সন্তানের গাএ মা'র বদদোয়া লাগা সংক্রান্ত মীমাংসার গল্প
শের-ই-খুদা হযরত আলী একবার ছেলেদের মজলিসে নিজের পেশীবহুল শরীর দেখে নিজেই মুগ্ধ হচ্ছিলেন। পুত্র ইমাম হোসেন বসে ছিলেন সেখানে। বললেন, আমার মা'র মনের পবিত্র রূপের কাছে এ সৌন্দর্য তুচ্ছ। আলী দৌড়ে স্ত্রী'র কাছে গেলেন। দেখাও সেই সৌন্দর্য। যা তুমি এমনকি লুকিয়ে রেখেছো নিজের স্বামীর কাছেও!
এতো শারীরিক কোনো সৌন্দর্য নয়, যে খালি চোখে দেখা যাবে। তোমায় সে রূপ কিভাবে দেখাই প্রিয়? শুধালেন বিবি ফাতিমা নিজেই। সঙ্গে হযরত আলীর স্ত্রী এ অভিশাপও দিয়ে বসলেন- যে গোপনে তাকে দেখেছে, সে যেন ভাতৃঘাতি যুদ্ধে জীবন হারায়।
আলী বললেন, অভিশাপ কাকে দিলে? এ তো তোমার নিজের ছেলে। আল্লাহর মর্জিতেই সে তোমার মনের পবিত্রতা সম্পর্কে জানে। বাতেনি মসজিদে* গিয়ে তোমার সেই রূপ দেখে এসেছে।
মা ফাতিমার ক্রন্দনে খোদা এক শর্তে অভিশাপ তুলে নিতে রাজি হলেন। ভবিষ্যতে আর কখনো মা'র অভিশাপ সন্তানের কাছ থেকে ফিরে আসবে না তাহলে। ফাতিমা কিন্তু তাতেও রাজি হতে পারলেন না। জগতের মা কেঁদে বললেন, চাই না ছেলে আল্লাহ। তবু আর কোনো মা'র বদদোয়া যেন সন্তানের গাএ না লাগে ।
কারবালার যুদ্ধের ঘটনা তো আমরা সবাই জানি। এরপর থেকে পৃথিবীতে সন্তানদের গাএ মা'র বদদোয়া লাগা বন্ধ আছে। এই গল্পটি আমি আগে জানতাম না। মাটির ময়না সিনেমার এই গানটা থেকে জানতে পারলাম। গানটা প্রথম শুনেছিলাম বন্ধু মিজানের গলায়। এর একটা লাইন এমন- নবীকন্যার অন্তরে রূপ, আলোয় ভরে আঁধারের কূপ। কোটি নারীর ব্যথা ঘুচে, ফাতেমার ব্যথায়।
লিখতে ইচ্ছে করে তারেক মাসুদকে নিয়েও। কিন্তু তাঁর মতো একজন সত্যিকারের মহান মানুষ সম্পর্কে কিছু লেখার যোগ্যতা আমার হয় নি। তিনি গ্রাম-বাংলায় ঘুরে ঘুরে হীরে-জহরতসম লোকগীতি, বাউল গান সংগ্রহ করতেন। মাটির ময়না সিনেমায় যে বাউল গানগুলো ব্যবহার করেছেন, সেগুলোর প্রতিটিই অসাধারণ! সমাজের গভীর থেকে নানা রকমের রত্ন বেছে বেছে তুলে আনার এক অসামান্য কাজ তিনি করছিলেন। এই কিছুদিন আগ পর্যন্তও। নিষ্ঠুর নিয়তি বড় অসময়ে এই প্রতিভাবান মানুষটিকে কেড়ে নিয়ে গেছে আমাদের মধ্যে থেকে। তাঁর প্রতি আমার চিরকালের শ্রদ্ধা রইলো।
---
* বাতেনি মসজিদ মূলত একটি স্পিরিচুয়াল মেটাফর। গানে এ শব্দটি কোনো এক অদৃশ্য পবিত্র স্থান বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে হয়।
আপনার লেখা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তারেক মাসুদ অ মিশুক মুনীরকে নিয়ে আমারও কিছু বলতে ইচ্ছে করে কিন্তু তা পারি না।
তবে ক্লাউনডের রাজত্বে যেহেতু বাস করি তাই তাদের দুইটি উক্তি উল্ল্যেখ করি।
প্রধান মন্ত্রীর সাথে যখন ক্যাথরীনা মাসুদ দেখা করলেন তখন প্রধান মন্ত্রী বললেন তারেক মাসুদের অসমাপ্ত ছবি শেষ করতে যা লাগে তা সবই দিবেন। খুব ভাল কথা , খুব খুশীর কথা কিন্তু একটু চিন্তা করে কি প্রধান মন্ত্রী কথাটা বলেছেন? ---টাকা থাকলেই কি এমন সিনেমা তৈরী হয়? প্রধান মন্ত্রী কি তারেক মাসুদ এর বিকল্প?
স্বাস্থ্য ও জন কল্যান প্রতিমন্ত্রী বলেছেন--- তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর এর অকাল মৃত্যু হয় নাই। তারা সাঠিক সময়েই মারা গেছেন। কারন মুসলমানের অকাল মৃত্যু হয় না।
ধন্যবাদ ভাই।
তারেক মাসুদের মুভির গানগুলো শেকড়ের কাছে নিয়ে যায়; তারেক মাসুদ নামের প্রতিভা পৃথিবীতে একবারই আসে-আফসোস আমরা তাকে হারিয়েছি।
পড়লাম।
আমাদের কপাল যে একজন তারেক মাসুদকে পেয়েছিলাম। তারেক মাসুদের চলচ্চিত্রের শুধু গান না পুরা আবহই অসাধারন। কিন্তু তিনি আর নেই। বাঙালীরা কাউরেই ধরে রাখতে পারিনা।
আহা কি গান!বুকের ভেতরে লাগে। মানুষ যে কেন এমন করে চলে যায়! মানা যায় না।
ধন্যবাদ , মীর।
গল্পটা জানতাম না। কাজে লাগবে
আজকে অনেকবার এই গানটা শুনসি। ব্লগে এসে দেখি আপনি গানটা নিয়ে একটা পোস্ট ও দিসেন। ভাল লাগলো। ভাল থাকবেন।
ধন্যবাদ। জেনে নিলাম।
রওনা হইসিলাম মাত্র আপনি কই জিজ্ঞাসা করতে
অসাধারণ গল্প।।
অসাধারণ গল্প।।
মন্তব্য করুন