রুচিবোধ এবং সাম্প্রদায়িকতা
রুচিবোধ সাম্প্রদায়িক আচরণ উস্কে দেয়! কাউরে আপনার মনে হইতে পারে ক্ষেত, আবার কাউরে ড্যাম স্মার্ট। ফলে আপনি ক্ষেতরে অবজ্ঞা করলেন। মানে আপনি সাম্প্রদায়িক আচরণ করলেন।
একটা গোপন কথা বলি। আবৃত্তি একাডেমির শুরুর দিন গুলাতে আমি যখন নিজেরে নিয়া ব্যস্ত ছিলাম- মানে অন্যরে গোনার টাইম প্রায় ছিলই না, নিজেকে আমার বিশ্বের সেরা স্মার্ট পুলা মনে হইত। যদিও কেউ কেউ আমারে দ্য ক্ষেতিয়েস্ট পারসন অব দ্য ওয়ার্ল্ড ভাবত। তাতে আমার কিছু যাইত আসত না। আমি আমার মতই ছিলাম। কিন্তু দেখা গেল মানুষের রুচিবোধ বদলাইতাছে। তারা ক্ষেতিয়েস্টরে শুধু গুনতেছে না, মাথায় তুলার ট্রাই করতাছে।
কিন্তু ক্ষেত বা স্মার্ট জিনিসটা আসলে কি? আপনার যদি আত্মবিশ্বাস থাকে তাইলে আপনি স্মার্ট। আপনি দুনিয়ার সব থিকা ক্ষেতের মত আচরণ করলেও আপনি স্মার্ট। কারণ কে কি ভাবল, কি বলল আপনার কিছু যায় আসে না। আবার আপনার যদি আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি থাকে তাইলে আপনি দুনিয়ার সব থিকা স্মার্ট আচরণ কইরাও নিজেরে ক্ষেত ভাবতে পারেন। কারণ মাইনষে কি ভাবল বা বলল সেইটা নিয়াই আপনি বেশি উৎকণ্ঠিত থাকবেন।
তো আপনার এই স্মার্টনেস আর ক্ষেতনেসই মূলত রুচি ঠিক কইরা দেয়। এই পর্যন্ত আপনি আপনার মতই থাকলেন, মানে সাম্প্রদায়িক হইলেন না। কিন্তু যখনই আপনি আপনার এই একান্তই ব্যক্তিক রুচি দিয়া মানুষ মাপা শুরু করলেন, রুচিবান এবং রুচিহীন ক্যাটাগরি করলেন- তখনই আপনি সাম্প্রদায়িক হইয়া গেলেন।
একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ নিজের পছন্দ অপছন্দ বা রুচিবোধরে যেমন গুরুত্ব দেয় তেমনি অন্যের রুচিবোধরে সম্মান করে। নিজের রুচির লগে না মিললে অন্যেরে রুচিহীন ভাবা নিচু মানসিকতার পরিচায়ক। যেই রুচিবোধ আপনারে সাম্প্রদায়িক বানায় সেই রুচিবোধের লগে হিটলারের রুচিবোধে কোন পার্থক্য নাই।
একটা উদাহরণ দেই- পোষাক নির্বাচনে আপনি এখন যেই ট্রেন্ড ফলো করেন সেইটা যে অন্য কারো দৃষ্টিতে ভুল হইতে পারে সেই হিসাব কি আপনি করেন? পরস্পরকে ভুল মনে করা দুজন লোক যখন একজন আরেকজনকে ক্ষেত মনে করে তখন ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়?
সুতরাং রুচিবান হওয়ার নামে সাম্প্রদায়িক হইয়েন না।
মন্তব্য করুন