ্লাইট-হোটেল ইত্যাদি বুকিং দিয়ে ফেললো। ওহ্‌ বলা হয়নি, আমরা যাচ্ছি লাস ভেগাসে। আধ্মরাদেরও চনমনে করে দেয় সেই লাস্যময়ী শহর। যে কথা বলছিলাম, আমিও ফ্লাইট হোটেল ইত্যাদির বন্দোবস্ত করলাম। কিন্তু এদিকে আমার ভিসা প্রসেসিং আর শেষ হয় না। আমি অপেক্ষায় আইজুদ্দিনের মতো দিনে কয়েকবার অনলাইনে আমার ভিসা স্ট্যাটাস চেক করি, একই কথা মনিটরে ভেসে ওঠে—আন্ডার প্রসেসিং। এই করতে করতে প্লেনের টিকেটের দাম চুকানোর তারিখ প্রায় হয়ে এল, ট্রাভেল এজেন্ট নিরন্তর তাগাদা দিয়ে যাচ্ছে—পেমেন্ট না করলে বুকিং ক্যানসেল করে দিতে হবে। একেবারে শেষ দিনে , আমার ভিসা প্রসেসিং শুরু হবার ১৪ দিনের মাথায়ও যখন পাসপোর্ট হাতে পেলাম না তখন বাধ্য হয়ে টিকেটের বুকিং ক্যানসেল করে দিলাম। নিজেকে সেই গাধার মতো মনে হলো যার সামনে মূলো ঝুলিয়ে চালাক কৃষক হাঁটিয়ে নিয়ে যায় মাইলকে মাইল। শরম-লজ্জার মাথা খেয়ে সব অ্যাসোসিয়েটদের ইমেইল করলাম, ভিসা প্রসেসিং শেষ হয়নি, আমি আসতে পারছি না। লোকজনও মুষড়ে পড়লো, অনেকেই পৌঁছে গেছে আগে ভাগেই, একটু ঘুরে ফিরে দেখতে। যাই হোক, আমি আমেরিকা যাবার বিষয়ে হাত ধুয়ে ফেলে অফিসে কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলাম।

আগে যেখানে প্রতিদিন অনলাইনে ভিসা স্ট্যাটস চেক করতাম সেখান সফর বাতিল করে দেয়ার পরের দুইদিন একবারও ঢুঁ মারা হলো না। কী কাণ্ড! যেদিন থেকে হাল ছেড়ে দিলাম সেদিন সকাল থেকেই কনফার্মেশন এসে পড়ে রইলো কিন্তু এদিকে আমার পাত্তা নেই। নানাকাজের ব্যস্ততার মধ্যে পরশুদিন হাউশ করে আবার একবার সে লিংকে চোখ বুলাতে গিয়ে দেখি আমাকে ভিসা উঠিয়ে আনার জন্য অনতিবলম্বে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু যেতে হবে প্রায় তিনশ’ মাইল দূরের রাজধানী শহর তাইপেতে। অনলাইনে পাত্তা লাগিয়ে দেখি হাইস্পিড ট্রেনে চেপেও আজকের দিনের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব না। বাধ্য হয়ে গেলাম গতকাল সকালে। বলে সোমবারে এসে নিয়ে যেতে, এদিকে ট্রাভেল এজেন্ট বারবার জানাচ্ছে যে রবিবার সকালের ফ্লাইটে সিট খালি আছে, আর এর পরে এক সপ্তাহর মধ্যে আর কোনো সুযোগ নাই। অ্যাম্বাসীর মহিলাকে মা খালা ডেকে অনেক অনুরোধ করে রাজী করালাম সেই দিনেই আমার পাসপোর্ট ডেলিভারী দিতে। উনি বললেন যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন তবে প্রমিজ করতে পারবেন না। যা হোক আর কিছু করার নেই সংশয়ের দোলাচলে হেলে দুলে বাড়ী ফিরে এলাম।

আজ সকালে দেখি বিশেষ কুরিয়ারে পাসপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছেন সেই ভদ্রমহিলা। এখন আর আমরিকা না যাওনের কোনো উপায়ই থাকলো না। কাল সকালে ফ্লাইট, এখন গিয়া একটু জিরাই, সামনে লম্বা জার্নি। ভাবলাম যাবার আগে আপনাদের একটু জানিয়ে যাই। আর ওখানে যাবার পরেও কী দেখলাম না দেখলাম জানিয়ে আপনাদের কান ঝালাপালা করতে একটুও ভুল হবে না। আর কী কী জানি বলতে চাইছিলাম, এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না, যাই হোক আগামী কয়েকদিন আমার কাছ থেকে কিছু না শুনলে টেনশন নিয়েন না। প্রথম সুযোগেই এসে আপনাদের আপডেট জানিয়ে যাব।

আজকে তাহলে উঠি। সবাই ভালো থাকবেন।

পোস্টটি ৯ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


অবশ্যই লাস ভেগাস স্পেশাল নামে একটা পোস্ট দিবেন। রাত্রে বেলা দিবেন, ভোরবেলা মুইছা দিবেন, মডূ যেন না দেখে Wink

টুটুল's picture


এইটা সামুর শুরুর দিকে হইতো Smile
মাঝ রাইতে পোস্টাইয়া ভোরে মুইছা ফেলা Smile

সাহাদাত উদরাজী's picture


লাস ভেগাস !

সাহাদাত উদরাজী's picture


লাস ভেগাস ! নাম শুনেই শইল্টা ঝিলিক মেরে উঠে!
আমার অনেক বন্ধু জুয়া খেলে কেদে ফিরেছে!

টুটুল's picture


ফটুক দিয়েন Love

মুকুল's picture


আনসেন্সর্ড ফটুক চাই। Crazy

শওকত মাসুম's picture


আম্রিকা শহরটা দেখার জন্য খারাপ না, থাকার জন্য ভাল না। একমাসে ৬টা স্টেট ঘুরছিলাম একবার। আর খায়েস নাই।

মাহবুব সুমন's picture


নিজ দ্বায়িত্বে পড়লাম।
আপনের অজি পাসপোর্ট হয় নাই ?

নীড় সন্ধানী's picture


দারুন বর্ননা!

১০

মেসবাহ য়াযাদ's picture


বিদেশ যাইতে মঞ্চায়... কতদিন বিদেশ যাইনা... সেরাম লেখা হৈছে... পোস্ট দিনে রাইতে যখনই দেন, খবরদার খারাপ খারাপ ফটুক দিবেন্না... সব জিনিস সবাইরে দেখাইতে হয়না... নিজে নিজে কিছু দেখতে হয়... Wink Big smile

১১

নজরুল ইসলাম's picture


খবরদার... নিজের আর প্রকৃতির ছবি দিবি না, লাস ভেগাসের মান ইজ্জত রাখার একটা দায়িত্ব আছে না? মাঝরাইতে দিবি, ভোরে মুছে দিবি। মডু টের পাইবো না।

১২

মীর's picture


আমি তাও হিংসিত হইলাম Tongue

১৩

চাঙ্কু's picture


বিদেশ যাইতে মঞ্চায় ।
আম্রিকারে মাইনাস আপনারে এইরাম কষ্ট দেওয়ার জন্য।

১৪

আসিফ's picture


লাসভেগাসের আনসেন্সরড ফটু দেখতে মন চায়! Smile

যেদিন রাইতে ফটু দিবেন, সেদিন সন্ধ্যায় একটা আজাইরা পোস্ট দিবেন...
আমরা বুইঝা নিমু....... আসিতেছে........

১৫

মুক্ত বয়ান's picture


আনসেন্সরড একটা ফটুক পোস্ট চাই। ভাঙ্গা, নজু ভাই, আসিফ ভাই, সবতের লগে একমত।
রাইতে দিবেন। সকালে হাওয়া কইরা দিবেন... মডুরা দেখতার্বো না... Wink
ভালো কইরা ঘুইরা আসেন। সুস্থ সবল থাইকেন!! Tongue

১৬

হাসান রায়হান's picture


অপেক্ষায় আইজুদ্দিন...লাসাভেগাসের পোস্টের জন্য

১৭

মামুন হক's picture


বন্ধুরা,
ধন্যবাদ সবাইকে শুভকামনা জানাবার জন্য। সেগুলোতে কাজ হইসে, আমি বেশ আরামেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গেছি। তবে এখনও জেট ল্যাগড, ১৫ ঘন্টার টাইম টিফরেন্স। ঘুমের বেড়াছেঁড়া লেগে গেছে। আর কাজ নিয়া একটু ব্যস্তও হয়ে পড়ছি আসার পরপরেই।

যাই হোক চারদিকের তেলেসমাতি আর গরমের প্রচণ্ডতায় আমি এখনও রীতিমতো তব্ধা খেয়ে আছি। এর মধ্যে আজকে দুর্দান্ত একটা ঘটনা ঘটছে, বিশ্বখ্যাত যাদুকর ডেভিড কপারফিল্ডের শো দেখতে গেছিলাম। শো এর মধ্যে সে ১০জন দর্শককে ডেকে মঞ্চে নিয়ে উঠায় তার একটা অসম্ভব জনপ্রিয় ইলিউশন দেখানোর জন্য। তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। সে এক বিরল অভিজ্ঞতা, আলাদা পোস্ট না দিলে পোষানো সম্ভব না। পয়লা সুযোগেই দিয়ে দিব।

আর ভাইসগল, আনকাট, আন সেন্সরড ছবি তোলার যেইসব জায়গা তার কোনোটাতেও ক্যামেরা নিয়া ঢুকতে দেয় না। তবুও এতগুলা বন্ধুকে কেমনে ব্যাজার করি, দেখি কোনো রাস্তা খুঁজে পাই কি না। আর আমরা বন্ধুর মডুরা অন্য যে কোনো ব্লগের মডুদের চাইতে অনেক বেশি দিলখোলা, তাই তাঁরা ছোটোখাটো আপরাধে যে আমার জেল-জরিমানা করবো না সেই ভরসা আমার আছে Smile

১৮

রাসেল আশরাফ's picture


আমি বড় হইয়ে মামুন হক হতে চাই!!!!!এষা আয়লার মতো দুইটা পুতুলের বাপ হতে চাই।লাস ভেগাসে ঘুরতে চাই।ডেভিড কপারফিল্ডের ম্যাজিকে অংশগ্রহন করতে চাই।!!!! Stare Stare Stare Stare Stare Stare

১৯

মীর's picture


@ রাসেল ভাই, মোর মাথার ভেত্রেও তো কথাডা এমুনই হৈতে আছে, বোজলাম না তো।

@ মামুন্হক, বহুদিন দেখি না ভাই আপনারে, তাড়াতাড়ি ঝামেলা সারেন।

২০

তানবীরা's picture


লাসভেগাস যাইতে মঞ্চায় Cool

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.